![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্কর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (আল ময়েদা:২) তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সত্কর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ (মুসলিম)। (আল কুরআন ৪১:৩৩) কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা (সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪)
মাজহাব প্রসঙ্গে ডা. জাকির নায়েকের ভ্রান্তি অপনোদন- ২
এক মিলিয়ন হাদীস এক ডিস্কে পাওয়া যায়!
ডাঃ জাকির নায়েক মাযহাব না মানার পক্ষে যে সমস্ত যুক্তি দেখিয়েছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি যুক্তি হল, বর্তমান সময় বিজ্ঞান ও টেকনোলজির যুগ। যে কোন তথ্য খুব সহজে সংগ্রহ করা সম্ভব। এসম্পর্কে তিনি বলেছেন,
“বর্তমান যুগ হল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। ইমামদের সময় একটি হাদীস সংগ্রহ করার জন্য শত শত, হাজার হাজার কিলোমিটার সফর করতে হতো। কেননা তখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ততটা উন্নত ছিল না। বর্তমান যুগ হল, ই-মেইলের যুগ, ফ্যাক্সের যুগ। সেকেণ্ডের মধ্যে এখান থেকে আমেরিকায় যে কোন তথ্য পাঠান সম্ভব।”
ডাঃ জাকির নায়েক পরবর্তীতে বলেছেন,
Today if you want to have all the Sahih Hadith, you can have on a disk, the complete bukhary we can have on a disk, Bukhary,Muslim, in IRF on million Hadith on one disk. Classified, Sahih, Zaif, Mauzu.
“বর্তমান সময়ে তুমি যদি সমস্ত সহীহ হাদীস সংগ্রহ করতে চাও, তবে তা একটি ডিস্কে পাওয়া সম্ভব। সম্পূর্ণ বোখারী এক ডিস্কে পাওয়া যায়। একইভাবে, বোখারী, মুসলিম। আই.আর.এফ এ একটি ডিস্কে এক মিলিওন হাদীস রয়েছে। যেগুলোর শ্রেণীবিভাগ করা রয়েছে-সহীহ, যয়ীফ, মওযু। সুতরাং ইমামদের যুগের তুলনায় বর্তমান সময়ে হাদীস সংগ্রহ করা খুবই সহজ”[১]
ডাঃ জাকির নায়েকের এ বক্তব্যটি যুক্তিসঙ্গত যে, বর্তমান সময়ে বিভিন্ন হাদীস সম্পর্কে খুব সহজে অবগত হওয়া সম্ভব। কিন্তু পৃথিবীর কোন বিষয়ের জ্ঞানের জন্য কি ঐ বিষয়ের সব পুস্তকাদি তার নিকট থাকাটাই যথেষ্ঠ? ডাঃ জাকির নায়েক নিজে একজন ডাক্তার, তিনি কি কখনও এ বিষয়কে যথেষ্ঠ মনে করবেন যে, একলোক বাজার থেকে কয়েক শ’ বিখ্যাত মেডিকেলের বই কিনে পড়লে সে ডাক্তার হয়ে যাবে? অন্যকে প্রিসক্রিপশন দিতে পারবে? আর এ ধরণের ডাক্তারের মাধ্যমে রোগির রোগ নিরাময় হবে না কি মৃত্যুর কারণ হবে?
পৃথিবীর কোন বিষয়ে পারদর্শীতা অর্জনের জন্য যদি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দু’একটি বই পড়া যথেষ্ঠ না হয়, তবে ধর্মীয় বিষয়ের জ্ঞানের জন্য শুধু হাদীসের কিতাবকেই যথেষ্ঠ মনে করা হয় কেন?
এক মিলিয়ন কেন, কারও নিকট যদি দশ মিলিয়ন হাদীসও থাকে, তবুও কি তার জন্য কিতাব পাঠ করে হাদীসের উপর আমল করা সম্ভব?
