নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীতে ঘুরতে আসা কিছু দিনের পর্যটক
গ্রীষ্মের তাপদাহকে বিদায় দিয়ে ফ্রান্সের প্রকৃতিতে এসেছে হিম শরতের পাতা পাতা ঝরার দিন।২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যালেন্ডারের নিয়ম অনুযায়ী ফ্রান্সে শরতের সময়কাল।বাংলার প্রকৃতিতে শিশির ভেজা ঘাসের উপর বিছিয়ে থাকা শিউলি ,নদীর ধারে ফুটে থাকা কাশ ফুলের শুভ্রতায় শরৎ উদ্ভাসিত হয় ।তীব্র গরমের অস্বস্তির মাঝে জনজীবনে শরতের শীতল বাতাস নিয়ে আসে স্বস্তির ছোঁয়া,কিন্তু ফ্রান্সের প্রকৃতিতে শরৎ আসে ভিন্ন রূপ বৈচিত্র্যে আমাদের শরতের বিপরীত মুখী বৈশিষ্ট্যে শীতের প্রকৃতির মত । এখানে শরত শুরু হয় বৃক্ষরাজির পাতা ঝরার মধ্য দিয়ে ।পাতাহীন কান্ডবিশিষ্ট গাছগুলো ধারণ করে অসাধারণ শৈল্পিক রূপ , পাশাপাশি অনেক বৃক্ষ যৌবনের সবুজ পাতার রঙ বদলে রূপান্তরিত হয় হলুদ ও লাল রঙয়ে। সৌন্দর্যবর্ধক লতাবিশিষ্ট গুল্ম, ক্যাকটাস ও পুষ্প ফোটানো গাছগাছালি বসন্ত ও গ্রীষ্মের প্রকৃতিকে সুষমায়িত ও ফুল ফোটানোর মহান দায়িত্ব পালন করে ক্লান্ত দেহকে অবসর দেয় । অপেক্ষা শুরু হয় তুষারের আবরণে শেষ সমাধির, কিন্তু ক্রিসেনথিমাম ফুলের নানা রঙ, আকৃতি ও বৈচিত্রতা কিছুটা হলেও রাঙ্গিয়ে রাখে এখানকার হিম শরতের বিবর্ণ প্রকৃতিকে ।
ফ্রান্সের শরতের জড়োসড়ো প্রকৃতিতে পাখপাখালির কলকাকলি প্রায় থেমে এসেছে। বাহারি রঙ ও ডিজাইনের টি শার্ট, জিন্স ও শর্ট পোশাকের পরিবর্তে সবার শরীরে উঞ্চতাবর্ধক শীতের পোশাক। মেঘযুক্ত আকাশ, ঝিরিঝিরি বৃষ্টিধারা এখন জীবনধারার প্রাত্যাহিক অংশ। সূর্য মাঝে মাঝে মেঘ ভেদ করে তার অস্তিত্বকে জানান দিয়ে লুকোচুরি খেলায় মগ্ন। এমন প্রকৃতিতে একচিলতে রোদ যেন সদ্য যৌবনা ষোড়শী কন্যার মুখ দর্শন। পর্যটকের দল প্যারিসের যে সব পথঘাট, রেস্তোরাঁ কোলাহলমুখর করে রেখেছিল তা নিঝুম নিস্তব্ধতায় রূপান্তর করে সবাই আপন নীড়ে ফিরতে শুরু করেছে।গ্রীষ্মকালীন ছুটির ভ্রমণ, আনন্দ হৈ-হুল্লোড় শেষ করে ফরাসিদের চলছে কর্ম মুখর সময়।রেস্তোরাঁর তেরাসের আড্ডাগুলো ঝিমিয়ে পড়েছে। উৎসব মুখর পার্কগুলো অনেকটাই কোলাহল মুক্ত।বৈদ্যুতিক রুম হিটার চালিয়ে ড্রয়িং রুমে বসে টিভি সিরিয়াল বা সিনেমা দেখাই এ সময়ে এখানকার জীবনধারার প্রাত্যহিক বিনোদনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাইরের কনকনে ঠাণ্ডা আবহাওয়া কারণে অন্দর ভিত্তির বিনোদন কেন্দ্রগুলো সরব হয়ে ওঠে, তাই এখন থেকেই সিনেমা হলগুলোর টিকেট কাউন্টারে শুরু হবে লম্বা লাইন।
গোটা ইউরোপ জুড়ে এখন থেকেই প্রস্তুতি চলবে খ্রীষ্টধর্মীয় সবচেয়ে বড় উৎসব ক্রিসমাস ডে পালনের। ফ্রান্সও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানে এই উৎসবকে ফরাসি ভাষায় বলা হয় নোয়েল। হিম শরতের সমস্ত রিক্ততা ও সিক্ততাকে আনন্দে রূপান্তরের ক্ষেত্রে নোয়েল তুলনাহীন। দিনটি একটি বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীর উৎসব হলেও এখানে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই এই উৎসবের আনন্দে নিজেকে রাঙ্গাতে কার্পণ্যতা করে না। এখন থেকেই সুপার মার্কেট ও বিশেষায়িত দোকানগুলো নয়েল টুপি, চকলেট, কেক ও নানাবিধ উপহার সামগ্রীর পসরা সাজাতে শুরু করেছে । অনেক উৎপাদক প্রতিষ্ঠান তাদের নিজ পণ্য সামগ্রীর ওপর বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দেবে। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই ফ্রান্সের সকল শহরগুলো জেগে উঠবে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জায়। ফুলের দোকানগুলোতে লেগে যাবে ক্রিসমাসট্রি বিক্রির ধুম।
প্রত্যেক ফরাসি উপহার বিনিময় করবে প্রিয় মানুষ, বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের মধ্যে। শীতের তীব্রতা অনেকটাই ম্লান হয়ে যাবে এই উৎসব আনন্দের কাছে। তুষারের সাদায় রূপ নেবে এক ভিন্ন প্রকৃতি।
শরতের হিম বাতাসের তীব্রতা ও বৈরী প্রকৃতিতে থেমে থাকে না ফরাসি জীবন ও জীবিকা। ভোরের আলো ফোটার আগেই কর্মব্যস্ত মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মেট্রো-ট্রাম-বাসস্টেশন এবং রাস্তাঘাট। চারদিকে থাকে স্বাভাবিক জীবনধারা। মানুষের প্রতীক্ষা শরত ও শীতের জীর্ণ প্রকৃতিকে বিদায় দিয়ে জীবনধারায় আবার কবে লাগবে বসন্ত সমিরণ।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪৬
মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় রাজীব নুর ভাই ......
২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৭
ওমেরা বলেছেন: খুব সুন্দর ছবি আর কথার মালা।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৪৬
মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার ওমেরা ...।।
৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৫২
মনিরা সুলতানা বলেছেন: উহ!! কী অসহ্য সুল্দর !!
বর্ননায় ও চমৎকার; অপার্থিব সুন্দর ছবির জন্য ধন্যবাদ।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ ভোর ৪:৩৪
মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার মনিরা সুলতানা .........।।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর একটি পোষ্ট।
ছবিও খুব সুন্দর হয়েছে।