![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ
বোকো হারাম
বোকো মানে পশ্চিমা শিক্ষা। তার মানে বোকো হারাম হচ্ছে- পশ্চিমা শিক্ষা হারাম। পশ্চিমা শিক্ষা মানে হল- বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক শিক্ষা। এ কারণেই কদিন পরপর বোকো হারামের লোকেরা স্কুল শিক্ষার্থীদের গণহারে অপহরণ করে। ২০১৪ সালে বোকো হারাম ২৭৬ জন খৃস্টান ছাত্রীকে অপহরণ করে। তাদের মধ্যে কিছু মেয়ে পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও বাকিদের রাখা হয়েছে হেজাফ পরিয়ে যৌনদাসী বানিয়েই। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে তারা আরো ৫০ জন ছাত্রীকে অপহরণ করে। তাদের হাতে হত্যা, খুন, ধর্ষণসহ বহু মানবাধিকারপরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। তাদের হাতে সাধারণ কৃষক ও শ্রমিকরাও বিপুলভাবে খুন হয়ে থাকেন। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন যারা আল-কায়েদার মতো পশ্চিমা শিক্ষা-সংস্কৃতির বিরুদ্ধে। আত্মঘাতী বোমা হামলা তাদের প্রধান যুদ্ধপদ্ধতি এবং আল-কায়েদার মতো 'আদর্শ' বাস্তবায়নে চরমপন্থী। বোকো হারামের যোদ্ধারা প্রশিক্ষণের জন্য সোমালিয়া যাচ্ছে। কেউ কেউ আফগানিস্তান পর্যন্ত গেছে। বোকো হারামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠিত করা। সৌদি আরব, আল-কায়দা, যুক্তরাজ্যর উগ্রপন্থী মুসলিমরাই এর অর্থ জুগিয়ে থাকে।মানুষের তৈরি আইন ও আধুনিক বিজ্ঞানকে দলটি অস্বীকার করে। তারা এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের অংধিকাংশই মুসলিম। নাইজেরিয়ার খৃষ্টানদের উপর উপর্যুপরি হামলার জন্য তারাই দায়ি।এ মাসে অপহরণ করা ৩৪৪ জন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যদিও ধারণা করা হচ্ছে অপহরণ করা হয়েছে আরো বেশি শিক্ষার্থীকে। বোকো হারাম যদি মুসলিম বিশ্ব থেকে পশ্চিমা আধুনিক শিক্ষা বন্ধ করে দিতে পারে তবে মুসলিমদের ফিরে যেতে হবে আদিম যুগে। সুশিক্ষা ও সভ্যতা ছেড়ে ফিরে যেতে হবে অন্ধকার যুগে। বিশ্বব্যাপী এই ভয়ঙ্কর দানবরা মুসলিমদের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করেছে।
আইএস
ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড সিরিয়া বা ইসলামিক স্টেট ২০১৩ সালে গঠিত হয় ইরাজ ও সিরিয়ার কিছু এলাকা নিয়ে। তাদের দখলিকৃত এলাকায় তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধপরাধ সংঘটিত করে আন্তর্জাতিক ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন হিসেবে পরিচিতি অর্জন করে। বহু ইয়াজিদি নারী ও প্রতিপক্ষের নারীকে যৌনদাসি বানায়। এরা ভিন্ন নামে ১৯৯৯ সাল থেকেই সংঘটিত হচ্ছিল। তারা বিভিন্ন স্থানে আত্মঘাতি হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হত্যা করে। ইসলামিক স্টেট ঘোষিত হলে তার খলিফা হিসেবে ঘোষণা করা হয় আবু বকর আল বাগদাদীকে।ওই রাষ্ট্রকে কেউ স্বীকৃতি দেয়নি। আইএস এর জঙ্গিরা লিবিয়া, মিশর, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে সক্রিয় হয়ে উঠে। তারা আইএস এলাকায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বহু মানুষকে হত্যা, শিরচ্ছেদ ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে তার ভিডিও প্রকাশ করে।এই অঞ্চলের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন ধ্বংস করে দেয়। তাদের ভয়াবহ মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ড দেখে সৌদি আরবের মসজিদুল হারামের গ্রান্ড মুফতি আইএসকে ইসলামের প্রধান শত্রু হিসেবে ঘোষণা করেন। আইএসের বাংলাদেশি জঙ্গিরা হলিআর্টিজানে হামলা চালিয়ে ২৪জনকে হত্যা করে। তাদের ভয়াবহ সন্ত্রাসী কৌশল দেখে বিকৃতমনা তরুণরা আকৃষ্ট হয়। আইএস ইরাকের তেল ক্ষেত্র ও বিদেশিদের জিম্মি করে শত শত কোটি ডলার আয় করতো। সেই অর্থ দিয়ে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার হামলা চালিয়ে নিরিহ মানুষকে তারা হত্যা করেছে। ২০১৮ সালেই তারা ৩৬৭০টি হামলা চালায় সারা বিশ্বে। তাদের খেলাফতে হত্যা, ধর্ষণ ও বিভৎসতা ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়নি। তাদের বর্বরতা মুসলিমদের নিন্দার মুখে ফেলে দিয়েছে। তখন মুসলিম লেবাস দেখলেই মানুষ ভয় পেতো। এখনো আফগানিস্তানে তারা সক্রিয় রয়েছে।