এ সম্পর্কে আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেছেন,
لو فرض إنحصار حديث رسول الله صلي الله عليه و سلم فيها اي في الدواوين: فليس كل ما في الكتاب يعلمه العالم، ولا يكاد يحصل ذلك لأحد ، بل قد يكون عند الرجل الدواوين الكثيرة و هو لا يحيط بما فيها، بل الذين كانوا قبل جمع هذه الدواوين كانوا أعلم با لسنة بكثير… فكانت دواوينهم صدورهم التي تحوي أضعاف ما في الدواوين ، و هذا أمر لا يشك فيه من علم القضية
যদি ধরে নেয়া হয় যে, রাসূল (সঃ) এর সমস্ত হাদীসের কিতাব সমূহে সংকলন করা হয়েছে এবং রাসূল (সঃ) এর হাদীস এর মাঝেই সীমাবদ্ধ, তবে কোন আলেম হাদীসের কিতাবের সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করবে, এটি সম্ভব নয়। আর কারও পক্ষে এটি ঘটেও না। বরং কারও নিকট সংকলিত অনেক হাদীসের কিতাব থাকতে পারে, কিন্তু সে এ সমস্ত কিতাবের সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয় না। প্রকৃতপক্ষে এ সমস্ত কিতাব সংকলনের পূর্বে যারা ছিলেন, তারা সুন্নাহ সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত ছিলেন। তাদের কিতাব ছিল, তাদের অন্তর, যাতে সংরক্ষিত ছিল, এ সমস্ত সংকলিত কিতাব থেকে কয়েকগুণ বেশি হাদীস। আর এ বিষয়ে জ্ঞান রাখে এমন কেউই বিষয়টির ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে না”[২]
আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) এ বক্তব্য থেকে এ ব্যাপারে কারও দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ থাকে না যে, হাদীসের বিষয়ে কিতাব সমূহ সংকলিত হওয়ার পূর্বে এক এক মুহাদ্দিস ও ফকীহ সংকলিত হাদীসের কিতাব সমূহের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হাদীস জানতেন।
যেমন-
১. আল্লামা ইবনুস সালাহ থেকে বর্ণিত,
وقال ابن الصلاح رحمه الله – : ” وقد قال البخاري : أحفظ مائة ألف حديث صحيح ومائتي ألف حديث غير صحيح ،
“ইমাম বোখারী (রহঃ) বলেন, আমি এক লক্ষ সহীহ হাদীস জানি এবং সহীহ নয় এমন দুই লক্ষ হাদীস জানি।
[মুকাদ্দামাতু ইবনিস সালাহ, পৃষ্ঠা-১০] ২. ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) সাড়ে সাত লক্ষ হাদীসের হাফেয ছিলেন।
৩. ইমাম মুসলিম (রহঃ) তিন লক্ষ্য হাদীস থেকে মুসলিম শরীফ লিপিবদ্ধ করেছেন।
৪. ইমাম আবু দাউদ (রহঃ) পাঁচ লক্ষ হাদীস থেকে বাছাই করে আবু দাউদ শরীফ রচনা করেছেন।
৫. ইমাম আবু যুরআ’ (রহঃ) সাত লক্ষ হাদীসের হাফেয ছিলেন।
ইসলামের ইতিহাসে অসংখ্য হাফেযে হাদীসের জন্ম হয়েছে। আমরা জানি হাফেযে হাদীস বলা হয়, সেই মুহাদ্দিসকে যিনি ন্যুনতম এক লক্ষ হাদীস সনদ ও মতন সহ হিফয করেছেন এবং সেটি আয়ত্বে রেখেছেন।
“তাযকিরাতুল হুফফায” নামক কিতাবে হাফেযে হাদীসদের জীবনী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এ সমস্ত মুহাদ্দিস লক্ষ-লক্ষ হাদীস মুখস্থ করা সত্ত্বেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার দাবী করেননি, কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল, বর্তমান সময়ে যারা বিশুদ্ধভাবে একটি হাদীস পাঠ করার যোগ্যতা রাখে না, তারাও মুজতাহিদ ইমাম হওয়ার দাবী করে ফতোয়া প্রদান করে থাকে। আল্লাহ পাক আমাদেরকে হিফাজত করুন!
