"নীলা ভালোবাসতে চায় না আর"

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৮

নীলার দুচোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। ও আরো জোরে পা চালাচ্ছে। পা দুটোও যেন কাজ করছে না। সবই আজ তার প্রতিকূলে যেন। অথচ সকালটা কত সুন্দর ছিলো। অনেকদিন পর আজ রৌদ্র তার সাথে দেখা করবে বলেছিল নিজে থেকেই। সকাল থেকে তাই ও ব্যস্ত ছিল কি রং এর জামা পড়বে, কিভাবে চুল বাঁধবে তা নিয়ে ভাবতে। পরদিন এতো কঠিন একটা ক্লাসটেস্ট , কিন্তু ওর মন পড়াতে বসেই না। একঘন্টা ধরে সে তার হালকা কোঁকড়া চুলগুলোকে বাধ্য করেছে। সব এলোমেলো লাগছিল। ঐ একটা মানুষের মাঝে নীলার প্রাণটা আটকে আছে।

অথচ ঐ মানুষটা একবছর আগেই নীলার জীবনের সবথেকে বড় দুঃখটা দিয়েছিল। রাহাত ভাইয়ের মুখে শুনে নীলা প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেনি যে রৌদ্র তার সাথে এমন করতে পারে। অন্য একটা মেয়েকে ভালোবেসেও রৌদ্র নীলাকে ভালোবাসার স্বপ্ন দেখিয়েছে। ও অধিক শোকে পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিল। কোনো কথাই বলতে পারেনি। তাও নীলা রৌদ্রকে ঘৃণা করতে পারেনি। ভেবে নিয়েছে হয়তো ওর কোনো ঝামেলা ছিল। তারপর অনেকদিন কেটে গেল যোগাযোগ ছাড়া।

রৌদ্র ওর সাথে দেখা করতে চায় শুনে ওর মনে পুরনো একটা আশা জেগে উঠল আবারও। হয়তো এইবার ও রৌদ্রকে নিজের করে পাবে। রৌদ্রর সামনে বসে ও শুধু রৌদ্রর চোখের দিকেই তাকিয়ে রইলো। রৌদ্র বললো," আসলে সত্যি কথা বলতে তোমাকে আমি কখনই ভালোবাসেনি। তোমাকে আমার কখনই সুন্দর মনে হত না। কিন্তু যখন কণা আমাকে রিফিউজ করলো আমি খুব ভেঙ্গে পড়েছিলাম। তুমি আমাকে পছন্দ করতে তা আমি জানতাম। রাহাত ভাই ই আমাকে বলল, তুই নীলার সাথে লেগে যা। ও তোকে খুব পছন্দ করে। আমি তোমার সাথে এজন্যেই ছিলাম। কিন্তু কণা ফিরে আসলো। আমি কণাকে খুব ভালোবাসতাম। তোমাকে কণার কথা কখনও বলতে পারিনি। আবার কণাকেও তোমার কথা বলতে পারিনি। আমি ওকে হারাতে চাইনি। আমি তোমাকে বিয়ে করার কথা চিন্তাও করি নাই কখনও। আমি কণা ছাড়া আর কাউকেই ভালোবাসতে পারব না।" নীলা চোখের পানি আটকাতে পারছিল না। ও বলল," আমাকে যেতে হবে। কাল আমার একটা টেস্ট আছে।" বলেই ও উঠে পড়ল। পিছনে ফিরে তাকাল না। রৌদ্র অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নীলার যাবার পথে। ভাবল, মেয়েটা এমন কেন?

নীলা হাঁটছে। ওর নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। ভালোবাসার সব কথা, সব মূহুর্ত, সব আশ্বাস, ঐ প্রথম ভালোবাসি বলার সময়টা ..... সব মিথ্যা ছিল। না, আর ভাবতে পারছে না ও। চিৎকার দিয়ে কাঁদতে চায় সে। অনেক কাঁদতে চায়। ভালোবাসাতে চা্য না আর ও ।

৪ টি +২/-০