![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্কর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (আল ময়েদা:২) তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সত্কর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ (মুসলিম)। (আল কুরআন ৪১:৩৩) কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা (সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪)
ইসলাম ও ফ্যাসনের সংঘাত - ১
হাদিস ভান্ডারে প্রিয়তম নবী (সাঃ)- এর এমন অনেক বাণীর সন্ধান পাই,যাতে স্পষ্ট করে বলা আছে,মানব জীবনের সফলতা ও স্বার্থকতার জন্য রাসূল (সাঃ)- এর আনুগত্য একান্তভাবে জরুরি l পক্ষান্তরে সুন্নতে রাসূলের পরিপন্থী পথ ও কর্মে রয়েছে মানব জীবনের ধ্বংস ও পতন l আমরা এখানে এ সম্পর্কিত কয়েকটি বাণী উল্লেখ করছি -
হযরত রাসূল (সাঃ)- ইরশাদ করেছেন -
১. যে ব্যাক্তি আমার সুন্নতের উপর আমল করে না,সে আমার দলভূক্ত নয় l
২. যারা অন্যদের পথে চলে,তারা আমার দলভূক্ত নয় l
৩. যে আমার পথ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে,সে আমার দলভূক্ত নয় l
৪. যে ব্যাক্তি আমার সূন্নতকে ধ্বংস করবে,তার জন্য আমার শাফায়াত হারাম l
[ ফাতাওয়া রাহীমিয়া : ২য় খন্ড,৪০৪-৪০৫ পৃ ]
ফ্যাশনপূজারী আত্মভোলা মুসলমানদের উচিত প্রিয়তম নবী (সাঃ)- এর বাণীগুলো বার বার পাঠ করা এবং গভীরভাবে চিন্তা করা l
আমরা কি আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী (সাঃ)- এর অনুসরণ করবো,নাকি ইউরোপ-আমেরিকার অনুসরন করবো
ইসলাম ও ফ্যাসনের সংঘাত - ২
ফ্যাশনের অবাঞ্ছিত প্রভাব মানুষের মন-মস্তিষ্ককে এমনভাবে বিকৃত করে ফেলেছে,যে মানুষ অবলীলায় সূন্নত নিয়ে হাসি তামাশা করে l কেউ যদি সাহস করে দাড়ি রেখেই ফেলে,তখন প্রথম প্রতারোধের শিকার হয় নিজ পরিবারের লোকদের কাছে l অতঃপর পাড়া,অফিস,দোকান,বাজার,বন্ধু মহল,আত্মীয় স্বজন সকলেই তার বিরুদ্ধে আদা-জল খেয়ে 'প্রতিরোধ বিপ্লবে' অবর্তীর্ণ হয় l
কেউ করে মশকরা তো কারো কাছ থেকে অনাকাঙ্খিত প্রশ্নবানে বিদ্ধ হতে থাকে ধর্মপ্রাণ মুসলমান . . . l
সরাসরি সূন্নতের বিরোধীতা -
বিষ্ময়কর বিষয় হল,আজকের মুসলমানগণ সরাসরি দাড়ি মুন্ডন করে আবার এই অন্যায় কর্মের প্রচার করে বেড়ায় l তারা এই অন্যায় কর্মকে প্রসংস্যা করে আর দাড়ি রাখাকে নিন্দা ও তিরষ্কার করে l
যুবক তো যুবক,অনেক বৃদ্ধ পর্যন্ত দাড়ি কামিয়ে খোলামেলা রাসূল (সাঃ)- এর সূন্নতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বেড়ায় l
অথচ দাড়ি শুধু সূন্নতই নয়,দাড়ি ইসলামের একটি অন্যতম প্রতীক বা শি'আর l ইসলামে দাড়ি পুরুষের সৌন্দর্য বলে বিবেচিত l
ফেরেস্তাদের একটি শ্রেণী এই বলে তসবীহ পর্যন্ত পাঠ করে -