তালেবান
আফগানিস্তানের মাদ্রাসার ছাত্রদেরই তালেবান বলা হতো। ছাত্র-শিক্ষক মিলেই ১৯৯৪ সালে মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে গঠিত হয় সংগঠনটি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তানে তারা ক্ষমতায় ছিল। এ সময়ে তারা প্রত্ননিদর্শনগুলো ধুলিস্যাত করে দেয়। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে। ভিন্নমত ও মুক্তচিন্তার মানুষের জন্য বধ্যভূমি হয়ে উঠেছিল। কথায় কথায় মৃত্যুদণ্ড আর হাত কেটে ফেলা ছিল প্রকাশ্য ঘটনা। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও বিনোদন বন্ধ হয়ে যায়। নারীদের শিক্ষা ও চাকরি বন্ধ করা হয়। মেয়েরা রাস্তায় বের হলে তাদের পেটে কালি লেপ্টে দিত। কোন ছেলের সাথে কথা বললে কঠোর সাজা দেয়া হত। ফলে মেয়েরা চাকরি হারিয়ে গৃহবন্দি হয়ে পড়ে। কোন নারী কোন পুরুষ ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে পারতো না। আবার ১০ বছর হলেই মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যেতো। এখনো তারা আফগানিস্তানে সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তালেবানদের নেতা ছিল মোল্লা ওমর। এই আন্দোলনের ঢেউ পাকিস্তানেও এসে পড়েছিল। বাংলাদেশেও শ্লোগান উঠেছিল- আমরা হব তালেবান বাংলা হবে আফগান। তালেবানদের সৌদি-পাকিস্তান সরকার সহায়তা দিয়েছিল। এ সময়ে তারা মারাত্মকভাবে মানবাধিকার লংঘন করে যার জন্য আফগানিস্তান জাতিসংঘের স্বীকৃতি হারায়। ওই সময় আফগান নারীরা ঘরেই সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হয়। নিপীড়নের শিকার হলেও তাদের পক্ষে আইনের আশ্রয় নেয়ার সুযোগ ছিল না। শিশুদের যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করছে। তালেবানদের আশ্রয়ে থেকেই লাদেনের আল কায়দা হামলা চালিয়েছিল আমেরিকায়। তাদের মূল আয় হল মাদক পাচার ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের জঙ্গিমনাদের কাছ থেকে পাওয়া অনুদান। তালেবান শাসনের সময় পৃথিবীর ৯০ ভাগ আফিম উৎপাদন হতো আফগানিস্তানে। বাম্পার আফিম চাষ ছাড়া তারা আর কোন কাজেই সফল ছিল না।
আল কায়দা
ওসামা বিন লাদেন কর্তৃক ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি সালাফিবাদী জঙ্গি সংগঠন।১৯৯৯ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে বোমা হামলা, ১১ ই সেপ্টেম্বর হামলা, এবং ২০০২ সালে বালি বোমা সহ বিভিন্ন দেশে অ-সামরিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে হত্যা করেছে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল মার্কিন সামকির ও বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করা ও মার্কিন স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড চালানো এবং মুসলিম দেশ থেকে সামরিক শক্তি অপসারণ করা।
আল-শাবাব
আল শাবাব অর্থ তারুণ্য। তারা সোমালিয়াতে ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য লড়াই করছে। তারা বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। তাদের আয় হল দস্যুবৃদ্ধি। বিশেষ করে সোমালিয়ার এলকা দিয়ে যাওয়া জাহাজ তারা প্রায়শই আটক করে মুক্তিপন আদায় করে।
