নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেশের জন্য ভালবাসা

কলম সৈনিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা আর দেশের জন্য কিছু কাজ করা এই অঙ্গীকার নিয়েই পথ চলা....

মঞ্জুর হোসেন

নিজের বিবেক যা কিছু সত্য বলে তা অকপটে স্বীকার করা এবং লিখে অন্যকে জানানোই আমার অঙ্গীকার

মঞ্জুর হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাড়ে তিন বছরে সাংবাদিক নির্যাতনের খণ্ডচিত্র, সাংবাদিক ফরহাদ খাঁ দম্পতির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ -হত্যা মামলা দ্রুত বিচার আইনে নেয়ার দাবি

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৬

সাংবাদিক ফরহাদ খাঁ ও রহিমা খানম দম্পতি হত্যাকাণ্ডের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিচারকাজ শুরু হয়নি। তবে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আবুল খায়ের মাতবর। গত বছরের ২৮ জানুয়ারি রাতে নয়াপল্টনের ভাড়া বাসার তালা ভেঙে মেঝে থেকে ফরহাদ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী রহিমা খানমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফরহাদ খাঁ দৈনিক জনতার জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক ছিলেন। গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্র জানায়, ওই খুনের ঘটনায় ফরহাদ খাঁর ভাগ্নে নাজিমুজ্জামান ও তাঁর বন্ধু রাজু আহম্মেদকে অভিযুক্ত করে এই বছরের ১ জানুয়ারি মহানগর হাকিমের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। অভিযুক্ত দুজনই আদালতে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।



নিহত সাংবাদিক দম্পতির একমাত্র সন্তান আইরিন পারভীন খাঁ ইতালি-প্রবাসী। তিনি বলেন, পুলিশ দায়সারা গোছের তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে। হত্যা মামলা তদন্তে পুলিশ আন্তরিক ছিল না। আইরিনের দাবি, ওই খুনের সঙ্গে তাঁর বিধবা ফুফু, ছোট চাচাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা জড়িত। কিন্তু পুলিশ তা উদঘাটন করেনি।

আইরিন বলেন, মামলার বাদী তাঁর এক চাচা। পরিবারের কিছু সদস্য তাঁকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ কারণে অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে তাঁরা নারাজি দেবেন না। তবে দ্রুত বিচার করে অভিযুক্ত দুজনের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি। আজ ২৮ জানুয়ারি তাঁদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। এই দিনে সবার কাম্য ফরহাদ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী হত্যার সঠিক বিচর পাবে তাঁর পরিবার।



সাংবাদিক ফরহাদ খাঁ ১৯৪৭ সালে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার গান্ধিনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সাত ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। ১৯৫৫ সালে ফরহাদ খাঁ ম্যাট্রিক পাস করেন। পরে বিএ পাস করে প্রিন্সিপাল ইবরাহিম খাঁর একান্ত সচিব হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে সমবায় অধিদপ্তরে যোগ দেন। মাসিক সমবায় পত্রিকার তিনি ছিলেন কর্ণধার। পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রিকাতেও কাজ করেছেন।



আজ সাংবাদিক দম্পতি ফরহাদ খাঁর হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেন, আমরা আশা করবো নিম্ম আদালতের এ রায় উচ্চ আদালতেও বহাল থাকবে। খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর হবে। ১১ ফেব্রুয়ারি সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচারের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক মহাসমাবেশে সকলকে যোগদানের আহ্বান জানান সাংবাদিক নেতরা। এ সময় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সাংবাদিক দম্পতি ফরাদ খাঁর হত্যকারীদের বিচার হচ্ছে এ জন্য আমি খুশি। অন্যদিকে আমাদের অন্য সাংবাদিকদের হত্যার বিচার হচ্ছে না এ জন্য সাংবাদিক সমাজের অংশ হিসেবে আমি হতাশ। অপরাধীরা বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিরদের ছত্রছায়া থেকে তাদের বিচার হচ্ছে না। এ জন্য আমাদের সমাজে দিনে দিনেই অপরাধ বেড়ে চলছে।



