![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের বিবেক যা কিছু সত্য বলে তা অকপটে স্বীকার করা এবং লিখে অন্যকে জানানোই আমার অঙ্গীকার
সবাইকে কাঁদিয়ে নির্মলদা চলে গেলেন না ফেরার দেশে -মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা
সবাইকে কাঁদিয়ে সত্য নির্ভিক কলমযোদ্ধা, সকলের কাছে যিনি সমান গ্রহনযোগ্য ছিলেন সেই প্রিয় মানুষটি এখন মর্গের হিমে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। বাইরেও প্রচন্ড শীত। শীতের তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আদ্রর্তা ৮৭%। তার পরেও ঘরে কেউ বসে নেই। কারো উদ্দেশ্য তোপখানায় তার চিরচেনা পার্টি অফিসে, আবার কারো উদ্দেশ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবে আবার কারো উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। যেখানেই যাক না কেন, সকলের উদ্দেশ্যেই এক, তাদের প্রিয় ও শ্রদ্ধার মানুষটিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। অবহেলা, অযত্নে, সঠিক চিকিৎসার অভাবে তিনি সবাইকে কাদিয়ে বিদায় নিলেন। বিদায়ের পর বেদনার সুর খুব বেশী করে সকলেই বাজাতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, বিরোধী দলীয় নেতা থেকে শুরু করে শোক জানায়নি এমন কেউ নেই। কিন্তু মৃত্যুর আগে এই প্রিয় মানুষটির উন্নত চিকিৎসার জন্য রাষ্ট্র যদি একবার রাষ্ট্রীয় খরচে বিদেশে নিযে যেত তা হলে হয়তো এখন এই আক্ষেপটুকু থাকতো না।
মৃত্যুর আগেই তিনি তার ভিটা-মাটি টুকু দান করে দিয়ে গেছেন কলেজ নির্মানের জন্য। নিজের দেহটাকে দান করেছেন মানুষের কল্যানের জন্য। নিজের জন্য তিনি হয়তো নিষ্ঠুর “মৃত্যু” অবশিষ্ট রেখেছিলেন। ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’—এমন শিরোনামে প্রকাশিত যাঁর লেখা একসময় স্লোগানে পরিণত হয়, সেই নির্মল সেন, সবার প্রিয় নির্মলদা চলে গেলেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী, নিরহংকার ও নির্লোভ এই সাংবাদিক জীবনভর অবিচল ছিলেন বাম ও প্রগতিশীল আদর্শে।
গত ২২ ডিসেম্বর থেকে নির্মল সেন রাজধানীর বেসরকারি ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৃত্যু তাঁকে আলিঙ্গন করে। অকৃতদার এই সংগ্রামী মানুষটির বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। আজকে তার শবদেহতে ফুলে ফুলে ভরে যাবে, শোক বানী আর বিবৃতি প্রেসক্লাবের অফিস পাড়াগুলো ব্যাস্ত হয়ে পড়বে। শোক জানাতে এসে অনেকেই বিভিন্ন মিডিয়াতে বলবেন “চলে গেলেন সময়ের একজন সাহসী যোদ্ধা, আমরা তার বড়ই অভাব অনুভব করছি।” হয়তো বিভিন্ন কলমসৈনিকরা তার জীবনের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্যদিক নিয়ে ফিচার লিখবেন, একসময়ে সবকিছুই থেমে যাবে। আবারো আগের নিয়মে সবকিছুই চলবে। সেখানে শুধু থাকবেনা আমাদের প্রিয় নির্মলদা।
প্রখ্যাত সাংবাদিক আতাউস সামাদ গতবছর চলে গেছেন। এখন আর তার কথা তেমন ভাবে কেউ মনে করিনা। মনে করিনা, তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনিরের কথা। আন্দোলনের স্বার্থে বার বার সাগর-রুনির কথা উচ্চারণ করলেও ফরহাদ খাঁ দম্পতি নিষ্ঠুর হত্যার কথা ভুলেই গেছি। ভুলে যাওয়াই আমাদের স্বভাব। তা নাহলে আমরা স্বাধীনতার ৪১ বছর পরও দিন দিন সামনের দিকে না এগিয়ে পেছনের দিকে যেতাম না।
আমাদের নির্মলদা’র সাথে খুব কাছাকাছি গা ঘেসে ঘেসে দাড়িয়েছিলাম জাতীয় প্রেসক্লাবের ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিকদের সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবাদে একসমাবেশে। সেখানে তার প্রিয় ভাইপো চন্দন সেন ও ছিলো। আজ সকালে চন্দনকে যখন মোবাইলে ফোন করলাম তখন সে বুকফাটা চিৎকার করে বললো, মঞ্জুভাই সবশেষ হয়ে গেছে। আমাদের মাথার উপরে আর কোন বটবৃক্ষ রইলো না। আজ তার লাশ গোলাপগঞ্জ কোটালীপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আগামীকাল সকাল ৯নায় জেঠু’র শবদেহ ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ে নেয়া হবে, ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এবং ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আমি এই কথাগুলো যখন লিখছিলাম কান্নায় আমার বুক ফেটে যাচ্ছিলো। একটি যন্ত্রনার তীব্রতা অনুভব করছিলাম। অনেক স্মৃতি সামনে ভেসে উঠছিলো। কিন্তু সময় গড়িয়ে তখন ৯টা ৪০ বাজে। এখনই ঘরথেকে না বেরুলে শেষ শ্রদ্ধাটুকু জানাতে পারবো না। তাই আর দেরী না করে আমার প্রিয়মানুষের শবদেহে শ্রদ্ধার শেষ ফুলটুকু নিবেদন করে মহান আল্লাহর কাছে এইটুকু প্রার্থনা করি। সকলের উপর মানুষ সত্য, তাহার উপর নাই। সেই সত্য, ন্যায় নিষ্ঠ মানুষটিকে আল্লাহ তুমি তার আত্মার শান্তি দান করো। …….. (চলবে)
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:০৬
রেজা সিদ্দিক বলেছেন:
নির্মল সেন চলে গেলেন-- আমি কখনোই তার কথা ভুলতে পারবো না। তিনি একজন বড় সাংবাদিক, সমাজ সংস্কারক ছিলেন, কিন্তু আমার কাছে তিনি আন্তরিকতভাবেই নির্মল দা।
নির্মল দা আপনাকে লাল সালাম।
এ বিষয়ে কাল রাতে লিখেছিলাম। দেখতে পারেন।
Click This Link