উক্ত ৫টি জঙ্গি প্রতিষ্ঠানই সম্ভবত পৃথিবীতে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে ও উগ্রপন্থীদের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।তাদের কর্মকাণ্ড পৃথিবীর তাবৎ মানবতাবাদী মানুষের কাছেই ঘৃণ্য। তারা এমন একটি কাজও করতে পারেনি যাতে মুসলিমদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। তারা ক্ষমতায় গিয়ে সুশাসনের পরিবর্তে হত্যা, ধর্ষণ ও বর্বরতাই কায়েম কয়েছিল। কেউ মাদকে, কেউ দস্যুবৃত্তিতে জড়িয়ে ছিল। আজও এই পাঁচটি সংগঠনের কর্মীরা কোথাও না কোথাও সক্রিয় রয়েছেন। তারাও যে সকল কাজ করে যাচ্ছেন তা পৃথিবীতে মুসলিমদের মুখ উজ্জ্বল করছে না। এই আদর্শে বলিয়ান হয়েই এখনো বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলা হচ্ছে আর বিপাকে পড়ছে সাধারণ মুসলিমরা। আমাদের ভাবতে হবে- শান্তির ধর্ম ইসলামকে চাই, না জঙ্গিবাদী-সালাফিবাদী উগ্র ইসলামকে চাই। আমরা কি চাইবো- মুসলিমদের দেখে মানুষ ইসলামের গুণগান করবে না মুসলিমদের দেখলেই ঘৃণা করবে? সিদ্ধান্ত আমাদেরই হাতে।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০৫
মুজিব রহমান বলেছেন: জঙ্গি সংগঠন হিসেবে ছাত্র শিবিরের নামও স্বীকৃতি পেয়েছিল। একাত্তরে রাজাকার, আল বদর, আল শামস চূড়ান্ত হিংস্রতা ও বর্বরতার পরিচয় দিয়েছে। তারাও ধর্মাশ্রয়ী ছিল।
২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৬
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ইসলাম মানুষের উপকার করে না,ইসলাম আল্লাহর প্রসংশা করার জন্য মুহাম্মদ ( স) শৃষ্টি করেছেন।মানুষ মেরে তারা ইসলামের সেবা করছেন।তাদের দরকার ইসলাম,মানুষ না।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০১
মুজিব রহমান বলেছেন: দেশে অশান্তি সৃষ্টি করে, মানুষকে অন্ধকারে রেখে সুবিধা নেয়াই তাদের লক্ষ্য। সেটাই তারা করে যাচ্ছে।
৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে সমস্ত ইসলামী দল গুলো নিষিদ্ধ করে দিলে- ভালো হবে। জঙ্গীদের জন্ম নেওয়াটা বন্ধ হবে।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০২
মুজিব রহমান বলেছেন: মৌলবাদী ও জঙ্গি জন্মানো একেবারেই শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে।
৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৪:০১
ইলি বলেছেন: দেশে সমস্ত ইসলামী দল গুলো নিষিদ্ধ করা সময়ের দাবি। ধন্যবাদ।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০২
মুজিব রহমান বলেছেন: ধর্ম থাকবে ব্যক্তিগত বিষয়ে। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতেই হবে।
৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩২
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
বোকো মানে শিক্ষা, অর্থাৎ প্রচলিত শিক্ষা।
বোকো হারাম মানে শিক্ষা হারাম।
উছিলা- রাসুলুল্লাহ বেচে থাকা কালিন ও খেলাফত যুগে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিলো না। একারণে -
সুন্নি মুসলমানদের একটি ধারা সালাফি-ওহাবি বিশ্বাসীরা ও তাদের আর্মড ক্যাডার আলকায়দা/তালেবান/আইএস/বোকোহারাম। এরা সবাই শিক্ষাকে হারাম মনে করে। ইভেন মাদ্রাসা শিক্ষাও হারাম।
আমাদের উপমহাদেশ বাদে আরব আফ্রিকা পৃথিবীর কোথাও মাদ্রাসা নেই।
২০০০ সালের পর অবস্য উপমহাদেশের ইমিগ্রেন্টরা বিভিন্ন দেশে ছোট পরিসরে মাদ্রাসা স্থাপন করে।
পাকিস্তানি তালেবানরা অবশ্য কিছুটা উদার। ছেলেরা মাদ্রাসা/স্কুলে পরতে পারবে। শুধু গার্লস স্কুল/মাদ্রাসা নিষিদ্ধ। মালালাকে যে কারণে গুলি করেছিলো।
বাংলাদেশের তালিবানি মোল্লারা আরেকটু উদার।
মেয়েদের ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত অনুমোদন। (ফতোয়াই তেতুলু)
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৪
মুজিব রহমান বলেছেন: মানুষ যত শিক্ষিত হবে তত তাদের চোখ খুলবে। তারা বুঝে ফেলবে ধর্মব্যবসায়ীদের অপরাধ। সেজন্যই শিক্ষার বিরুদ্ধে।
৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: মৌলবাদী ও জঙ্গি জন্মানো একেবারেই শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে।
এটা কোনো দিন সম্ভব হবে না।
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০১
মুজিব রহমান বলেছেন: কোন দিনেরতো শেষ নেই।
একদিন অবশ্যই ভাবাদর্শ বদলাবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
ইসলামী ছাত্র সংঘ ( শিবিরের পিতারা) রাজাকার ও আলবদর হয়ে কি পরিমাণ বাংগালী হত্যা করেছিলো?