ইকবাল সোবহান আরো বলেন, রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণে বিভিন্ন সময় আমাদের দেশে অপরাধীর লালন-পালন করা হয়। যতোদিন পযর্ন্ত এ ধরণের কাজ বন্ধ না হবে ততোদিন পযর্ন্ত দেশে অপরাধ কমবে না।

সাংবাদিক নির্যাতনের খণ্ডচিত্রঃ

গণমাধ্যম এখন মহাজোট সরকারের টার্গেটে পরিণত। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা প্রতিনিয়ত সাংবাদিকদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। পুলিশ বাহিনীর উপর্যুপরি হামলা এবং সরকারি দলের ক্যাডার ও প্রভাবশালীদের হাতে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমান সরকারের সাড়ে ৩ বছরের শাসনকালে ১৪ জন সাংবাদিক খুন, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ ৩ জন সম্পাদককে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। সরকারি দলের সন্ত্রাসী ও পুলিশের হামলায় সহস্রাধিক সাংবাদিকের আহত হওয়া, শতাধিক সাংবাদিকের কারাভোগের ঘটনা সাংবাদিক নির্যাতনের ভয়াবহতাকেই ফুটিয়ে তোলে। এছাড়া হত্যা ও নির্যাতনের হুমকি দেয়া হয়েছে আরও কয়েকশ’ সাংবাদিককে। দৈনিক আমার দেশ বন্ধ, জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল ওয়ান বন্ধ, যমুনা টিভিকে সম্প্রচারে আসতে না দেয়া, অনলাইন পত্রিকা শীর্ষনিউজ ও সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজ বন্ধ করে দেয়ার ন্যক্কারজনক নজিরও সৃষ্টি করেছে বর্তমান সরকার।



মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাম্প্রতিক রিপোর্ট, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস, রিপোর্টার্স সানফ্রন্টিয়ার্সসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে সাংবাদিক খুন, নির্যাতন, হামলা, মামলার ভয়াবহতার বিষয় তুলে ধরে এর প্রতিকার চাওয়া হয়েছে। বহির্বিশ্বে এসব ঘটনায় মারাত্মক প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।

আজ থেকে ঠিক দু’বছর আগে ২০১০ সালের ১ জুন মিথ্যা অজুহাতে আমার দেশ-এর প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েই সরকার ক্ষান্ত হয়নি, সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে রেখে নিগৃহীত করেছে ১০ মাস। রিমান্ডে নিয়ে নিগৃহীত করেছে। দৈনিক সংগ্রাম-এর প্রবীণ সম্পাদক আবুল আসাদকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। সরকারের দুর্নীতির খবর প্রচার করায় অনলাইন পত্রিকা শীর্ষনিউজ সম্পাদক একরামুল হককে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে নিপীড়ন এবং তার পত্রিকা দুটি বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে।



সংবাদপত্রের নতুন কালো দিবসের দ্বিতীয় বার্ষিকী এমন এক সময় পালন করা হচ্ছে, যখন মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সাংবাদিক নির্যাতনের বড় তিনটি ঘটনা জাতি প্রত্যক্ষ করল। কেবল মে মাসেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিক নির্যাতনের ১২টি ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রথম আলো-র তিন ফটোসাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সোমবার রাতে মহাখালীতে নিজ অফিসে বার্তা সংস্থা বিডিনিউজের ১০ সংবাদকর্মীকে কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা। এতে তিনজন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন সন্ত্রাসীকে পরদিন পুলিশ আটক করে। তারা জানায়, তারা সরকারি দল আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগের কর্মী। পরদিন মঙ্গলবার পুরান ঢাকার আদালতপাড়ায় পুলিশ ক্লাবে এক তরুণীর শ্লীলতাহানির খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে তিন সাংবাদিক পুলিশের রোষ ও পিটুনির শিকার হন।



বছরের আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে সাড়ে ৩ মাস থেকে সাংবাদিকরা রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে চলেছেন কিন্তু কোনো বিচার তারা পাননি। এমনকি ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি পুলিশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সাংবাদিকদের ওপর আর নির্যাতন না হওয়ার আশ্বাস প্রদানের পর তার অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি এক মাস পেছালেও বাস্তবে পরিস্থিতির দিন দিন অবনতিই ঘটছে। সর্বশেষ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু সাংবাদিকদের পুলিশ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।



সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সরকার ও সরকারি দলের নেতাদের দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস, লুটপাট, দখল এবং বাড়াবাড়ি বিষয়ে সংবাদপত্রগুলোতে খবর ছাপা হলেই নির্যাতনকারীরা সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর প্রতিহিংসার আগুন ছড়ায়। বেছে নেয় হামলা, মামলা ও নির্যাতনের পথ। নির্যাতনকারীরা মূলত ক্ষমতাসীন দলের লোক। রোষানলে পড়া সাংবাদিকদের পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলগুলো একই চিন্তাধারার প্রতিনিধিত্ব করে না। অথচ ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডাররা একই সঙ্গে এসব পত্রিকার বিরুদ্ধে হামলে পড়ছে। তাতে একটি বিষয় স্পষ্ট, তারা নিজেদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো খবর ছাপা হলেই সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও স্থানীয় নেতাদের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ঘটনাগুলো ঘটছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানা-পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্যাতিত সাংবাদিকদেরই উল্টো পুলিশি নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। নির্যাতনের শিকার কোনো সাংবাদিক মামলা, এমনকি জিডি পর্যন্ত করতে পারছেন না। পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায় না।



আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ও বাস্তবতা : ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ’ অংশে বলা হয়েছিল, ‘সব ধরনের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও তথ্যপ্রবাহের অবাধ চলাচল সুনিশ্চিত করে প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা এবং সাংবাদিক নির্যাতন, তাদের প্রতি ভয়ভীতি-হুমকি প্রদর্শন এবং সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হবে।’ কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে প্রতিশ্রুতির উল্টো। বর্তমান সরকারের সময় তিনজন সম্পাদক সরাসরি হামলা ও হুমকির শিকার হয়েছেন। আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর কয়েক দফায় সরাসরি হামলা হয়েছে। সরকার তার বিরুদ্ধে ৫৩টি মামলা দিয়েছে। ১০ মাস জেল খাটিয়ে এখনও নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে বাধ্য করে হয়রানি করছে। হুমকি দেয়া হয়েছে নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর ও আমাদের সময় সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানকে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার তিন মাসের মধ্যে বরিশালে একটি পত্রিকা অফিস আওয়ামী ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। একই বছর ৩১ মার্চ রাতে পটুয়াখালী থেকে প্রকাশিত দৈনিক তেঁতুলিয়া কার্যালয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা চালিয়ে অফিস তছনছ করে দিয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। পাবনা, কুষ্টিয়া, সিদ্ধিরগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রেস ক্লাবে সরকারি দলের ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি দখল করে নিয়েছে ছাত্রলীগ। এছাড়া পত্রিকা বিলি করতে না দেয়া, পত্রিকায় অগ্নিসংযোগসহ এজেন্টদের দোকানে অগ্নিসংযোগ হয়েছে অনেক। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অতি-উত্সাহী পুলিশ সদস্যরাও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। তারা নিজেরাই বাদী খুঁজে এনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করাচ্ছেন।

দেশীয় বেসরকারি সংস্থা ‘অধিকার’-এর এক জরিপে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কেবল ৪ মাসে সারা দেশে সাংবাদিক খুন হয়েছেন দু’জন, আহত ৪৬ জন, প্রহৃত ২৩ জন, হামলার শিকার চারজন এবং হুমকির শিকার হয়েছেন ৩৬ জন। সব মিলিয়ে হত্যাসহ নানাভাবে মৃত্যু ও ভোগান্তির শিকার হয়েছেন এ বছরের প্রথম চার মাসে ১১৭ জন সাংবাদিক। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার জরিপ মতে, চলতি বছরে দেশে দুজন সাংবাদিক খুন এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। গত বছর খুন হয়েছেন চারজন। একই সময়কালে আহত হয়েছেন ৫৫ জন। আইন ও সালিশকেন্দ্রের জরিপ মতে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে সারা দেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১২৬টি।



