নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী।কূপমণ্ডুকতা ঘৃণা করি।ভালোবাসি সাহিত্য।

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল

বলার মত কিছুই নই আমি।একজন মহামূর্খ।

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা ও বিশ্বসাহিত্যের স্বরূপ

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৭

ব্লগের একটি পোস্টে চোখ আটকে গেল।সেখানে একজন সম্মানিত ব্লগার বাংলা সাহিত্যকে মরাকান্নার সাহিত্য আখ্যা দিয়ে বিদেশি সাহিত্যের গুণগাণ গেয়ে একাকার করে ফেলেছেন। তার পোস্টটি অপপ্রচার এবং একচোখা বিশ্লেষণে ভরপুর।হয় তিনি বেছে বেছে মরাকান্নার সাহিত্য পড়েছেন অথবা যেকোনো সাহিত্যে মরাকান্নার অংশ পড়ে আর পড়েন নি। আর বিদেশি জিনিসের প্রতি বাঙালির আদিখ্যেতা নতুন কিছু নয়।সেটা সেই পোস্টেও প্রকাশিত।

দুই সাহিত্যের তুলনা করতে গেলে আমাদের এই দুই অঞ্চলের সমাজ,দর্শন ও মানসিকতা নিয়ে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। মরুভূমির সাথে মেরু অঞ্চলের সাদৃশ্য মেলাতে গেলে সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যই পাওয়া যাবে। প্রাচ্য দর্শন ও পাশ্চাত্য দর্শনের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ বিদ্যমান। প্রাচ্য সমাজ আধ্যাত্মবাদ ও ভাববাদে বিশ্বাসী। আর পাশ্চাত্য সমাজ ভোগবাদে। আর তাই প্রাচ্য সমাজে মানবতাবাদের প্রাধান্য দেখা যায় আর পাশ্চাত্য সমাজে ভোগ,দখল,যুদ্ধ বিগ্রহ। ওরা যখন জ্ঞান,বিজ্ঞানে উন্নত হচ্ছিলো আমরা তখন ওদের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে সংগ্রামে রত থেকেছি। শরৎ, মানিক,বিভূতির লেখায় তিনি মরাকান্না পান।অথচ তাদের লেখায় সমকালীন সমাজ,রাষ্ট্র,রাজনীতি উঠে এসেছে সেটা তার চোখে পড়ে নি। শরতের পথের দাবি ইংরেজদের বিরুদ্ধে সরাসরি বিদ্রোহ,যার ফলে বইটি নিষিদ্ধ হয়।নজরুলের কবিতায় বিদ্রোহ এসেছে।

তিনি দেব-দেবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত মানুষের কথা বলে ইউরোপীয় সাহিত্যকে মহীয়ান বলে ঘোষণা করেছেন অথচ বাংলায় যে একজন চাঁদ সওদাগর বসে আছেন সেটা তিনি সম্ভবত ভুলে গেছেন।দেবী মনসা শেষ পর্যন্তও তাকে টলাতে পারে নি।

বাঙালির বীরত্বের ইতিহাস খুঁজে পান না তিনি। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্পে আগস্ট আন্দোলন,নীলদর্পন নাটকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম,পথের দাবী উপন্যাসের স্বদেশী আন্দোলন,তারাশঙ্করের অরন্যবহ্নি তে সাওতাল বিদ্রোহ সহ বাঙালির সংগ্রামের বিবিধ উপাদান আছে বাংলা সাহিত্যে।অথচ তিনি শুধু রুশদের বিপ্লবের কাহিনির কথাই বললেন।

সমকালীন রাজনীতি নিয়ে লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ঘরে-বাইরে ও গোড়া তে। বিভূতি লিখেছেন আরণ্যকে।সেখানে পরাধীন ভারতকে কটাক্ষ করেছেন এইই বলে যে "ভারতবর্ষ কোথায়?"

তিনি ইংরেজদের সাহিত্যের ভুয়সী প্রশংসা করেছেন পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ না করেই। শেক্সপীয়ার তাঁর দেশের দরিদ্র মানুষদের নিয়ে লেখেন নি।কেন লেখেন নি? এটা কি সত্যের অপলাপ নয়? তিনি সত্যকে লুকিয়েছেন। লেখকের মতো আমি যদি এখন একচোখা মন্তব্য করি তাহলে শেক্সপীয়ারের বিখ্যাত রচনাগুলোতেও মরাকান্না ছাড়া আর কিছু নেই। তাঁর প্রত্যেকটা নাটকের মূলকথা একটাই।নায়ক আকাম করবে,নায়িকা/নায়ক একে অপরকে ভুল বুঝবে।শেষ পর্যন্ত নায়ক নায়িকা মরে গিয়ে নাটক শেষ।একেবারে ফুল ফরম্যাট। অথচ এসব কথা বললে শেক্সপীয়রের সাহিত্যকর্মকে অবমূল্যায়ন করা হবে।তাঁর নাটকের মহিমা বুঝতে পারবে না পাঠক।

বরিনসন ক্রুসো,গালিভারস ট্রাভেলে অ্যাডভেঞ্চারকে মুখোশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।এই দুটোই দখলদারী এবং ঔপনিবেশিকতার কাহিনি। রবিনসন দ্বীপ দখল করে উপনিবেশ স্থাপন করেছে। অথচ বাংলায় বিভূতি চাঁদের পাহাড় নামক বিশুদ্ধ অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস লিখেছেন যেখানে বাঙালি যুবক আফ্রিকায় পরিব্রাজন করেছে এবং প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থেকেছে।

তিনি হোমারের ইলিয়ড,ওডিসির কথা তুলেছেন অথচ সফক্লিসের ইডিপাস এবং অন্যান্য লেখকের ইলেক্ট্রা,প্রমিথিয়াস বাউন্ডসের কথা বলেননি। ওগুলোতে মরাকান্নার উপাদান ভর্তি। কিন্তু মরাকান্না ছাপিয়েও সেখানে আরো কিছু আছে।তাই সেটাকে ফোকাস করলে এসব ট্রাজেডির মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।

লেখার শেষে এসে তিনি দি ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সি এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সান্টিয়াগো জীবনযুদ্ধে পরাজিত বৃদ্ধ।সে জয়ী হয় নি।কিন্তু হাল ছেড়ে দেয় নি। পুরো উপন্যাসেই মরাকান্না ভর্তি।কিন্তু শেষ পর্যন্ত নতুন জীবনের আশাবাদ বজায় রেখেছেন আর্নেস্ট হেমিং ওয়ে।এটাই এই উপন্যাসের বিশেষত্ব। অথচ এমন উপন্যাস বাংলায়ও আছে।বিভূতির পথের পাচালি। অপু সারাজীবন ঠোকর খেয়েও পথ চলা থামায় নি। তেমনি রয়েছে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের খোয়াবনামার তমিজ। তারা যেমন সমকালীন ক্রীতদাস প্রথার বিরুদ্ধে লিখেছেন তেমনি বাংলার লেখকগণ সতীদাহ প্রথা নিয়ে লিখেছেন।কমলকুমার মজুমদারের অন্তর্জলী যাত্রা তেমন একটি উপন্যাস। ধর্ম ব্যাবসা নিয়ে লিখিত ওয়ালীউল্লাহর লালসালু,বহীপীর।

বীরত্বের বেলায় শুধু ইংরেজেই থেমে থাকে নি বাংলার লেখকগণ।মুক্তিযুদ্ধ, নকশাল নিয়ে বহু উপন্যাস নাটক,কবিতা লেখা হয়েছে।