পূতঃপবিত্র সেই সত্তা,যিনি পুরুষকে দাড়ি আর নারীদের জন্য সৌন্দর্যের বিষয় দীর্ঘ কেশ ও খোপা দ্বারা অলংকৃত করেছেন l [ হাদীস-ফাতাওয়া রহিমিয়াহ : ১ম খন্ড,৩৯৮ পৃ ]
এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়,পুরুষের জন্য সৌন্দর্যের বিষয় দাড়ি নারীদের জন্য্ দীর্ঘ কেশ ও খোপা l এজন্যই নবীজি (সাঃ) নিজে দাড়ি রেখেছেন এবং উম্মতকে দাড়ি রাখতে উৎসাহীত করেছেন l . . . (চলবে)
ইসলাম ও ফ্যাসনের সংঘাত - ৩
নবীজির প্রতি নিঃসর্ত আনুগত্য ইমানের প্রধান শর্ত -
রাসূল (সাঃ)- এর আদর্শের আনুগত্য করা,তার আমল ও সীরাতের অনুকরণ করা,তার সকল নির্দেশ ও সিদ্ধান্তকে নিঃসঙ্ক চিত্তে মেনে নেয়া ইমানদার হওয়ার প্রধান শর্ত l কারন,শরীয়তের পরিভাষায় ইসলাম বলা হয়,নবীর নির্দেশিত পথে আল্লাহ তায়ালার বিধানাবলীর অনুসরণ করাকে l নিজের বিবেক ও মন মতো আল্লাহ তায়ালার অনুগত্য করাকে ইসলাম বলা হয় না l
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কূরআনে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন -
' কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ ! তারা মুমিন হতে পারবেনা যতক্ষণ না তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার তোমার উপর অর্পণ না করে,অতঃপর তোমার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাদের মনে কোন দ্বিধা সংকোচ না থাকে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয় ! [ সূরা নিসা : ৬৫ ] '
এই আয়াতে কারীমার ব্যাখ্যায় হযরত জা'ফার সাদেক (রহঃ) বলেন,যদি কোন জাতী ও সম্প্রদায় আল্লাহ আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করে,নামায রোজা হজ যাকাত সবই করে,কিন্তু হযরত রাসূলে কারীম (সাঃ)- এর কোন আমল সম্পর্কে এই জাতীয় অভিযোগ করে বসে যে,তিনি এমনটি কেন বললেন ? অথবা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)- এর কোন আমল সম্পর্কে মনে দ্বিধাা ও অসন্তোষ পোষণ করে,তাহলে তার নাময,রোজা,হজ,যাকাত সব কিছু আদায় করা স্বত্তেও সে কাফের ! [ রুহুল মা'আনী : ৫ম খন্ড,৬৫ পৃ ] . . . (চলবে)
ইসলাম ও ফ্যাসনের সংঘাত - ৪
এক ইহুদীর ঘটনাঃ
এক ইহুদী ও এক মুসলমানের মাঝে দ্বন্দ বাধে l মকদ্দমা পেশ করা হয় রাসূলে করীম (সাঃ)- এর আদালতে l পূর্ণ তদন্তের পর রাসূল (সাঃ) ইহুদীর পক্ষে রায় দেন l এতে মুসলমান ব্যাক্তিটি সন্তুষ্ট হতে পারেনি l তখন সে মকদ্দমাটি পুনরায় হযরত উমর (রাঃ) এর সামনে পেশ করে l হযরত উমর (রাঃ) বিষয়টির বিবরণ শোনার পর ঘরে যান l ঘর থেকে তলোয়ার এনে সোজা সেই বাদীর গর্দান উড়িয়ে দেন এবং ঘোষণা করেন,হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) এর ফয়সালায় যে সন্তুষ্ট হতে পারেনা,তার জন্য এটাই যথার্থ ফয়সালা l
