![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ
তিনি আমাদের স্কুলেরই শিক্ষক। একদিন সকালে আমাদের বাড়ির সামনে আমাকে পেয়ে বললেন, ‘তোমার মতো মেধাবী কেউ এই এলাকায় নেই। তোমার তীক্ষ্ণ চোখ দেখেই বুঝতে পারি, তুমি বহুদূর যাবে। তোমার পড়াশোনা ও জানার পরিধিও অনেক। তোমার শাণিত কথা শুনে আনন্দ লাভ করি। কিন্তু তোমার মনোসংযোগের অভাব রয়েছে। এখানে উন্নতি করতে পারলে তোমাকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। বিকেলে অমুকের সাথে এসো।’
বিকেলেই অমুক এসে হাজির। আমারই এক বন্ধু। বলল, ‘চল, খুব ভাল লাগবে।’
পাশের ইউনিয়নের এক ছাপড়া ঘরে গিয়ে দেখি ওই শিক্ষক বসে আছেন। গোল হয়ে আছেন আরো পনের/ষোল জন। আমাকে দেখে খুব খুশি হলেন, পাশে বসালেন।
বুঝলাম পাটকাঠির বেড়ার ঘরটি আমাদের বাজারের ইঁদুর মারার এক ওষুধ বিক্রেতার। ঘরের এক কোণে তার স্ত্রী দু/তিনটি কন্যা-শিশু নিয়ে চুপটি করে বসে আছেন। বাচ্চাদের চোখগুলো ভীতসন্ত্রস্ত! আমার আতঙ্কিত ইঁদুরের চোখের কথাই মনে পড়লো। বৃত্তের মাঝখানে বসে একজন বহু কারুকাজ করে নারকেলের ছোবড়া ছিড়ছিল। তা দিয়ে কয়েকটি টেবিল-টেনিস বলের মতো ডিম বানালেন। কাচি দিয়ে সূক্ষ্মভাবে কাটছেন শুকনো পাতার দলা। অনুমান করলাম ওগুলো গঞ্জিকার পাতা। ডিমে আগুন ধরিয়ে কলকে সাজালেন যাকে ওরা বলে- বাঁশি সাজানো। বাঁশি সাজানো হয়ে গেলে ওই শিক্ষক কল্কে নিজের হাতে নিয়ে, টান দিতে দিলেন তার ডানে বসা একজন ক্ষমতাশালী ব্যক্তিকে। এরপর নিজে টান দিয়ে আমার দিকে কলকে বাড়িয়ে বললেন, ‘টান দাও! তোমার মনোসংযোগ বাড়বে’!
আমি হতভম্ব হয়ে বললাম, ‘দুঃখিত! আমি গাজা খাই না।
ওনি বললেন, ‘আমাদের সাথে চলতে হলে খেতে হবে।
আমি বললাম, ‘আপনাদের সাথে চলতে চাই না’। আমি উঠে দাঁড়ালাম এবং বাড়ি চলে এলাম।
ওই শিক্ষকের সাথে আমার সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। একদিন দেখলাম আমাদের পাশের গ্রামের আরেক মেধাবী ছাত্রকে, আমাকে বলা সেই কথাগুলোই বলছেন। শেষে বললেন, ‘তোমার মনোসংযোগ বাড়াতে হবে, দমের সাধন করতে হবে’। বেশ কিছুদিন পরে জানলাম সেই মেধাবী ছেলেটি উচ্ছন্নে গেছে দমের সাধন করতে গিয়ে।
আমাকে একদিন বললেন, ‘তুমি ছাড়া আমার কোন টার্গেটই মিস হয়নি। এলাকার প্রত্যেকটি প্রভাবশালী পরিবারের মধ্যেই পরিকল্পিত ভাবে মাদক ঢুকিয়েছি। প্রভাবশালী পরিবারের কেউই আমাকে কিছু বলতে পারে না। বললে ওই পরিবারে থাকা আমার শিষ্যরাই আমাকে রক্ষা করবে। আবার আমাকে কিছু বললে, আমি তার পরিবারের দিকেই আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিব। অমুক অমুক নেতার পরিবারেও ঢুকিয়ে দিয়েছি। তোমার এক মেধাবী বন্ধু একদিন আমার সাথে বেয়াদবী করেছিল। তাকে ধরিয়ে দিয়েছি। এখন আমার পেছনে পেছনে ঘুরে।’
আমি ওই বন্ধুর কাছে গিয়ে ফাঁস করে দিলাম, ‘তোমাকে ওই শিক্ষক পরিকল্পিত ভাবে মাদকাসক্ত করেছে। তুমি নাকি তার সাথে বেয়াদবী করেছিলে। এখন পিছে পিছে ঘুরো!
আমার বন্ধু বলল, ‘আমি সবই জানি। তবে আমি ফাঁদে পড়ে গিয়েছি। এখন আর কোন উপায় নেই!
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৩
মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
রোধ করতেতো পারিনি।
২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১০
চাঁদগাজী বলেছেন:
ঐ লোক স্কুলে রয়ে গেলো কিভাবে, আপনি কোন ব্যবস্হা নেননি?
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৯
মুজিব রহমান বলেছেন: প্রভাবশালীদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল। সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীদের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছিলাম দীর্ঘদিন। তারা আমাকে ভয় পেতো বলে উল্টো আমাকেই হয়রাণী করতে চাইতো। দুবার পুলিশ দিয়ে হয়রাণী করিয়েছে। পোষা মৌলবাদীদের লেলিয়ে দিতো। রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে সুবিধা নিতো। নেতাদের পেছনে সময় দিতো।
প্রতিবাদ করা সহজ নয়। তবুও যতটুকু পারি করেছি।
৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভয়ংকর কাহিনী শোনালেন।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১১
মুজিব রহমান বলেছেন: আপনি যতটা ভয়ঙ্কর মনে করছেন অবস্থা তার চেয়েও খারাপই।
৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১১
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি একজন আধুনিক মানুষ।
আপনার মধ্যে কোনো কুসংস্কার নেই। এটা আমার খুব ভালো লাগে।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১১
মুজিব রহমান বলেছেন: এখনো আপনার কামারগাঁও গ্রামের পাশে মাগঢাল গঞ্জিকাসেবীদের মূল আস্তানা। ওরা দুইদিন উৎসব করে গাজা খায়।
৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:২৮
অপু তানভীর বলেছেন: ঘটনা সত্যি নাকি?
সত্যি হলে তো ভয়ংকর ব্যাপার!
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১২
মুজিব রহমান বলেছেন: ঘটনা শতভাগই সত্যি।
অবস্থা আপনার অনুমানের চেয়েও খারাপই।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৯
:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: সমজের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।