নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পর্ব-৮: বাংলা সাহিত্যের বৃহদাকার উপন্যাস

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৭


বাংলা সাহিত্যে বৃহৎ উপন্যাস একেবারেই হাতে গোনা। ১৫ বাই ২৩ সেন্টিমিটারের কমপক্ষে ৫শ পাতার একটি উপন্যাসকে বৃহদাকৃতির বলা যায়। বাংলাদেশে এই ধরণের বই রয়েছে সম্ভবত দুইটি। একটি লিখেছেন শামসুদ্দিন আবুল কালাম- ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’। আরেকটিকে আবার তিনখন্ডকে অখন্ড ধরে নিতে হবে। ইমদাদুল হক মিলনের এই উপন্যাসটির নাম ‘নুরজাহান’। অবয়বের দিকে এবং জনপ্রিয়তায় ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ উপন্যাসের চেয়ে ‘নুরজাহান’ অনেক এগিয়ে। নুরজাহান লিখে মিলনও এগিয়েছেন অনেক পথ। ‘নুরজাহান’ তাকে আনন্দ পুরষ্কার এনে দিয়েছে। সিলেটের এক তরুণীকে ফতুয়া দিয়ে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার কাহিনী, লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন বিক্রমপুরের ক্যানভাসে। ‘নুরজাহান’ শুধু প্রতিবাদই নয়, ‘নুরজাহান’ গ্রামীণ সমাজের শুদ্ধতম চিত্রণ। বাংলার গ্রামীণ জীবণকে এভাবে বৃহৎ উপন্যাসে আর কেউ তুলে আনেন নি।

পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালী লেখকদের বেশ কয়েকজনই বৃহদাকৃতির উপন্যাস লিখে খ্যাতি অর্জন করেছেন। এটা শুরু হয়েছিল বিমল মিত্রের হাতে। বিমল মিত্রের চারটি বৃহৎ উপন্যাস- ‘আসামী হাজির’, ‘বেগম মেরী বিশ্বাস’, ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ এবং ‘সাহেব বিবি গোলাম’। এই চারটি উপন্যাসের মধ্যে ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ সবচেয়ে বড় এবং অনেকের কাছে সেরা। আমার কাছে সেরা মনে হয়েছে ‘সাহেব বিবি গোলাম’ উপন্যাসকে। উপন্যাসটি একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়া শুরু করি। যখন শেষ করি তখন রাত দুইটা। একটানা এ ধরনের বই পড়তে ২০ ঘণ্টা লেগে যায়। ছাত্রাবস্থায় হোস্টেলে থাকলেই এই ধরনের বই একটানা পড়া সম্ভব। অন্যথায় এক সপ্তাহ বা একমাসও লেগে যায়। একটানা ধরে রাখার ক্ষমতা উপন্যাসটিরও থাকা চাই। ‘সাহেব বিবি গোলাম’ এর সেই ক্ষমতাটা ছিল এর সাথে ছিল পড়ার আগ্রহ। একজন গোলামের তার সাহেবের কন্যার সাথে বাল্যকালে ঘটনাচক্রে বিয়ে হওয়া কিন্তু দীর্ঘকাল সম্পর্ক না থাকা এবং অজ্ঞাত থাকা। কন্যা(বিবি)টির অন্যত্র প্রেম ও পরিণয়ের আগে বিয়ের কথা ফাঁস হলে গোলাম ভুতোনাথ বুঝতে পারে সে নিজেই সেই লোক- অতুল। তাকেই দায়িত্ব দেয়া হয় খুঁজে বের করতে। সে নিশ্চিত হয় কিন্তু ফিরে এসে প্রকাশ করে না। চকচকে কাহিনী।