এ ছিল একটি মৌলিক নীতি ও আইনের কথা l
সকলের জন্য আদর্শঃ
যে রাসূলে করীম (সাঃ) এর বিচার ফয়সালাকে মানেনা,যে আল্লাহ'র রাসূলের চাইতে অন্য কাউকে অধিক ন্যায়পরায়ণ মনে করে,সে ধর্মত্যাগী মুরতাদ l
এমন ব্যাক্তির মুখে ইসলামের নাম উচ্চারণ করা মুনাফেকী ভন্ডামী l সূতরাং তার শাস্তি মৃত্যদন্ড l হযরত উমর (রাঃ) তাই করেছেন l
তাছাড়া আল্লাহ তায়ালা হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) কে সকল গুন ও পূর্ণতার অনুপম নন্দিত সত্তা হিসেবে এই মাটির পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন l তিনি ইরশাদ করেন -
নিশ্চয়ই আল্লাহ'র রাসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ l [আহযাব : ৩৩]
সূতরাং জীবনের পূর্ণতা,সৌন্দর্য ও সফলতা রাসূল (সাঃ) এর পূর্ণ আনুগত্য ও অনুসরণের মধ্যেই নিহীত l
এই সত্য ও সুন্দর তত্ত্বটি যথাযথ ভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) ! তাই তারা সুধু ইবাদত-বন্দেগীই নয় বরং প্রতিটি সূন্নতের হরফে হরফে অনুসরণ করতেন l তারা নিজেদের প্রতিটি কর্ম,চিন্তা ও আচরণকে নবীজির আদর্শের রঙে রাঙিয়ে তুলেছিলেন এবং একেই জীবনের সর্বোচ্চ সফলতা বলে বিশ্বাস করতেন l . . . (চলবে ইনশা-আল্লাহ)
ইসলাম ও ফ্যাসনের সংঘাত - ৫
দাড়ি পৌরুষের প্রতীক : দাড়ি মুন্ডন করা শয়তানের কাজ -
আজ যুবক বুড়ো নির্বিশেষে আমরা সকলেই চরম দুঃসাহসী হয়ে পড়েছি l যুবক থেকে বৃদ্ধ অনেকেই দাড়ি মুন্ডন করে নির্ভিকভাবে l অথচ ভেবে দেখুন স্বয়ং রাসূল (সাঃ) সর্বদা দাড়ি রেখেছেন,সকল মুসলমানকে দাড়ি রাখার তাকিদ করেছেন l
আর আজ চলছে দাড়ি না রাখার প্রতিযোগীতা l এর চেয়ে বড় বেয়াদবী আর দূর্ভাগ্য আর কি হতে পারে l
তাছাড়া শুধু সকল নবী-রাসূলের সুন্নতই নয়,দাড়ি পৌরুষের প্রতীক,মুসলমানের ঐত্যিহ্যময় স্মারক l দাড়ি মর্যাদার সাক্ষী,সম্মান ও বুযুর্গির নিদর্শন l দাড়িই পৌরুষের দীপ্ত প্রমাণ l
দাড়ি মুন্ডন করার অর্থ হলো,আল্লাহ প্রদত্ত আকৃতিকে বিকৃত করে ফেলা l এটা নিতান্তই শয়তানের কাজ l দাড়ি মুন্ডনকে ভাল বলা বা প্রসংসা করার অর্থ সুন্নতে রাসূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা,যা কোন মুমীন মুসলমানের পক্ষে কল্পনা করাও অসম্ভব l
আমরা সকলেই দাবি করি,আমরা নবীকে ভালবাসী l কিন্তু সত্যিই যদি ভালবাসী,তাহলে এর দাবী তো ছিলো,রাসূল (সাঃ)- এর অনুসরণ করা l কারণ,কারও কর্ম,চরিত্র ও রূপকে ঘৃণা করে মুখে তার ভালবাসার দাবি কি নিতান্তই ভন্ডামী নয় ?
কবি বলেছেন -
''রাসূলের অবাধ্য তুমি,মুখে বলো ভালবাসী,
প্রাণের শপথ,এ কেমন আজগুবি দাবি !
সত্যি যদি প্রেমীক হতে,হতে অনুগত তার
কর্মই বলে - কার হৃদয়ে ভালবাসা কার ৷৷ ''
[ ফতোয়ায়ে রাহীমিয়াহ,২য় খন্ড,৪০২-৪০৩ ]
©somewhere in net ltd.