নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক রাজ্যে এক পরী ছিলো। সেই রাজ্যে নিশ্চয় জ্বীনেরাও ছিলো। কিন্তু পরীটা ছিলো অসম্ভব সুন্দরী। তাই পরীর উপর জ্বীনেদের বরাবর একরকম টান ছিলো।
পরিচিত একটি শ্লোগান, কেউ পাবে আর কেউ পাবে না, তা হবে না, তা হবে না...। একদিন এমন এক সংঘর্ষের সময় পরী তাদের মাঝখানে পড়ে যায়। ব্যস, সব জ্বীনেরা মিলে পরীর ডানাটাই কেটে দিলো, কি আশ্চর্য!
এরপর থেকে পরী দাসীর মতন হয়ে যায়। নির্জীব এবং নিষ্ক্রিয়, উড়তেও পারে না। সেই ইচ্ছায় গুড়ো বালি। তার উপর এতিম।
তো এই ডানাকাটা পরী কোনভাবে জ্বীনেদের রাজ্য থেকে পালিয়ে মানব সমাজে আসে। যেখানে ইট পাথরে গড়া আবেগহীন শহর আছে। এই শহরে শুধু টাকা উড়ে, শুধু শরীরটা পরী শুধু তোমার।
মজার ব্যাপার হলো, উক্ত শহরে একটি অদ্ভূত সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি আছে। একসময় নাকি এই ইন্ডাস্ট্রির স্বর্ণযুগ ছিলো।
সময়ের ব্যবধানে কিছু গুণী মানুষ মাটির তলে মিশে গেছেন, আর কিছু ইতর জাতীয় প্রাণী এই ইন্ডাস্ট্রি দখলে নিয়েছে।
তো ডানাকাটা পরী জানতে পারে, এই শহরে কোথাও যদি তুমি কিছু না করতে পারো বা তোমাকে দিয়ে যদি কিছুই না হয় তাহলে শরীরটা বিক্রি করে উক্ত ইন্ডাস্ট্রির নায়িকা হতে পারবে।
ছদ্মবেশি এই ডানাকাটা পরী একসময় মানুষদের সাথে মিশে যায়। আর তাদেরই দেয়া কৌশল অবলম্বন করে বিভিন্ন সিনেমায় অভিনয় করে, পাঁচ তারকা বিশিষ্ট হোটেলে বিশিষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের সাথে আড্ডা দেন, নাইট ক্লাবেও যান।
রুহ্ আফজার সাধ ভুলে পরী তখন মদ খেতেও শুরু করে। মদ আর রুহ্ আফজা যে এক নয় তা পরীর বুঝে আসে না। টালমাটাল হয়ে বেপরোয়া জীবনই শ্রেয় মনে করতে শুরু করে।
কিন্তু পরীর জানা ছিলো না, জ্বীনের চাইতেও শক্তিশালী শয়তান হচ্ছে মানুষ।
তাই একদিন এক নাইট ক্লাবে হেনস্তা হয়েও বুঝতে পারে না, তাকে হেনস্তা করা হয়েছে না কি সে অন্যকে হেনস্তা করেছে!
প্রদীপের নিচে যেমন অল্প একটু অন্ধকার থাকে ঠিক তেমনি এই শহরে অনেক খারাপ মানুষের ভীড়ে কিছু ভালো মানুষও থাকে।
কিন্তু এই ডানাকাটা পরীর কখন যে টাকার নেশা পেয়ে বসেছে তা সে নিজেই বুঝতে পারেনি।
বিলাসবহুল জীবন আর সুযোগ পেলেই সে উড়োজাহাজে উড়াল দিতো। দিনশেষে, সে তো একজন পরী বলে কথা।
কিন্তু এত কম সময়ে এত সম্পদের মালিকানা উক্ত শহরের মানুষদের সহ্য হলো না। তার বিলাসবহুল জীবন তাদের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়ালো। না পারে তারা সইতে, না পারে তারা কিছু বলতে।
তাই কে বা কারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলে। সে রাজ্যের জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া "মুখবই" এদের অত্যাচারে বিভিন্ন পোস্টে ভরপুর হয়ে ওঠে।
একসময় উক্ত রাজ্যের প্রশাসন জানতে পারে, এই নায়িকা তো মানুষ নয়, এ তো আস্ত ডানাকাটা পরী। তাই তাকে তারা উদ্ধার করার জন্য উঠেপড়ে লাগে।
এবং মানব জাতির সভ্যতার সাথে কি রণনীতি খাটাচ্ছে পরীরা সেটার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ ও রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
বারবার পরীর জবানবন্দিতে সভ্য ফেরেশতা সমান মানবজাতি আজ সংকটে। একের পর এক তাদের উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়িক সবাই পরীর প্রেমের জাদুতে আচ্ছন্ন। কি এক মোহাবিষ্ট জাদু!
সভ্য ঐ জাতি এবার শুরু করলো হায়! হায়! ইজ্জতভ্রষ্ট এই জাতি আবার যাবে কোথায়? মিন্নি-তিন্নির জন্য তো সর্বোচ্চ একজন একেবারে ওপারেই যেত, মানে এপারে টেকা দায় হয়ে যায়। এখন এ তো দেখি আস্ত পরী, তাই তালিকা করা সম্ভব নয়।
গল্প শেষে পাশ থেকে আমার বন্ধু বললো, শুধু হোমার চর্চা করলেই চলবে? একটু জ্বীন-পরী নিয়েও গবেষণা কর!
©somewhere in net ltd.