বৃহৎ উপন্যাস লিখে পশ্চিম বঙ্গের আরো অন্তত ১১জন লেখক আলোচিত হয়েছেন। এরা হলেন- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সঞ্জিব চট্টোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব গুহ, আবুল বাশার, বাণী বসু, আশাপূর্ণ দেবী, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, সুচিত্রা ভট্টাচার্য ও ভগীরথ মিশ্র। শীর্ষেন্দুর আলোচিত বৃহৎ উপন্যাস চারটি- ‘পার্থিব’, ‘পারাপার’, ‘মানবজমীন’ এবং ‘দুরবীন’। ‘পার্থিব’ উপন্যাসটির কথা শুনি ১৯৯৫ সালে। খুব আলোচিত হলেও এটি পড়ি তাঁর অন্য তিনটি উপন্যাস পড়ার অনেক পরে। ‘পার্থিব’ উপন্যাস জুড়ে সবচেয়ে বেশি খুঁজে পাওয়া যায় শীর্ষেন্দুকে। তার ধর্ম বিশ্বাস, তার আশ্রমে যাওয়া, পৃথিবী নিয়ে তার নিজের চিন্তাগুলোই তুলে এনেছেন এখানে। ‘মানবজমিন’ শহুরে ভালবাসা এবং টানাপোড়েনের গল্প। এটি ‘পার্থিব’ এর চেয়েও বেশি জনপ্রিয় এবং বেশি আকর্ষণীয়। পশ্চিমবঙ্গের দুটি উপন্যাস থেকে বাংলাদেশের দুটি পত্রিকার নাম হয়েছে। তার একটি ‘মানবজমিন’ এবং অন্যটি ‘প্রথমআলো’। শীর্ষেন্দুর সবচেয়ে আকর্ষণীয় উপন্যাস ‘দুরবীন’। একটি রাজনৈতিক উপন্যাস। ‘পার্থিব’ ‘পারাপার’ এবং ‘মানবজমিন’ উপন্যাস কয়েকটি পরিবারের সমন্বিত কাহিনী। কিন্তু দুরবীন উপন্যাসে রয়েছে একই পরিবারের তিন সময়ের, তিন পুরুষের দাদা-পিতা-পুত্রের কাহিনী। একটি বর্তমান সময়ের নায়ক ধ্রুব এবং তার মন্ত্রী বাবার এবং আরেকটি ধ্রুবর বাবার এবং তার বেড়ে উঠার কাহিনী, আরেকটি জমিদার দাদার কাহিনী। তিনটি ধারাই আকর্ষণীয়, তবে বর্তমান ধারাটিই বেশি আকর্ষণীয়। এতো নামডাকের পরেও এগুলো বাংলা সাহিত্যের প্রধান উপন্যাস হয়ে উঠেনি। ‘পার্থিব’ এর কথাই ধরি- বহুবিচিত্র চরিত্র। এখানে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখি দুটি চরিত্রের মধ্যেই শীর্ষেন্দুকে খুঁজে পাওয়া যায়। ফলে চরিত্রগুলো নিজস্বতা হারিয়ে ফেলে। চরিত্রগুলোর মধ্যে ঢুকে গিয়ে ঐ সময়ের মধ্যে ঢুকা হয় না। অর্ধেক পড়ে আর না-পড়লেও মনে হবে না একটি মহৎ উপন্যাস অর্ধেক পড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। তাঁর ‘চক্র’ উপন্যাসটি অখণ্ড বিবেচনা করলেও একটি বৃহৎ উপন্যাস। ইমদাদুল হক মিলনের মতো শীর্ষেন্দুর পৈত্রিক বাড়িও বিক্রমপুরে। বিক্রমপুরের আরেকজন লেখক বড় আকৃতির একটি উপন্যাস লিখেছেন, তিনি আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। তাঁর ‘সোনালী হরিণ নেই’ এক অনন্য উপন্যাস এবং জনপ্রিয়ও। এখানে তিনি দেখিয়েছেন অর্থবৃত্ত বা সম্মানের সোনার হরিণের পেছনে ছুটে সফল হলেই সোনার হরিণ পাওয়া যায় না।

