নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে বোঝার আগেই মনের মধ্যে একটা চেতনা তাড়া করে ফিরতো। এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, একটা বিপ্লব দরকার। কিন্তু কিভাবে?বিপ্লবের হাতিয়ার কি? অনেক ভেবেছি। একদিন মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে উঠলো একটি শব্দ, বিপ্লবের হাতিয়ার \'কলম\'।

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল)

পৃথিবীতে ঘুরতে আসা কিছু দিনের পর্যটক

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনা কালের ডায়েরি। (পর্ব -১ )

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৩:৫৪

২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরে আত্মপ্রকাশ ঘটিয়ে সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক অদৃশ্য দানব করোনা ভাইরাস।একটি স্থানীয় বাজারের অজানা কোন পশুপাখীর শরীর থেকে মানুষের শরীরে অবস্থান। এর পর থেকে জ্যামিতিক হারে তার বংশবিস্তার।এখন পৃথিবীর মানব সভ্যতার বিরুদ্ধে চালাচ্ছে আগ্রাসী অভিযান।প্রতিরোধের বিরুদ্ধে লড়াই ঘোষণা করেছে প্রতিটি দেশ।বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ,জনবল ও নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে এই যুদ্ধে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে।কিন্তু প্রতিদিন ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েই চলছে এই মরণঘাতী ভাইরাসের আক্রমণ।এক সময় সারা পৃথিবীর মানুষ এই ভাইরাসে কাছে উহানের মানুষের অসহায়ত্ব চেয়ে চেয়ে দেখেছে।চীনা জাতি একটি ভাইরাসের কাছে পরাস্ত হবে,এটা তারা মেনে নিতে পারেনি।সারা পৃথিবী যখন চীনাদের খাদ্যাভ্যাস,ধর্মীয় বিশ্বাস অবিশ্বাসকে কেন্দ্র করে এই ভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে নিজেদের মত করে গবেষণা, হাসি তামাশা করছে,তখন চীনারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এই ভাইরাকে নির্মূলের লক্ষ্যে নির্ঘুম লড়াই করেছে নিজেদের মত করে। অনেকেরই ধারণা ছিল হয়তো এই তাণ্ডবলীলা চীনেই শেষ হবে। কিন্তু তা না হয়ে বরং সারা পৃথিবীর আজ অন্যতম উদ্বেগের কারণ এই করোনা ভাইরাস।