আলবেয়ার কামু, ইউজিন আয়োনেস্কো,স্যামুয়েল বেকেট যেমন অ্যাবসার্ড তত্ত্ব নিয়ে লিখেছেন তেমনি সাইদ আহমদ, বাদল সরকার,মোহিত চট্টোপাধ্যায় অ্যাবসার্ড তত্ত্ব নিয়ে লিখেছেন। ফ্র‍য়েডিও তত্ত্ব নিয়ে লিখেছেন আলাউদ্দিন আল আজাদ,বিষ্ণু দে,মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।

টি এস এলিয়টকে খুব উচ্চাসন দেয়া হয় বিশ্বসাহিত্যে। অথচ টিএস এলিয়ট যে ঘরানায় লিখেছেন একই ঘরাণার কবি জীবনানন্দ, বুদ্ধদেব বসু,সুধীন্দ্রনাথ দত্ত,বিষ্ণু দে,অমিয় চক্রবর্তী, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়। এদের কবিতা যদি আপনার মরাকান্না মনে হয় তাহলে টি এস এলিয়টের কাব্যগুলোকেও মরাকান্না বলতে হবে আপনার কথা মতে।

স্যার আর্থার কোনান ডয়েল যেমন গোয়েন্দা উপন্যাস লিখেছেন তেমনি সত্যজিৎ,শরদিন্দু,সুনীল,প্রেমেন্দ্র মিত্রও গোয়েন্দা উপন্যাস লিখেছেন।

হাস্যরসাত্মক সাহিত্য লিখেছেন প্যারীচাদ মিত্র, সৈয়দ মুজতবা আলী, রাজশেখর বসু,প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, আবুল মনসুর আহমদ প্রমুখ।

জাদুবাস্তব সাহিত্য লিখেছেন আখতারুজ্জামান ইলয়াস, শহীদুল জহির।

বিজ্ঞানভিত্তিক জীবন দর্শন নিয়ে লিখেছেন অক্ষয়কুমার দত্ত,মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ছোটগল্প ও উপন্যাসে মার্ক্সিজম,ফ্রয়েডিজমের প্রয়োগ করেছেন। প্রাগৈতিহাসিক ,সরীসৃপ, সিঁড়ি এমন গল্প। পুতুল নাচের ইতিকথায় দেখিয়েছেন মানুষ নিয়তির হাতের পুতুল না। প্রত্যেকটি ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করেছেন।মার্ক্সিজমের সফল প্রয়োগ করেছেন পদ্মানদীর মাঝি তে।আগস্ট আন্দোলন তুলে ধরেছেন চিহ্ন তে।

আরব্যোপন্যাসে স্বভাবতই সমুদ্রযাত্রা থাকবে। কারণ তাদের দেশে ফসল হতো না।অন্য দেশে ব্যবসা করেই পেটে ভাত জুটতো তাদের।আলাদীন আলীবাবা চোরের ওপর বাটপারী করেছে।অন্যের লুকিয়ে রাখা সম্পদ আত্মসাৎ করেছে।এটা ভালো স্বভাবের পরিচয় দেয় না।অপরদিকে আমাদের নিজেদের খাবার আমরা নিজেরাই উৎপাদন করে আসছি হাজার বছর ধরে।এজন্যই আমরা জাগতিক বস্তু বাদ দিয়ে আধ্যাত্মিকতা নিয়ে চিন্তা করতে পেরেছি।ইউরোপীয়ানরা সারাজীবন অন্যকে লুটেছে।অন্যকে লুটতে না পারলে নিজেদের লুটেছে।যেমন ভাইকিংস জাতি। সেই লুটের কাহিনিকে বীরত্ব হিসেবে প্রচার করেছে তাদের সাহিত্যে। অন্যদিকে আমাদের অঞ্চল হাজার বছর ধরে বিভিন্ন দেশ লুটছে।প্রথমে বৌদ্ধ,তারপর হিন্দু,মুসলমান এরপর ইংরেজ। বাংলার মানুষও সংগ্রাম করে গেছে। একই সাথে নিজেদের জীবন ও যাপন করে গেছে। এখন আমি যে জীবন যাপন করছি সেই জীবনের প্রভাব আমার ওপর পড়বেই। বাঙালির জীবনে দুঃখ যেমন আছে তেমনিসংগ্রাম বীরত্বের ইতিহাসও আছে।এখন যদি আপনি মরাকান্না নিয়ে পড়ে থাকতে চান তাহলে সেটা আপনার ইচ্ছা।বেশি করে কাঁদুন।আর অন্যেরটা দেখে হা হুতাশ করুণ।

মন্তব্য ৪১ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৪১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১০

সাগর শরীফ বলেছেন: ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতি জীবনযাত্রার ধরণ ও মান বিবেচনায় সাহিত্যের ধরণও রুপরেখার ভিন্নতা ঘটে। একটি অঞ্চলের সাহিত্যের সঙ্গে আরেকটি অঞ্চলের সাহিত্যের তফাত করতে গেলে হবে না। বড়জোর বিভিন্ন অঞ্চলের সাহিত্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়া যেতে পারে।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৬

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আমারও একই বক্তব্য। অঞ্চলের ভিন্নতা থাকবে। যদি একই দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করতে হয় তাহলে সেই অঞ্চলের বৈশিষ্টের আলোকেই বিশ্লেষণ করতে হবে।কারণ একেক অঞ্চলের প্রকাশভঙ্গী একেক রকম। সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩১

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: কামইকেল মধুসন্দ দত্তের কথা মনে পড়েছে

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৯

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।তিনি ইংরেজি সাহিত্যের দিকে ঝুঁকে পরে বাংলায় ফেরত দেছেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে অন্য সংস্কৃতি যতই আত্মস্থ করা হোক না কেন তা কখনোই নিজের হয় না।

৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: স্যার, আপনার লেখায় প্রকাশিত অনেক চিন্তাভাবনার সঙ্গেই আমি একরকম অনুভব করি, তবে কিছু মন্তব্য পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ। যেমন, আমাদের দেশী সাহিত্যকে টেনে তোলার জন্যে ইউরিপিদিস, শেক্সপিয়র, পি বি শেলী এবং হেমিংওয়ের রচনাবলীতে "মায়াকান্না" আছে - এরকম সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর কি আদৌ প্রয়োজন আছে? এছাড়াও, মার্ক্সিজম, মডার্নিজম, ফ্রয়েডিয়ান সাইকোঅ্যানালাইসিস, এক্সিস্টেনশিয়ালিজমের এর মত যে সমস্ত তত্ত্বকে মাপকাঠী বিবেচনা করলেন - সেগুলোও তো আলটিমেটলি পাশ্চাত্যেরই আমদানি, তাই না? পাশ্চাত্যের দর্শন সাহিত্যে প্রয়োগে বাঙ্গালী সাহিত্যিকরা পাশ্চাত্যের সাহিত্যিকদের চে' এগিয়ে - এ যুক্তিটাই তো কেমন স্ববিরোধী শোনায়, নয় কি? আর এই যে আমরা - ওরা'র আদারিং, জেনোফোবিয়ার চর্চা - এটাও তো বিদ্বেষই তৈরি করে চলে কেবল, ডোমিনো এফেক্টের মত।

আমার ব্যক্তিগত মতামত, ইলিয়াসের খোয়াবনামা, বা হাসান আজিজুল হকের আগুনপাখি - উপন্যাসগুলি নোবেল প্রাইজের উপযুক্ত। আমাদের বাংলাদেশীদের প্রধানতম দুর্ভাগ্য, আমাদের বাংলা থেকে ইংরেজির অনুবাদের পাইপলাইন একদমই নড়বড়ে, যার কারণে আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিকের কাজ কখনো বিশ্ব দরবারে পৌঁছায় না। জার্মান কাফকা, জাপানের মুরাকামি, বা ব্রাজিলের কোয়েলো'র বই হাতে আমাদের দেশের তরুণ ছেলেপেলেরা যে হাঁটাহাটি করে, তার কারণ, তাঁদের বই দ্রুত ইংরেজিতে অনুবাদ হয়ে যায়, মুলানুগ, ঝরঝরে ভাষায়।