যে ১৪ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন : সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। এ বছর ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া বাসা বেডরুমে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি। এর আগে গত বছর ২৮ জানুয়ারি পল্টনের নিজ বাসায় গলাকেটে নৃশংসভাবে খুন করা হয় সাংবাদিক ফরহাদ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী রহিমা খাতুনকে।



ফরহাদ দম্পতির মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও খুন হলেন সাংবাদিকদের প্রিয়মুখ সাগর-রুনি দম্পতি। মহাজোট সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে গত ৩ বছর ১ মাসে ১৪ জন সাংবাদিক খুন হন। এর মধ্যে রাজধানীসহ বৃহত্তর ঢাকাতেই খুন হয়েছেন ১০ সাংবাদিক।

দুটি দম্পতি হত্যার আগে গত ৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কুকরাইল এলাকায় গলা কেটে হত্যা করা হয় দৈনিক ভোরের ডাক-এর গোবিন্দগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ফরিদুল ইসলাম রঞ্জুকে। গত ৭ এপ্রিল এক দিনেই ঢাকার উত্তরা ও চট্টগ্রামের পোর্টকলোনিতে খুন হয়েছেন ২ সাংবাদিক। ৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের পোর্টকলোনি এলাকায় দৈনিক আজকের প্রত্যাশা, সাপ্তাহিক সংবাদচিত্র ও আজকের সূর্যোদয় পত্রিকার সাংবাদিক মাহবুব টুটুলকে হত্যা করা হয়েছে। একই দিন উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে ১০ নম্বর বাসায় খুন হন সাপ্তাহিক বজ্রকণ্ঠের সাংবাদিক আলতাফ হোসেন। হত্যার ১১ দিন আগ থেকে নিখোঁজ ছিলেন সাংবাদিক আলতাফ।



২০১০ সালের ৯ মে গুপ্তহত্যার শিকার হন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার সিনিয়র ক্যামেরাম্যান শফিকুল ইসলাম টুটুল। ২০১০ সালের ২৮ এপ্রিল খুন হন বিশিষ্ট সাংবাদিক ফতেহ ওসমানী। সাপ্তাহিক ২০০০-এর সিলেট প্রতিনিধি ফতেহ ওসমানীকে ওই বছর ১৮ এপ্রিল কুড়াল ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করার পর চিকিত্সাধীন অবস্থায় ঢাকায় তার মৃত্যু হয়। ২০১০ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হন বরিশালের মুলাদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন। ২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এনটিভির ভিডিও এডিটর আতিকুল ইসলাম আতিককে রাজধানীর মগবাজারে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে তাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি সন্ত্রাসীরা। যাওয়ার সময় তার মোটরসাইকেলটি নিয়ে বীরদর্পে স্থান ত্যাগ করে। একই বছর জুলাই মাসে ঢাকার পাক্ষিক মুক্তমনের স্টাফ রিপোর্টার নুরুল ইসলাম ওরফে রানা, আগস্ট মাসে গাজীপুরে ঢাকার সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক সময়-এর নির্বাহী সম্পাদক এমএম আহসান হাবিব বারী, ডিসেম্বরে রূপগঞ্জে দৈনিক ইনকিলাব সংবাদদাতা ও রূপগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি আবুল হাসান আসিফ খুন হন।



সাড়ে তিন বছরে সাংবাদিক নির্যাতনের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা : গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদের ওপর বারবার হামলা করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মীরা কারওয়ানবাজার মোড়ে কালের কণ্ঠ ও মানবজমিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জসিম রেজা ও সোলাইমান সালমানের ওপর হামলা চালায়।



গত বছর ৮ অক্টোবর নাটোরে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় বিএনপিদলীয় উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নূর বাবুকে। ওই ঘটনার ছবি তুলতে গিয়ে হামলার শিকার হন চার সাংবাদিক। তাদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে হাত-পা ভেঙে মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়।

গত ৭ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হামলায় কালের কণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার আহসান হাবিব, এনটিভির জেলা প্রতিনিধি লুতফর রহমান মিঠু এবং দিগন্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি হারুন আর রশীদ আহত হন। গত বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি সংবাদ প্রকাশের জের ধরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় আওয়ামী লীগের কর্মী নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য বিল্লাল হোসেন রবিনের মাথায় পিস্তল দিয়ে আঘাত করে এবং হত্যার হুমকি দেয়।