ধারণা করা হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝির দিকে ফ্রান্সের Mulhouse মুলুজ অঞ্চলের Haut Rhin উ রা শহরের একটি খ্রিস্ট ধর্মীয় সমাবেশ থেকে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঘটে।কিন্তু,ফ্রান্সের করোনা আক্রান্ত প্রথম মৃত্যুর ঘটনার গল্পটা অন্য রকম। জানুয়ারি মাসে চীনের হুবেই শহরের ৮০ বছরের এক অধিবাসী ও তার মেয়ে ফ্রান্সে ভ্রমণে আসেন।হঠাৎ করেই তারা অসুস্থ হয়ে পরে।২৫ জানুয়ারি প্যারিসের Hopital Bichat অপিতাল বিশেতে তারা চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন।ডাক্তারি পরীক্ষায় ধরা পরে তারা উভয়ই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত।প্রায় তিন সপ্তাহের চিকিৎসায় মেয়ে সুস্থতার দিকে এগিয়ে গেলে পিতার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে মৃত্যু হয়।খবরটি ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রী Agnes Buzyn ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে জানায় ফ্রান্সে কোভিড ১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন চীনা পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।ধারণা করা হয়, এশিয়ার বাইরে প্রথম এটাই কোভিড ১৯ ভাইরাসের সংক্রমিত মৃত্যু।
করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই দুর্যোগকে তিনটি স্তরে ভাগ করে মোকাবেলার প্রস্তুতি চালাচ্ছিল। প্রথম স্তরে, জনসচেতনেতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রচার অভিযান চালায় ইলেক্ট্রনিকস ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে।সেই সাথে ভাইরাস যদি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পরে সেটাকে মোকাবেলার একটি খসড়া প্রস্তুতিও জনগণের সামনে তুলে ধরা হয়।২০২০ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ঘোষণা করা হয় মহামারীর দ্বিতীয় স্তর।এই স্তরে সংক্রমণ ও মৃত্যু সংখ্যা প্রতিদিন বাড়তে থাকে,নিম্নগামীর কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়না।তখন পর্যন্তও সচেতনেতা মূলক কার্যক্রমের মধ্যেই ছিল ফ্রান্স সরকারের পদক্ষেপ।প্রতিনিয়ত ভালোভাবে হাত ধৌত করা, একে অন্যের সাথে হাত মেলানো থেকে বিরত থাকা।হাত নাখ মুখ ও চোখে স্পর্শ থেকে বিরত রাখা,হাঁচি কাশি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধির আচরণ মেনে চলা, টিস্যু পেপার একবার ব্যবহার করে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেয়া ইত্যাদি।এর মধ্যদিয়েই যতটা সম্ভব সতর্কতার অবলম্বন করে চলছিলো সরকার। ব্যবসা বাণিজ্য, অফিস আদালত, স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়,অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ স্থলগুলোতেও নেয়া হচ্ছিলো অতিরিক্ত সতর্কতা। কিন্তু,করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রথম সপ্তাহে ১ থেকে ১২ জনে উত্তীর্ণ হয়, দ্বিতীয় সপ্তাহে ১৯১জন, তৃতীয় সপ্তাহে ৬৫৩ জন, চতুর্থ সপ্তাহে ৪৪৯৯ জনে।পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুধাবন করে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে দুর্যোগের তৃতীয় স্তর ঘোষণা করে।প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ১৩ মার্চ ২০২০, ফরাসি সরকার ১৬ মার্চ থেকে সকল প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার নির্দেশ ও সাথে জরুরী সতর্কতামূলক নির্দেশাবলী পালনের ঘোষণা প্রদান করেন। এর পর থেকেই জনমনে আশংকা ঘনীভূত হতে থাকে। আরও কঠিন নির্দেশ আসার সম্ভাবনা অনুধাবন করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব সামগ্রী মওজুদের জন্য ব্যাপক মানুষের সমাগম হতে থাকে সুপার মার্কেটগুলোতে। কিন্তু সরকার পূর্ব ঘোষিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ১৫ মার্চ বলবদ রাখে এবং ভাইরাসের কথা মাথায় রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের চালায় ব্যাপক প্রস্তুতি।

ইচ্ছে ছিল ভোট দিতে না যাওয়ার, কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য দুপুর বারোটার দিকে একটু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে বাসার পাশের ভোট কেন্দ্রে যাই। ভোট কেন্দ্রে ভোটার ও কর্মকর্তা উভয়ের মধ্যে এক ধরণের সন্দেহাতীত দৃষ্টি এবং একে অপরকে স্পর্শ না করার সর্বোচ্চ সতর্কতা।ভোটার উপস্থিতি খুব কম যারা রয়েছে তারা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করছে।ভোট কেন্দ্রের কলম ব্যবহার না করে নিজের কলম দিয়ে সাক্ষর প্রদানের মাধ্যমে ভোট প্রদান করলাম।হ্যান্ড স্যানিটেশন জেল হাতে মেখে মানসিক স্বস্তির নিশ্বাস নিয়ে বাইরে এসে চলে গেলাম দানুভ মেট্রো স্টেশনের দিকে। চলমান ...।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: আমার ব্যাক্তিগত ধারনা আর তিন মাসের মধ্যে করোনা হালকা হয়ে যাবে। বিশ্ব সংসার সব আগের মতো হবে।

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:০১

মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল) বলেছেন: আপনার প্রত্যাশার মতই যেন হয়, তেমনটাই আশা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.