নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বাস

১০ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৩:২৩

দাদুর গপ্পঃ
আমাকে কাছে পেলে দাদু অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প বলেন।যদিওবা আমি যথেষ্ট ভালো শ্রোতা নই তবুও জোর করে কিছু কিছু গল্প আমাকে না শুনিয়ে তার যেন পেটের ভাত হজম হয়না।এর মধ্যে কিছু কিছু গল্প এত মজার এবং যুগপোযুগী যে আমি ভেবে পাইনা তিনি এই গল্পগুলো পেলেন কোথায়! তার মধ্যে থেকে আজ একটি গল্প শেয়ার করছি,

গল্পটির নাম দিলামঃ

বিশ্বাস

এক ধনী ব্যক্তি।তার জীবনে কোন অভাব নেই।তার শুধু একটা চরিত্রবান মেয়ে দরকার তাহলে ষোলকলা পূর্ণ হতো।কিন্তু চরিত্রবান মেয়ে তিনি পাবেন কোথায় ? তাই তিনি এক কাজ করলেন নিজের বয়সের অর্ধেক বয়সের একটা ছোট্ট মেয়েকে বিয়ে করলেন।চরিত্রবান করে গড়ে তোলার জন্য ধনী ব্যক্তিটি একটা বড় বাড়ি বানালেন।যার চারদিকে জানালা দরজা বলে কিছু রাখলেন না।তিনি চাইলেন তার বউ যেন বাহিরের পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ না রাখতে পারে।কারণ বাইরের পৃথিবীটা আসলেই অনেক খারাপ।সেখানে গেলেই আমরা মানুষ অনেক খারাপ হয়ে যাই।এরপর তাকে আদর যত্ন দিয়ে মানুষ করা শুরু করলেন।আর অপেক্ষা করতে থাকলেন তার বউয়ের যৌবন প্রাপ্তির জন্য।তিনি যখন অফিস করার জন্য বাহিরে বের হন তখন মেইন দরজায় তালা দিয়ে বের হতেন।এবং ফিরবার সময় চাল এবং ডাল একসাথে মিশ্রিত করে নিয়ে আসতেন।আর তার বউ রোজ রোজ চাল থেকে ডাল একটা একটা করে পৃথক করে ভাত রান্না করতেন।এভাবেই তাদের বেশ সময় কাটছিলো।

একদিন পাড়ার এক বখাটে ছেলে সেই বাড়ির পাশ কেটে যাচ্ছিলো।অদ্ভূত এই বাড়িটি দেখে তার একটু কৌতুহল জাগলো।বাড়ি অথচ জানালা নেই সেটা কেমন ব্যাপার? লোকমুখে শুনলেন পুরো কাহিনীটা এরপর তার মাঝে একটা জিদ কাজ করতে শুরু করলো।তার জিদ হলো মেয়েটা কতবড় চরিত্রবান একটু দেখতাম।তাই সে রোজ রোজ পাঁচিল টপকে বাড়ির ভীতরে যেত এবং রান্নাঘরে কিছু মজার মজার এবং সুস্বাদু মিষ্টান্ন রেখে আসতো।মেয়েটা প্রতিদিন এই মিষ্টান্ন দেখে অবাক হতে থাকলো।আর ভাবতে লাগলো এত ভালো খাবার আসছে কোথা থেকে ? কে দিয়ে যাচ্ছে এই খাবার ? তাই একদিন ঝাপটি মেরে লুকিয়ে লুকিয়ে আড়াল থেকে দেখছিলো যে , কে এবং কখন এসে খাবারটি দিয়ে যায়।তারপর হঠাৎ একদিন লক্ষ্য করলো একটা সুন্দর ছেলে প্রতিদিন পাঁচিল টপকে তার জন্য এই খাবার রেখে যায়।
একদিন ছেলেটি যখন খাবার রেখে ফিরছিলো তখন মেয়েটি তাকে পিছন থেকে ডাক দিলেন।আর বললেন , তুমি কে ? আর কেনই বা প্রতিদিন আমার জন্য এসব খাবার রেখে যাও ?
তখন ছেলেটি তার মনের কথা খুলে বলল।
ছেলেটি বললঃ আমি আপনাকে অনেক পছন্দ করি এবং ভালোবাসি তাই এসব করি।

ব্যস! অল্প কয়েকদিনের মাঝে তাদের সম্পর্ক হয়ে গেলো।স্বামী অফিস গেলে এখন মেয়েটি নিজেই ছেলেটিকে বাড়ির ভীতর ডেকে নেয়।তারপর......।তবুও সব ভালোই কাটছিলো (ড্যাবল রোমান্স)।

