![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্কর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (আল ময়েদা:২) তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সত্কর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ (মুসলিম)। (আল কুরআন ৪১:৩৩) কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা (সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪)
'কু-দৃষ্টি ও নারীসঙ্গের ফলে যে সগিরা গুনা হয়, কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকার ফলে তা মাফ হয়ে যায়। তবে, বারবার কু-দৃষ্টি ও নারী সঙ্গে লিপ্ত থাকার ফলে সগিরা গুনাহগুলো কবিরা গুনাহে পরিণত হয়। বরং বারবার সংঘটিত সগিরা গুনাহ হটাৎ ঘটে যাওয়া কবিরা গুনাহ থেকেও ক্ষতিকর। কারণ, বারবার কু-দৃষ্টি ও নারী সঙ্গের ফলে অন্তরে পরস্পরের সম্পর্ক ও যৌন কামনার সৃষ্টি হয়, যা হটাৎ ঘটে যাওয়া যেনার চেয়েও মারাত্বক। আর এ জন্যই ফোকাহায়ে কেরাম সৎ সাক্ষ্য দাতাদের সম্পর্কে বলেছেন। তারাই সৎ সাক্ষ্য দাতা যাদের থেকে কবিরা গুনাহ সংঘটিত হয় না এবং যারা বারবার সগিরা গুনাহ করে না। কবিরা গুনাহ কখনো কখনো কুফরির কারণ হয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
'আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে, যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে, তাদেরকে আল্লাহকে ভালবাসার মত ভালবাসে।' (বাকারা : ১৬৫)
মানুষের প্রেম-ভালবাসা মূলত আল্লাহর প্রতি মহব্বত ও তার ওপর ঈমানের দুর্বলতার প্রমাণ। এ ধরণের মহব্বত ও ভালবাসার কারণেই লূত আলাই হিস্সলামের কাফের গোষ্ঠীর ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করেন।' (মাজমুউল ফতওয়া : খ: ১৫, পৃ:২৯২-২৯)
'চোখ অন্তরের আয়না স্বরূপ, চোখ বন্ধ করলে অন্তরও তার প্রবৃত্তির ওপর পর্দা টেনে দেয়। আর চোখ উন্মুক্ত রাখলে অন্তরও তার প্রবৃত্তি উন্মুক্ত করে রাখে।' অন্তরের মধ্যে কু-দৃষ্টির প্রভাব সৃষ্টি হওয়ার পর, ব্যক্তি যদি দৃঢ় সঙ্কল্প গ্রহণ করে এবং সাথে সাথে তার মূল উপড়ে ফেলে, তবে এর প্রতিকার করা খুব সহজ। এর বিপরীতে যদি সে বারবার তাকাতে থাকে, তার ছবি অন্তরে বারবার স্মরণ করতে থাকে, তবে তার ভালবাসা অন্তরে প্রোথিত হয়ে যাবে। কারণ, বারবার দৃষ্টি দেয়ার অর্থ হচ্ছে কু-প্রবৃত্তির গাছটি পানি দ্বারা সিঞ্চন করা। আর এভাবেই প্রবৃত্তির গাছটি ক্রমশ বড় হয়ে একদিন তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, ভুলিয়ে দিবে তাকে নিজ দায়িত্ব। অধিকন্তু সে এর কারণে বিভিন্ন পরীক্ষা ও কষ্টের সম্মুখিন হবে, নানা অপকর্মে লিপ্ত হবে।' )
অশান্তি ও অস্থিতিশীল পরিবেশের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই দায়ী নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা। এটাই হচ্ছে সে পথ, যার দ্বারা মানুষ খুব সহজেই নির্লজ্জ, বেহায়া ও ব্যভিাচারে লিপ্ত হয়। জিন ও মানুষ প্রকৃতির শয়তানগুলো তাদের হাতিয়ার হিসেবে এ অবাধ মেলামেশাকেই সর্বত্র ও সবখানে ব্যাপক করে চলেছে।
'নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা সকল মুসিবত ও সর্বনাশের মূল। সর্বগ্রাসী মহা বিপদের একটি অশনি সঙ্কেত। অধিকন্তু তা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে এবং অনেক হত্যা, অপমৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্ম দেয়। নবি মুসা আ.-এর সৈন্যদের মাঝে কিছু বেশ্যা নারীর অনুপ্রবেশ ঘটলে তাদের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলশ্রুতিতে আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর মহামাড়ি নাজিল করেন এবং একই দিনে সত্তুর হাজার লোকের মৃত্যু ঘটান। এটা বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থের প্রসিদ্ধ ঘটনা। সুতরাং আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পারি যে, মৃত্যুহার বৃদ্ধির একটি বড় কারণ হচ্ছে যেনার বিস্তার ও তার প্রসার, যা সাধারণত নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, নারীর সৌন্দর্য প্রদর্শন, নগ্ন ও অর্ধনগ্নাবস্থায় নারীদের চলাফেরার কারণে হয়ে থাকে।'
প্রেম-ভালবাসা মূলত ইমানের দুর্বলতার পরিচয়। কারণ, অন্তরে যখন ইমানের উপস্থিতি কম হয়, তখনই প্রবৃত্তি ও কু-কামনা বৃদ্ধি পায়, বরং তা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।'
'আল্লাহর সঙ্গে যাদের ইখলাসপূর্ণ সম্পর্ক নেই, বরং তারা কোন না কোন শিরকে মগ্ন, তারাই সাধারণত কামভাব ও কু-প্রবৃত্তিতে লিপ্ত হয়। আল্লাহ তার বান্দা ইউসুফ আ. সম্পর্কে বলেন,
'এভাবেই, যাতে আমি তার থেকে অনিষ্ট ও অশ্লীলতা দূর করে দেই। নিশ্চয় সে আমার খালেস বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।' (ইউসুফ : ২৪)
লক্ষ্যণীয়, আজিজের স্ত্রী স্বধবা, তা সত্বেও সে কু-কর্মের প্রস্তাব দিয়েছে, পক্ষান্তরে ইউসুফ আ. অবিবাহিত, তা সত্বেও সে তার প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করেছে। এদিকে আজিজের স্ত্রীর ফুসলানো, অন্য নারীদের দ্বারা প্ররোচিত করা, প্রস্তাবে সাড়া না দিলে জেলখানায় নিক্ষেপের হুমকি তো রয়েছেই। এতো কিছুর পরও আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক ও ইখলাসের বদৌলতে আল্লাহ তাকে হেফাজত করেছেন। এভাবেই ইবলিসের বিপরীতে আল্লাহ তাআলা নিজ ওয়াদা পূরণ করে থাকেন। ইবলিস বলেছিল,
'সে বলল, আপনার ইজ্জতের কসম! আমি তাদের সকলকেই বিপদগামী করে ছাড়ব, তাদেরমধ্য থেকে আপনার একনিষ্ঠ বান্দারা ছাড়া।' (সাদ : ৮২-৮৩) তার বিপরীতে আল্লাহ তাআলা বলেন,
'নিশ্চয় আমার বান্দাদের ওপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই, তবে পথভ্রষ্টরা ছাড়া, যারা তোমাকে অনুসরণ করছে।' (হিজর : ৪২)
বিপদগ্রস্ত ও পথভ্রষ্ট হওয়ার অর্থই হচ্ছে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা।'
©somewhere in net ltd.