আপনি কমলকুমার মজুমদারের কোন উপন্যাস পুরোটা পড়েছেন? আমি আমার সংক্ষিপ্ত জীবনে একেবারেই হাতে গোনা দু' চারজন লোকের সাথে পরিচিত হয়েছি যারা কমলকুমার পড়েছেন।

আপনার চিন্তার সাথে পরিচয় হয়ে ভালো লাগলো। শুভকামনা আপনার জন্যে।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০২

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।আমার আপত্তির জায়গা এটা ছিলো যে মরাকান্না ছাড়া কিছু নেই এই কথা তে।হয়তো আমার ব্যাখ্যা করতে ভুল হয়েছে।সেখানে আমি এটা বোঝাতে চেয়েছি যে ঐ ট্রাজেডিগুলোতেও মরাকান্না আছে।কিন্তু আমি যদি শুধুই মরাকান্না ফোকাস করি তাহলে অন্যায় হবে।
তত্ত্বের মাধ্যমে এটাই বোঝাতে চেয়েছি যে বাংলা সাহিত্যে মরাকান্না ছাড়াও পাশ্চাত্যের তত্ত্বও ব্যবহৃত হয়েছে।ওর্থাৎ মরাকান্না ছাড়া অন্য ধারার লেখাও আছে। আমি কোনও সাহিত্যকে ছোট করতে চাই নি।শুধু এইটুকু বোঝাতে চেয়েছি যে বাংলা সাহিত্যকে যে মরাকান্না দোষে দুষ্ট করা হয়েছে সেই মরাকান্না খুঁজলে বাইরের সাহিত্যেও পাওয়া যাবে।

কমলকুমার মজুমদারের শুধু অন্তর্জলী যাত্রা উপন্যাস পড়েছি। ছোটগল্প পড়েছি মল্লিকা বাহার,লালজুতো,নিম অন্নপূর্ণা,বাগান কেয়ারি,ফৌজ ই বন্দুক,মতিলাল পাদরি সহ আরও কয়েকটা ।সেগুলোর নাম আপাতত মনে আসছে না।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১২

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: কমলকুমার কে লেখকদের লেখক বলা হয়।এজন্য যে ভাষাগত দিক দিয়ে এত বেশি পরীক্ষা চালিয়েছেন যে পড়তে গিয়ে দাঁত ভেঙে যায়।ফরাসি ,ইংরেজি ভাষার পদবিন্যাস ব্যবহার করেছেন বাংলায়।দেখা গেছে একটি বাক্যই দুই পৃষ্ঠা ধরে চলছে।আবার একটি শব্দ দিয়ে একটি বাক্য শেষ।আর যতি চিহ্নের ব্যবহার মাত্রাতিরিক্ত বেশি।একারণে পড়তে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হয়।এজন্য ওনার পাঠক সংখ্যা খুবই কম।

৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৯

জাহিদ হাসান বলেছেন: বাংলা সাহিত্য যথেষ্ট সমৃদ্ধ। তবে একে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪২

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। সমসাময়িক কালে বহু নতুন নতুন সাহিত্যের ধারা প্রবর্তিত হচ্ছে। তার মধ্যে ভালোগুলো আত্মস্থ করে লিখে যেতে হবে লেখকদের।যুগের সাথে না চললে উন্নতি হবে না সাহিত্যের।

৫| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি যা লিখেছেন সঠিক লিখেছেন। আমি আপনার সাথে একমত।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৪৯

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: যেকোনও ভাষার যেকোনও ভালো সাহিত্যই পৃথিবীর সম্পদ। কিন্তু একটাকে মরাকান্না বলে ছোট করলাম তাকে ভালোভাবে বিচার না করেই,আর অন্যটাকে তোয়াজ করলাম,এই বিষয়টা খুবই খারাপ লাগে। আপনাকে ধন্যবাদ।

৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৪

মা.হাসান বলেছেন: বাঙলা ভাষায় কারো কারো দখল বিদ্যাসাগর মহাশয়ের প্রথম আর দ্বিতীয় ভাগ পর্যন্ত। ওনারা বাংলা সাহিত্য নিয়ে এরকম বিরূপ মন্তব্য করতে পারেন। অতি দূরে যাবার দরকার নেই। এই ব্লগেই এমন কবি-লেখক আছেন যাদের লেখা নিয়ে দুই বাংলাই গর্ব করতে পারে।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫২

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।আসলে কোনও ব্যাপারে মতামত দিতে গেলে সবকিছু বাছবিচার করেই দেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।অনেক ভালো মানের লেখা আছে ব্লগে।

৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:৩৭

আমি সাজিদ বলেছেন: ব্লগ শক্তিশালী একজনকে পেতে যাচ্ছে। আপনার পড়াশুনার প্রশংসা করতেই হয় তমাল।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১১

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ অনুপ্রেরণা মূলক মন্তব্যের জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:০৮

অনল চৌধুরী বলেছেন: যেকোন বিষয় নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত থাকাই স্বভাবিক।এর মাধ্যমে উন্নত চিন্তাধারা বিকাশ লাভ করে এবং আমি সবসময়ই ভিন্ন মত প্রকাশের অধিকারকে সন্মান করি।
বাংলা সাহিত্যে আলোকিত উপন্যাস থাকলেও সেগুলির কোনোটাই বাঙ্গালীর কাছে মহান সাহিত্যের মর্যাদা পায়নি।
সত্যজিৎ,শরদিন্দু,সুনীল,প্রেমেন্দ্র মিত্র,প্যারীচাদ মিত্র, সৈয়দ মুজতবা আলী, রাজশেখর বসু,প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, আবুল মনসুর আহমদ আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের একটা উপন্যাসের নাম বলেন যেটা শরৎ-বিভূতি-মাণিকের হাহাকারসর্বস্ব সাহিত্যগুলির মতো দুই বাঙ্গালায় বিরাট সাহিত্যকর্মের মর্যাদা পেয়েছে এবং যেগুলি নিয়ে বারবার চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে?
বাংলা সাহিত্যে এক চাদের পাহাড় ছাড়া উল্লেখ যোগ্য একটা অভিযানকাহিনীর নাম বলেন।
আর টাইম মেশিন, জুল ভার্ণের উপন্যাসগুলির মতো ১৮-১৯ শতকে লেখা বিজ্ঞান-ভিত্তিক কাহিনী তো দূরের কথা !!!
চলচ্চিত্র নিয়ে কোনো কথা বলেননি কেনো?
নাকি সূর্যদীঘল বাড়ি,গোলাপী এখন ট্রেনে,ভাত দে,পোকামাকড়ের ঘড়-বসতি,দুখাই মার্কা চলচ্চিত্রে মারাকান্না দেখানো খুব ভালো !!!!!
দু:খ-দারিদ্র আর হতাশায় পূর্ণ সাহিত্য এবং চলচ্চিত্রই পরশ্রীকাতর, দুর্নীতিবাজ, নৈতিকতা ও দেশপ্রেমহীন, লোভী,স্বার্থপর এবং হাহাহারপ্রিয় বাঙ্গালী জাতির সৃষ্টি করেছে, যারা স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সামনে যাওয়া দূরে থাক, দিনে দিনে পিছন থেকে আরো পিছনে যাচ্ছে এবং যাবে।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৭

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনি এখন ব্যাপারটাকে অন্যদিকে নিয়ে গিয়েছেন। "বাংলা সাহিত্যে আলোকিত উপন্যাস থাকলেও সেগুলির কোনোটাই বাঙালির কাছে মহান সাহিত্যের মর্যাদা পায় নি"। এই কথাটি যদি আপনি প্রথম পোস্টের প্রথমে বলে দিতেন তাহলে আর এই পোস্ট লেখার কোনো দরকারই ছিলো না। আপনি মরাকান্না দিয়ে ভরপুর বলে এই আলোকিত সাহিত্যগুলোকে এড়িয়ে গেছেন। মর্যাদা পাক বা না পাক তারা বাংলা সাহিত্যে আছে।এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

