নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রারম্ভিকাঃ পত্রিকা খুললেই আমরা এখন ভয়ে থাকি।ইন্টারনেট নিউজ পোর্টাল যেন এই বুঝি এক নতুন ধর্ষণ হবার কথা বেশ ঘটা করে লিখেছে আর উপরে দেয়া আছে এক মেয়ের পরে থাকা রক্তাত্ত লাশ।ভাবতে থাকি আজ কোনো এক বোনের, কারো এক স্ত্রীর বা কোনো এক মায়ের লাঞ্ছনার খবর যেন না দেখতে হয়।যদিও আমরা বিশ্বাস পোষন করি, একদিন আমরা এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসবো।একদিন এই ঘৃণ্য এবং জঘন্যতম মন-মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে পারবো।কিন্তু দিনপঞ্জির পাতা একের পর এক উল্টে গেলেও আমাদের আজ মুক্তি মিলছে না।আমরা জানিনা, সেই সব অন্যায়ের যথাযথ বিচার হচ্ছে কি না! বাঙালী জাতির পরিচয়ে এক সময় নিজের পরিচয় দিতে আমরা তখন কুণ্ঠা বোধ করি। ভাবতে থাকি এই সেই স্বাধীনতা! যে স্বাধীনতার কথা আমাদের জাতির জনক বলে গিয়েছিলেন।এই সেই স্বাধীন দেশ! যেখানে হর-হামেশাই এমন ঘৃণ্য এবং জঘন্যতম ঘটনা ঘটে চলেছে একের পর এক।
কিশোরীর স্কুলের রাস্তায় আজ কাঁটা, চাকুরীজীবি মহিলার যাতায়াত বাসে নিখুঁত এবং স্পষ্ট জনসমক্ষে খোঁচা খাবার গল্প, পরে থাকা রক্তাত্ত বোনের মুখ, আর নগ্ন ভিডিওতে প্রকাশ পাওয়া কোনো এক বিশ্বস্ত প্রেমিকার গল্প এবং আত্মহত্যা আর তারপর মৃত দেহের পড়ে থাকা এক লাশ।
আফসোস! এই সেই সোনার বাংলাদেশ।
ফিরে দেখা ২০১৭ সাল থেকে আজ এই দিনঃ পরিসংখ্যানে চলে যাচ্ছি।সমস্ত ঘটনা এবং যতদূর সম্ভব সেসব বিষয়ে এক নজরে আপনাদের অবগত করার চেষ্ট করছি।ক্রমান্বয়ে একের পর এক ঘটনা তুলে ধরা হলো, হাতে সময় থাকলে একবার পড়ে নিন।আজ আমার বোনের সাথে এমন হয়েছে, আগামীকাল আপনার বোন নিরাপদ তো!
ঘটনা-১
রুপা প্রামানিক।তিনি বগুড়া আজিজুল হক কলেজে থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক(সম্মান) ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।অতঃপর তিনি ঢাকা আইডিয়াল ‘ল’ কলেজে অধ্যায়নরত ছিলেন।গত ২৫ই আগষ্ট ২০১৭, শুক্রবার, রুপা বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার উদ্দেশ্যে ছোঁয়া পরিবহনের একটি বাসে সন্ধ্যা সাতটার দিকে রওনা হোন।সেদিন এই বাসে মাত্র পাঁচ/ছয় জন যাত্রী ছিলো।রুপা ছাড়া অন্য সব যাত্রীরা সিরাজগঞ্জ মোড় এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে নেমে যায়।বাসটি টাঙ্গাইলের কলিহাতী উপজেলার কাছাকাছি এলে বাসের হেলপার শামীম রুপাকে পেছনের আসনে যেতে বাধ্য করে।
মনে রাখুন,
● শেষ মুহূর্তে রুপা তার কাছে থাকা পাঁচ হাজার টাকা এবং নিজের সেলফোনটি ধর্ষণকারীদের দিতে চেয়েছিলো শুধু যেন তাকে ধর্ষণ না করা হয়।
● রুপাকে গনধর্ষণ করার পরেও স্বস্তি না মিললে তাকে ঘাড় মটকিয়ে হত্যা করা হয়।
(তথ্যসূত্রঃ যুগান্তর, প্রকাশকালঃ সোমবার ২৯ই আগস্ট, ২০১৭)
ঘটনা-২
আয়েশা আক্তার(৭)।এলাকাবাসী জানায় গত ২৯ই এপ্রিল, ২০১৭ শনিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর রেলগেট এলাকার এনএন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইনের পাশে পায়চারী করতে থাকে।সকাল ৯টার দিকে দেওয়ানগঞ্জগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন ঐ এলাকায় পৌঁছালে হসরত মাহমুদ প্রথমে তার মেয়েকে চলন্ত ট্রেনের নিচে ছুড়ে ফেলে নিজেও ঐ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেয়।এতে ট্রেনের নিচে কাঁটা পড়ে ঘটনাস্থলেই বাবা ও মেয়ের মৃত্যু হয়।ফারুক নামের স্থানিয় এক বখাটে যুবক প্রায় দুমাস আগে আয়েশাকে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে।থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দেওয়া হলে ধর্ষক ও তার লোকজন হালিমা এবং তার স্বামীর উপর ক্ষুব্ধ হয়।পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন এ ঘটনার বিচারের দায়িত্ব নেন।কিন্তু কোনো মীমাংসা ছাড়াই বিষয়টি ধামাচাপা দেন।
মনে রাখুন,
● আয়েশা আক্তারের বয়েস মাত্র সাত বছর ছিলো।
● দারিদ্রতার জন্য বিচার ব্যবস্থাও অসহায় ন্যায় বিচার করতে।
● আহা! আমাদের দেশের এই ইউপি সদস্য দেখছি চমৎকার একজন মানুষ!
