![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুঁজে বেড়াই নিজেকে হাজারো মানুষের ভিড়ে।
মায়ের ডাকে অনেক অনিচ্ছায় ঘুম থেকে উঠে বসল অরণ্য।" উফফ, মা!! একদিনও কি তুমি আমাকে শান্তি দিবানা?? সকাল ৯টায় ঘুমাইলাম, আর এখনই তুমি ডাক দিতেছ!! আজকে এই মেয়েটাকে না দেখলে কি হবে??" অন্যঘর থেকে ছেলের ঘরে ঢুকলেন অরণ্যের মা। "আজকের মেয়েটা তোর ইফাত খালার পরিচিত মেয়ে। ওর ফ্যামিলিও খুব ভালো। মেয়েটাও নাকি সুইট। তোর জন্যে কি সব মেয়ে বসে থাকবে নাকি?" বলেই ছেলের মাথায় হাত বুলালেন। এখন উঠে গোসল কর, ভাত খেয়ে রেডি হয়ে নে, বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ওদের সাথে দেখা করার কথা।" মায়ের কথা শুনে উঠে পড়ল অরণ্য। এই নিয়ে ওর সাতটা মেয়ে দেখা হবে। আগের ছয়জনের কাউকেই কেনো জানি ওর পছন্দ হয়নি। নানা বাহানা করে মাকে মানা করে দিয়েছে। মাও হতাশ এখন। ওর পছন্দ একটু চঞ্চল আর দস্যি মেয়ে। আর পাত্রী দেখতে গেলেই মেয়েগুলোকে দেখলে ওর মনে হয় বোরিং টাইপ। পড়াশুনা করার সময় কেনো যে ওর প্রেম হলো না ও নিজেই বুঝে না। আসলে ওরকম একজনকে পেয়েছিলোও ও , কিন্তু প্রেমে গড়াতে পারেনি সে পরিচয়। এখন সারাদিন হসপিটাল, চেম্বার আর রোগীর ভিড়ে আর প্রেম করারও সময় নেই। এদিকে মা তার উঠে পড়ে লেগেছে বিয়ে দেওয়ার জন্য। তাই বাধ্য হয়ে পাত্রী দেখা চলছে।
তিনা প্রায় ১৫ মিনিট থেকে রিকশা খুঁজছে, কিন্তু একটা রিকশাও ফাঁকা পাচ্ছে না। অনেক কষ্টে একটা রিকশা পেল ও। রিকশায় বসার সাথে সাথেই লুবনার ফোন। ফোন ধরে ওকে বুঝালো যে আর ৫ মিনিট সময় লাগবে ওর। এমনিতেই আজকে ছুটির দিন তাই মানুষও যেন এই সময়ে বেড়াতে বেড়িয়েছে বেশি। উফফ, অফিসের কাজ নেই আজকে, সকালে ও ঠিক দশটায় ঘুম থেকে উঠেছে। মা একটু বকলেও ওর মন খারাপ হয়নি।ছুটির দিনে সকালের ঘুমটাই তো আসল। আর বিকেলের এই ঘুরাঘুরি আড্ডাবাজী। লুবনা আর ও কিছুক্ষণ কেনাকাটা করার জন্য ঘুরল, তারপর একটা ফাস্টফুডে গিয়ে বসল ওরা।অর্ডার দিতে যাবে এমন সময়ই দেখল যে, ফাস্টফুডে ৭/৮ জন মানুষ একসাথে ঢুকল। লুবনা দেখে বলল," মনে তো হচ্ছে পাত্রী দেখতে এসেছে রে!" "হুমম, তাহলে তো ভালোমতো খেয়াল করত হয়.। " হাসল তিনা। পাত্রী দেখা পার্টি ঠিক ওদের কোনাকুনি একটা বড় টেবিলে বসেছে। ১০ মিনিট পর বড়রা সবাই উঠে কোথায় জানি চলে গেল। বাকি থাকল পাত্র আর পাত্রী। পাত্র বাবাজি মনে হয় অর্ডার দিল কিছু। তিনা আর লুবনা নিজেদের আড্ডার ফাঁকে ঐদিকেও খেয়াল রাখছিল। এরকম ঘটনা দেখতে ওদের খুবই ভালো লাগে।
অরণ্যের সামনে বসে থাকা মেয়েটার নাম বিথী। মেয়েটা দেখতে শুনতে ভালোই। কিন্তু অরণ্যের কেনো জানি আবারো সেই পুরাতন ফিলিংস হতে থাকল। বিথীর সাথে টুকাটাক কথা বলছিল ও। কিন্তু হঠাত ওর চোখে পড়ল কোনার টেবিলের মেয়েটাকে। একটু পরপরই ঐ মেয়েটা ওদের টেবিলের দিকে তাকাচ্ছে। মেয়েটার চোখে মুখে একটা দুষ্টুমীর ছাপ আছে। বিথীকে দেখা বাদ দিয়ে অরণ্য ঐ মেয়েটাকেই দেখতে লাগল বারবার। একটা কালো টিশার্টের সাথে লাল স্কার্ফ আর ব্লু জিন্স পড়েছে মেয়েটা। চেহারাটা সুইট, শ্যামলা মেয়েদের এমনিতেই একটু কাটা কাটা চেহারা থাকে। চোখ দুইটাও সুন্দর। ওর ভাবনায় ছেদ পড়ল ওর অর্ডার না্ম্বার শুনে। একটা ক্ষ্যাপার মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল। খাবার