বেশির ভাগ লোক যেটা পছন্দ করে সেটা থেকে বের হয়ে এসে যারা লেখেন তারাই ভিন্ন ধারার লেখক। আমার পোস্টের শুরুতেই বলেছি বাংলার সমাজ,সংস্কৃতি ইউরোপ থেকে ভিন্ন। হাজার বছর ধরে শোষিত হবার ফলে দুঃখ বাঙালির জীবনের অংশ হয়ে গেছে। আর তাই যেসব রচনায় তারা নিজের জীবনের সাথে মিল খুঁজে পাবে সেসব রচনাই জনপ্রিয় হবে এবং বেশি বেশি চলচ্চিত্র নির্মিত হবে। আর জনপ্রিয় হওয়া,মর্যাদা পাওয়া কিংবা চলচ্চিত্র নির্মিত হওয়াই ভালো লেখক বা লেখার মাপকাঠি না।

আর শুধুমাত্র উপন্যাস থেকেই যে চলচ্চিত্র নির্মিত হবে তার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।আপনি যেসব লেখকদের কথা উল্লেখ করেছেন তাদের অনেক লেখাই চলচ্চিত্র নির্মাণের যোগ্য এবং সেগুলো দুই বাংলায় জনপ্রিয়।

সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজ
শরদিন্দুর ব্যোমকেশ সিরিজ
প্যারীচাঁদ মিত্রের আলালের ঘরের দুলাল।
সৈয়দ মুজতবা আলীর চাচাকাহিনি,পঞ্চতন্ত্র,শবনম,দেশেবিদেশের গল্প অবলম্বনে অনায়াসে চলচ্চিত্র বানানো যায়।
রাজশেখর বসুর গড্ডলিকা।
প্রভাতকুমারের বহু ছোটগল্প আছে যা দিয়ে মুভি বানানো সম্ভব।
আবুল মনসুর আহমদের আয়না।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের খোয়াবনামা,চিলেকোঠার সেপাই। এই দুটো দিয়ে কেউ চলচ্চিত্র নির্মাণ করে নি। কিন্তু তাঁর রেইনকোট গল্প নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। নাম "মেঘমল্লার" । পরিচালক জাহিদুর রহিম অঞ্জন।

এখন এসব সাহিত্য নিয়ে কেউ বানায় নি বলে তারা ভালো সাহিত্য নয় এমনটা ভাবা ঠিক নয়। বানানোর স্কোপ আছে কেউ বানায় নি।এখন এটা আমাদের ব্যর্থতা যে আমরা আমাদের সাহিত্যকে তুলে ধরতে পারিনি।এটা সাহিত্যের ব্যর্থতা নয়।

চাঁদের পাহাড় ছাড়াও প্রেমেন্দ্র মিত্রের পাতালে পাঁচ বছর,শুক্রে যারা গিয়েছিলো,সূর্য যেখানে নীল, পিঁপড়ে পুরাণ উল্লেখ্যোগ্য।

আর জুল ভার্ন টাইপের রচনার কথা লিখিনি কারণ আমি সেগুলো সম্পর্কে জানতাম না। আমি না জানলেও তারা আছে। স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু,হেমলাল দত্ত,সত্যজিৎ রায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র,জগদানন্দ রায়, সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ তারা লিখেছেন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি।। এই ধারা বাংলায় জনপ্রিয় নয়।এর কারণও আমি ব্যাখ্যা করেছি আমার পোস্টের শুরুতে। আর সাহিত্যের মাপকাঠি জনপ্রিয়তা আর চলচ্চিত্র নির্মাণ নয়।আপনি বারবার এদিকটা ফোকাস করছেন। এটা সঠিক নয়।

আর আপনার শেষ কথাটা একেবারেই অযৌক্তিক। এখনকার বাঙালি জাতি সৃষ্টির পেছনে পশ্চাৎপদ সমাজ, শিক্ষার অভাব, বহুদিনের শোষণ,দারিদ্র্, ধর্ম ব্যবসা দায়ী। সাহিত্য শুধু দেখিয়েছে আমাদের সমাজটা কেমন।সে তৈরি করে নি। সাহিত্য সমাজের দর্পন,বিধাতা নয়।

৯| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৩:২৩

অনল চৌধুরী বলেছেন: এবং সবেচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো, আপনি নিজের মতামত প্রকাশ করতে গিয়ে আমার বক্তব্যকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করেছেন।
আমি সমগ্র বাংলা সাহিত্যকে হাহাকারসর্বস্ব বলিনি।
আমার মুল বক্তব্য ছিলা, আলোকিত দিক নিয়ে লেখা সাহিত্যের চেয়ে বাঙ্গালীরা দু:খ-দারিদ্র আর হতাশা নিয়ে লেখা সাহিত্যগুলির বেশী ভক্ত।
নীলদর্পণ, নজরুল, পথের দাবী নিষিদ্ধ হওয়ার কথা পরিস্কারভাবে লিখেছি, পড়ে দেখেন। জহির রায়হানরে আলোকিত উপন্যাস চলচ্চিত্র আর প্রামাণ্যচিত্রের কথাও বলা হয়েছে।
পথের পাচালীর মতো দরিদ্রের প্রদর্শনী নিয়ে পৃথিবীতে দ্বিতীয় কোনো সাহিত্য বা চলচ্চিত্র লেখা বা নির্মিত হয়নি।
এটার সাথে ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সি’র তুলনা করায় এনিয়ে বিতর্ক করা আর কোনো ইচ্ছা নাই।
যার যতটুকু মগজ, সে ততটুকুই বুঝবে।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০৮

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আমার পোস্টটি আপনার প্রথম পোস্টের ঘন্টা কয়েক পরই দেয়া শুধুমাত্র প্রথম পোস্টের জবাবে এবং আপনার দ্বিতীয় পোস্টের অনেক আগে প্রকাশিত।এখন আপনি যদি আমার পরে পোস্ট দিয়ে এসে আগের পোস্টের কাউন্টার কারতে আসেন তাহলে ব্যাপারটা যেমন অযৌক্তিক তেমন হাস্যকর হবে।

আর আপনি আপনার মূল বক্তব্য হিসেবে এখন যেটা বলছেন সেটা আপনি প্রথম পোস্টের কোথাও স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করেননি। আর যদি দ্বিতীয় পোস্টে করেও থাকেন,যেটা আমার পোস্টের পরে দেয়া সেটা দিয়ে কাউন্টার করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।এখন আমি যদি মনে করে থাকি যে আমার পোস্ট দেখে আপনি আপনার দ্বিতীয় পোস্টে সুর বদলিয়েছেন।আপনার অন্য উদ্দেশ্য ছিলো দ্বিতীয় পোস্টে।তাহলেও কিন্তু আপনি আমাকে দোষ দিতে পারবেন না।

আপনি বারবার চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী টানছেন কেন? পথের পাচালী উপন্যাস আর চলচ্চিত্র কি এক? চলচ্চিত্রে তো তিন ভাগের একভাগ বাদই দেয়া হয়েছে। পুরো উপন্যাসটার মূলকথা হচ্ছে মানুষ শত কষ্টের মধ্যে তার পথচলা থামায় না।মানুষকে মচকানো যায় কিন্তু পরাজিত করা যায় না। এটা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সি এর ও মূল কথা।কিন্তু প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখন আপনি যদি কিউবার সংস্কৃতির সাথে বাংলার সংস্কৃতি মেলান তাহলে তো হবে না। আমার তুলনার মূল ফোকাস ছিলো উপন্যাস দুটির মূলত্তত্বের ওপরে।ঘটনাপ্রবাহের ওপর নয়। আর বুড়ো সান্টিয়াগোও দরিদ্র ছিলো।সে ৮৬ দিন মাছ পায় নি। তবুও সে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখেছে।এটাই এই উপন্যাসের বিশেষত্ব। কিন্তু আপনি ব্যাপারটি বুঝতে পারেন নি।বিতর্ক করার ইচ্ছা না থাকলে আমিও জোর করবো না আপনাকে । আর আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। যার যতটুকু মগজ,সে ততটুকুই বুঝবে।

