নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগ লেখা

মোশারফ হোসেন (জনি)

আমার নাম মোশারফ হোসেন ..... ব্লগে লেখার ইচ্ছা আমার অনেকদিনের কিন্তু ঠিকমতো ধারণা না থাকায় আমি এতদিন ব্লগ লেখা শুরু করতে পারিনি ...... এখন ব্লগ লিখছি টুকটাক ...... আমার লেখা ভালো লাগলে বা মন্দ , যেটাই লাগুক অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না ।

মোশারফ হোসেন (জনি) › বিস্তারিত পোস্টঃ

আধুনিক সমাজের বাস্তবতা

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:২৫

মেয়েটিকে প্রথম দেখা কোন এক বাসেই । পুরান ঢাকা হতে নিউ মার্কেট যেই বাসগুলা যায় , তার মধ্যেই একটি হবে । মেয়েটি সিটি কলেজের ছাত্রী । তবে কোন ক্লাসের ছাত্রী তা জানা যায়নি । মেয়েটি বাসের কোন নির্দিষ্ট ছিটে নয় , যখন যেই ছিট খালি পায় তাতেই বসে যায় । বেলালের সবই ভালো লাগে । এক আজব ধরনের মায়া কাজ করে মেয়েটির মুখে , প্রতিটি অঙ্গেই । বলা যায় না কিন্তু অনুভব করা যায় ।



মেয়েটির দুটি চোখ , হ্যাঁ , টানাটানা দুইটি চোখ খালি নিজের দিকে টানে । বেলাল আরও কয়েকদিন মেয়েটিকে দেখার পরেই এই সত্যটা বুঝতে পারলো । বেলাল একদিন খেয়াল করলো যে মেয়েটিও ওর দিকে তাকায় । এটা কি মনের ভুল ? মনে তো হয়না । তবে কেন তাকায় মেয়েটি ? প্রশ্ন , অমীমাংসিত একটি প্রশ্ন । বেলাল প্রায় প্রতিদিনই মেয়েটির জন্য বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করে এখন । অনেকটা নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে । যদি কোনদিন মেয়েটা না আসে , তাহলে মনের মধ্যে কি যেন থেমে যায় । এই কি যেনটা হয়তো কর্মতৎপরতা বা অন্য কিছুও হতে পারে । বেলালের জানা নেই এটাও ।



বেলাল মনে মনে ভাবে , মেয়েটিকে আমার চাই । যে করেই হোক । ভালবাসা কখনো নিয়ম মানে না । এভাবেই একদিন দেখে যে বাস মোটামুটি ফাঁকা । মেয়েটি একটি ছিট খালি পেয়ে বসে পড়লো । তার পাশের ছিটটাও খালি হয়ে গেলো অতিদ্রুত । বেলাল জলদি গিয়ে ছিটটা দখল করলো । মেয়েটাকে দেখে মনে হলো একটু অপ্রস্থুত হয়ে পড়েছে । বেলাল হঠাৎ মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করে বসলো , আপনার নামটা কি জানতে পারি ? অনেকক্ষণ চুপ থেকে মেয়েটি জবাব দেয় , মালা । মালা , বাহ বেশ সুন্দর নাম তো ।



কিছুক্ষণ পর বেলাল সাহস করে একটা কথা বলেই ফেলে , আপনার বাড়ির ঠিকানাটা দিন তো । মালা খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো , কেন ? আপনার বাসায় বিয়ের প্রস্থাব পাঠাবো । হঠাৎ-ই যেন বেলালের সব ভয়-জড়তা ভেঙ্গে গেছে । মালা হঠাৎ স্থবির হয়ে গেলো । একদম চুপচাপ পরিবেশ এর কিছুক্ষণ পর । নিরবতা বেলালই ভাঙ্গলো । কি হলো , দিলেন না ? মালা এরপর বললো , আপনাকে তো আমি চিনি না , তবে কেন আমি আপনাকে আমার বাসার ঠিকানা দেবো ? মালার কণ্ঠে বলিষ্ঠ ভাব । বেলাল তবুও একবিন্দু চমকালো না । জানে , তাকে কিছু একটা করতেই হবে ।