সমরেশ মজুমদার সর্বদাই আকর্ষণীয় তার শিলিগুড়ি এলাকার গল্পের কারণে। তাঁর ‘কালবেলা’, কালপুরুষ’ এবং ‘গর্ভধারিণী’ ত্রৈয়ী উপন্যাস। তিন মলাটের এই তিনটি উপন্যাসই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আলাদাভাবে এই তিনটি উপন্যাসকে বৃহৎ উপন্যাস বলা যাবে না। এগুলো একটিও ৫শ পৃষ্ঠার উপন্যাস নয়, মাঝারি দৈর্ঘের উপন্যাস। কিন্তু একত্র করলে একটি অসাধারণ ত্রৈয়ী। তার আরেকটি উপন্যাস ‘সাতকাহন’। উপন্যাসটি দুটি আলাদা খন্ডে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে একমলাটে আনাতে বৃহৎ উপন্যাস হিসাবে পরিগণিত হবে। উপন্যাসের কাহিনী একটি মেয়েকে নিয়ে এগিয়েছে। তার নাম দিপাবলী। শিলিগুড়ির কাহিনী। আসলে শিলিগুড়ির প্রতি আকর্ষণও তৈরি হয় দিপাবলীর জন্য। শিলিগুড়ি গিয়েই একটি মজার ঘটনা ঘটে। শিলিগুড়ি বাসস্ট্যাশনে নেমেই আমার দিপাবলীর কথা মনে হয়। সামনে বড় একটি সাইনবোর্ডে দেখি একটি লবনের বিজ্ঞাপন। দিপাবলী লবন। খুব মজা লেগেছিল। ‘সাতকাহন’ এর প্রথম পর্ব পরে- অসম্পূর্ণ মনে হয়েছিল। একটি তীব্র আকাঙক্ষা এবং অতৃপ্তি ছিল, এরপর দিপাবলীর কি হল? লেখক পাঠকদের অতৃপ্তি ঘোচাতে সাতকাহনের দ্বিতীয় খন্ড বের করেন। এতে পাঠক প্রথম পর্বের আকর্ষণীয় দিপাবলীকে আর খুঁজে পায়নি।
ঢাউস তিনটি উপন্যাস লিখেছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ও- ‘পূর্ব-পশ্চিম’, ‘প্রথমআলো’ এবং ‘সেই সময়’। সুনীল প্রাধান্য দিয়েছেন রাজনীতিকে। তার উপন্যাসে সত্যিকারের কিংবদন্তিরা উঠে এসেছেন। সেখানে যেমন রবীন্দ্রনাথ রয়েছেন, নজরুল রয়েছেন আবার আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব থেকে এম.আর.আকতার মুকুল বা আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরবিক্রম রয়েছেন। তাঁর পূর্বপশ্চিম উপন্যাসের নামকরণের মানে হল, পূর্ববাংলা এবং পশ্চিম বাংলা। অবশ্য তার উপন্যাসে পূর্ববাংলার পূর্বের ত্রিপুরাও রয়েছে।