১০| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩২

অনল চৌধুরী বলেছেন: প্রথম লেখাতেই উল্লেখ করেছি, দ্বিতীয় পর্বে সমাপ্ত হবে কারণ এতোবড় লেখা একমাথে সবাই পড়তে চায়না। দুই পর্বই একসাথে লেখা হয়েছিলো কিন্ত প্রকাশ করা হয়েছে দুই দিনে। আর মাত্র ১ দিনে এতোবড় লেখা লিখে ফেলা সম্ভব না, সেটা যে কেউ বুঝবে। সুতরাং আপনি যদি আমার পরে পোস্ট দিয়ে এসে আগের পোস্টের কাউন্টার কারতে আসেন তাহলে ব্যাপারটা যেমন অযৌক্তিক তেমন হাস্যকর হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। আর আমি দ্বিতীয় লেখাটা প্রকাশের আগে লেখাটা দেখিনি, তাহলে প্রথমদিনই মন্তব্য করতাম।
সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজ
শরদিন্দুর ব্যোমকেশ সিরিজ
প্যারীচাঁদ মিত্রের আলালের ঘরের দুলাল।
সৈয়দ মুজতবা আলীর চাচাকাহিনি,পঞ্চতন্ত্র,শবনম,দেশে-বিদেশের গল্প অবলম্বনে অনায়াসে চলচ্চিত্র বানানো যায়।
রাজশেখর বসুর গড্ডলিকা।
প্রভাতকুমারের বহু ছোটগল্প আছে যা দিয়ে মুভি বানানো সম্ভব।
আবুল মনসুর আহমদের আয়না।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের খোয়াবনামা,চিলেকোঠার সেপাই
-নিয়ে বাংলাদেশে কেউ ছবি বানায়নি কারণ তারা পদ্মার মাঝির মতো হাহাকার ঝগড়া ছবিতে দেখতে চায়।
আর ভদ্র সমাজের রীতি হচ্ছে প্রবীণদের সন্মান করা। ৩ মাস ব্লগে লেখালেখি করে প্রবীণ লেখকদের উদ্দেশ্যে হয় তিনি বেছে বেছে মরাকান্নার সাহিত্য পড়েছেন অথবা যেকোনো সাহিত্যে মরাকান্নার অংশ পড়ে আর পড়েন নি। আর বিদেশি জিনিসের প্রতি বাঙালির আদিখ্যেতা নতুন কিছু নয়।সেটা সেই পোস্টেও প্রকাশিত।- মন্তব্য করা চরম ভদ্রতা বিরোধী আচরণ ।
কারো সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে তার জীবন কর্ম এবং দেশ-জাতির জন্য অবদানের কথা মনে রাখতে হয়।

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৮

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার প্রত্যেকটা প্রশ্নের জবাব দেয়ার পরপরই আপনি আলোচনা ঘুরিয়ে অন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছেন।সাহিত্য থেকে চলে গেলেন চলচ্চিত্রে,এখন গেলেন দর্শক রুচিতে।

আর হ্যাঁ আপনি শেষ পর্যন্ত বাঙালি প্রবীণ সমাজের মোক্ষম অস্ত্রটি প্রয়োগ করলেন। শেষ পর্যন্ত স্বভাব,বেয়াদবি নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা।

আপনি প্রথম পোস্টে আপনার মরাকান্না সম্পর্কিত স্টেটমেন্টের কোনো ব্যাখ্যা প্রদান না করে বিদেশি সাহিত্যের উদাহরণ টেনে গেছেন পোস্ট জুড়ে।আর তাই এমনটি মনে হওয়া আমার পক্ষে স্বাভাবিক।মরাকান্নার কথায় রাগান্বিত হয়ে একথাটি লিখেছি আমি। আমার অভদ্র আচরণের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং আপনার নিকট ক্ষমা চাচ্ছি।

কারো সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে তার জীবন কর্ম এবং দেশ-জাতির জন্য অবদানের কথা মনে রাখতে হয়। আপনার এই কথাটিতে দ্বিমত পোষণ করছি। আপনার লেখা পড়ে আমি মন্তব্য করেছি,এই পোস্ট শুধুমাত্র আপনি লেখায় যা লিখেছেন শুধুমাত্র তার ওপর ভিত্তি করে।ব্যাক্তি আপনার ওপর না।আর ধরে নিলাম আপনি সারাজীবন দেশ জাতির উপকার করে গেছেন।তাই বলে এটা কখনোই নিশ্চয়তা প্রদান করে না যে আপনি ভুল করতে বা ভুল বলতে পারেন না।

আমি তিন মাস ব্লগ লিখি আর একদিন লিখি সেটার চেয়ে আমার লেখা যৌক্তিক না অযৌক্তিক সেটা বেশি গুরুত্ববহন করে। ধন্যবাদ।

১১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:৪০

অনল চৌধুরী বলেছেন: কারো কথা সম্পূর্ণ না শুনে মন্তব্য করা যেমন অন্যায় , তেমনই অন্যায় কারো লেখা শেষ হওয়ার আগে সেই বিষয়ে মন্তব্য করা।
আমার রেখায় পরিস্কারভাবে বলা ছিলো যে আগামী পর্বে সমাপ্য। তাই মন্তব্য করা আগে পুরোটা পড়া উচিত ছিলো।
বাঙালি প্রবীণ সমাজের মোক্ষম অস্ত্র -নাপৃথিবীর সব সব্য দেশে বড়দের সন্মান করা বাধ্যতামূলক। এজন্যই ১৯৯২ সালে নির্বাচনের সময় বুশ বলেছিলো, তার কুকুর পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে যা জানে, ক্লিনটন সেটাও জানে না।
যে বড়দের সন্মান করবে,সে জীবনে কিছু করতে পারবে।
যে মানবে না, সে কিছুই পারবে না।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩৭

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার প্রথম পোস্টেই আপনি আপনার স্টেটমেন্ট দিয়ে দিয়েছেন এবং দ্বিতীয় পোস্টেও প্রথম পোস্টের মনোভাব থেকে বাইরে বের হয়ে আসতে পারেন নি। সেখানেও আমি পোস্টে যেসব উপন্যাসের নাম বলেছি তাঁর বেশির ভাগই এড়িয়ে গেছেন অথবা ভুল ব্যাখ্যা করেছেন আপনার নিজের মতো করে। চলচ্চিত্র ও দর্শক রুচির ব্যাপারে আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণভাবে একমত। চর্যাপদ দারিদ্র্য ও হিন্দুর অত্যাচারের কাহিনি নয় বরং সেটা এসবের আড়ালে সহজিয়া বৌদ্ধ সাধনতন্ত্র।ঘরে বাইরে উপন্যাসে বিপ্লবীদের অপমান করা হয়নি।বরং যারা বিপ্লবের নাম করে সাধারণ মানুষের ক্ষতি করেছে তাদের সমালোচনা করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদের নামে উগ্রতার সমালোচনা করা হয়েছে। পথের পাচালি চলচ্চিত্র সম্পর্কে আমি আপনার বক্তব্য সমর্থণ করি।কিন্তু উপন্যাসের ব্যাপারে না। আর আপনি বিখ্যাত লেখকদের অন্য ধারার উপন্যাসগুলোর ব্যাপারে একেবারেই এড়িয়ে গেছেন।হুমায়ুন আহমেদ আমাদের রুচি খারাপ করেছেন,এটা সত্যি কথা।আর বর্তমান সাহিত্যের ব্যপারেও আপনার কথা সত্যি।কিন্তু সামগ্রিক বাংলা সাহিত্যে আমি আপনার সাথে একমত না। আপনি মরাকান্না ও হাহাকারসর্বস্ব এই টার্মটা চলচ্চিত্রে ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু সাহিত্যের ক্ষেত্রে একেবারেই পারেনা না।কারণ আমাদের সাহিত্যে অন্যধারার লেখা আছে।