মালা বললো , আপনি কি জানেন যে আমি বিবাহিত ? যেন সব ঘটনার দফা-রফা করে দিতে চাচ্ছে সে । বেলালের কাছে কথাটা পুরোপুরি অবাস্থব ঠেকলো । বেলাল বললো , আমি জানি যে আপনি মিথ্যা বলছেন । ব্যাপারটা আমি কোনক্রমেই মানবো না । মালা এরপর অসহায়ের মত বলে উঠলো , না , না , সত্যি আমি বিবাহিত । আমার বিয়ের বয়স ৩ বছর । আমার স্বামী ফ্রান্সে থাকে । আর কয়েকদিন পরেই আমাকেও নিয়ে যাবে । দরকার হলে আমি আপনাকে আমার মোবাইলে থাকা বিয়ের ছবিগুলা দেখিয়ে দেই । একনাগাড়ে কথাগুলো বললো মালা । বেলালের মাথায় হঠাৎ করে আগুন চড়েছে । তাই মালা ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করতেই বেলাল মোবাইলটি ছিনিয়ে নিয়ে নাম্বারটি টুকে নিলো । সেই দিনের মত ঘটনা ওখানেই শেষ ।



এরপর চলতে লাগলো মোবাইলে ক্রমাগত জ্বালাতন । মালাও এই কথা কাউকে জানাতে পারছিলো না । নাম্বারও পরিবর্তন করা সম্ভব না কারণ ফ্রান্স দূতাবাসে ঐ নাম্বার দেয়া । কি যে করা যায় । বেলাল প্রতিদিন প্রায় ১০০ বার কল দিয়ে মালাকে জ্বালাতে লাগলো । শেষ পর্যন্ত কাহিনীতে একটা মোড় নিলো ।



বেলাল একদিন মালাকে মোবাইলে বলেই ফেললো , হয়তো তোমার বিয়ে হয়েছে ৩ বছর কিন্তু আমার বিয়ে হয়েছে ৮ বছর । এমনকি আমার এই সংসারে একটি মেয়েও আছে । মালার এবার টাশকি খাওয়ার পালা । তবে আপনি এতদিন এসব কেন করলেন , মালার সোজাসুজি প্রশ্ন । কারণ আমি তোমাকে সত্যি সত্যি ভালবেসে ফেলেছি , বেলালের উত্তর । মালা প্রায় সংঙ্গে সঙ্গেই ফোনের লাইন কেটে দিলো ।



কয়েকদিন পর আরেকটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন এলো । জরুরী মনে করে মালা ফোনটি ধরলো । ওপাশ থেকে নারীকণ্ঠ । আমি আপনার পায়ে পড়ি , আপনি আমার স্বামীকে ছেড়ে দিন । ওনাকে বিরক্ত করা ছেড়ে দিন । আপনি একজন নারী হয়ে কেন আরেকজন নারীর সুখের সংসার ভাঙ্গছেন ? ওপাশ থেকে সব একনাগাড়েই বলে চললো । মালা বুঝলো যে এই নারী বেলালের স্ত্রী । মালা তাকে বললো , আসলে আপনি যা বললেন তা ১০০ % মিথ্যা কথা । সত্য কথাটুকু আপনি আপনার স্বামীর কাছ থেকে জেনে নিন একটু কষ্ট করে ।



ঘটনা এটুকুই । এর কয়েকদিন পরেই মালার স্বামী ফ্রান্স থেকে দেশে আসে । বেলালের সাথে আর মালার দেখা হয়নি । সম্ভবত স্বামীর সাথে মালাকে দেখে সে আর কোন পদক্ষেপ নেয়নি । আবার এও হতে পারে যে তার বিবেক তাকে শেষ পর্যন্ত কাবু করেই ফেলেছে ।



আমাদের আধুনিক সমাজের বাস্তবতা এখন এমন কয়েকটি ঘটনা । এদের সংখ্যা নেহায়েৎ-ই কম হবে যারা মালার মত এমন নিরাপদে এমন ঘটনা থেকে ফিরে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে । কিন্তু অনেকের ভাগ্যেই এমনটা ঘটে না । এই যারা এইসব কাজগুলো করে তারা কেন জানি ভুলে যায় তাদের মা, বোন, স্ত্রী, মেয়ে সবাই তো মেয়ে । জানি না, কেন তারা নির্বোধ পশুর চেয়ে অধম হয়ে এই ঘৃণ্য কাজগুলো করে । আমরা সমাজের সভ্য মানুষগুলো হয়তো এদের শুধু ধিক্কারই দিতে পারি, আর কিছু নয় ।



[(সম্পূর্ণ গল্পটাই সত্য কাহিনী , একজনের জীবনে এই ঘটনা ঘটেছে এবং সে আমাকে নিজমুখে সম্পূর্ণ কাহিনীটুকুই বলেছে)]

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৫০

জনৈক কবি বলেছেন: আসলেই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতই একটি ঘটনা ......

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.