একদিন মেয়েটির স্বামী একটু আগে ভাগেই অফিস থেকে বাড়িতে ফিরলেন।এইদিকে তার বউ তার প্রেমিককে নিয়ে একটু ব্যস্ত।তাছাড়া রান্না করা হয়নি আজ ওদের প্রেমলীলার জন্য।তো প্রেমিক তাকে বুঝিয়ে দিলো । আরে পাগলী চাল ডাল একত্রে দিয়ে গেছে তো খিচুরি বানিয়ে নাও।মেয়েটি বললঃ সেটা আবার কি জিনিস ? ছেলেটি তাই চটপট তাকে খিচুরি রান্না করা শিখে দিলো।
ঐদিকে স্বামী অফিস থেকে ফিরতেই খাবার চেয়ে বসল।
তখন মেয়েটি বললঃ আজ আপনার জন্য স্পেশ্যাল খাবার বানিয়েছি ?
স্বামী বললঃ ওহ তাই ? তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো।
অতঃপর মেয়েটি যখন স্বামীকে খিচুরি খেতে দিলেন তখন আর স্বামীর বুঝতে সমস্যা হলোনা এই বাড়িতে অন্য কারো আগমণ ঘটেছে।
তাই খাবারটা কোনমতে খেয়ে স্বামী বললঃ আমার অফিসের একটু কাজ আছে আমাকে এক হপ্তাহের জন্য একটু বাহিরে থাকতে হবে।তোমার কোন সমস্যা হবে না তো ?
স্ত্রী বললঃ না না।আমার কোন সমস্যা হবেনা।তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো।

স্বামী অফিস না গিয়ে বাড়ির পাশে এক বড় গাছে আশ্রয় নিলেন আর অপেক্ষা করতে থাকলেন সেই অগন্তুকের জন্য।হঠাৎ তিনি এক যুকককে পাঁচিল টপকাতে দেখলেন আর ওপাশ থেকে তার স্ত্রী তাকে ভীতরে নিয়ে যেতে যেতে বললঃ আমার স্বামী বেশ কয়েকদিনের জন্য বাড়ির বাহিরে থাকবেন সেই সময়টা পর্যন্ত আমরা মুক্ত।আমরা যা ইচ্ছে করতে পারবো।

স্বামী বুঝে নিলেন তার স্ত্রী কতটুকু চরিত্রবান।তাই মন খারাপ করে অজানা দেশে পাড়ি জমালেন।শেষমেশ এক সন্ধ্যায় এক সমুদ্রতীরের নিকটবর্তী হলেন।সেখানেই এক গাছে বসে সমুদ্রের ঢেউ গুনছিলেন।হঠাৎ এক বৃদ্ধ মনীষী কে দেখলেন।তিনি স্নান করতে এসেছেন।কিন্তু স্নান করার আগে তার ঝোলা থেকে একটা ছোট্ট কৌটা বের করলেন আর তার মুখ খুলে ফুঁ দিতেই ধোঁয়া বের হতে থাকলো। 
একটুপর দেখা গেল সেখান থেকে একটা সুন্দরী মহিলা উদয় হলো।তারা দুজন স্বামী-স্ত্রী তাই একসাথেই স্নান করলেন।একটুপর স্বামী যখন ঘুমিয়ে পড়লো তখন ঐ মহিলাটি আবার তার চুলের খোপা থেকে একইরকম আরো একটি ছোট্ট কৌটা বের করলেন।একই পদ্ধতিতে সেখান থেকে আরো একটি সুন্দর পুরুষের উদয় হলো।আর তারপর......।

ধনী ব্যক্তিটি শুধু এসব দেখছিলেন আর হাসতেছিলেন।সকাল হলে মনীষী যখন বাসায় ফিরছিলেন তার ঝোলাটা নিয়ে তখন তিনি তাকে একবেলা খাবারের জন্য নিজ বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানালেন।ঐদিকে সময়ের আগে স্বামী অফিস থেকে বাসায় ফেরার কারণে তার স্ত্রী তার প্রেমিককে কোনমতে এক বাক্সে লুকিয়ে রাখলেন।
স্ত্রী বললঃ আপনি অনেক আগেই বাড়িতে ফিরলেন যে ?
স্বামী বললঃ হ্যাঁ! কাজ শেষ তো।আজ আমি আমার এক অতিথী কে নিয়ে এসেছি।তোমার ঐ স্পেশ্যাল খাবারটা আবার বানাও তো।

খাবার পরিবেশনের সময় ধনী ব্যক্তিটি ছয়টি প্লেট টেবিলে রাখলেন।
এইটা দেখে মনীষী বাবা বললেনঃ কিন্তু আমরা তো তিনজন ? ছয় প্লেট কেন ?
ধনী ব্যক্তিঃ আরে দাঁড়ান একটু অপেক্ষা করুন।আপনি কিছু না মনে করলে আপনার স্ত্রী কে একটু আমাদের মাঝে আনবেন।আমি কিন্তু আপনাদের দেখেছি।
মনীষী লজ্জা পেয়েঃ ঠিক আছে আমি বের করছি।
তারপর তার স্ত্রী বের হতেই তাকে ধনী ব্যক্তিটি বললেনঃ আপনার প্রেমিককে একটু বের করুন।আমি উনাকে দেখেছি।আপনার চুলের খোপার মাঝে ঐ যে কৌটাটা রাখা।
মনীষী আরেকজন নতুন মানুষ কে দেখে বিড়ম্বনায় পড়ে গিয়ে বললেনঃ সে না হয় বুঝলাম।কিন্তু এখনো আরো একটা প্লেট বাঁকী আছে তো ? সেটা কার ?
ধনী ব্যক্তিটি এবার তার স্ত্রীকে বললেনঃ আমার প্রিয়তমা।তোমার প্রেমিক পুরুষ কোথায় ? যিনি চাল এবং ডাল কে খিচুরি করে ফেলেছেন!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.