আমি বাঙালি প্রবীণদের মোক্ষম অস্ত্র বলতে বুঝিয়েছি সকল বাঙালি প্রবীণই যদি কারও সাথে তর্ক বিতর্ক করে তাহলে তর্কের এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষকে স্বভাব,বেয়াদবি এসবের অভিযোগ এনে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চায়।যেটা উপমহাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো দেশের প্রবীণরা করেন না।

আমার কথায় কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।আমি আবারও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আপনার কাছে।

১২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৯

অনল চৌধুরী বলেছেন: চর্যাপদ উদ্ধার করা হয়েছিলো নেপালের রাজদরবার থেকে। বাংলা ছেড়ে এদেশের বৌদ্ধরা সেটা নিয়ে এতাদূরের নেপালে শ্চিয়ই এমনি এমনি যায়নি। চর্যাপদের অনেক গানেও হাহাকার আছে, যেসব লিখতে গেলে
আরেকটা প্রবন্ধ হবে ।
রবীন্দ্রনাথ জীবনে কোনো দিনও বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা চাননি। বরং অগণিত লেখায় তাদের প্রশংসা করেছেন। তার নীতি দের বৃটিশদের দালাল গান্ধীর মতো, যার কাছে বৃটিশদের হত্যা-সন্ত্রাস অপরাধ না কিন্ত এদেশবাসীরা তার প্রতিবাদ করলে সেটা অপরাধ। তিনি নাইটহুড খেতাব ত্যাগ করার নাটক করেছিলেন, কিন্ত বৃটিশদের প্রতি ঘৃণা থাকলে তিনি সেটা নিতেনই না। চর্যাপদচর্যাপদ

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩৫

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: "চর্যাপদ উদ্ধার করা হয়েছিলো নেপালের রাজদরবার থেকে। বাংলা ছেড়ে এদেশের বৌদ্ধরা সেটা নিয়ে এতাদূরের নেপালে শ্চিয়ই এমনি এমনি যায়নি। চর্যাপদের অনেক গানেও হাহাকার আছে, যেসব লিখতে গেলে
আরেকটা প্রবন্ধ হবে ।"

তারা গিয়েছিলো হিন্দুদের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য আর ধর্মান্তরিত হবার ভয়ে।চর্যাপদে দুঃখ,দারিদ্র্য,হাহাকার,সামাজিক অসঙ্গতি সব আছে।সেটা অস্বীকার করা যাবে না।কিন্তু সেগুলোর আড়ালে সাধনতন্ত্র প্রচার করা হয়েছে।এজন্যই এই ভাষার নাম সান্ধ্য বা আলো আধারি ভাষা। দেখতে এক আর অর্থ আরেক। প্রত্যেকটি পদের বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যাবে শ্রদ্ধেয় ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর Buddhist Mystic song এবং ডঃ মুহম্মদ আব্দুল হাই ও ডঃ আনোয়ার পাশা সম্পাদিত চর্যাগীতিকা বইয়ে।

"রবীন্দ্রনাথ জীবনে কোনো দিনও বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা চাননি। বরং অগণিত লেখায় তাদের প্রশংসা করেছেন। তার নীতি দের বৃটিশদের দালাল গান্ধীর মতো। "
আপনার এ কথার সাথেও আমি একমত।তাঁর কোনো লেখায় স্বাধীনতার স্বপক্ষে কিছু পাওয়া যায় নি।বরং তিনি ইংরেজদের সাথে সহযোগীতার মাধ্যমে পাশ্চাত্য জ্ঞান,বিজ্ঞান আহরণ করে বাঙালি জাতির উন্নতি করার প্রতি মতামত দিয়েছেন।তাঁর এই মনোভাবের দেখা পাওয়া যায় কালান্তর প্রবন্ধ গ্রন্থে।। তাঁর মতো ব্যাক্তিত্বের কাছ থেকে এটা আশা করা যায় না।

আমার বক্তব্য ছিলো ঘরে বাইরে নিয়ে ,রবীন্দ্রনাথ নিয়ে নয়।কারণ সেখানে তিনি ইংরেজদের লেজুড়বৃত্তি করেন নি।বরং জাতীয়তাবাদ ব্যবহার করে উগ্রতা পরিহারের পক্ষে ছিলেন।আন্দোলন বিপ্লব যেন আমাদের নিজেদের ঘাড়েই পতিত না হয় সে বিষয়ে বলেছিলেন।

১৩| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৩

স্থিতধী বলেছেন: তমাল ও অনল ভাই এর সাথে অন্যদের মন্তব্যগুলোও পড়লাম।

কারো লেখার শুরুতেই যদি দেখা যায় যে সেটি অনেকগুলো পর্বে পরিবেশিত হবে তবে সে ক্ষেত্রে পুরো লেখাটি পড়ে শেষ হবার আগ পর্যন্ত একটি আলাদা পাল্টা রিয়েকশন/ প্রতিক্রিয়া কিংবা রিভিঊ টাইপ পোস্ট না করাটাই কাম্য। তাতে ভুল বোঝাবুঝি / অতিমূল্যায়ন/ অবমূল্যায়ন ইত্যাদির সম্ভাব্যতা কমে গিয়ে আলোচনা গুলো আরো অর্থবহ ও সমৃদ্ধ হয়।

মূল লেখাটির অনেক অংশের সাথেই অনেক পাঠক একমত হবেন না যেহেতু সেখানে সাবযেক্টিভ ইন্টারপ্রিটেশর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে আর তাই সবার ব্যাক্তিগত মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণ সেগুলোতে একরকম হবেনা স্বাভাবিক ভাবেই। আমি ও আমার মতো অনেকেই অনেক পয়েন্টে একমত ছিলামনা কিন্তু তাতে আমি বা সেই অন্য পাঠকদের লেখকের লেখার মূলভাবটি বুঝতে অসুবিধা হয়নি । আর আমি ব্যাক্তিগত ভাবে লেখার মূলভাবটির সাথে সহমত জানিয়ে মন্তব্য করেছিলাম।

দৃশ্যত, এখানে আপানাদের দুজনের মন্তব্য চালাচালি তে একটি বিষয় দেখা বোঝা যাচ্ছে যে আপনারা আসলে অনেকগুলো মূল পয়েন্ট এই একমত ( যেমন ব্যাক্তি রবীন্দ্রনাথের ইংরেজ নীতি নিয়ে আপনারা একমত যেখানে আমি হয়তো হাল্কা ভিন্নমত)।

"সাহিত্য সমাজের দর্পণ" , এটা সত্য হলে সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের ভূমিকা কি হবে তাহলে? সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা সংবাদ পত্রের চাইতে আরো অনেক গভীর ও ব্যাপক । যদি মনে করি "সাহিত্য সমাজের দর্পণ" তবে সে দর্পণ যদি সংবাদপত্রের মতো যা ঘটছে সেটারই বর্ণনা ও বিশ্লেষণ দিয়ে যাবার মতো একটি "সাধারণ দর্পণ" হয় তবে সেটা হতাশাজনক।

সাহিত্যের কাছে আমরা প্রত্যাশা করি যে লেখক তাঁর কল্পনাশক্তি দ্বারা এমন একটি "বিশেষ দর্পণ" তৈরি করবেন যেখানে আমরা সমাজে বর্তমানে যা বিদ্যমান শুধু সেটাই দেখতে পাচ্ছিনা বরং ব্যাক্তি বা সমাজ কি পাবার যোগ্যতা রাখে, কোন ভবিষ্যতে নিজেদের নিয়ে যেতে পারে সেই আকঙ্খার প্রতিবিম্বটিও তৈরি করে দিতে পারছে। মহান বা কার্যকরী সাহিত্যের জন্য মানুষের সেই 'সুপ্ত আকাঙ্খা' বা 'কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যস্থল' কে ধারণ করতে পারাটা তাই কাম্য হয়ে যায়। সেটা না করতে পারলে স্বাভাবিক ভাবেই আমরা এখন যা দেখছি কিশোর তরুণ দের মাঝে তাই হবে, কিছু আচমকা তৈরি হওয়া " মোটিভেশ্নাল স্পিকার" বই মেলাটাও দখল করবে, যারা হবে না লেখক না পাঠক, কেবল ই বক্তা!