গত ১৪ মে পাবনার বেড়ায় কালের কণ্ঠের সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মামুনের ওপর হামলা চালায় স্থানীয় পেশাদার সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ খোদ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর আত্মীয় এবং তার দলীয় লোক। পরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, ‘আমার কিছু দুষ্টু আত্মীয় আছে।’ এই হামলার পর সন্ত্রাসীরা কেউই গ্রেফতার হলো না। উল্টো সাংবাদিক মামুনের বিরুদ্ধে করা হলো চাঁদাবাজির মামলা। সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার না হওয়ায় আন্দোলনে নামেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সন্ত্রাসীরা। তারা প্রাণনাশের হুমকি দেয় স্থানীয় আরেক সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক ইনকিলাবের আরিফুর রহমান ওরফে আরব আলীকে। এরপর ১৯ মে পাবনায় সন্ত্রাসীদের হামলায় শিকার হন এনটিভি ও সমকালের পাবনা জেলা প্রতিনিধি এবিএম ফজলুর রহমান। চলতি বছরের শুরুতেই সাংবাদিকরা শারীরিক আক্রমণ ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। গত ৭ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হামলায় কালের কণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার আহসান হাবিব, এনটিভির জেলা প্রতিনিধি লুত্ফর রহমান মিঠু এবং দিগন্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি হারুন-আর-রশীদ আহত হন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য বিল্লাল হোসেন রবিনের মাথায় পিস্তল দিয়ে আঘাত করে এবং গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়।



২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে মাসুম পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দিয়ে নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে অবিলম্বে সন্ত্রাসবাদ এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলা ও লেখালেখি বন্ধ করতে বলে। অন্যথায় তার পরিবারসহ তাকে ভয়ানক পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেয়। আমাদের সময় পত্রিকার সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানকেও হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।



একই বছরের ২ মার্চ রাতে বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক বাংলার বনে পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা কবির হোসেনের ক্যাডার বাহিনী। নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের অধিবাসী এবং ওই এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেনের নানা অপকর্মের সংবাদ ধারাবাহিকভাবে কয়েকদিন বাংলার বনে প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ১ মার্চ পত্রিকা অফিসে এসে হুমকি দিয়ে যান। পরদিন রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তিনি ১০-১২ জন ক্যাডার নিয়ে অফিসে ঢুকে সাংবাদিকদের মারধর এবং ভাংচুরের তাণ্ডব চালান। কবির বাহিনী প্রথমে নির্বাহী সম্পাদক এসএইচ সাইফুল্লাহর গায়ে হাত তোলে। একইসঙ্গে পত্রিকার প্রধান বার্তা সম্পাদক শাকিব বিপ্লব, উপ-সম্পাদক আহমেদ কাওছার ও সাংবাদিক উত্পল দাস মিলুকে মারধর করে।

২০১০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রলীগ পাবনা এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রশিবিরের দুটি ছাত্রাবাসে হামলা চালালে ছাত্রশিবির ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পাবনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। বেলা ১২টার দিকে পুলিশ শিবিরের সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করে দেয়। এ সময় এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সুইটের নেতৃত্বে একটি মিছিল পাবনা প্রেস ক্লাবে ঢুকে পুলিশের উপস্থিতিতে জেনারেটর, চেয়ার, টেবিল, পানির ফিল্টারসহ আসবাবপত্র ব্যাপক ভাংচুর করে ও তাণ্ডব চালায়। এ সময় বাধা দিতে গেলে পাবনা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক উত্পল মির্জা, দৈনিক নয়া দিগন্তের পাবনা সংবাদদাতা আবদুল মজিদ, আমার দেশ-এর স্টাফ রিপোর্টার জহুরুল ইসলাম, বৈশাখী টেলিভিশনের পাবনা প্রতিনিধি আবদুল হামিদ খান, দৈনিক সংগ্রামের পাবনা প্রতিনিধি আলাউদ্দিন, দৈনিক বিবৃতির বার্তা সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বাবলা, আজকালের প্রতিনিধি কলিম তালুকদার, প্রেস ক্লাবের কেয়ারটেকার ইসাহাক আলী লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকরা তাত্ক্ষণিক রাস্তায় বসে পড়লে অবরোধ কর্মসূচির শেষের দিকে জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক কামিল হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একদল নেতাকর্মী সাংবাদিকদের অবরোধ তুলে নিতে বলে এবং গালাগাল করে। একপর্যায়ে কামিল হোসেন মাইক ছিনিয়ে নেয় এবং সাংবাদিকদের ওপর আবারও চড়াও হয়।

