নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার \'কলম\'।

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)

পৃথিবীতে ঘুরতে আসা কিছু দিনের পর্যটক

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিয়মতান্ত্রিক ও অনিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মানুষের প্রশান্তি ও অশান্তি।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩০

পৃথিবীতে দুই ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা বিদ্যমান।নিয়মতান্ত্রিক ও অনিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র একটি যথাযত আইন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরিচালনার মাধ্যমে জনগণের অধিকার সংরক্ষণ করে। অপরদিকে, অনিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় বইয়ে লিখিত সাংবিধানিক আইন ও প্রয়োগের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান।ফলে পদে পদে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার দরুন এমন রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের অনাস্থা সৃষ্টি হয়।জনগণ যে কোন পন্থায় নিজের জীবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব বাধ্য হয়ে নিজেই নিশ্চিতের চেষ্টা করে।ফলে সমাজ এক অনিয়মের বেড়াজালে আটকা পড়ে।

একটি মানবিক, জবাবদিহিতামূলক ও নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মানুষ তার আর্থিক সামাজিক নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রের আইন ও নীতির উপর আস্থা রেখে নিশ্চিন্তে জীবন যাপন করে।এমন রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল রাষ্ট্রের কাছে জনগণের প্রাপ্তিটুকু রাষ্ট্র জনগণকে বুঝিয়ে দিতে সচেষ্ট থাকে, আবার জনগণের নিকট রাষ্ট্রের প্রাপ্যটুকু রাষ্ট্র নিয়মের মধ্যদিয়ে বুঝে নেয়। জনগণ ও রাষ্ট্র একে অপরের উপর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও আস্থাশীল।রাষ্ট্র ও জনগণ একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এমন সমাজের মানুষ সৎ কর্মকে জীবনের সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে দেখে।

অনিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মানুষ তার জীবনের সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য অর্থ ও ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল হয়। রাষ্ট্রের সংবিধানের উপর নয়।ফলে অর্থ ও ক্ষমতা অর্জনের নেশা এমন রাষ্ট্রের মানুষকে চরম দুর্নীতি পরায়ণ ও অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে ।নীতি নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ক্ষেত্রে শিক্ষিত ও অশিক্ষিত মানুষের মধ্যে পার্থক্যের বিশেষ কোন ফারাক খুঁজে পাওয়া যায়না।উভয় শ্রেণীর মানুষ বিশ্বাস করে যত বেশী টাকা উপার্জন করা যাবে জীবন ততো বেশী স্বাচ্ছন্দ্যময়, আরাম আয়েশে ভরা ও নিরাপদ হবে।অধিক অর্থ ক্ষমতার উৎস আর ক্ষমতা মানে মানুষের কুর্ণিশ আর দুঃসাধ্যকে সাধ্যে রূপান্তর। গভীর বিশ্বাস, তাদের বিপদে অর্থ ছাড়া মুক্তির আর কোন মাধ্যম খোলা নেই এবং কোন কিছু অর্জনের জন্য ক্ষমতা ছাড়া প্রাপ্তি নেই।তাই, অর্থ ও ক্ষমতাকে জীবনের লক্ষ্য স্থির করে এমন রাষ্ট্রের মানুষ যাবতীয় কর্ম পরিকল্পনা সাজায়। কারণ তারা জানে, রাষ্ট্র কর্তৃক জনগণের জন্য প্রদত্ত কল্যাণের প্রতিশ্রুতি ও দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার বিজ্ঞাপন মাত্র।ফলে জনগণ তার রাষ্ট্রের সংবিধানকে বিশ্বাস করেনা,রাষ্ট্রও জনগণের ইচ্ছা অনিচ্ছা, আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মাথা ঘামায় না।এখানে জনগণ রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়, দুইটি বিচ্ছিন্ন সত্ত্বা।

এই সমাজের মানুষ ভাগ্য ও কুসংস্কারের উপর অধিক নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। যা আধুনিক, যুক্তিবাদী, বিজ্ঞান মনস্ক ও প্রগতিশীল জাতি গঠনের চরম অন্তরায়।এছাড়া "পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি"এমন প্রবাদ অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিত্তিহীন। কারণ এমন সমাজে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে যেহেতু কোন কিছু সম্পন্ন হয় না তাই গাধার মত পরিশ্রমের পরিবর্তে সুযোগ সন্ধানী হতে হয়।পরিশ্রম করে যোগ্যতা অর্জনের পর যোগ্য আসন মেলে না, কিন্তু অযোগ্য মানুষ তোষামোদি,ব্যক্তিপূজা ও ধূর্ত পথ অবলম্বন করে সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্বের আসন অলংকরণ করে। এমন নজীর এমন সমাজে ভূরি ভূরি।

