নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মইন আহসান

মইন আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ, এখন এক চলমান মহারহস্য

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৫০

ভিষন কঠিন রকম রহস্যময় দেশের ব্যাপার স্যাপার।

কিন্তু এই মহারহস্যের মহাপরিকল্পক কারা? এর গোড়া কোথায়? এতো এক আওয়ামি লিগের মাথায় কুলুবে না। তবে কি সিআইএ, চানৈক্য অথবা চাইনিজ "Art of War" রচয়িতা "Sun Tzu" এর শিষ্যরা এর মহাপরিকল্পক?

এত বড় ৯৮% রহস্যের নির্বাচন হয়ে গেল। কিন্তু জনতা ভয়ে ঠান্ডা, বিরোধী দলগুলোও কিছু এলোমেলো নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ব্ক্তব্য দিয়ে অক্ষমের মত খালি বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। বোঝা যায় বিরোধী দলগুলো ছত্রভঙ্গ, আর জনতা বিকল্পহিন। যদিও ৯৮% রহস্যের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় জলন্ত প্রমান "ফলাফল" সবার সামনে।

আর কামাল হোসেনতো এক বিশাল জোকে পরিণত হয়েছেন; আজ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান, কাল শপথ নেওয়ার ইচ্ছা, আর প্রতিদিন বিদেশি আব্বুদের কাছে ধরনা, আব্বুরা আমাকে একটু মহাথীর বানিয়ে দেন না। সেই ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকেই তার এই একই খেলা; বার বার কঠিন দাবি, না মানলেও নির্বাচনের পথেই; যেন সবাইকে নির্বাচনে নিয়ে নির্বাচনটাকে জায়েজ করার কন্ট্রাক্ট নিয়েছিলেন তিনি। বদরুদ্দোজা আওয়ামী লিগের সাথে থেকে, আর কামাল হোসেন ঐক্যফ্রন্টের ভেতর "ট্রয়ের ঘোড়া" হয়ে। পুরস্কার স্বরূপ দুজনেই পেয়েছেন দুটো করে সিট, আর দির্ঘদিনের বিশ্বস্ত এরশাদ পেয়েছেন ২২ টি। বেশ ছিমছাম হিসাব নিকাশ। তবে এরশাদের মত কামাল সাহেবেরও আরো একটু বেশী পাওয়ার ইচ্ছা, তাই এখনো দৌড় ঝাঁপ করছেন।

শেষ বয়সে কামাল তুনে কামাল কিয়া ভাই। জনতাকে এত বড় ব্লাফ, এত বড় ধাপ্পা। তাই বোধহয় জনতা সব বুঝে শকে শোকে নির্বাক নিথর।

অন্যদিকে, শেয়ানের উপর শেয়ান, ব্লাফের উপরে ব্লাফ, ট্রাম্পের উপরে ওভার ট্রাম্প।

সামনে আওয়ামী লীগ; দীর্ঘদিন দিনের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় সুক্ষ্ম মাকড়সার জালের মতো এক মহাজাল প্রস্তত; তারপর প্রতিটি সুক্ষ্মাতি সুক্ষ্ম ব্যাপার নজরে নিয়ে, অবিশ্বাস্য টাইমিংয়ে, যাদুকরী দক্ষতায় এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করে আওয়ামী লীগের বিশাল বিজয় নিশ্চিত করা হল। একি এক আওয়ামি লীগের দ্বারা সম্ভব?

তবে মানুষের করা সব কাজে ভুল রয়েই যায়, পরিকল্পনার বাস্তবায়নে অতিউৎসাহে "অতি বিজয়ের" ভুল রয়েই গেল। এর পরিণাম ভবিষ্যতই বলে দেবে।

জনতা শকে নির্বাক, নিথর - WHAT HAPPENED?

