নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী।কূপমণ্ডুকতা ঘৃণা করি।ভালোবাসি সাহিত্য।

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল

বলার মত কিছুই নই আমি।একজন মহামূর্খ।

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্যাংরিন

০৬ ই জুন, ২০২০ দুপুর ২:১০


ধরুন!! শুধু ধরবেন!! বিশ্বাস করার দরকার নেই।নাইজেরিয়ার এক বর্ধিষ্ণু গ্রাম উমুওফিয়ার বাসিন্দা ওকোনকোর পায়ে খেজুরের কাঁটা ফুঁটেছিলো। সেটা বের করে ফেলার পর কিছুদিন সে ভালোই ছিলো। কিন্তু কিছুদিন পরই সে তার পায়ে তীব্র ব্যাথা অনুভব করে। ফলে উপায়ান্তর না দেখে সে গেল তার গ্রামের বিখ্যাত ডাক্তার আগবালার কাছে। ডাক্তার আগবালা সবকিছু দেখে বললেন-

"ওসব কিছু না।ব্যাথা এমনিই কমে যাবে কয়েকদিন পর।ঘরেই থেকো। জুতা পরবে না।"

তখন ওকোনকো বললো-

"ওষুধ দিলেন না??"

আগবালা বললেন-

"ওষুধ লাগবে না।যা বলেছি সেটা করলেই হবে।"

এরপর বাড়ি ফিরে গেলো ওকোনকো।সে বাইরে কাজ করতে যেত। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি সে। এজন্য জুতা পরতেই হতো তাকে। কিন্তু তারপরও আগবালার কথায় কিছুদিন জুতা পরলো না আবার উপায় না দেখে জুতা পরলো কিছুদিন।কিন্তু তার ব্যাথা কমার কোনও নামগন্ধ নেই।দিনদিন বাড়তে লাগলো। কিছুদিন পর সে লক্ষ করলো তার পায়ের বুড়ো আঙুল কালচে রং ধারণ করেছে।সাথে তীব্র ব্যাথা। সে তাড়াতাড়ি দেখা করলো আগবালার সাথে। আগবালা সবকিছু দেখে বললো-

"গ্যাংরিনে ধরেছে বোধহয়। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই।আমরা গ্যাংরিনের চেয়ে শক্তিশালী। ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি। ঘরে থাকো।আর পায়ে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছি।ঠিক হয়ে যাবে।"

ওকোনকো ঘরে ফিরে গেল। সে নিশ্চিন্তে তার দৈনন্দিন কাজ করতে লাগলো। কিন্তু তার পায়ের ব্যাথা কমার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।দিন দিন বেড়েই চলেছে আগের তুলনায়। এবার সে ভয়ের সাথে লক্ষ করলো তার পায়ের আরও একটি আঙুল কালো হয়ে গেছে। এবার কনিষ্ঠা আঙুল কালো হলো। সে আতঙ্কিত হয়ে আবার গেল আগবালার কাছে। সবকিছু দেখেশুনে এবার আগবালার কপালে চিন্তার রেখা দেখা দিলো।

"ওকোনকো, গ্যাংরিন তো মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। পা পঁচে যাচ্ছে। "

একথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো ওকোনকো। ডাক্তারকে বললো কোনও উপায় বের করতে।পা পঁচে গেলে তার চলবে না।সে অথর্ব হয়ে যাবে। ডাক্তার আগবালা এবার কিছুক্ষণ চিন্তা করলেন।তাকে বিচলিত দেখাচ্ছিলো। চিন্তাভাবনা করার পর সে বললো-

"দুটো উপায় হাতে আছে। হয় আঙুল কেটে ফেলতে হবে।নয়তো পুরো পা।আঙুল কাটলে হাঁটতে পারবে কিন্তু পা কাটলে তো পারবা না।"

উপায় শুনে এত হতাশার মধ্যেও একটু খুশি হলো ওকোনকো।মনে মনে বললো-

"আঙুল গেলে যাক।হাঁটতে তো পারবো।আগবালা তো মানবিকতার হুজুরে আলা।"

এরপর যথাসময়ে ওকোনকোর আঙুল কেটে ফেললেন ডাক্তার আগবালা।সেখানে ব্যান্ডেজ করে কিছু ওষুধ দিয়ে বিদায় করলেন ওকোনকো কে। ওকোনকো চিন্তান্বিত অবস্থায় ফিরে গেল বাড়ি। যাওয়ার আগে তাকে ডেকে নিয়ে সুবিখ্যাত সুমহান ডাক্তার আগবালা বলেছিলেন-

"গ্যাংরিন তোমার ওপরে চেপে বসেছে। এই গ্যাংরিনকে সাথে নিয়েই তোমাকে বাঁচতে হবে।





মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:২৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ব্লগে স্বাগতম।

সময়ের সাথে সময়ে না করলে ভয়াবহ পরিণতি হয়।

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৫১

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।করোনা আসার আগে তাকে মোকাবেলার জন্য আমরা তিনমাস সময় পেয়েছিলাম ।কিছুই করতে পারিনি।এর ফল এখন ভোগ করতে হচ্ছে।

২| ২৬ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:১২

খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার একটি শিক্ষণীয় গল্প লিখেছেন। গল্পে প্লাস + +।
আমাদেরকেও কভিড-১৯ নামক গ্যাংরিনকে সাথে নিয়ে বাঁচতে হচ্ছে।

২৭ শে আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:০৫

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার আন্তরিকতা ও চমৎকার মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানাই। সময় করে পুরাতন পোস্ট পড়ে মন্তব্য করেছেন। আপনার প্রতি শুভেচ্ছা রইলো।
এই গল্পটি কোভিডের শুরুর দিকে আমাদের সবার কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখা। চরিত্রের নামগুলো নিয়েছিলাম চিনোয়া আচেবের বিখ্যাত উপন্যাস থিংস ফল অ্যাপার্ট থেকে। কোভিডের জায়াগায় গ্যাংরিনকে এনেছি। আপনার কথা সঠিক। কোভিড নামক গ্যাংরিনকে নিয়ে এখনো বাঁচতে হচ্ছে আমাদের।
দেরিতে প্রতিউত্তর করায় আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.