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এসব হাদীসকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করলো কে? কে এক মিলিয়ন হাদীসকে সহীহ, যয়ীফ, জাল ইত্যাদি শ্রেণিতে ভাগ করলো? যে এটা করেছে তার গবেষণাই বা কতোটা গ্রহণযোগ্য? তার এ গবেষণার উপর ভিত্তি করে হাদীসকে সহীহ, জয়ীফ বলার কোন নির্দেশনা শরীয়তে আছে কি? ডাক্তার সাহেবের বক্তব্যের সবচেয়ে বড় অস্পষ্টতা এখানেই। হাদীসকে সহীহ, যয়ীফ ভাগ করতে গিয়েই ইমামগণের মাঝে হাজারও মতভেদ সৃষ্টি হযেছে। সুতরাং হাদীসকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করার ক্ষেত্রে যে হাজার মতানৈক্যের উদ্ভব হয়, সেটা ডাক্তার সাহেব সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আড়াল করেছেন। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামার আসারুল হাদীস (বাংলা অনুবাদ, ইমামগণের মতভেদে হাদীসের ভূমিকা)
খতীব বাগদাদী (রহঃ) “ আল-ফকীহ ও য়াল মুতাফাক্কিহ” নামক কিতাবে লেখেছেন,
قيل لبعض الحكماء : إن فلانا جمع كتبا كثيرة! فقال : هل فهمه علي قدر كتبه؟ قيل : لا، قال فما صنع شئا، ما تصنع البهيمة بالعلم.[৩] কোন এক বিজ্ঞজনকে বলা হল, অমুক ব্যক্তি অনেক কিতাব সংগ্রহ করেছে। তিনি তাকে বললেন, তার বুঝ কি তার সংগৃহীত কিতাবের সমান? লোকটি উত্তর দিল, না। তখন তিনি বললেন, প্রকৃতপক্ষে সে কিছুই করেনি। চুতষ্পদ জন্তু ইলেম দিয়ে কী করবে!
অর্থাৎ বুঝ অর্জন না করে, কিতাব সংগ্রহ করা আর একটি জন্তুর নিকট অনেক কিতাব থাকা সমান।
সুতরাং কিতাব সংগ্রহের নাম ইলম নয়। কারও নিকট অধিক হাদীস থাকার কারণে সে যদি বড় হালেম হয়ে যেত, তবে যার নিকট এক ডিস্কের মধ্যে সমস্ত হাদীসের কিতাব রয়েছে, সেই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আলেম হয়ে যেত। চল্লিশ টাকার একটা ডিস্ক সংগ্রহ করা, আর ইলমের পিছে চল্লিশ বৎসর সাধনা করা এক জিনিস নয়। সুতরাং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির দোহাই দিয়ে একথা বলা যথেষ্ঠ নয় যে, আমার নিকট এক মিলিয়ন হাদীসের একটি ডিস্ক আছে, সুতরাং কাউকে অনুসরণের প্রয়োজনীয়তা নেই। বিষয়টি যদি এমনই হত, তবে পৃথিবীর যে কেউ ডিস্ক সংগ্রহ করবে, সেই স্বয়ংসম্পূর্ণ আলেম হয়ে যাবে।
খতীবে বাগদাদী (রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনে মুইন (রহঃ) এর উক্তি বর্ণনা করেছেন, তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল,
কেউ যদি এক লক্ষ হাদীস মুখস্থ করে, তবে কি সে ফতওয়া দিতে পারবে? তিনি উত্তর দিলেন, না। পুনরায় প্রশ্ন করা হল, দু’লক্ষ হাদীস মুখস্থ করলে কি ফতোয়া দিতে পারবে? তিনি বললেন, না। পুনরায় প্রশ্ন করা হল, যদি তিন লক্ষ হাদীস মুখস্থ করে? তিনি উত্তর দিলেন, না। চার লক্ষ? তিনি বললেন, না?। যদি পাঁচ লক্ষ হাদীস মুখস্থ করে? তিনি উত্তর দিলেন, আশা করা যায়।
খতীবে বাগদাদী (রহঃ) এ উক্তি বর্ণনা করে বলেছেন, পাঁচ লক্ষ হাদীস শুধু মুখস্থ করাটাই উদ্দেশ্য নয়। বরং প্রত্যেকটি হাদীসের মর্ম উপলব্ধি করা এবং সে সম্পর্কে ব্যুৎপত্তি অর্জন করা আবশ্যক। তিনি লিখেছেন,
وليس يكفيه إذا نصب نفسه للفتيا أن يجمع في الكتب ما ذكره-يحي بن معين-دون معرفته به و نظره فيه، و إتقانه له، فإن العلم هو الفهم و الدراية و ليس با لإكثار و التوسع في الرواية
“কারও পক্ষে নিজেকে ফতোয়ার আসনে সমাসীন করার জন্য ইয়াহ্ইয়া ইবনে মুঈন (রহঃ) যে পরিমাণ হাদীসের কথা বলেছেন, সেগুলো সম্পর্কে ব্যুৎপত্তি অর্জন এবং তীক্ষ্ম জ্ঞান অর্জন ব্যতীত তা সংগ্রহ করাটাই যথেষ্ঠ নয়। কেননা ইলম হল, প্রকৃত বুঝ ও ব্যুৎপত্তি অর্জনের নাম। অধিক সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করার নাম ইলম নয়”
[আল-জামে, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১৭৪]
সুতরাং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির দোহাই দিয়ে শুধু হাদীস সংগ্রহ করাটা ইসলামের উদ্দেশ্য নয়। আর কেউ যদি অনেক হাদীস সংগ্রহ করেও, তবুও কি সে সরাসরি কুরআন ও হাদীসের উপর আমর করতে সক্ষম হবে? ইজতেহাদের অন্যান্য যে সমস্ত শর্ত রয়েছে সেগুলো অর্জন করা আবশ্যক নয় কি?
বোখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, নবী কারীম (সঃ) বলেছেন,
إنَّ الله لا يقبض العلم انتزاعاً ينتزعه من العباد ، ولكن يقبض العلم بقبض العلماء حتَّى إذا لم يُبق عالماً اتخذ الناس رؤوساً جهَّالاً فسئلوا فأفتوا بغير علم فضلُّوا وأضلُّوا
“আল্লাহ্ তায়ালা ইল্মকে তার বান্দাদের থেকে উঠিয়ে নেবেন না। বরং তিনি আলেমদেরকে উঠানোর মাধ্যমে ইলম উঠিয়ে নেবেন। এমনকি একসময় কোন আলেমই অবশিষ্ট থাকবে না। মানুষ তখন অজ্ঞ-মুর্খ লোকদের নিকট প্রশ্ন করবে, তারা ইলম ব্যতীত ফতোয়া দিবে। ফলে তারাও পথভ্রষ্ট হবে, অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে।[৪] [বোখারী শরীফ, হাদীস নং ৬৮৭৭, ১০০মুসলিম হাদীস নং২৬৭৩] এ হাদীসে রাসূল (সঃ) সুস্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন যে, ইলমের অস্তিত্ব নির্ভর করে উলামাদের অস্তিত্বের উপর। আলেম এবং ইলম পরস্পর ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সুতরাং ইলমকে টেকনোলজির অনুগামী মনে করা কতটা যুক্তিসঙ্গত?
§ ইমাম আবু হাইয়্যান উন্দুলুসী (রহঃ) বলেছেন,
يظن الغمر ان الكتب تهدي … اخا جهل لادراك العلوم و لا يدري الجهول بان فيها …غوامض حيرت عقل الفهيم
ا ذا رمت العلوم بغير شيخ…ضللت عن الصراط المستقيم
“মূর্খ, অনভিজ্ঞ লোক মনে করে থাকে যে, কিতাব তাকে ইলম অর্জনে পথ প্রদর্শন করবে।
কিন্তু মূর্খ লোকেরা জানে না যে, তাতে এমন দুর্বোধ্য বিষয় থাকে যে, তীক্ষ্ম-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকও বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।
যদি তুমি উস্তাদ ব্যতীত ইলম অর্জন করো, তুমি সরল সঠিক পথ
থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়বে”[৫]
হাফেযে হাদীস আবু বকর খতীবে বাগদাদী (রহঃ) বলেন,
لا يؤخذ العلم الا من افواه العلماء ..فلابد من تعلم امور الدين من عارف ثقه اخذ عن ثقه وهكذا الي الصحابه فالذي ياخذ الحديث من الكتب يسمي صحافيا. والذي ياخذ القرأن من المصحف يسمي مصحفيا ولا يسمي قارئا.