বুদ্ধদেব গুহ ‘বাবলী’ লিখেই বেশি খ্যাতিমান হয়েছেন। তবে তার একমাত্র বৃহৎ উপন্যাস ‘মাধুকরী’ অসাধারণ। বুদ্ধদেব গুহ সবচেয়ে ভাল লিখেন জঙ্গলের কাহিনী। ‘মাধুকরী’ জঙ্গলেরই কাহিনী। বাবলী নয় ‘মাধুকরী’ই তার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। মাধুকরী‘র পৃথু ঘোষ চেয়েছিলেন বড় বাঘের মতো বেঁচে থাকতে। সেটা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। পৃথু উপন্যাসের মাঝপথেই পা হারায়। সমাজের অপাংতেয় কয়েকজনের নিকট নায়ক হলেও নিজ পরিবারেই সে ছিল অপাংতেয়। মধ্যপ্রদেশের জংগলই এই উপন্যাসের উপজীব্য। উপন্যাসের শেষে তাকে সেই প্রিয় জংগলময় এলাকাই ছাড়তে হয়। এই উপন্যাসের জংগল যেমন আকর্ষণ আর জংগলের আকর্ষণ পৃথু ঘোষ। বাংলা সাহিত্যের এক অসাধারণ চরিত্র। আবুল বাশার ‘কালো আগুন’, ‘ফুল বউ’ লিখে আলোচিত হয়েছেন। তার একটি বৃহৎ উপন্যাস ‘অগ্নিবলাকা’। সঞ্জিব চট্টোপাধ্যায়ের ‘লোটাকম্বল’ বহুল পঠিত ও জনপ্রিয়। এটি হাসি, হিউমার, ঘাত-প্রতিঘাত, দুঃখ, সুখের টানাপোড়েনে তৈরি শাশ্বত জীবনবেদ। অগণিত চরিত্রের বহুবর্ণরঞ্জিত এক বিশাল ক্যঅনভাস। ভেঙ্গে যাওয়া যৌথ পরিবারের এক নিঃসঙ্গ পৌঢ় এই উপন্যাসের সম্পদ। যার দুঢ় ব্যক্তিত্ব এবং অসম্ভব আদর্শ-নিষ্ঠা। তার যুবক সন-ানের মধ্যে সঞ্চারিত করতে চান জীবনের শ্রেষ্ঠ গুণ এবং মূল্যবোধ। নারী লেখিকাদের মধ্যে অনেকে বৃহৎ আকৃতির উপন্যাস লিখেছেন। বাণী বসু লিখেছেন ‘মৈত্রেয় জাতক’, আশাপূর্ণা দেবী লিখেছেন ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ ও ‘সুবর্ণলতা’, সুচিত্রা ভট্টাচার্য লিখেছেন ‘কাছের মানুষ’ উপন্যাস। এদেও মধ্যে ‘কাছের মানুষ’ ও ‘মৈত্রেয় জাতক’ কিছুটা বেশিই জনপ্রিয়তা পেছেছে। এছাড়া জাদু বিদ্যা নিয়ে ভগীরথ মিশ্র একটি বৃহৎ উপন্যাস লিখেছেন. নাম - ‘ঐন্দ্রজালিক’। এটি লিখতে ভারতবর্ষের বিশিষ্ট জাদুকরদের সহযোগিতাও তিনি নিয়েছেন। লেখক যাযাবর বিখ্যাত তার ‘দৃষ্টিপাত’ উপন্যাসের জন্য। এটি একসময় খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ইন্দ্র মিত্র অন্যরকম একটি বই লিখেন, অনেকটা উপন্যাসের ঢঙে। তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে নিয়ে লিখেছেন, ‘করুণা সাগর বিদ্যাসাগর’।

বৃহদাকার উপন্যাসে সুনীল লিখেছেন কিংবদন্তীদের নিয়ে, সমরেশ শিলিগুড়ির চা বাগান-টিলা, শীর্ষেন্দু বেছে নিয়েছেন কলকাতাকেই। বুদ্ধদেব বেছে নিয়েছেন আরো ভিন্নতর- মধ্যপ্রদেশের বনাঞ্চল। বেশিরভাগই লেখা হয়েছে কলকাতার শহরকে কেন্দ্র করে। এই উপন্যাসগুলোর বাইরেও আরো কিছু জনপ্রিয় বৃহৎ বা মাঝারি উপন্যাস রয়েছে। সত্যজিতের ‘ফেলুদা’ সমগ্রকে একত্রিত করলেও অনেক বড় বই। কিন্তু এটাকে একটি উপন্যাস হিসাবে চালানো যায় না। বাংলাদেশের জনপ্রিয়তম উপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ বৃহৎ কোন উপন্যাস লিখেননি। মাঝারি আকৃতির তিন/চারটি উপন্যাস তার রয়েছে- ‘বাদশাহ নামদার’, ‘মধ্যাহ্ন’ এবং ‘জোৎস্না ও জননীর গল্প’ ফন্ট কমালে ও কাগজের আকৃতি বাড়ালে আরো ছোট উপন্যাস হয়ে যাবে। তার ‘হিমুসমগ্র’ কিংবা ‘মিছির আলি সমগ্র’ তো ছোট-ছোট উপন্যাসের সংকলনই। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অখণ্ড শ্রীকান্ত, ‘নিস্কৃতি’ ও ‘পথের দাবী’ জনপ্রিয় হলেও এগুলো মাঝারি আকৃতির উপন্যাসই। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গোরাও তাই। শহিদুল্লাহ কায়সার লিখেছেন সংসপ্তক, সেলিনা হোসেন তিনখন্ডে লিখেছেন, ‘গায়ত্রী সন্ধা’ শংকর লিখেছেন, ‘চৌরঙ্গী’ এ ধরনের মাঝারি আকৃতির বই বাংলা সাহিত্যে অহরহই। এদের মধ্যে সংসপ্তক ও চৌরঙ্গীকে বৃহৎ উপন্যাসের কাতারেও ফেলা যায়।

