নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থানের পরিণতি কি?

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪৩

আমাদের কাছে একটি নজির আছে। জার্মানিতে হিটলারের উত্থান ছিল এমন। তারা জনপ্রিয়তা দিয়ে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল। শেষ পরিণতিটা ছিল এতোটাই ভয়ঙ্কর যে, হিটলারের আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন পথ খোলা ছিল না। হিন্দু জাতীয়তাবাদকে উস্কানি দিয়ে মৌলবাদী বিজেপিকে ক্ষমতায় আনেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি একটি যুদ্ধের খেলা খেলে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়ে, উগ্র জাতীয়তাবাদকে জাগিয়ে আবারো ক্ষমতায় আসেন। তারা সেই অস্ত্র আরো শাণিত করেছে। পাকিস্তানকে যুদ্ধে আগ্রহী করে তুলতে ব্যর্থ হয় মোদি। তাদের হাতে খোলা রয়েছে দ্বিতীয় পথ- রাষ্ট্রের ভিতরেই সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে ক্ষমতাকে পোক্ত রাখা। অরুদ্ধতি রায় যাকে বলেছেন, ‘ডিভাইন এন্ড রুল নীতি’। বৃটিশরাও এই খেলা খেলেছে। হিন্দু জাতীয়তাবাদকে উচ্চ আসনে নিতে তারা কিছু কাজ করেছে-
 মহাকাব্যের রামকে তারা বাস্তবের চরিত্র বানিয়ে অযোধ্যাকে প্রকৃত রামের জন্মভূমি বানিয়েছে। আদালতকে বায়াসড করে একটি হাস্যকর রায় নিয়েছে। দীর্ঘদিনের মসজিদকে অপসারণ করতে সক্ষম হয়ে সেখানে রাম মন্দির বানানোর পথ সুগম করেছে। আদালতই বলেছে, বাবরি মসজিদের নিচে রাম মন্দির থাকার কোন প্রমাণ নেই।
 গরুকে দেবতা হিসাবে উচ্চ আসনে নিয়ে ইতোমধ্যে গোরক্ষার নামে অন্তত ৪৪টি হত্যাকাণ্ড তারা ঘটিয়েছে। গরুর মূত্রকে তারা সর্বরোগের মহৌষধ বানিয়েছে। এর প্রভাব সারা বিশ্বের হিন্দুদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এমনকি সেই ধারাবাহিকতায় আমেরিকায় গোবরের কেক বিক্রি হচ্ছে। গরু নিয়ে কৃষকরা পড়েছে বিপদে। অথচ শাস্ত্রই প্রমাণ করে একদা গরু ছাড়া যজ্ঞ হতো না।
 উড়োজাহাজ, ক্ষেপণাস্ত্র, শল্যচিকিৎসা ইত্যাদি তারাই পৃথিবীতে সূচনা করেছিল বলে হাস্যকর প্রচার দিচ্ছে। মহাকাব্যের ঘটনাকেই তারা বাস্তবে নিয়ে এসেছে। ফলে ভারতে বিজ্ঞানশিক্ষার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং ধর্মীয় শিক্ষাকেই প্রাধান্য দিবে। সম্প্রতি বিভিন্ন ভণ্ড বাবাদের বিস্তর প্রভাব তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
 সর্বশেষ তারা মুসলিমদের বিতারণের বিভিন্ন উদ্যোগ দেখছি । এনআরসি বা সিএবি সবই সে উদ্দেশ্যেই করা। ভারতে বসবাসকারী ২০ কোটি মুসলিমকে বিতারণ করা সম্ভব নয়। পাকিস্তান ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে তাদের দেশ কোন ভারতীয় মুসলিমকে গ্রহণ করার সামর্থ্য রাখে না। বাংলাদেশও সেটা করতে পারবে না। আমরা ১১ লক্ষ রুহিঙ্গা নিয়েই বিপাকে পড়েছি।

তাদের এসব কর্মকাণ্ড সর্বোচ্চ তাদের আরো একবার ক্ষমতায় রাখতে সক্ষম হবে। কিন' ততদিনে ভারতের অবস্থা আরো সুচনীয় হয়ে পড়বে। ইতোমধ্যেই তাদের প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৪.৩ এ। এভাবে চলতে থাকলে এ প্রবৃদ্ধি আরো নেমে যাবে। মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাবে। বিজেপির জনপ্রিয়তা কমবেই। তখন বিজেপির প্রচেষ্টা থাকবে ভারতজুড়ে দাঙ্গা লাগানো। সেটা করতে গেলে কোটি কোটি লোক শুধু মৃত্যুবরণই করবে না, ভারত জড়িয়ে যাবে এক বিধ্বংসী যুদ্ধে। পরিণতি সেই হিটলারের নাৎসিবাহিনীর মতোই হবে। ভারত ভেঙ্গে যেতে পারে জার্মানির মতোই। সে ভাঙ্গন জোড়া লাগবে না সহজে। বৃহাদাকার ভারত প্রতিবেশি কোন রাষ্ট্রের জন্যই প্রীতিকর নয়। প্রভূসূলভ আচরণ করছে সকল রাষ্ট্রের সাথেই। ফলে ভেঙ্গে যাওয়াটাও প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোর জন্য মঙ্গলজনকই হবে। আবার ভারতের রাজ্যগুলো ক্ষতিগ্রস' হলে তার প্রভাব পড়বে প্রতিবেশি দেশগুলোর উপর। মায়ানমার আজ ১১ লক্ষ রুহিঙ্গাকে বিতাড়িত করে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে নিন্দিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা উঠার পরে আরো চাপে পড়েছে তারা। ভারত যেদিকে যাচ্ছে তাতে, তারাও মুসলিমদের বিতাড়ণ করার চেষ্টা করবে। সেটা সফল হবেও না, হলেও তারা নিষ্কৃতি পাবে না।