কিন্ত, মহাপরিকল্পনাতো ওখানেই শেষ নয়। শেয়ানের ওপর শেয়ানি, ট্রাম্পের উপরে ওভারে ট্রাম্প বাকি আছে না।

চরম রহস্যের নির্বাচনের পরপরই খবরের কাগজগুলো আর সব মিডিয়া রাতারাতি কেমন ভদ্র সুবোধ হয়ে গেল; নাই কোন নির্বাচন বিশ্লেষণ, ভোট জালিয়াতি নিয়ে কথাবার্তাতো দুরের কথা, এতদিন যে সব লেখক সমালোচনা করতেন সুষ্ঠ নির্বাচনের কথা বলতেন, তারা সব আর সংবাদপত্রের পাতায় নেই।

আরো অদ্ভুত ব্যাপার; প্রথমেই বিজয়ের অভিনন্দন জানালেন সিভিল-মিলিটারি আমলা আর পুলিশ!!!
আওয়ামী নেতা কর্মীরা না!!!!!


এরপর, তরিঘরি সংবিধান লঙ্ঘন করে শপথের আর সরকার গঠনের চমক। বেশিরভাগ নতুন মুখ, বেশিরভাগ ব্যাবসায়ী মন্ত্রী পরিষদ।

এবার বেশিরভাগ আওয়ামী লীগারদের শকে শোকে পাথর হ্ওয়ার পালা, পোষ্ট দিতে লাগলেন - WHAT HAPPENED?

এক মহাসুক্ষ্ম আর সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনায় ক্ষমতা অনেকটাই চলে গেল এক আমলা-ব্যাবসায়ি নেক্সাসের হাতে। আমলারাতো নির্বাচনের আগেই যুতসই সব রক্ষা কবচ আইন করে আর আইনপ্রদত্য ডিস্কৃশনারি ক্ষমতা পেয়ে প্রায় সার্বভৌম। এখন অনভিজ্ঞ মন্ত্রীরাতো তাদের হাতের পুতুল।

এই মহাপরিকল্পনা কি এখানেই শেষ? না আরো অধ্যায় আছে? আমারতো মনে হয়, আরো অধ্যায় আছে। এই মহাপরিকল্পনার মহাপরিচালক মহা-আমলাতো চেনা। কিন্তু এই মহাপরিকল্পনার প্রনেতা কারা? এর গোড়া কোথায়?

আমার মনে হচ্ছে এর গোড়া বিশ্ব রাজনীতিতে আঞ্চলিক ও বিশ্বশক্তি গুলির দন্দ্ধে; ভারত, আমেরিকা আর চিনের দন্ধে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্ট্রেটেজিক অবস্থান অবশ্যই এর কারন, তবে কোন অঘোষিত বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ্ আবিষ্কারও এর সাথে যুক্ত থাকতে পারে।

শক্তিগুলো আপাতত যে কোনো ভাবেই ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা চাচ্ছে। তাদের স্বার্থের দন্দ্ধে আপাতত বাংলাদেশের রাজনীতির উপরে কোনো ভরসা না করে, তারা আমলা-ব্যাবসায়ি নেক্সাসকেই বেছে নিয়েছে।

তবে অতি বিজয়ের ভুলটা মহাপরিকল্পনার বিষফোঁড়া হয়ে থেকেই গেল।

এই হতাশাব্যান্চক পরিস্থিতিতে নতুন জনসমর্থিত সক্ষম বিরোধী নেত্রিত্বের উত্থান ছাড়া পরিবর্তন আশা করা যায় না।

তবে এত অপকর্ম, স্বার্থের অন্তর্দন্ধ, অক্ষমতা, অদক্ষতা আর বিদেশি শক্তিগুলোর মাঝে দুরূহ ভারসাম্য রক্ষার ব্যর্থতায় এই আমলা-ব্যাবসায়ি চক্র দ্রুত বিশ্রিঙ্খল ভাবে ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।

কিন্তু আমাদের বাংলাদেশিদের হাতে বেশি সময় নেই। আমরা জাতি ও দেশ হিসাবে তিনটি জীবন মরন সমস্যার মুখমুখিঃ