● কতটা ক্ষোভ এবং অভিমান থাকলে একজন বাবা তার মেয়েকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করেন?
(তথ্যসূত্রঃ আজকালের খবর, প্রকাশকালঃ ২৯ই এপ্রিল ২০১৭, শনিবার)
ঘটনা-৩
তিথী একজন ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রী
-লিখেছেন: এস এম শাদী
কি ভাবছেন? আমি এই প্রতারক মেয়েটার পক্ষে লিখব? আরে না, কি বলেন এসব… আমিও তো একটা ছেলে…আর যে মেয়ে ছেলেদের সাথে একের পর এক এভাবে প্রতারণা করেছে তার কষ্ট পাওয়া উচিত…… কিন্তু প্রতারণার এমন শাস্তি হওয়া উচিত যেটা ছেলে বা মেয়ে উভয়কেই দেয়া যায়……
কথা গুলো তাদেরকেই বলছি যারা এবিসি রেডিওর “যাহা বলিব সত্য বলিব” অনুষ্ঠানে তিথি নামের মেয়ের জীবন কাহিনী শুনে বলেছেন এবং বলেন যে সে ছেলেদের সাথে প্রেমের নাটক করে যে অপরাধ করেছে তার শাস্তি উপরওয়ালা তাকে ওই ধর্ষক ছেলে গুলোর মাধ্যমে দিয়েছেন… যদি এটাই ভেবে থাকেন তাহলে আপনার কথার মানে হল খারাপ কাজ গুলোও উপরওয়ালা করিয়ে থাকেন যেটা নাস্তিক মানুষ বলে থাকে…
আর যদি উপর ওয়ালা এই শাস্তি দিয়ে থাকেন তাহলে বিচার ঠিক হয়নি। কেননা প্রতারণার শাস্তি একটা মেয়ে পাবে কেন? পাবে মানুষ… সে যে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল।সেটা সে মেয়ে বলেই হয়েছিল...পুরুষ হলে হত না, তাই এই ধর্ষণটাকে তার শাস্তি হিসেবে মেনে নেয়া যায় না…ধর্ষণ তো ধর্ষণই।
একটা ছোট কাল্পনিক কথা বলি.... তিথি মেয়েটির নাম সে একজন ধর্ষিতা... একদিন শাদী নামের এই ছেলেটি গেল তার সাথে দেখা করতে এবং সহানূভুতি জানাতে...মেয়েটিকে সে বোন সম্বোধন করল, যখনি শাদী তিথিকে বোন বলল তখনি তিথি ভয়ে চিতকার করা শুরু করল…
আচ্ছা এটা কেন হল?