নিতে যাওয়ার পথে ঐ মেয়েটার টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে গেল। "হাই, আপনি না গতকাল আপনার মাকে নিয়ে এসেছিলেন আমাদের চেম্বারে?" মেয়েটা একটু ভরকে গেছে ও খুব বুঝল। ওর বড় বড় চোখ দেখে হাসি পেল অরণ্যর। ও নিজের কার্ডটা মেয়েটাকে দিয়ে বলল," এরপর আসলে এই নাম্বারে কল করে আসবেন" বলেই কাউন্টারের দিকে হাটল অরণ্য। যদি এই মেয়ে সিংগেল হয় তাহলে অবশ্যই আজকে ওকে ফোন করবে। আর না করলে ওর কপাল খারাপ। খাবার নিয়ে বসে বিথীকে বলল," আমার পেশেন্টের মেয়ে, তাই একটু কুশল বিনিময় করলাম।"
লোকটাকে নিজের টেবিলের দিকে আসতে দেখে একটু অবাক হল তিনা। ব্যাপার কি? এই লোক এদিকে আসে কেনো!! ওমা ঐ লোক দেখি তিনার সামনে দাড়িয়ে কি কি সব বলে গেলো। প্রথমে অবাক হলেও ব্যাপারটা বুঝতে দেরী হয়নি ওদের দুজনেরই। লোকটা ফেরত যেতেই খিলখিল করে হাসির বন্যা ছুটাল দুজন। লুবনা বলল, "পোলাটা কিন্তু খারাপ না, তার উপর আবার ডাক্তার। ফোন দিস কিন্ত।" হাসল তিনা। ওদের খাওয়া শেষ করে ওরা উঠে যাবার সময় ঐ লোকটার টেবিলের পাশে দিয়ে যাওয়ার সময় লোকটা একটু মুচকি হাসি দিল।
রাতের খাওয়া শেষ করে রুমে এসে বসল তিনা। লোকটার না্ম্বারে কি ফোন দিবে ও? ভাবতে থাকল। অবশেষে ফোন দিয়েই ফেলল। "হ্যালো" ওপাশ থেকে অরণ্যের আওয়াজ। তিনা চুপ। " আপনি কি সেই কালো টিশার্ট নাকি?" "মানে?? আপনার এই নাম্বারে কি আর কেউ ফোন দেয় না নাকি?আপনি কিভাবে বুঝলেন?" "বুঝলাম। আমি অনেক কিছু বুঝতে পারি।" "তাই নাকি?? কিন্তু আপনি তো হার্টের ডাক্তার, সাইকিয়াট্রিস্ট না।" " তো? শুধু কি মনের ডাক্তাররাই সব বুঝে? আমি আরও অনেক কিছু জানি।" "কি কি জানেন?" " এই যে আপনি খুব আহ্লাদী মেয়ে, আপনার পছন্দের রং কালো আর আপনি সিংগেল।" "হাহাহা, হয়নি। আমার পছন্দের রং নীল।আপনি আন্দাজে ঢিল ছুড়ছেন। তাইনা?" " কিন্তু আপনি সিংগেল এটা তো ঠিক। এটা ঠিক হলেই চলবে।" "কেনো? আজকের মেয়েটাকে পছন্দ হয়নি? আমার তো দেখে খুব ভালো লাগল মেয়েটাকে।" " মেয়েটাতো ভালো, কিন্তু আমার তো ভালো মেয়ে দরকার নাই, দরকার দুষ্টু মেয়ে।" "হাহাহা, তাই নাকি? কিন্তু দস্যি মেয়েরা তো রাঁধতে পারে না, ঘর গুছাতে পারে না, শাড়ি পড়তে পারেনা।" " ওগুলা তো সবাই পারে। আর আমি কি রান্না করার জন্য বউ চাই নাকি? বাসায় আসার পর যদি একটু চেঁচামেচিই না শুনলাম, তাহলে ব্উ নিয়ে লাভ কি?" "আর? " " আর??? আরো অনেক কিছু, কিন্তু শুনাবো এক শর্তে, যদি আপনি শুনতে চান আমার সব কথা তাহলে।" হাসে তিনা।
কেঁদেই যাচ্ছে তিনা, ওর সামনে অপরাধীর মত মুখ করে বসে আছে অরণ্য। "প্লিজ, আর কেদো না।" " আপনি চুপ থাকেন, কে বলেছিল আপনাকে আমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে? আমাকে এখন আমার আম্মুকে ছাড়া থাকতে হবে, আপনি তো খুব নিজের বাসায় আছেন।" বলেই আবার কান্না শুরু করল ও। নিজের বাসর ঘরে বসে বউয়ের এই কান্না পর্ব দেখে হাসি পেল অরণ্যর। তিন মাস ফোনে কথা, ঘুরাঘুরির পর অরণ্য ওর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু বিয়ের নাম শুনা থেকেই তিনা কান্না শুরু করেছে আর এখন পর্যন্ত সেই কান্না থামাতে পারছে না। "ঠিক আছে, চল। তোমাকে তোমার বাসায় নিয়ে যাই। আর আমিও আমার ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে যাই। তোমার বাসায় ঘরজামাই থাকব।" "ছি, আপনার লজ্জা করে না। আমার জামাই কেনো ঘরজামাই হবে?