ভারতে হিন্দুদের মধ্যেই বহু মত-পথ রয়েছে। কেউ শৈব, কেউ শাক্ত, কৈউ বৈষ্ণবই কেবল নয়। সেই আদিকাল থেকেই এই বিভাজন। বাংলায় কোথাও দুর্গা পূজা আবার কম হলেও হয় অসুর পূজা। আবার বাংলার বাইরে দুর্গা পূজার প্রচলনই নেই। উত্তর ভারতে রামের পূজা আবার দক্ষিণ ভারতে হয়ে থাকে রাবনের পূজাও। একেশ্বরবাদের ধারণাও ভারতে প্রাচীন। শংকরাচার্য নিয়ে এসেছিলেন এ ধারণা। ব্রাহ্ম ধর্মও একেশ্বরবাদী। আবার বেদ বিরোধী বৌদ্ধ ধর্মের প্রবল প্রভাবও ভারত দেখেছে। সেই ভারতবর্ষের উপর মোদিই সব চাপিয়ে দিবে সেটা সহজ নয়। মোদির প্রতারণা ও কারসাজিও ভারতবাসী বুঝতে পারছে। ইতোমধ্যেই সারা ভারতে আন্দোলন দানা বেধেছে। পূর্ব ও দক্ষিণসহ বড় বড় শহরে, বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছে। ভারতে শ্লোগান উঠেছে- ‘হিন্দু মুসলমান ভাই ভাই, মোদিকে বাই বাই’। জয় হোক শান্তিকামী ভারতবাসীর! মৌলবাদ, ধর্মান্ধতা, ধর্মীয়-উগ্রজাতীয়তাবাদ নিপাত যাক!
মোদির পতনের ছবিটি বাস্তবে ঘটলেও এটি এখানে প্রতিকি।
সম্প্রতি ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি ঘাট পরিদর্শনের সময় সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে আচমকা পা পিছলে পড়ে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:


অনেক বাংগালী ধর্মীয় অনুশাসনে দেশ চালনার পক্ষে; ভারত সেটা একটু আগে শুরু করেছে; ভারতেরটা ভালো লাগছে না?

২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:১৪

পুকু বলেছেন: ভারতীয়দের মোহভ্ঙ্গ হতে চলেছে খুব তাড়াতাড়ি।সংখাগুরু ভারতীয়রা কখনোই ধর্মান্ধ নয়।তারা জীয়ো অর জীনে দো পলিসীতে বিশ্বাসী।বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরী করার উদ্দেশ্যে কখনোই জনগণ বিজেপীকে ভোট দেয়নি।কংগ্রেসের ভ্রষ্টাচার থেকে তিতিবিরক্তি হয়ে বিজেপীকে ভোট দেয়।কারণ কোনো রাস্তা ছিল না তাদের কাছে।থা্র্ডপার্টির নাম নিয়ে যারা একই ছাতার তলায় এসেছিল তারা নির্লজ্জ বেহায়া কিছু রাজনৈতিক দল ও নেতা।জনগণের সেই তিক্ত অনুভব এর আগে হয়েছে।অতএব বিজেপীকে ভোট দওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা ছিল না।ওভারঅল পারফ্মেন্সও মোটামুটি ভালই ছিল গত পাঁচ বছরএবং হয়তো সেই জন্য দ্বিতীয়বারের সুযোগ দিয়েছিল।তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিজেপীকে কোথায় নিয়ে যাবে সেটা সময় বলবে।

৩| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: এই আধুনিক যুগে এসে মানুষ কেন এরকম করবে। কেন শান্তি থাকবে না।

৪| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:২২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
এখনো ভারতীয় মুসলিমরা পাকি দেশের মুসলিমদের চেয়ে ভাল পজিশনে আছে।
বাক স্বাধীনতাও বেশী।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৫

মুজিব রহমান বলেছেন: এক গরুকাণ্ডেই সাম্প্রতিক ভারতে প্রায় অর্ধশত মানুষ খুন হয়ে গেল। পশ্চিমবঙ্গেই সাচার কমিশনের রিপোর্টে দেখলাম মুসলিমরা সরকারি চাকরি করে মাত্র ২ শতাংশ। বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে দেয়া হল কোন অজুহাত ছাড়াই। আদালতও বলেছে ওখানে রাম মন্দির ছিল না। মসজিদ ভাঙ্গার কোন বিচার হয়নি। গোধরার মুসলিম হত্যারও কোন বিচার হয়নি।

৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৯

জাহিদ হাসান বলেছেন: ভারত কঙ্গো মার্কা রাষ্ট্র হবে ভবিষ্যতে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.