নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুদের রক্ষার জন্য এখনই ভাবতে হবে

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৩৯


সাভারের হুরে জান্নাত ও নূরে মদিনা মহিলা মাদ্রাসা (আবাসিক)‘র প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মাওলানা তৌহিদ বিন আজহার এক এগারো বছরের মেয়শিশু শিক্ষার্থীকে একিদিন একা পেয়েই ধর্ষণ করে ফেললেন। কোন উছিলায় শোয়ার ঘরে ডেকে নিয়ে তিনি শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। ওই দিনই তার স্ত্রী বেড়াতে গিয়েছিলেন। মাওলানা সাহেব তক্কে তক্কে ছিলেন ধর্ষণ করার জন্য। সুযোগ কাজে লাগাতে বিলম্ব করেনি। আবার ঘটনা যাতে ফাঁস না হয় তার ব্যবস্থাও ছিল। কারো বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিল না, মেয়েটিকে ভয়ও দেখানো হয়েছিল। শিশুটি সহপাঠীদের মাধ্যমে বাড়িতে চিরকুট পাঠালে ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। শিশুর পিতা ২১ জানুয়ারি ২১ থানায় মামলা করলে, পুলিশ ধর্ষক মাওলানাকে গ্রেফতার করে। হুজুর শিশু ধর্ষণের কথা অটপটেই স্বীকার করেছেন। এর আগে সবচেয়ে আলোচিত ছিল- ফতুল্লার এক মাদ্রাসার মাওলানা কর্তৃক মাদ্রাসার ১২টি শিশুকন্যাকে ধারাবাহিক ধর্ষণের ঘটনা। এক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘটনা প্রকাশ পায়। তিনি শয়তানের উপর দোষ চাপিয়েছিলেন। ফতুল্লাতেই মাদ্রাসায় এমন নারী শিশু ধর্ষণের আরো ঘটনার কথা পত্রিকায় এসেছে। সারা দেশে এটা এক মহামারীর রূপ ধারণ করেছে। তারা কখনো গজবের ভয় দেখিয়ে, কখনো জ্বীনের ভয় দেখিয়ে, কখনো কোরআন ধরিয়ে শপথ করিয়ে, কখনো পরকালের লোভ দেখিয়ে শিশুদের মুখ বন্ধ রাখতো। এসব নিয়ে ধর্মীয় অনুভূতির কারণে মানুষ তেমন কথা বলে না। অথচ ধর্ষণের শিকার হচ্ছে মুসলিম শিশুরাই। এসব নিয়ে কারো কোন প্রতিবাদ নেই। অনবরত এক অনন্তকালের দুর্ভোগ বয়ে বেড়াচ্ছে দরিদ্র পরিবারের এই শিশুরা। অবশ্য ছেলে শিশুরাও যে নিষ্কৃতি পাচ্ছে তা নয়। প্রায়শই পত্রিকায় রিপোর্ট আসে ছেলে শিশু বলাৎকারের। পত্রিকায় পড়ে অনুভূতিপ্রবণ মানুষ মুচকি হেসে চুপ করে যায়। যেনো দরিদ্র শিশুদের বলাৎকারের শিকার হওয়াই নিয়তি। তাদের বলাৎকার করা ওদের অধিকার। তাদের রক্ষার জন্য কোন মাথাব্যথা কারো নেই। পত্রিকায় প্রকাশিত হয় খুব সামান্য সংবাদই। বিভিন্ন তথ্য থেকে জেনেছি ওখানে এর ভয়াবহ অবস্থার কথা। এক মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আমাকে বলেছিল, তাঁর ওখানে সবাই লুতুকওমে লিপ্ত। তিনি কিছুতেই তা বন্ধ করতে পারছেন না। কিছু বললেই, গোপন রাখার কথা শোনায় তাতে পরকালে প্রতিষ্ঠাতার যাবতীয় দোষ নাকি আল্লাহ গোপন করবেন। সারাদেশের মানুষও তাই বিশ্বাস করে বলেই, সবাই তাদের পক্ষেই অবস্থান নেয়। গোপন করো গোপন করো জিকির তুলে। এসব নিয়ে কথা বললেই নাস্তিক ট্যাগ খেতে হয়।