তার কি কোনো সম্মান নাই।" তিনার গাল ধরে টিপে দেয় অরণ্য, "যার কপালে এমন দস্যি ব্উ আছে, তার তো ঘরজামাই হওয়াই লাগবে। তুমি কান্না না থামালে আমি ব্যাগ গুছানো শুরু করবো। এখন বলো।" ফুঁপাতে লাগল তিনা। অরণ্য এইবার ওর সামনে বড় বড় তিনটা ক্যাডবেরী চকলেট ধরে বলল," গুড গার্ল।" " আর আপনি একটা পচা লোক।" বলেই চকলেট তিনটা হাত থেকে ছোঁ মারল তিনা। অরণ্য হাসলো, এমন অভিমানী একটা মেয়েই তো খুঁজছিলো ও এতদিন। তিনা ওর পিঠে ধাক্কা দিলো," এই , নাও। তুমিও খাও। আমি একা একা খাই না।" হাসলো অরণ্য, " আমিও কেউ না খাইয়ে দিলে খাই না।" হেসে ফেলল তিনা। যদি এই মুহুর্তকে ভালোবাসার মুহুর্ত না বলে তাহলে কাকে বলে তা আমার জানা নেই।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৩:৪৩
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৩:৫৩
খেয়া ঘাট বলেছেন: যদি এই মুহুর্তকে ভালোবাসার মুহুর্ত না বলে তাহলে কাকে বলে তা আমার জানা নেই।
+++++++++++
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২৩
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন:
ধন্যবাদ।
৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:১০
নাহিদ রুদ্রনীল বলেছেন: ভাল লাগলো
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২৬
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন:
৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:২২
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: চকোলেট চকোলেট ভালোবাসা।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:২৯
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: হ্যা, একদম ঠিক। আমি আবার ডেইরী মিল্ক ছাড়া কিছু ভাবতেই পারি না। চকোলেট....
৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৩৮
আবু শাকিল বলেছেন:
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২২
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: বুঝলাম না!!! কি হইছে ভাই আপনার??
৬| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৫৪
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো।
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:১৯
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভাল লাগল।সুন্দর লিখেছেন।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪৪
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৪০
ইখতামিন বলেছেন:
সুন্দর গল্প
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩২
ইউক্লিড রনি বলেছেন: :-&
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৪
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: কি হলো ভাইয়া??? বুঝলাম না!!!!!
১০| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৫১
নাঈম বলেছেন: এমন স্বপ্ন যদি সত্যি হত, কতই না সুন্দর হত পৃথিবীটা!!!
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:০০
মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: হুমমম.... কথা সত্য!!!!
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৩:৩৫
অপ্রচলিত বলেছেন: দারুণ!
১ম ভালো লাগা গল্পে। +++