নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবু বিড়ম্বনা

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৩



বাংলার সংস্কৃতিতে বাবু বলতে আমরা কি বুঝি!
প্রকাশকালঃ ২৭ই মার্চ ২০১৯

প্রথমেই বাংলা সিনেমার কথা বলা যায়। বাংলা সিনেমা যেমন কলকাতায় হয়েছে বা হচ্ছে ঠিক তেমনি বাংলাদেশে হয়েছে বা হচ্ছে। এখন কোনটা ভালো বা কোনটা মন্দ সেই তর্কে-বিতর্কে আমি যাচ্ছিনা। আমি ঢাকা ভিত্তিক সিনেমার কিছু কথা বলতে চাই।

সেখানে “বাবু” বলতে ঢাকাইয়া সিনেমায় যা দেখানো হয়েছে বা এখনো হচ্ছে তার রুপ অনেকটা এরকম,

১। বাবুরা শহরে থাকেন।
২। তাদের গায়ে স্যুট-প্যান্ট থাকে(কোথাও লুঙ্গী শার্ট আমার নজরে পড়েনি।)।
৩। তাদের কথার মধ্যে দুই-চারটে ইংরেজি শব্দ থাকা স্বাভাবিক। ব্যাপারটা এমন যে, যে বাবু ইংরেজি বলতে পারেন না সে আবার কেমন বাবু!
৪। তারা সাধারণত প্রাইভেট কারে যাতায়াত করেন।

আশির দশকের সিনেমা অন্তত তাই বলে। এবং নিজেকে সৌভাগ্যবান না কি দূর্ভাগ্যবান বলবো জানিনা বিটিভির আশীর্বাদে সেই সময়ের সিনেমাগুলো দেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো আমার। আপনি নায়ক রাজ-রাজ্জাক বলুন, আলমগীর, ফারুক থেকে শুরু করে সালমান শাহ্ বলুন মোটামুটি তাদের অভিনয়ের উপর কিঞ্চিত জ্ঞান রাখি আমি। মজার ব্যাপার হলো, এইসব সিনেমায় বাবুরা নির্দিষ্ট কিছু ইংরেজি বাক্যে ব্যবহার করেছেন। এই যেমন ধরুন, “গেট আউট অব মাই হাউজ/মাই অফিস... হাউ ডেয়ার ইউ টু টক উইথ মি লাইক দ্যাট... ডোন্ট ক্রস ইওর লিমিট...” ইত্যাদি।
আচ্ছা, এসব থাক আমি আবার সিনেমা ক্রিটিসিজমে যেতে চাই না।

মানে বাবুদের ইংরেজি বলতে হত। একটু ঘুরিয়ে বলতে গেলে বলতে হয়, “যিনি ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন তিনিই বাবু”। আমাদের মিডিয়া বিশেষ করে চলচ্চিত্র মিডিয়া আমাদের মন ও মগজে এই ইমেজটা সেট করে দিতে সক্ষম হয়েছে।

কিন্তু বাবু বলতে বাঙালীরা মনে করেন “জেন্টলম্যান”। আবার আজকাল ব্যাপারটা এমন যে, আপনি যদি কাউকে “বাবু” বলেন তিনি রেগেও যেতে পারেন কিন্তু যদি “জেন্টলম্যান” বলে সম্বোধন করেন তাহলে খুশিতে গদগদ হবেন এমন মানুষ অনেক। (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) কলকাতার একজন বিতার্কিত তর্ক করতে গিয়ে বলে ফেলেন, কবি নজরুল ইসলাম জোর করে কিছু ফার্সী এবং আরবী শব্দ তিনি তার কবিতায় প্রবেশ করিয়েছেন। জল কে পানি বানিয়েছেন এছাড়া নামাজ, গালিচা, মহফিল, কিসিম, গুলমোহর এরকম অনেক আরবী-ফার্সী শব্দের সংমিশ্রণ করেছেন যা বাংলা ভাষার শব্দভান্ডারে থাকা উচিত নয়।