এবিসি রেডিওর “যাহা বলিব সত্য বলিব” অনুষ্ঠান শুনেছেন.... তিথি এসেছিল... যাকে গণ রাক্ষসের হাতে ধর্ষণ হতে হয়েছিল…বোন বলে ডেকেও তাকে ধর্ষণ করেছে আবার মেয়ে বলে ডেকেও… কি আজব দুনিয়ারে ভাই…
আমার খারাপ লাগছে কারণ মেয়েটা পুরুষ জাতির উপর আস্থাহীন… আমি যদি মেয়েটিকে গিয়ে মা বলেও সম্বোধন করি তাহলেও সে বিশ্বাস করবে না.... কারণ সে প্রতারিত একজন বাবার কাছে যে মেয়ে বলে ডেকে তার পর ধর্ষণ করেছে….. ফজরের আজান দিচ্ছে, একটু পরে ঈদের তৃতীয় দিন শুরু… আমার চোখে ঘুম নেই… আর মেয়েটি কি ঈদ উপভোগ করছে? সব লেখা অগোছালো হচ্ছে… এই মুহুর্তে আমার মনে হচ্ছে আমি যদি জজ হতাম তাহলে ওই ধর্ষকদের ফাঁসি দিতাম, উকিল হলে প্রাণপণ লড়তাম তাদের শাস্তি দিতে।আর যদি খুনি হতাম তবে তিথিকে গিয়ে বলতাম.... দেখি ওই ছেলে গুলার ছবি দেখাওতো.…
মন্তব্যঃ লেখক মোটামুটি সব ধরণের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে পোস্টটি লিখেছেন।নতুন করে আর কিছুই বলার নেই।
এছাড়া,
► ২০১৭ সালে ৮১৮ নারী ধর্ষনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র-আসক।
► মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে বলা হয় ২০১৭ সালে ধর্ষণের ঘটনার সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি এ ধরনের ঘটনার সাথে ধনবান, ক্ষমাতাশালী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য এবং পরিবহন শ্রমিকদের যুক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
► নারীদের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বলছে বাংলাদেশে ২০১৬ সালে এক হাজারেরও বেশি নারী ও কন্যা শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
► বাংলাদেশের ১৪ টি দৈনিক পত্রিকার খবর বিশ্লেষণ করে সংগঠনটি বলছে ২০১৬ সালে ১০৫০ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তারা বলছে, আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা কিছুটা কম হলেও ধর্ষণ, নির্যাতনের ধরণ ছিলো নির্মম ও নিষ্ঠুর।
►২০১৭ সালে দেশে ৫৯৩ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৬ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল ৪৪৬ শিশু। অর্থাৎ এক বছরে শিশু ধর্ষনের হার বেড়েছে শতকরা ৩৩ ভাগ।(একুশে ETV)
►সারাদেশে ২০১৮ সালের প্রথম তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৮৭ নারী। এরমধ্যে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৯ ও আত্মহত্যা করেছেন দুই জন। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে ২১ নারীর ওপর। শনিবার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত প্রতিবেদনে (২০১৮ সালের জানুয়ারি-মার্চ) এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
শেষাংশঃ পুরো আর্টিকেলটি জুড়ে আমি আমার নিজের মন্তব্য তেমন একটা প্রকাশ করিনি।তাই এই শেষ অংশে এসেও প্রকাশ করলাম না।আমাদের দেশের সাবেক প্রেসিডেন্টের মত করে বলতে ইচ্ছে করছে, “ধর্ষণ আমাদের জাতীয় ক্রিড়া”।
২| ১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ২:৪৮
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: আবার কে ধর্ষন করলো???
আচ্ছা ক্লাইমেট চেন্জের জন্য এসবে কোন প্রভাব ফেলছে নাতো???
৩| ১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ২:৫৭
পিকো মাইন্ড বলেছেন: আসুন, আরেকটা স্যাটেলাইট পাঠাই। তারপর যে কোটি কোটি ডলার আয় হবে (!!!!) তা ধর্ষণ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে ব্যবহার করা যাবে ।
৪| ১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ৩:২০
রাকু হাসান বলেছেন: খুবই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে .. জাতি হিসাবে আমরা সভ্য না ,অসভ্য ই হচ্ছি ..যতই সভ্যতার সার্টিফিকেটা তুলে ধরি না কেন ..এছাড়া বিচার ঠিক মত হচ্ছে না আমার মনে হয় । দ্রুত বিচার হওয়া উচিত এই সবের..কবে একটি ধর্ষণ মুক্ত সভ্য বাংলাদেশ দেখতে পাব ? সে স্বপ্ন কি অধরা থাকবে নাকি আমাদের জন্য !
৫| ১৪ ই মে, ২০১৮ ভোর ৪:৩৫
স্োরনাভ বলেছেন: বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী আর প্রশাসনের ধর্ষণ নিয়ে চিন্তা নেই ওরা মজে আছে টাকায় আর ক্ষমতা লাভের চিন্তায়। আমাদের ও খুব একটা বিকার নেই।
৬| ১৪ ই মে, ২০১৮ ভোর ৬:১৭
শহীদ আম্মার বলেছেন: আপনি নারী ধর্ষণের খবর দিলেন। আর আমি ক্রেতা ধর্ষণ নিয়ে দু চার লাইন লিখলাম। পারলে একটু পড়ে বরকত লাগাই দেন।
৭| ১৪ ই মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: বিশ্বাস করুন, যে লোকটি ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানব বন্ধন করে, সে যদি সুযোগ পায় সেই'ই সবার আগে ধর্ষণ করবে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই মে, ২০১৮ রাত ২:৪৫
অনল চৌধুরী বলেছেন: নষ্টা নারীদের প্রতারণার কারণে অনেকে মানসিক ভারসাম্য হারায়,অনেক সংসার ভেঙ্গে যায় আনেকের মৃত্যুও হয়।আইনে এই প্রতারণার কোন শাস্তি নাই।কিন্ত সব প্রতারখ নারীকে ঈশ্বর ধর্ষণ শাস্তি দেয় না।যারা এসব করে,তারা পরিকল্পিতভাবেই করে।এদর একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত মৃত্যু।