গোলযোগটা এখানেই যে স্বাধীন বাংলাদেশে মূলধারার সাধারণ পাঠকের সামনে সে ধরণের সাহিত্যগুলো উঠে আসতে পারেনি যদি হাতেগোনা কয়েকটা সেরকম সাহিত্য থাকেওবা। একান্তই আমাদের নিজেদের সৃষ্টির মাঝে মূলধারাতে যা জনপ্রিয়/ প্রচারিত হয়েছে তাঁর বেশীরভাগ নেহাতই হাল্কা চালের বিনোদন অথবা পলায়নপর বাঙ্গালীর দুঃখবাদী ঘরানার লেখা। ত্যাগ, সাহস ও বুদ্ধির বলে মানুষ ও মনুষ্যতের জয়ের গল্প স্বাধীন বাংলার মূলধারায় অন্তত ৭০ এর দশকের পরে কোনভাবেই প্রভাব বিস্তার করতে দেখা যায়নি (বিদেশী অনুবাদ সাহিত্য ও পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য ধর্তব্য নয়) ।

বিভুতিভুষনের চাঁদের পাহাড়, শরদিন্দুর বোমকেশ, সত্যজিতের ফেলুদা, সুনীলের কাকাবাবু এসব পশ্চিম বাংলার আপামর সাধারণ মানুষ, তাদের সিনেমা, তাদের বুদ্ধিজীবীরা সেলিব্রেট করে তথা এসব চরিত্র ওদের পপ কালচারের অংশ হয়ে যায়। এদিকে আমাদের দেশের পপ কালচারে উচ্চারিত হয় কেবল হিমু ও মিসির আলীর নাম। অথচ আরো অনেক নাম এর সাথে যুক্ত হতে পারতো যা আমাদের পপ কালচারে উচ্চারিত ও উদযাপিত হবার যোগ্যতা রাখে। অনুযোগ টা সেটা নিয়েই ছিলো। আর তাই প্রত্যাশা এটাই যে; এদেশের নবীন লেখক, পাঠক, প্রকাশক, সংবাদপত্র, বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও গণমাধ্যম সকলে মিলে ভালোমানের লেখাকে , সঞ্জীবনী ও বুদ্ধিদীপ্ত লেখাকে সমাদৃত করার ইকো সিস্টেম টিকে প্রস্তুত করুক যা কিনা নতুন সময়ের আশা আকাঙ্খাগুলোকে ধারন করতে পারে আর সেই পথ ধরে আমাদের নাটক ও চলচ্চিত্র জগতটিও সমৃদ্ধ করতে সক্ষম।

আপানারা লিখে যান। সুস্থ তর্ক চলুক, যা কিনা আমাদের সবাইকে সামনে এগিয়ে দিতে পারে। শুভকামনা।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩৮

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: সত্তরের দশকের পর স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের পর থেকেই আমাদের সাহিত্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে গেছেন হুমায়ুন আহমেদ। তাঁর প্রবল জনপ্রিয়তা দেখে অন্য অনেক লেখকই তাকে অন্ধ অণুকরণ করা শুরু করেন জনপ্রিয়তার আশায়। আর এক্ষেত্রে আমাদের পাঠকেরাও হুমায়ুনে এতটাই বুদ হয়ে গেছেন যে, অন্য লেখকদেরকে সেভাবে মূল্যায়নই করা হয় নি। হুমায়ুন আহমেদের সমসাময়িক সময়ে শহীদুল জহির লিখে গেছেন কিন্তু তাকে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় নি। তিনি তাঁর প্রথম পোস্টেই যে স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন সেটা নিয়ে আমার চরম আপত্তি ছিলো এই জায়গাতে যে তিনি বেছে বেছে বাংলা সাহিত্যের হাহাকার সর্বস্ব লেখাগুলোকে ফোকাস করে অন্য সাহিত্যের অন্য ধারার লেখা তুলে এনেছেন। আমরা পাঠকরা মূল্যায়ন করিনি সেগুলো।তার মানে এই নয় যে সেগুলো নেই।সেগুলো আছে। সবচেয়ে বড় আশংকার ব্যাপার হলো আমরা পাঠক হিসেবে উন্নতমানের না। এখনকার দিনেও হুমায়ুন আহমেদের রচনারীতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লেখা এবং ধর্মীয় লেখা বেস্ট সেলার হচ্ছে।যার ফলে অন্যধারার লেখকেরা অনুৎসাহিত হচ্ছে।এটা খুবই খারাপ সংকেত। আর রবীন্দ্রনাথের চিন্তার ব্যাপকতা সবার ক্ষেত্রে অনুধাবন করা সম্ভব নয়।হয়তো আমরা দুজনেই তাঁ্র চিন্তা বা লেখাকে ভুল বুঝেছি, হয়তো না।এ ব্যাপারে আলোচনা আবশ্যক। সাহিত্য সমাজকে তুলে ধরে। সমস্যা চিহ্নিত করে এবং সমাধানের পথও দেখায়। কিন্তু সেজন্য যোগ্য পাঠক এবং অনুধাবন করার মতো যোগ্য শিক্ষিত সমাজও থাকতে হবে।বরাবরের মতোই আমাদের অবস্থা খারাপ।

আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১৪| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৩

স্থিতধী বলেছেন: লেখক বলেছেনঃ " এখনকার দিনেও হুমায়ুন আহমেদের রচনারীতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লেখা এবং ধর্মীয় লেখা বেস্ট সেলার হচ্ছে।যার ফলে অন্যধারার লেখকেরা অনুৎসাহিত হচ্ছে।এটা খুবই খারাপ সংকেত। "

এটা আসলেও খারাপ সঙ্কেত এবং এক পীড়াদায়ক বাস্তবতা । হুমায়ুন আহমেদের আবির্ভাবের পর প্রকাশকরা প্রচণ্ড খুশি থাকে কারন তাদের ব্যাবসার কাটতি সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। এই শ্রেণিরা বলতো হুমায়ুন আহমেদ দেশে একটা বিরাট পাঠক সমাজ তৈরি করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বুঝে কিংবা না বুঝে হুমায়ুন যে পাঠক সমাজ বানিয়েছে তাঁরা হুমায়ুন এর বাইরে আর কিছু পড়বার মতো ক্ষমতা অর্জন করেনা সিংহ ভাগ ক্ষেত্রে। তাই সেই পাঠক সমাজ শুধু হুমায়ুনেরই পাঠক থেকে যায় আর হুমায়ুন তাঁদের হ্যামিলনের বাশীওয়ালা। আমার ও আরো অনেকের পর্যবেক্ষণেই এটা দেখা গেছে যে, যেইসকল ব্যাক্তি জীবনের প্রথম স্কুল পাঠ্যের বাইরের বই হিসেবে হুমায়ুন আহমেদ পড়েছে তাঁরা আর কখনই অন্য বই পড়ে আনন্দ পায়নি। হুমায়ুন নতুন পাঠক তৈরি করলেও, পাঠকের রুচিশীলতা তৈরি করতে পারেনি। বেঁচে গেছে আমার মত সেই সমস্ত পাঠকেরা যাদের জীবনের প্রথম সাহিত্য পড়ার অভিজ্ঞতা হুমায়ুন দিয়ে শুরু হয়নি। বাংলাদেশের আপামর পাঠকের বই পড়ার রুচি নিয়ে একটা গভীর গবেষণা হওয়া প্রয়োজন আসলে।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৬