একই বছর ২৮ মার্চ রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যকরী কমিটির সভায় আবদুল হাই তুহিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ১০-১২ জন ক্যাডার হামলা চালিয়ে বৈঠক পণ্ড করে সমিতির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে জবি ছাত্রলীগ সভাপতি কামরুল হাসান রিপন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অর্থ ও হিসাব শাখায় বসে পকেট কমিটি গঠন করে দেন।



৩১ মার্চ পটুয়াখালী থেকে প্রকাশিত দৈনিক তেঁতুলিয়ার কার্যালয় এবং ওই পত্রিকার সম্পাদকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসীরা ব্যাপক ভাংচুর চালায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৩০-৩৫ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ সেম্লাগান দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সন্ত্রাসীরা অফিসের সামনের অংশ কুপিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে। পত্রিকার সাইনবোর্ডটিও ভেঙে রাস্তায় ফেলে দেয় তারা। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ করায় তারা এ হামলা চালায়।



আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও স্থানীয় নেতাদের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ঘটনাগুলো ঘটেছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানা-পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না; বরং নির্যাতিত সাংবাদিকরাই আবার পুলিশের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। নির্যাতনের শিকার হয়েও কোনো সাংবাদিক মামলা এমনকি জিডি পর্যন্ত করতে পারছেন না। পুলিশসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায় না। (তথ্যসূত্রঃ দৈনিক আমারদেশ ও ইন্টারনেট)



উপসংহারে বলা যায় নির্মল সেনের সেই ঐতিহাসিক উক্তি “স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই”। শিশু মেঘের চোখের পানি এখনো আমরা মুছে দিতে পারি নি। পারি নি এম ইলিয়াস আলী সহ ১৫৬ জন গুম হওয়া রাজনৈতিক নেতাদের শিশু সন্তান ও পরিবারের কান্না মুছে দিতে। এখনো অন্তরথেকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনকে শানিত করতে পারি নি, পারি নি বিবেক কে জাগ্রত করে সত্যকথা সোজা করে বলতে। কারণ, সত্যকথা লিখলেই গুম, খুন অপহরনের পাশাপাশি আরেকটি নতুন শব্দ যুক্ত হয়েছে, নিজ কার্যালয়ে দিনে পর দিন, মাসে পর মাস অবরুদ্ধ।



আমাদের প্রিয় অলিউল্লাহ নোমান, যিনি সত্য কথা লেখা ও বলার জন্য স্বেচ্ছায় কারাবরণ করেছিলেন। আজ আবার জীবনকে ভালবেসে স্বেচ্ছায় দেশছেড়ে লন্ডনের আশ্রয় গ্রহন করেছেন। এভাবে আর কতদিন আমাদের বিবেকের তাড়নাকে অবরুদ্ধ করে রাখবো? কতদিন নিজেই নিজের সাথে প্রতারণা করবো। আমরা কি সকলে মিলে পারি না, এই অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে আমাদের কলমগুলো প্রবীন সাংবাদিক এবিএম মুসার মত ঝলসে দিতে। যারা এখনো প্রবীন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বড় বড় মিথ্যাচার দিয়ে কথাবলে, আমরা কি পারি না তাদে কথাগুলো না লিখে, ছবিতে না তুলে আর ক্যামেরায় না বন্দি করে সামাজিক ভাবে তাদেরকে বয়কট করতে?



পরিশেষে এইটুকুই বলবো, আমার মৃত্যু যেহেতু নির্ধারিত, সেহেতু অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমার কলম বিরতিহীন ভাবে চলবে।



সংকলক

(মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা)

চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৮

শূন্য পথিক বলেছেন: দেশে বিচার নাই।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.