নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা বিষয়ে আমি সহমত না হয়ে পারছি না আর তা হলো, "মানুষ অনেককিছু ছাড়া বাঁচতে পারে তবে ভালবাসা ছাড়া নয়"। হতে পারে কথাটা সত্য। স্মৃতি দত্ত আমায় বড় বোনের মত করে দেখভাল করছেন। এক অদ্ভূত মায়া আছে উনার চোখে, এক অদ্ভূত ভালবাসা আছে। যেটা খুব কাছে টানে।
বৃদ্ধ হলে মানুষের হাত থেকে সব বন্ধু ফসকে যায় অথবা ওপারে না কি চলে যায় তাই বাকি সময় একা একা জীবন কাটিয়ে দিতে হয়। হোক সে কোন জমিদার বা কোন প্রতিপত্তিশালী। তাতে কিচ্ছু আসে যায় না!
একদিন কি যেন দরকারে মিসেস দত্ত আমায় ডাকলেন। কাছে যেতেই প্রশ্ন করলেন,
: চাকুরী পেলে কোথাও?
: না, দিদি
: এখন কি করবে ভাবছো?
: সত্যি বলতে গত ছয় মাস এখানেই শুয়ে বসে কেটে গেল। বাকি কিছুদিন যদি একটু সময় দিতেন!
: সময় নিয়ে ভাবতে হবে না। তুমি তোমার চেষ্টা অব্যাহত রাখো। খালি হাতে তো আমি আমার মেয়েটাকে তোমাকে দিতে পারি না।
শেষের বাক্যটা শুনে ধাতস্ত হতে আমার একটু সময় লাগলো। আচ্ছা, উনি কীভাবে বুঝলেন যে আমি উনার মেয়েকে পছন্দ করে ফেলেছি। এ তো অসম্ভব! তাই কথার দিক ঘুরালাম,
: মাফ করবেন! একটা প্রশ্ন করতে পারি?
: নিশ্চয়, করতে পারো।
: বাংলা ভাগের পর বাংলাদেশেই যে থেকে গেলেন? কখনো মনে হয়নি কলকাতায় পুনরায় ফিরে যাবার কথা?
: ইচ্ছে হয়নি তেমন নয়। কিন্তু ইচ্ছের উপর ভালবাসা ছিলো এই মাটির প্রতি, এখানে আমার স্বামী ছিলেন। ওর স্মৃতি আর স্পর্শ এই বাড়ির দেয়ালের প্রতিটা অংশে লেগে আছে যেন।
: আমি দুঃখিত, দিদি
: এই দেখো, তুমি আবার দুঃখিত কেন? চলো স্টোর রুমে যাই তোমাকে কিছু দেখাবো।
করিডর পেরিয়ে বাড়ির শেষ মাথায় একটি স্টোর রুম আছে। একটি বৃহদাকার স্টোর রুম। দেখে মনে হচ্ছে শতবর্ষের পুরনো। আমি বলে উঠলাম,
: দিদি, এই স্টোর রুম তো দেখছি বিশাল একটা আর্কাইভ। আমার ফোনের বত্রিশ জিবি স্টোরেজের চেয়েও বড় মনে হচ্ছে।
: হাসালে... তুমি বরং পেইন্টিংগুলো দেখো?
: এমা সেকি! এখানে তো দশটা মহামানবের ছবি আছে। কে এসব? সবগুলোই কি আপনার স্বামী ছিলেন?
: বজ্জাত কোথাকার! শেষের এই যে পেইন্টিং দেখছো এটা হচ্ছে আমার স্বামীর। বাকিগুলো তাঁর পূর্ব পুরুষদের।
: ওহ্, অদ্ভূত তো! কেউ এসব ট্রাডিশন এখনো অনুসরণ করেন?
: কেউ করেন কি না জানিনা, তবে দত্ত পরিবার করে আসছে...
: দিদি, ৬ষ্ঠ লোকটা কে?
: একদম তোমার মত দেখতে তাই না?