“আলেমদের থেকে শ্রবণ ব্যতীত ইলম শিক্ষা করা যায় না। সুতরাং ইলম অর্জনের পথে এমন একজন বিশ্বস্ত আলেম থেকে ইলম অর্জন করতে হবে, যিনি আরেকজন সিকা (বিশ্বস্ত) আলেম থেকে ইলম অর্জন করেছেন, এভাবে সাহাবীদের পর্যন্ত ইলমের ধারা পেীঁছে যাবে। যে ব্যক্তি কিতাব পড়ে, হাদীস গ্রহণ করে তাকে “সাহাফী” বলা হয়। (তাকে মুহাদ্দিস বলা হয় না)। আর যে ব্যক্তি মাসহাফ থেকে কুরআন গ্রহণ করে তাকে “মাসহাফী” বলা হয়, তাকে ক্বারী বলা হয় না।”
কামালুদ্দিন শামানী এর বিখ্যাত কবিতা-
من يأخذ العلم عن شيخ مشافهةً *** يكن من الزيف والتصحيف في حرمِ
ومن يكن آخذاً للعلم من صحف *** فعلمه عند أهل العلم كالعدم
“যে ব্যক্তি তাঁর শায়েখের নিকট থেকে সরাসরি ইলম শিক্ষা করে, সে বিকৃতি ও জালিয়াতি থেকে পবিত্র থাকে।
আর যে ব্যক্তি কিতাব পড়ে ইলম অর্জন করে, আলেমদের নিকট তার ইলম কোন ইলমই নয়”
আল্লামা শাওকানী (রহঃ) লিখেছেন,
إنَّ إنصاف الرجل لا يتمُّ حتَّى يأخذ كلَّ فنٍّ عن أهله كائناً ما كان
“কোন ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত ন্যায়Ñনিষ্ঠার উপর প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে জ্ঞানের প্রত্যেক শাখায় অভিজ্ঞ লোকদের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করবে।”
আল্লামা শাওকানী (রহঃ) আরও বলেছেন,
وأمَّا إذا أخذ العلم عن غير أهله، ورجَّح ما يجده من الكلام لأهل العلم في فنون ليسوا من أهلها ، فإنَّه يخبط ويخلط
“আলেম যদি অযোগ্য লোকের কাছ থেকে ইলম শিক্ষা করে এবং জ্ঞানের সংশ্লিষ্ট শাখায় পারদর্শী নয় এমন লোকের বক্তব্যকে সে প্রাধান্য দেয়, তবে সে অনুমান নির্ভর এবং অবিমৃশ্যকারী।”[৬] [আদাবুত তলাব ও মুনতাহাল আরাব, পৃষ্ঠা-৭৬] আল্লামা সাখাবী (রহঃ) লিখিত “আল-জাওয়াহিরু ওয়াদ দুরারু” নামক কিতাবে রয়েছে,
“من دخل في العلم وحده؛ خرج وحدَه”
“যে ব্যক্তি একাকী ইলমের পথে প্রবেশ করল, সে একাকী সেখান থেকে বের হয়ে গেল”[৭] [আল জাওয়াহির ওয়াদ দুরার, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৫৮]
সালফে সালেহীনের বিখ্যাত উক্তি হল-
من أعظم البلية تشيخ الصحيفة
“কিতাবকে নিজের উস্তাদ বানান বড় বড় মুসীবতের অন্যতম”
[আল্লামা ইবনে জামাআ রহ. তাযকিরাতুস সামে’ পৃষ্ঠা-৮৭] আবু যুরআ (রহঃ) বলেন,
لا يفتي الناس صحفي , ولا يقرئهم مصحفي
“বই পড়ে কেউ ফতোয়া দিবে না এবং কুরআন পড়ে কেউ ক্বারী হবে না।”
[আল- ফকীহ ওয়াল মুতাফাক্কিহ, পৃষ্ঠা-১৯৪] § ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলন,
من تفقه من بطون الكتب ضيَّع الأحكام[৮] “যে ব্যক্তি কিতাব পড়ে ফকীহ হলো, সে শরীয়তের হুকুমকে জলাঞ্জলি দিল”
[তাযকিরাতুস সামে, ওয়াল মুতাকাল্লিম, পৃষ্ঠা-৮৩
[১] ইউনিটি ইন দ্য মুসলিম উম্মাহ, Click This Link
[২] রাফউল মালাম আন আইম্মাতিল আ’লাম, পৃষ্ঠা-১৮
[৩] আল-ফকীহ ওয়াল মুতাফাক্কিহ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১৫৮
[৪] [أخرجه البخاري১/১৭৪،১৭৫ في كتاب العلم ، ومسلم واللفظ له৪/২৫৮].
[৫] حاشيه الطالب ابن حمدوم علي شرح بحرق علي لامية الافعال
[৬] [أدب الطلب ومنتهى الأرب/৭৬] [৭] [الجواهر والدرر للسخاوي (১/৫৮
[৮] [تذكرة السامع والمتكلم/৮৩
(মুফতী ইজহারুল ইসলাম আল-কাউসারী)
©somewhere in net ltd.