বাংলাদেশেও ২০০১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধর্ষণের পরিসংখ্যান দেখলে আতঙ্কিত হতে হয়। এই সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত খবর মতে- মোট ধর্ষণের শিকার ১৩ হাজার ৬৩৮ জন, দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ২ হাজার ৫২৯ জন এবং ধর্ষণের শিকার শিশুর সংখ্যা ৬ হাজার ৯২৭। ধর্ষণ পরবর্তী খুন ১ হাজার ৪৬৭ এবং ধর্ষণ পরবর্তী আত্মহত্যা ১৫৪ জনের। ২০১৯ সালে ৪ হাজার ৬২২ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১ হাজার ৭০৩ জন। বাংলাদেশে ছেলে শিশু ধর্ষণের প্রচুর সংবাদই পত্রিকায় আসে। এর মধ্যে মাদ্রাসায় শিক্ষক ও সিনিয়র ছাত্রদের দ্বারা বলাৎকারের সংখ্যাই সিংহভাগ। একের পর এক শিশুদের বলাৎকার করা হয়। এ বছর একজন শিক্ষক দাবি করেন তিনি বলাৎকার করার সময় খেয়াল রাখেন যাতে মাদ্রাসার শিশু-ছাত্ররা বেশি ব্যথা না পায়। সে মানবিক বলাৎকারক হিসেবে খ্যাতি পায়। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসার ১২ শিশুছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেপ্তার অধ্যক্ষ আল আমিন তার অপরাধের কথা স্বীকার করে দাবি করেছিলেন, “শয়তান ভর করায়” ধর্ষণ করেছেন তিনি। গত বছরও ফতুল্লায় এক মাদ্রাসা শিশুকন্যা শিক্ষার্থীকে (১০) ধর্ষণের অভিযোগে মাওলানা কাউছার আহম্মেদ (২৮) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুধু ফতুল্লা নয় সারাদেশেই এমনটা ঘটছে। ইউরোপের ক্যাথলিক চার্চ বা নিউজিল্যান্ডের ধর্মভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে শিশু ধর্ষণের চেয়ে বাংলাদেশে ছেলে শিশুরা এবং মেয়ে শিশুরা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভিতরে আরো বেশি মাত্রাতেই ধর্ষিতা/বলাৎকারের শিকার হয়। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই পত্রিকায় নিউজ হলে সামাজিক মিডিয়াতে সামান্য হইচই হয় এবং সবমহল মিলেই ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। শয়তানের উপর দোষ চাপিয়ে তারা পার পেয়ে যায়। আমাদেরও ভাবতে হবে- কেন শিশুরা সরকারি শিশু সদনে থাকতে চায় না? কেন তারা মাদ্রাসায় পড়তে চায় না? মেরে কেটে পাঠালেও তারা পালিয়ে আসে। আমার এক বন্ধু বলাৎকারের শিকার হয়ে দুবার পাঠিয়ে এসে পিতার মার খাওয়ার পরে ফাঁস করেছিল। সে পরবর্তীতে সাধারণ শিক্ষা গ্রহণ করে- এমকম পাস করে আজ একটি বিদেশি ফার্মে উচ্চ পদে চাকরি করছে। যদি বাংলাদেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে শিশু বলাৎকার/ধর্ষণ নিয়ে একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট করা যেতো এবং তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উপস্থাপন করা যেতো তবে হয়তো হইচই হতো এবং সরকার একটি পদক্ষেপ নিতো শিশুদের রক্ষা করার জন্য।