: ঠিক তাই! শুধু রাজকীয় এই পোষাক ছেড়ে শার্ট-প্যান্ট পরিয়ে দিন দেখবেন আমাদের মধ্যে হুবহু মিল খুঁজে পাবেন। আর সাথে দাঁড়ি-গোঁফ এত বড় কেনো? এসবের ক্লিন শেভ করতে হবে।
: উঁহু! পেইন্টিং এ তা সম্ভব নয়। একটা কথা জানো তো, যেদিন তোমাকে দেখলাম সেদিন আমি একরকম চমকে উঠেছিলাম। মনে হয় তোমার পুনর্জন্ম হয়েছে।
: আহা! আমি মুসলিম। এসব জন্মান্তরে আমি বিশ্বাসী নই। একটাই জীবন আর মরবোও একবার।
: সেটা তোমার বিশ্বাস। আমি তো সেখানে আঘাত করছি না! আমি আমার বিশ্বাসে তোমাকে খুঁজে পেয়েছি।
: বুঝেছি, মিশনারী কান্ড ঘটাবেন এখন আমার সাথে?
: মানে?
: মানে আপনার মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে আমাকে ধর্মান্তরিত করতে বাধ্য করবেন।
: ধূর! বুদ্ধ। সারাক্ষণ ফাযলামি। তুমি ঐ পেইন্টিংটা ভাল করে দেখো তো?
একসময় মাথা ধরলো। মিসেস দত্ত কে বিদায় জানিয়ে নিজের রুমে ফিরে আসলাম। কি অদ্ভূত এক বাড়িতে আমার আগমন। মনে হচ্ছে মন্ত্রমুগ্ধের মত আমাকে টানছে এই বাড়ির সমস্তটুকু। দাদার ৬ষ্ঠ পূর্ব পুরুষের ছবি দেখে অবাক না হয়ে পারিনি। সত্যিই কি আমি আজ থেকে দুইশত বছর পূর্বেও ছিলাম। তখন কার শাসন চলছিলো? মুঘল আমলে! আর তখন আমার ভূমিকা কি ছিলো?
এক সময় রাত ঘনিয়ে আসলো, ঢলে পড়লাম ঘুমের ঘোরে।
২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:৪৩
পদ্মপুকুর বলেছেন: একটু দ্রুতই শেষ হয়ে গেলো মনে হলো। ভালো লাগছে।
৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল ভাবে লিখে চলেছেন। ভালো লাগছে।
৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২০
মা.হাসান বলেছেন: ভালো জমছে। আরেকটু বড় হলে আরো ভালো হতো। (দুর)ঘটনা আশা করি পরের পর্ব থেকেই শুরু হবে।
৫| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৩০
করুণাধারা বলেছেন: মনে হয় পোস্টে মন্তব্য আপনি পছন্দ করেন না!!
২৭ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:৩৬
মি. বিকেল বলেছেন: ঠিক এমন নয়, আসলে হাতে সময় বের করতে পারিনা। কিন্তু আমি মন্তব্যগুলো মনযোগ দিয়ে পড়ি
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
৬| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০৩
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনি আগের মন্তব্যগুলোর উত্তর না দিয়ে শেষে করুনাধারা আপুর কমেন্টের উত্তর দিয়েছেন। সিরিয়ালি প্রতিউত্তর না দেওয়াটা ঠিক নয়। যদিও উচিত অনুচিত্তের কথা বলেন,আগাম ক্ষমাপ্রার্থী।
মিসেস দত্ত বক্তার মধ্যে পরিবারের ষষ্ঠ পুরুষের সন্ধান পেয়েছেন। মনে-মনে জামাই করবেন বলে ঠিকও করেছেন। বক্তার পক্ষে এ যেন কুড়িয়ে পাওয়া চোদ্দ আনা।
যাই এখন পরের পর্বে.....
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:৩৮
একাল-সেকাল বলেছেন:
বদির ষ্টক কি চুরি হয়ে গেছে?