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: বেঁচে গেছে আমার মত সেই সমস্ত পাঠকেরা যাদের জীবনের প্রথম সাহিত্য পড়ার অভিজ্ঞতা হুমায়ুন দিয়ে শুরু হয়নি। বাংলাদেশের আপামর পাঠকের বই পড়ার রুচি নিয়ে একটা গভীর গবেষণা হওয়া প্রয়োজন আসলে।
এখানে একটু যোগ করছি।এমন পাঠকও আছে অনেক যারা অন্য লেখকের লেখার স্বাদ পাওয়ার পর আর হুমায়ুন আহমেদের বই ধরে দেখেনি। তাঁর অল্প কিছু বই ভালো।বাকিগুলো একদমই ভালো না।
পড়ার রুচির ব্যাপারে বলতে গেলে একটা ধারা চালু হয়ে গেলে সেটাই আমরা খুঁজি প্রত্যেকবার।আর লেখকেরাও সেটা গেলানোর চেষ্টা করে যান।যেকোনো পরিবর্তনকেই আমরা স্বাগত জানাই না,জানালেও দেরিতে,ততদিনে সেটা পুরনো হয়ে গিয়ে বেশি গ্রহণযোগ্যতা থাকে না।তাই আর সেটা বিকাশ লাভ করতে পারে না।তখন দেখা যায় যে আবার নতুন কিছু আনার চেষ্টা করা হয়।

১৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:১৬

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: আমি দুই জনের লেখাই পড়েছি, আপনারা দুইজনেই বোদ্ধা পাঠক বুঝতে পারলাম। আমি তেমন পড়ুয়া না।

তবে আমার মনে হয় হয়, আমরা আসলেই দুঃখ বেশি পছন্দ করি, দুঃখ নিয়ে খেলতেই আমাদের ভাল লাগে।

স্বাধীনতার ৫০ পার হয়ে গেলেও কেন এই দেশ এমনি পড়ে আছে? এটাও যে দুঃখবিলাসিতা মনে হয়!

(আমার কমেন্টের উত্তর দেয়ার দরকার নেই)

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২৯

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন:
(আমার কমেন্টের উত্তর দেয়ার দরকার নেই)।
আপনি কষ্ট করে লেখা পড়ে মন্তব্য করেছেন।আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি শুধু।

১৬| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
দেখা হয়নি দোচোখ মেলিয়া..................তাই বাংলা সাহিত্যে শুধু মরাকন্না খুজে পান।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০০

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আমরা আসলে একটা ধারাইয় মজা পেয়ে গেলে সেখান থেকে বের হতে চাই না। দুঃখ-কষ্টের ব্যাপারটা আমাদের টানে বেশি।একটা তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের মানুষের জন্য এটা স্বাভাবিক।তাই অন্য ধারাকে বেশি উৎসাহিত করা হয় না। তাই বলে অন্য ধারার কিছু নেই এটা বলাটা সত্য অস্বীকার করা। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১৭| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৮

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: আমি আপনার পড়ার পরিধি, সেই সাথে পাঠের উপলদ্ধি এবং যুক্তিপ্রয়োগে সেই অভিজ্ঞতার সম্মেলন- এরকম আরও কিছু বিষয়ে চরম মুগ্ধ! এই মুগ্ধতার প্রকাশ করতে চেয়েছি আগেই, কিন্তু ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় হয়ে ওঠেনি। সময় করে আপনার বাকি লেখাগুলোও পড়ার ইচ্ছা রাখি। আপনারা বেশি বেশি লিখলে আমরা যারা সাহিত্যের সিরিয়াস পাঠক নই, তাদের জন্য ভাল হয়।

শুভেচ্ছা জানবেন।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৮

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার এই মন্তব্যে আমি প্রচণ্ডভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।আশাকরি বাকি লেখাগুলোতে আপনাকে পাশে পাবো। আপনার প্রতি শুভকামনা ও শুভেচ্ছা রইলো।

১৮| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

পদ্মপুকুর বলেছেন: কোভিড পজেটিভ হওয়ায় কারো লেখায় মন্তব্য দেয়ার মত ধৈর্য্য ছিলো না, এজন্য আপনার লেখা আগে পড়ে মুগ্ধ হলেও কোনো মন্তব্য করিনি, শুধু অনুসরণে রেখেছিলাম। আজ দেখলাম আমার প্রোফাইলে ঢুকেছিলেন। হয়তো ভেবেছেন যে কে এই লোক কোথাও কোনো মন্তব্য করেনি তবু ফলো করছে!!

আসলে আপনার এই লেখা এবং পরে 'সংগৃহীত' লেখাটা পড়ে আপনাকে অনুসরণ করতে বাধ্য হলাম। বিশেষ করে এই লেখাটাতে আপনার পড়ার পরিধি এবং সেগুলো আত্মস্থ করে রাখার ক্ষমতা দেখে বিস্মিত হয়েছি। আশা করি দীর্ঘদিন এই ব্লগে থাকবেন।

ভালো থাকবেন, শুভ ব্লগিং।

১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৪

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: এখন কেমন আছেন আপনি? শুধু আজ না।আমি এর আগেও বহুবার আপনার প্রোফাইলে ঢুকেছি,আপনার লেখাও পড়েছি।মন্তব্য হয়তো করা হয়নি।ব্লগে যেসব বিষয়ে পোস্ট করা হয় তার বেশির ভাগ সম্পর্কেই আমার কোনো ধারণাই নেই।তাই আমার বিচরণের পরিসর খুব ক্ষুদ্র। আসলে আমি বাংলা সাহিত্যের ছাত্র।ওপরে যে বইগুলোর কথা বলেছি এগুলোর বেশিরভাগই পড়েছি টেক্সট হিসেবে।এগুলো ছাড়া বাকিগুলোকেও বাংলায় পড়ার অভিজ্ঞতা দিয়ে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি। এর বেশি কিছু আমি জানি না। আপনার মন্তব্যে প্রচণ্ডভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।ব্লগের প্রতি নেশা ধরে গেছে । আমি ব্লগে থাকবো।

১৯| ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:২৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: এখন আনঅফিশিয়ালি সুস্থ হয়ে গেছি আল্লাহর রহমতে। ২২ তারিখে দ্বিতীয়দফা পরীক্ষা করাবো।

২০ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৬

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: দ্বিতীয় দফা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসবে আশা করছি।আপনার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইলো।

২০| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৩৬

ঢুকিচেপা বলেছেন: মাইদুল ভাইয়ের ২০২০ সালে সামুতে নতুনদের হিট পোস্টসমূহ লিংক ধরে পোস্টসহ মন্তব্য পড়লাম।
লেখার মাধ্যমে আপনাকে যতটুকু জানলাম তাতে খুব ভালো লেগেছে।

আপনি লিখতে থাকুন পাশে আছি।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:২৯

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: ব্যাক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে কয়েকদিন ব্লগে আসতে পারিনি।তাই দেরি করে মন্তব্যের উত্তর দেয়ায় আমি দারুণভাবে লজ্জিত। এতদিনের পুরনো একটা পোস্ট পড়ে আপনি মন্তব্য করেছেন।অনুপ্রেরণার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.