পত্রিকাগুলোও বিভিন্নভাবে এসব তথ্য গোপন করতে চায়। কদিন আগেও দেখলাম প্রথমআলোর মতো পত্রিকায় এক মাওলানা কর্তৃক মাদ্রাসায় শিশুকন্যা ধর্ষণের সংবাদের শিরোনাম করেছে ‘শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী ধর্ষণ’। মানুষ বুঝে নেয় কোন প্রাইমারী/হাইস্কুলের শিক্ষক তাদের বয়ষ্ক শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রথমআলোর ও ভুল শিরোনামের বিষয়ে আপত্তি পাঠিয়েছি। এভাবে অনবরত শিশু ধর্ষণের পরিণতি কি? বলাৎকারের শিকার শিশুগুলো সারাজীবনই মনোবৈকল্যে ভূগে। তারা আর কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে না। একসময় এমন বিকৃত যৌনাচারে নিজেরাও জড়িয়ে পড়ে। মেয়ে শিশুদের জীবনটা আরো বেশি কষ্টকর হয়ে উঠে। সমাজ ওই শিশু মেয়েদের দিকেই আঙুল তুলে তাদের দোষ খুঁজে বেড়ায়, আচরণ/পোষাকের উপর দায় চাপায়। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে বলাৎকার/ধর্ষণের শিকার শিশুদের পক্ষে বলার কেউ থাকে না। সবাই ধর্ষকের পক্ষেই অবস্থান নেয়।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৫৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: তিনি কবে মরবেন আর কবে জান্নাতে যাবেন অত অপেক্ষা করার সময় তার নেই।তাই তিনি এখানেই বানিয়েন হুরে জান্নাত।৭২ টা হুর তার জন্যই বরাদ্দ।কিন্তু প্রথমটাতেই ফেসে গেছেন।যারা তাকে ফাসিয়েছেন তাদের জন্য আছে কঠিন দোজখের আজাব।আল্লাহ পাক বলেছেন,যারা মুমিনদের পাপ সমুহ গোপন করবে আমি আখেরাতে তাদের পাপ সমুহ গোপন রাখবো।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৮:৪৩

মুজিব রহমান বলেছেন: তাঁর কোন নিয়ামত আপনি অস্বীকার করবেন? তিনি কতো মহান যে- এ কারণে আপনার সমস্ত দোষ/অপকর্ম তিনি গোপন করে দিবেন। আর ঐ শিশুটিকে. .

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: দেশের সমস্ত মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া দরকার। দরকার নেই মাদ্রাসার শিক্ষার। জাতির দরকার আধুনিক শিক্ষা। বিজ্ঞানের শিক্ষা।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৮:৪৪

মুজিব রহমান বলেছেন: অশিক্ষা ও কুশিক্ষা ছাড়াও সেখানে রয়েছে এমনসব বর্বরতা।

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ ভোর ৬:১৪

ঢাকার লোক বলেছেন: ১) সকল ধর্ষণে অভিযুক্তদের দ্রুত বিচার মামলার আইনের আওতায় এনে প্রমাণ সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ২) প্রতিটি মাদ্রাসায় সরকার একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিতে পারেন যিনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ থেকে স্বাধীন এবং শিক্ষার্থীদের তার সাথে পরিচয় করে দিতে হবে যেন তারা যে কোন অভিযোগ থাকলে তাঁকে নিরাপদে জানাতে পারে।
৩) মেয়েদের জন্য শুধুমাত্র মহিলা শিক্ষয়িত্রী পরিচালিত আলাদা মাদ্রাসাও করা আবশ্যক।

৪| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৮:৪৫

মুজিব রহমান বলেছেন: এর চেয়ে ভাল বিকল্প ভাবতে হবে। একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগের চেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ই উত্তম।

৫| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৪৮

ফকির মোঃ রবিউল হাসান বলেছেন: সকলের চেষ্টা এবং মনের ইচ্ছাই পারে ধর্ষন, খুনের মতো এমন জঘন্যত অন্যায় অত্যাচার দূর করতে। মানুষকে সচেতন করতে হবে, নিজেরা সতর্ক থাকতে হবে নিজেদের সন্তানদের প্রতি।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৯

মুজিব রহমান বলেছেন: মাদ্রাসায় সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিশুরাই পড়ে। তাদের অভিভাবকগণ প্রচণ্ড বিশ্বাস নিয়ে শিশুকন্যাকে হুজুরদের হাতে তুলে দেয়। তারা ধাক্কা খায় ধর্ষণের পরে। এজন্য আমাদেরই কথা বলতে হবে। মানুষকে জানাতে হবে।

৬| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫৯

এমেরিকা বলেছেন: লাল ছাগলটা নিশ্চয়ই কোন মোল্লার বলৎকারের শিকার হয়েছিল। নইলে এত ম্যাতকার কিভাবে করে?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০০

মুজিব রহমান বলেছেন: গালি দিলেও বাস্তবতা বহু ধর্মবিশ্বাসী পরিবারের সন্তানই বলাৎকারের শিকার হয়েছে, হচ্ছে, হবে। এটাতো বন্ধ করতে হবে।

৭| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০২

এমেরিকা বলেছেন: অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এই মোল্লা নামের শয়তানের বাচ্চাগুলোকে জনসমক্ষে লিঙ্গ কর্তন করতে হবে। কিন্তু করবে কে? আপনারা তো সবাই মানবতাবাদী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.