রাষ্ট্রের প্রতি এমন আস্থাহীনতা ও অবিশ্বাস এমন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে আরম্ভ করে একজন শ্রমিক পর্যন্ত প্রতিটি মানুষকে প্রচণ্ড অর্থলিপ্সু,লোভী ও আত্মকেন্দ্রিক করে গড়ে তোলে।জনগণ নিয়মতান্ত্রিক ও অনিয়মতান্ত্রিক উভয় উপায়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করলেও জীবনের প্রকৃত স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়। প্রতিমুহূর্তের অবিশ্বাস ও অনিরাপত্তার ভীতি প্রতিটি মানুষকে উৎকণ্ঠার মধ্যে রাখে।এমন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকেও রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য অন্যায়ের আশ্রয় নিতে হয় এবং চলমান অনিয়ময়ের ফল অদূরে ভোগের ভয়ে ভবিষ্যতে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আরও অনিয়ম করার ছক বা কূটকৌশল আঁটতে হয়। রাষ্ট্রের প্রধান চেয়ার মানুষের কুর্ণিশ এনে দিলেও সেই কুর্ণিশ তাকে আত্মতৃপ্তির প্রশান্তি দেয় না। কারণ তিনি জানেন, এই কুর্ণিশ শ্রদ্ধার অর্জন নয়, এই কুর্ণিশ ভয়ের। রাষ্ট্রের চেয়ার সরে গেলেই কুর্ণিশের পরিবর্তে জনগণের ঘৃণার ঢিল নিশ্চিত ধেয়ে আসবে তার দিকে।

নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একজন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মী জীবনের যে স্বাদ উপভোগ করে জীবন পাড়ি দেয়, একটি অনিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক ও রাষ্ট্রপ্রধান সেই সেই সুখের কাছাকাছিও যেতে পারে না।

একটি নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মানুষ ব্যক্তিগত অর্থ বিত্তের মালিক না হলেও রাষ্ট্রের উপর ভরসা রেখে নিশ্চিন্ত জীবন যাবন করে। অনিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মানুষ টাকার পাহাড় ও ক্ষমতার চূড়ায় অবস্থান করেও রাষ্ট্রের উপর আস্থাহীনতা অবিশ্বাস ও অনিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকায় একটি অনিরাপদ ও দুশ্চিন্তার জীবন অতিবাহিত করে।

আমাদের ব্যক্তি ও সমাজ জীবন সুন্দর ভাবে পরিবাহিতের জন্য দরকার একটি নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় ও ক্ষমতার চূড়া নয়।প্রতিটি মানুষের মধ্যে এই বোধ সৃষ্টি হওয়া একান্ত অপরিহার্য। সেই লক্ষ্যে প্রত্যেকের ভূমিকা অত্যাবশ্যক ।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪০

চাঁদগাজী বলেছেন:


সাধারণ ধারণা

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৬

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) বলেছেন: আমি অসাধারণ নই।

২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের মত প্রকাশ ও সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ থাকে।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৮

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) বলেছেন: তবে কাগজের গণতন্ত্র ও বাস্তবিক ও প্রায়োগিক গণতন্ত্র ক্ষেত্র বাস্তবতা ভিন্ন।

৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন, " তবে কাগজের গণতন্ত্র ও বাস্তবিক ও প্রায়োগিক গণতন্ত্র ক্ষেত্র বাস্তবতা ভিন্ন। "

-বাস্তবিক ও প্রায়োগিক গণতন্ত্র কোন দেশেরটা আপনি বুঝেন?

৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ওয়েল ফেয়ার ইকোনমিক পলিসি আমাদের দেশের জন্য ভালো হত। কিন্তু আমরা এটা থেকে অনেক দূরে আছি।

৫| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৪

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন:

ধনী দরিদ্রের বৈষম্য কমিয়ে আনার পরিকল্পনার অভাব।
যেটা শুরু করেছিল জিয়া তার থেকে দেশ বেরিয়ে আসতে পারেনাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.