নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শ্রীনগরে শতভাগ পাশের ছোবল:-এর ছেয়ে শীক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা করুন

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৩


মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় এর আগে পরপর ৭ বছর কেউ ফেল করেনি! এবারও নিশ্চিতভাবে বলা যায় কেউ ফেল করবে না। কারণ এখন মুন্সীগঞ্জ জেলাব্যাপীই চলছে বিস্ময়কর শতভাগ পাশের মচ্ছব। এভাবে শিক্ষার্থীদের ধ্বংস করে দেয়ার চেয়ে তাদের গুলি করে হত্যা করা উত্তম, মন্তব্য করেছিলেন একজন প্রধান শিক্ষক নিজেই। আমার সামর্থ নেই জেনেও কয়েকজন সচেতন শিক্ষক আমাকে বারবার অনুরোধ করেছেন- ‘কিছু একটা করেন, কিছু লিখেন, এভাবে চলে না, চলা উচিৎ নয়’। এই হাহাকার আমার হৃদয় বিদীর্ণ করে অথচ অনেকেই এই হৃদয়বিদারক বুঝাপড়ায় উচ্ছ্বসিত।
শ্রীনগরে শতভাগ পাশের নেপর্থে রয়েছে- ইউনিপেটুইউ নামে এক বিলুপ্ত হওয়া হায়হায় কোম্পানী। এর উপজেলা প্রধান ছিলেন একজন শিক্ষা কর্মকর্তা। সারা বছর শিক্ষকদের নিয়ে অবৈধ এমএলএম ব্যবসা করতে গিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছিলেন- একটি খুনের মামলার আসামী ওই শিক্ষাকর্মকর্তা। তিনিই পাশের হার বাড়াতে প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে শতভাগ পাশের নকশা আবিষ্কার করেন। প্রত্যেক শিক্ষককেই নির্দেশ দেয়া হয়- বহুনির্বাচনী প্রশ্ন, শূন্যস্থান পূরণ ও সত্যমিথ্যা, এক কথায় উত্তরের মতো প্রশ্নগুলোর উত্তর সবাইকে বলে দেয়ার। কেউ যেন ৫০ এর কম নাম্বার না পায় তা নিশ্চিত করা। প্রত্যেক শিক্ষককেই বাধ্য করা হয়, এই অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে। এরপরেও দেখা যেত অল্প কিছু শিক্ষার্থী ফেল করে ফেলছে। নেয়া হতো তাদের খাতায় লিখে দিয়ে পাশ করানোর কৌশল । এখনো একই কৌশল রয়েছে। এখনতো অন্য থানায় খাতা দেখা হয়। কিন্তু খবর পেয়ে এক থানার নেতারা ছুটেন অন্য থানায়- কোনভাবেই ফেল দেখানো যাবে না। পাশ করানোর সব পথ বাদ দিয়ে তারা ছুটছেন এমন এক পথে যেখানে শিক্ষার্থীদের অন্তত পড়তে হয় না, মেধার বিকাশ ঘটে না, চুরির পথ শিখতে বাধ্য হয়। এক শিক্ষক বন্ধু বললেন, গণিত পড়াতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ির অংক করে আনার জন্য চাপ দিলে তারা উল্টো বলে, ‘স্যার এতো চাপাচাপি করেন ক্যান, পরীক্ষার সময়তো সবই বলে দিবেন’। লজ্জায় ওই শিক্ষক এর কোন জবাব দিতে পারেননি।
এবার পঞ্চম শ্রেণির গণিত পরীক্ষার কথাই বলি। প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে কিছু বলবো না- ওখানে আইনগত ঝামেলা রয়েছে। গণিতে ২৪ নাম্বারের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন থাকে ২৪টি। অনেক শিক্ষকই বলেন, এই ২৪টি প্রশ্নের সবগুলোই বলে দিতে হয়। কোন হলে কোন শিক্ষক যদি একটির ভুল উত্তর বলে দেয় তাহলে পুরো হলের সবাই ওই প্রশ্নটির ভুল উত্তরই দেয়। কেউ ভুল শুনে দুই-একটি প্রশ্নের ভুল উত্তর দিয়ে দেয়। এখানে অন্তত ২২-২৪ নাম্বার পাওয়া যায়। এর পরে থাকে ১০ নাম্বারের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর। এগুলোও হলে বলে দেয়া হয়। এখানেও শোনার ভুল ও লেখার ভুল হয়ে থাকে। যেমন প্রশ্ন এসেছে নিঃশেষে বিভাজ্যের ক্ষেত্রে ভাজক নির্ণয়ের সূত্র কি? উত্তর হবে: ভাজ্য / ভাগফল=ভাজক। কোন ছাত্র লিখেছে বাজ / বাকফল, কোন ছাত্র লিখেছে বাগ / বগফল। আরেকটি প্রশ্নের উত্তর হবে ক্রয়মূল্য। শিক্ষার্থীরা অনেকে অনেকভাবে বানান লিখেছে; কেউ লিখেছে করমুল। ৬০ ডিগ্রী লিখতে গিয়ে কেউ লিখেছে ৬০০ কেউ ৬৪ এর মতো করে। শ্রেণি ব্যবধান কি? এর সঠিক উত্তর বিবিধ ভুল বানানে সঠিক উত্তর শতভাগ শিক্ষার্থীই লিখেছে। শতকরা চিহ্নটি অনেক শিক্ষার্থীই উল্টো করে লেখে। অনেক ক্ষেত্রে সব শিক্ষার্থী একই ভুল করে। এসব বিবেচনা করলেই বুঝা যায় শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা ও খাতায় লেখা আসমান-জমিন পার্থক্য। যে শিক্ষার্থী ভাগ ও ভাগফল বানান জানে না সে যদি এখানে শতভাগ নাম্বার পায় সেটা অযৌক্তিক বটে। আমার মেয়েটি প্রত্যেকটি পরীক্ষা দিয়েই কান্নাকাটি করতো, ওকে বাধ্য করা হতো স্যারদের কথা অনুযায়ী লিখতে। ওর খাতা তাড়াতাড়ি শেষ করার জন্য চাপ দিতে। মূল খাতাটি লেখা হলেই দিয়ে দিতো অন্যদের কাছে যেন তারা দেখে লিখতে পারে। অনেক শিক্ষককেই দেখা যায় ভাল শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে দেখে তা অন্যদের বলে দিতে। ফলে এরশাদ জামানার মতো বাইরে থেকে নকল সাপ্লাই দিতে হয় না, শিক্ষকরা নিজেরাই সব সমস্যার সমাধান করে দেন। এতে একজন শিশু কি শিখছে? সারা জীবন কি সে শিক্ষকদের সম্মান করতে পারবে? শিক্ষার প্রতি তার কি ঘৃণা জন্মাবে না? †স কি বিবেকের দংশনে নীল হবে না? একটু ভাববেন কি?

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪০

আসিফ হাওলাদার বলেছেন: ঘৃণ্য কার্যকলাপ!

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৪

মুজিব রহমান বলেছেন: ঘৃণ্য কার্যকলাপ অবশ্যয়ই, এর থেকে রেহাই দরকার।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৩

ব্লগার মুস্তাকিম বলেছেন: শুনে মন খারাপ হয় , কিন্তু কিছুই করা যাইনা

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৬

মুজিব রহমান বলেছেন: এসব বিষয়ে কাউকে বলার মতো কেউ দেশে নেই বলেই মনে হচ্চে।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৪

হাসান মাহামুদ সাগর বলেছেন: পুরা শিক্ষা ব্যবস্তায় গলদ ,জ্ঞান পাশ করলে বাড়েনা অর্জন করে নিতে হয় ।এইটা জানা উচিত শিক্ষা কর্মকর্তা হাবলু কীটের ।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৭

মুজিব রহমান বলেছেন: এ পরিক্ষা আগে বন্ধ করতে হবে।

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৯

তিক্তভাষী বলেছেন: অবিশ্বাস্য!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.