![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ
ইহকালের দুর্ভোগ হচ্ছে নিয়তি এবং এর বিপরীতে শ্রেষ্ঠ প্রতিদান পাবে পরকালে। নির্যাতিতদের এমন মনোভাব কর্তৃত্ববাদী শক্তির অবস্থান সুদৃঢ় করে দেয়। এটা এমন এক ভয়ঙ্কর ভাবাদর্শ যা গরীবদের চিরকাল গরীব করে রাখে। তারা আত্মতৃপ্তি লাভ করে ভাবে, ইহকালে কিছু না পেলেও পরকালে তাদের জন্য সৌভাগ্য অপেক্ষা করছে। এমনটা আমরা দেখি মিশরের ফারাও সভ্যতার সময়েও। তখন শ্রমিকদের বলা হতো, ওই দূর পাহাড়ের ঐপারে মৃত্যুর পরে তারা জেগে উঠবে এবং যারা নিরলশভাবে কাজ করবে তারা মৃত্যর পরে অনন্তকাল পোলাও ও পায়েস খেতে পাবে। শ্রমিকরা সেই আশায় নিরলশভাবে কাজ করে যেতো। সেই শ্রমে-ঘামে গড়ে উঠেছিল মিশরীয় সভ্যতা। এই ধারণার কঠোর বাস্তবায়ন দেখি রোমান সাম্রাজ্যে দাসবিদ্রোহ দমনে। আজও গরীবদের সে কথাই শেখানো হয়।
আমাদের এলাকার এক ধনী পরিবারের সদস্য আমাকে বলেছিল, ধনী হওয়ার উচ্চাকাংঙ্ক্ষাই মানুষকে ধনী করে দেয়। তুমি সময় পেলেই গুলশান-বনানীতে যাবে। ধনীদের দেখবে এবং নিজের ভিতরে ধনী হওয়ার বাসনা রাখবে। অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছিলেন, দরিদ্র মানুষ ধনী হওয়ার বাসনা রাখে না বলেই তারা গরীব থেকে যায়। দরিদ্র মানুষ কর্তৃক ধনী পরিবারের সম্পদ আগলে রাখার বহু উদাহরণ রয়েছে। চাইলে তারা ছিনিয়ে নিয়ে ধনী হতে পারতো। অবশ্য আইন আবার দরিদ্রদের ধরে এনে শাস্তি দিতে খুবই পারঙ্গম। আর পি.কে. হালদারদের টিকিটিও আইন ধরতে পারে না। আমার এক ধনী সহপাঠী প্রায়ই বলতো, ‘গরীবরা ইচ্ছা করেই গরীব থাকে। এটা হল দরিদ্রবিলাস!’ আমার ওই বন্ধুটির পিতাও একসময় খুব গরীব ছিল এবং তার ধনী হওয়ার গল্প আমাদের জানা আছে। ওভাবে চাইলে অনেক গরীবই ধনী হতে পারতো।
সবচেয়ে পীড়াদায়ক হল, গরীবরাও বুঝে নিয়েছে তাদের গরীব থাকতেই হবে। গরীব থাকলে পরকালে হিসাব দিতে হবে না। ইহকালে তাই নিপীড়িত থাকো, নিগৃহিত থাকো কিন্তু মুখটা বন্ধ রাখ আর চোখ তুলে তাকিও না। যদি এভাবে শুধু শ্রম দিয়ে সভ্যতা গড়ে তুলতে পারো তবেই তোমাদের মহিমাকীর্ত্তন করা হবে। যদি অধিকারের কথা বল, শ্রমের মূল্যের কথা বল তবে কিন্তু রেহাই দিবে না। যদি অধিক নিপীড়ন হতো তবে সম্ভাবনা থাকতো বিদ্রোহের। দরিদ্র মানুষদের এমন এক ভাবাদর্শ গড়ে দেয়া হয়েছে যে তারা- বঞ্চিত হয়েও খুশি, লাঞ্ছিত হয়েও খুশি! তারা ধরে নেয় সবই কপাল লিখন- খণ্ডানো যাবে না। তাদের এই ভুল ভাবাদর্শ বদলে দিতে পারতো- হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, মঞ্জুরুল আহসান খানেরা.. ..। কিন্তু আলহাজ্ব ইনু, আলহাজ্ব মেনন, আলহাজ্ব মঞ্জু ভাইরা শ্রমিকদের সেই ফারাও রাজাদের, সেই রোমান সম্রাটদের দেখানো পথই শেখায়। তাদেরও গরীব লোকইতো দরকার- বিপ্লবের জন্য, মিছিলের জন্য, আন্দোলনের জন্য, নুর হোসেন হওয়ার জন্য, প্রাণ দেয়ার জন্য...।
২০ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৯
মুজিব রহমান বলেছেন: সঠিক তথ্য পৌঁছাতে পারলেই হল। এখন অধিকাংশ মানুষই মিডিয়ার আওতায়। বাকিরা এনজিওর আওতায়। কথা বলার অবাধ সুযোগই তাদের কাছে বার্তা পৌঁছানো সম্ভব করে দিতে পারে। এছাড়া প্রতারক মিথ্যাবাদিদের অনেক শিক্ষিত লোকও চিনতে পারে না, বুঝতে পারে না।
তবে যারা পরকালের কথা বলে, ওরা মিথ্যাুক ও জ্ঞানহীন এমন কোন বক্তব্য আমি দেইনি। এ বক্তব্য কিন্তু আপনার।
২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৬
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ধর্ম শোষণের একটা হাতিয়ার কিন্তু প্রধান হাতিয়ার না।প্রধান হাতিয়ার হল মজুরি।যতটা শ্রম সে কিনে নেয় ততটা মজুরি সে দেয় না।
৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: কে কিভাবে ঠকাচ্ছে তা জানি। কিন্তু বলি না। বললেই তাদের শত্রু হয়ে যাবো।
২০ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩১
মুজিব রহমান বলেছেন: সত্যটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলে অত সমস্যা হয় না। আর সত্য বললে যারা শত্রুতা করবে তাদের কাছ থেকে দূরে থাকাও দরকার।
৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০০
লর্ড ভ্যারিস বলেছেন: আরো একটা ব্যাপার আছে সেটা হচ্ছে বড়লোকের নাকি মানসিক শান্তি নাই, গরীবের আছে। এদেশের খুব বড় একজন চাঁদবদন ওয়ালা হুজুর নাকি ওয়াজে বলছিলো যে উনি রাস্তায় রিক্সাওয়ালাকে পাউরুটি খেয়ে ফুটপাতে মাথার নিচে ইট দিয়ে শান্তির(!) ঘুম ঘুমাতে দেখছেন, সেই শান্তির ঘুম কোন বড়লোক ঘুমাতে পারেনা। এই উদাহরণ দিয়ে পাড়ার এক চাচা বুঝাচ্ছে ধনী হলে এতো টাকা কি করবে, লস খাবে কিনা চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায়। রাস্তায় ফুটপাতে শুয়ে গরীব যে শান্তি পায় সেটা তারা পায়না। আমি বললাম "আপনার ওই ওলি আউলিয়া লেভেলের হুজুর কি সেই রিক্সাচালকের মস্তিষ্কে ঢুকে দেখছে নাকি যে ইটের উপর মাথা দিয়ে শান্তিতে ঘুমাচ্ছে নাকি কষ্টে ঘুমাচ্ছে?কখনো জিজ্ঞেস করছিলো সেই লোক শান্তিতে ঘুমাচ্ছে কিনা? নাকি শুধু দেখেই গেছে ওয়াজে বলার জন্য? উনি তো ওয়াজমাহফিল করে ভালোই টাকা পান।"
ব্যাস, উনি গেলো চেতে, "বাবা যা কবেন কন, কিন্তু হুজুর সাহেবকে নিয়ে সমালোচনা করা যাবেনা। উনাকে বুঝার বয়স তোমার হয় নাই। আর রিক্সাচালক শান্তি না পাইলে ঘুম ধরলো কিভাবে? শান্তি না পাইলে তো ঘুম ধরবেনা।"
তাকে বললাম যে "শান্তির ঘুমটা আপেক্ষিক ব্যাপার, আর ফুটপাতে যারা ঘুমায় তারা হয়তো সারাদিনের ক্লান্তি শেষে সেই ক্লান্তি দূর করার জন্যই আর ক্লান্তি থেকেই ঘুমটা আসছে। তার মানে এই না যে আপনার হুজুরের কথা মতো শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছে। এটা তার ক্লান্তির ঘুমও হতে পারে।" তখন উনি কথা ঘুরায়ে নিয়ে গেলো ধর্মীয় লাইনে, মুহাম্মদ(সঃ) গরীব জীবনযাপন করেছেন তাই গরীব থাকা নাকি সুন্নাত পালন করা হয়। আর দুনিয়াতে যারা গরীব ভাবে কষ্টের জীবন পার করে আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য পরকালে শান্তি রাখছে৷ এমন ধারণার জন্যও মনেহয় অনেকে নিজে থেকেই গরীব থাকতে চায়। তাদের অনেকের মনে গভীরভাবে ঢুকে গেছে দিন আনে দিন খায়, তাদের কোন চিন্তা থাকেনা। যারা বড়লোক তারা টাকার নানা চিন্তায় অশান্তিতে থাকে, তাই তাদের বড়বড় রোগ হয়, অশান্তিতে ভোগে। এই ধারণা দূর করতে অনেক সময় লাগবে মনেহয়।
২০ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৩
মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
এভাবেই ওরা দরিদ্রদের কোণঠাসা করে ফেলে। তাদের কাছে ভুল বার্তা দেয়। অথচ ওয়াজ করতে এসেই তারা লক্ষ লক্ষ টাকা ফি নেয় ধনী হওয়ার জন্য।
৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১১
অধীতি বলেছেন: এটা এখন চিরন্তন ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। দারিদ্র বিলাস সত্য ও নিষ্ঠার চাপে তৈরি হয়।
৬| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৪৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
ভাল চিন্তা।
৭| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৩
মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন হে সুপ্রিয়। শুভেচ্ছা নিরন্তর।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
যারা পরকালের কথা বলে, ওরা যে মিথ্যুক ও জ্ঞানহীন, অশিক্ষিত মানুষ বুঝবে কিভাবে?