(কিন্তু একটু ভাল করে আলোকপাত করলে দেখবেন জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম সুসামঞ্জস্যভাবে আরবী-ফার্সী শব্দের বিন্যাস ঘটিয়েছেন,

“নীলিম প্রিয়ার নীলা গুলরুখ লাজুক নেকাবে ঢাকা
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মত”।)

অন্যদিকে “মাইরি... কিয়া বাত... আব তেরা কিয়া হোগা কালিয়া... সমঝদার...” ইত্যাদি হিন্দি শব্দে তাঁর কোন আপত্তি ছিলো না। এখন তিনি কেনো এসব বললেন তাতে বড় দৈর্ঘ্য নিয়ে আমারও কোন আপত্তি নেই। তবে ঘোর আপত্তি আছে বর্তমান “বাবু” শব্দটার ব্যবহার নিয়ে!

এখন বাবু শব্দটা ব্যবহার করে কাপল যুগল মানে ওই প্রেমিক-প্রেমিকা আর কি! এতে করে ছোট বাচ্চাদের আফসোসের যেন অন্ত থাকে না। তাহলে কি ব্যাপারটা এমন যে, যখন যে শব্দ যেখানে মানায় তখন সেই শব্দ সেখানে সেট করে দেওয়া যেতেই পারে! মানে এই বাঙালী সংস্কৃতির যে বারোভাজা টাইপের দশা সেটা নিয়েই বলছিলুম। মজার ব্যাপার হলো, কারো কারো নামও এখন বাবু। তা তিনি জন্ম থেকেই জেন্টলম্যান হয়ে এসেছেন দুনিয়ায় না কি এই বাবু থিমটাই একটা ভ্রম সেটা আমার আজও জানা হলো না। কারণ, জেন্টলম্যান এর থিমটা না জানলে জেন্টলম্যান হবো কি করে? অদ্ভূত তো!

হ্যাঁ, আমি ইংরেজির কিছু শব্দ ব্যবহার করেছি বা করছি এই আর্টিকেল লিখতে গিয়ে। কারণ আমার মনে হয়, মানুষ এখন মুঠোফোনের চেয়ে মোবাইল শব্দটা ব্যবহার করলে ভালো বুঝে। প্রমথ চৌধুরী থাকলে নিশ্চয় বলতেন, “বেটা! চালিয়ে যা”। কিন্তু স্যার সে আর হলো কোথায়।

যিনি এখন নীতিবাক্যে ঝাড়ছেন, হতে পারে তিনি তার সেই নীতির দেয়াল ভাঙতে চাইছেন না বা অন্যরা ভাঙ্গছেন তা দেখে ঈর্ষে হচ্ছে কারণ তিনি সেই নীতির ফাঁকে যে রীতি আছে তা ভাঙ্গতে পারছেন না।

কিন্তু, দিনশেষে প্রশ্ন থেকেই গেলো, আমরা যারা এই বাঙালী, বাংলাদেশে বাস করি, ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছি। অন্তত তারা কি শব্দ চয়নের ব্যাপারে সতর্ক হবেন না!

এখন সেই সতর্কতা কেমন হতে হবে? সেটার ধরণ-ই বা কি হবে? কারণ একজন বাঙালী ইংরেজি জানবে না তা কেমন হয়! বা তাতে দোষেরই বা কি আছে? এবং ইংরেজি জানলেই কি তিনি বাবুর খেতাব পাবেন? আবার অন্যদিকে বাবু খেতাব না নিলে কি জাত যাবে?

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ ই-বাজার ডট কম

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: 'আগে চাই বাংলা ভাষার গাঁথুনি তার পরে ইংরেজি শেখার পত্তন।' রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: আমি যখন প্রেম ট্রেম করেছি তখন এরকম ডাকের প্রচলন ছিলো না।

৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২৪

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ফাইজলামি করতে করতে কিছু ব্যাপার প্রবেশ করে যায়, এটা তেমনি।

৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৮

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: এখন দোকানের নাম বাবু খাইছ X(

৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫১

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.