১) জনসংখ্যা - জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ অচিরেই আমাদের খাদ্য উৎপাদনের কৃষি জমি কমিয়ে আমাদের অসম্ভম্বভ ব্যায়বহুল খাদ্য আমদানি নির্ভর করে ফেলবে এবং মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাবে।

২) ক্লাইমেট পরিবর্তনে সমূদ্র উচ্চতা বৃদ্ধিতে আমাদের দেশের বিরাট এলাকা হারাতে হতে পারে - যার পরিনাম অকল্পনিয়।

৩) প্রায় নিশ্চিত মারাত্মক ভুমিকম্পের ঝুঁকি - যা কিনা দেশের প্রায় ৮০% মানুষকে এফেক্ট করতে পারে।

দূখঃজনক ভাবে স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও আমরা এই মৌলিক সমস্যাগুলি মোকাবেলার জন্য সুশাসন আর গণতন্ত্রের ষ্টারটিং লাইনেই যেতে পারছি না। এই জিবন-মরন সমস্যাগুলোর মোকাবেলা করতে না পাড়লে, আমাদের বাকি সব অর্জনই বৃথা হয়ে যাবে।

অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন যে শেষ দুটো (২ ও ৩) মহা প্রাকৃ্তিক দুর্যোগের মোকাবেলায় আমরা কিই বা করতে পারি। আমার মতামত হচ্ছেঃ আমরা যদি একটা জনগোষ্ঠি হিসাবে এর ব্যাপকতা স্বমন্ধে সচেতন ও সংঘঠিত হই, আমরা অসচেতন ও অসংঘঠিত অবস্থার চেয়ে এই দুর্যোগ অনেক ভাল মকাবেলা করতে পাড়বো। যেমন ধরুনঃ

*ওই দুইটি প্রাকৃ্তিক দুর্যোগের সচেতনতাই আমাদেরকে বুঝিয়ে দেবে যে প্রথমেই আমাদের জনসংখ্যা দ্রুত কমাতে হবে, দরকার হলে চিনের মত "ওয়ান চাইল্ড" পলিসি বাস্তবায়ন করতে হবে।

* প্রায় নিশ্চিত মারাত্মক ভুমিকম্পের ঝুঁকির সচেতনতা আমাদের বুঝিয়ে দেবে যে সব অপরিকল্পিত ও ভুমিকম্প ঝুকিপূর্ন নির্মান কাজ এখনি বন্ধ করে দিতে হবে। দ্রুত নগর, শহর আর গ্রামের জন্য আলাদা আলাদা পরিকল্পিত ভুমিকম্প সহনিয় নির্মান নিতিমালা প্রনয়ন করে তা কঠোর ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে

* ক্লাইমেট পরিবর্তনের সচেতনেতা আমাদের উদবুদ্ধ করবে এই মহাহুমকির মোকাবেলায় সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনা নিতে, পৃথবির অন্যান্য দেশগুলো এর মোকাবেলায় কি করছে তার আলক্ষ্যে।

এই জিবন-মরন সমস্যা তিনটির ব্যাপারে সার্বজনিন সচেতনেতা ছাড়া আমরা বাংলাদেশ বাচাতে পারবো না, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কোন বাংলাদেশ রেখে যেতে পারবো না। জাতি হিসাবেই নিশ্চিন্হ হয়ে যাব।

আমদের হাতে সত্যিই সময় নেই, দ্রুতই আমাদের এই আমলা চক্রান্ত আর গত ৪৭ বছরের ভারত-পাকিস্থান প্রক্সি রাজনিতির চক্র থেকে বেরিয়ে তৃ্নমূল পর্যন্ত গনতন্ত্র আর দুর্নিতিমুক্ত সুশাসন করে সংঘটিত হতে হবে জিবন-মরন সমস্যার মোকাবেলায়। ৪৭ বছরের অবহেলায় অবশ্য করনিয় কাজের লিষ্ট অনেক বড় হয়ে গেছে, কিন্ত এ ছাড়া আমাদের জাতি হিসাবে বাচার উপায় নেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.