বাংলা সাহিত্য বড়-এর ক্ষেত্রে বরাবরই পিছিয়ে। মহাকাব্যের কথাই ধরা যাক। এখানে একটি মাত্র সফল মহাকাব্য মাইকেল মধুসুধন দত্তের ‘মেঘনাদবধ’। আরো কয়েকটি মহাকাব্য রচিত হলেও ওগুলো অনেকটা কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়ার মতোই অবস্থায় রয়েছে। অনেকে অবশ্য কায়কোয়াবাদের ‘মহাশ্মশান’ মহাকাব্যকে হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে ফেলতে চাইবেন না। মহাকাব্যের মতো মহা উপন্যাসেও সমৃদ্ধ হয়ে উঠেনি বাংলা সাহিত্য।
বাংলা সাহিত্যে এই অল্প কয়েকটি বৃহৎ উপন্যাস জনপ্রিয়তা পেলেও এর একটিও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত হয়নি। পৃথিবী জুড়ে প্রকাশিত আলোচিত বৃহৎ আকৃতির বইগুলোর মতো এগুলো হয়তো কখনো ক্লাসিকের মর্যাদাও পাবে না। এরপরেই এই বৃহৎ উপন্যাসগুলো বাংলা সাহিত্যের অনন্য সম্পদ।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: আসামী হাজির,
পার্থিব’, ‘পারাপার’, ‘মানবজমীন’ এবং ‘দুরবীন’
কালবেলা’, কালপুরুষ’ এবং ‘গর্ভধারিণী, ‘সাতকাহন,
‘পূর্ব-পশ্চিম’, ‘প্রথমআলো’ এবং ‘সেই সময়’
‘লোটাকম্বল’
মাধুকরী
বাদশাহ নামদার’, ‘মধ্যাহ্ন
কাছের মানুষ

এই কয়টাই পড়েছি শুধু

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:০৩

মুজিব রহমান বলেছেন: কম পড়েন নি। আসলে বড় বইগুলো পড়ার জন্য অনেক সময় দরকার। এরশাদ ভ্যাকেশন আমাদের সেই সময় এনে দিয়েছিল।

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: কড়ি দিয়ে কিনলাম।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:০৪

মুজিব রহমান বলেছেন: বইটি পাবলিক লাইব্রেরিতে বসে বসে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পড়তে কয়েকদিন লেগেছিল।

৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪৮

কল্পদ্রুম বলেছেন: এটা একটা চমৎকার কথা লিখেছেন।হোস্টেল জীবনেই এই বৃহৎ উপন্যাসগুলো পড়া যায়।আমার রুমমেটরা নিয়মিত ক্লাস করতো।ওরা সকালে চলে যাওয়ার আগে দেখতো বই হাতে শুয়ে আছি।এসেও দেখতো একই ব্যাপার।দুপুরের পর থেকে কয়েকটা টিউশনি সেরে আবার রাতে সাইকেল শুরু।এই বিলাসিতা এখন করা যাচ্ছে না।বড় উপন্যাস শুরু করতে ইচ্ছে করে না।ফিকশনের প্রতি আগ্রহও কিছুটা কমে যাচ্ছে।প্রিয়তে রাখলাম।অনেকগুলো সাজেশন এক স্থানে থাকলো।অনেকগুলো নাম নতুন জানলাম।বই কেনার সময় কাজে দেবে।নাসরিন জাহানের একটি ছোট উপন্যাস পড়ছি "উড়ুক্কু" নামের।"গায়ত্রী সন্ধ্যা" আপনি পড়েছেন?কেমন?

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:০৫

মুজিব রহমান বলেছেন: পড়েছি। বাস্তবিক গায়ত্রী সন্ধ্যা হল সেলিনা হোসেনের। সংশোধনী দিয়েছি। এর দুটি পর্ব পড়েছি। তৃতীয়টির খোঁজই জানতাম না।

৪| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: চার টা বইই আমি পড়েছি। এবং নূরজাহান নিয়ে আমি একটা রিভিউ লিখেছি এই সামু ব্লগেই।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:০৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। নুরজাহানকে নিয়ে আসলেই অনেক লেখা যায়। মিলনকে হয়তো মলিন করবে না নুরজাহান।

৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: উপন্যাস 'নূরজাহান' রিভিউ

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২২

মুজিব রহমান বলেছেন: রিভিউ ভাল হয়েছে।

৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১১

কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনার লেখা শেষের অংশটার ব্যাপারে আমার ধারণা,অনেক গুলো বই ক্লাসিকের মর্যাদা পেতো যদি ভালো অনুবাদক পেতো।আবার অনেক বই আকারে এত বড় হওয়া সত্ত্বেও ক্লাসিকের মর্যাদা পাবে না।যদি বিদেশী ভাষায় অনুবাদ করা হয়ও।এই বইগুলো আসলে বিশ্বসাহিত্যকে নতুন কিছু দেবার নেই।এই লেখকরা পাশ্চাত্যের লেখা পড়ে বাংলা ভাষায় সেটা এপ্লাই করেছেন।প্লট অথবা লেখার ধরণে বিদেশী পাঠক এমন কিছু পাবে না যা তার সাহিত্যে ইতোমধ্যে নাই।এক্ষেত্রে ল্যাটিন আমেরিকান লেখকরা একটা সাম্প্রতিক উদাহরণ হতে পারে। তাদের ইউনিক লেখার ধরণের কারণে তারা সারা পৃথিবীতে আলাদা পাঠক তৈরি করে ফেলেছেন।বিভিন্ন ভাষায় তাদের লেখার অনুবাদ বের হচ্ছে।মানুষ আগ্রহ নিয়ে পড়ছেও।অথচ এসব পাঠক লেখকের মূল ভাষার লেখা পড়েনও নি।অনুবাদ পড়েই লেখকের ভক্ত হয়ে যাচ্ছে।বইগুলোও বছরের পর বছর বিশ্ব সাহিত্যে টিকে থাকছে।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
আপনার সাথে একমত যে, এগুলো সাহিত্যের বাঁক বদলকারী কোন লেখা নয়। একজন মার্কেজ হয়ে উঠতে হলে সাহিত্য চর্চার পরিবেশ লাগে। ভিঞ্চি কোন বিক্রি হয়েছে হয়তো ১৫ কোটি! আমাদের এখনকার ঔপন্যাসিকদের মধ্যে কেউ নেই প্রকাশক যার বই ১ হাজারের বেশি ছাপে।

৭| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৩

আমি সাজিদ বলেছেন: চমৎকার আলোচনা , মন্তব্যগুলোও চমৎকার। প্রিয়তে নিয়ে গেলাম।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩০

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৮| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদের লেখা সবচেয়ে মোটা বই কোনটা?

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৭

মুজিব রহমান বলেছেন: জোছনা ও জননীর গল্প

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.