নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অতি সাধারণ। তাই সাধারণের মাঝেই ডুবে থাকতে ভালোবাসি।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

The Cultural Studies Perspectives – Introduction

২৭ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:২৮



প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে ‘ক্যালচার (Culture)’ মানে কি? খুব সহজে তো এটার ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না। তবে বুঝার সুবিধার্থে, আমি একজন মানুষ। আমি বাংলায় কথা বলি। আমার ধর্ম ইসলাম। আমার পরনের কাপড় বলতে, জিন্স এবং শার্ট। সময় সময় আমি কোট-টাইও পরে থাকি।

আমি একজন বাঙালি লেখক। আমি আমার লেখার মাধ্যমে অনেক কথা মানুষকে বলে থাকি। এছাড়াও আমি বাঙালি এবং মুসলমান তাই মানুষের সাথে আমি যে আচরণ করে থাকি এবং আমি যে শিল্প-সাহিত্য ও দর্শনে বিশ্বাস করি বা লালন করি সেটাই আমার ‘ক্যালচার (Culture)’।

এমনকি আমি কীভাবে কথা বলি? কীভাবে পোশাক পরি? কীভাবে চলাফেরা করি? এই সমস্তই আমার ‘ক্যালচার’। মোটকথা, ক্যালচার (Culture) হচ্ছে একটি ‘Umbrella Term’। শব্দ তো একটাই কিন্তু এর শাখা-উপশাখা অনেক। এই থিয়োরির সাথে বেশ কিছু বিষয় জড়িয়ে পড়বে,

১. New Historicism
২. Marxism এবং ৩. Feminism

১৯৫০ সালে ব্রিটেনে ‘Cultural Studies’ প্রথম সামনে আসে। ১৯৬০ সালে বিষয়টি আরো বেশি পরিচিতি লাভ করে। এরপর এই থিয়োরি যথাক্রমে অ্যামেরিকা এবং অস্ট্রোলিয়ার মত দেশেও ছড়িয়ে পড়ে।

এই থিয়োরির মধ্যে যথাক্রমে বা একইসাথে ‘History’, ‘Anthropology’, ‘Cultural Geography’, ‘Film Studies’ এবং ‘Media’ যুক্ত। এই সমস্ত বিষয়কে যদি ভাঙ্গা হয় তাহলে আরো একাধিক শাখা ও উপশাখা পেয়ে যাবেন। যেমন ধরুন, মিডিয়া মানে কি? টেলিভিশন কিন্তু একটি মাধ্যম। এটাকেও ব্যবচ্ছেদ করলে আপনি পাবেন, ‘খবর’, ‘বিনোদন’, ‘নাটক’, ‘সিনেমা’, ‘টক শো’, ‘বিজ্ঞাপন’, ‘খেলাধূলা’, ‘রাজনীতি’, ‘অর্থনীতি’, ‘ব্যবসা’ সংক্রান্ত ইত্যাদি।

ঠিক এভাবেই একটি জাতির ইতিহাস থাকে। আবার ‘Anthropology’ ডিল করে আপনার গঠন নিয়ে বা মানবদেহ নিয়ে। ‘Cultural Geography’ মানে যেখানে আপনি বেড়ে উঠেছেন। আবার অভিনেতা সালমান শাহ্‌’র ভক্ত হোন বা না হোন কিন্তু সত্য তো এটাই যে, তিনি আমাদের সিনেমার মাধ্যমে অনেককিছু বুঝিয়েছেন অথবা আমরা ধরে নিয়েছি, মেনে নিয়েছি, মেনে চলছি; আর এটাই হচ্ছে ‘Film Studies’।

আর উপরোক্ত ঐ সমস্ত বিষয় আমাদের বর্তমান যে স্বরুপ দান করেছে সেটাই আমাদের কিন্তু ‘ক্যালচার (Culture)’। সংক্ষেপে এটা বলা গেলেও আরো বেশি জানার প্রয়োজন রয়েছে। আপনি ইউটিউব থেকে ‘Frankfurt School’ যেটা কিনা জার্মানিতে ছিলো এই সম্পর্কে কিছু সম্যক ধারণা পেতে পারেন।


প্রশ্ন হলো, ‘Frankfurt School’ সম্পর্কে জানা কেন প্রয়োজন?

কারণ যখন আপনি ‘Cultural Studies’ নিয়ে কথা বলবেন তখন মার্কসবাদ ছাড়া এগিয়ে যাওয়া যায় না। আর সে সময় জার্মানিতে এই ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল থেকে বেশ কয়েকজন জার্মান ‘Marxists’ দার্শনিক ছিলেন। তাঁরা এই বিষয় নিয়ে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন এবং বইও লিখেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম যারা ছিলেন,

১. Theodor W. Adorno
২. Max Hochheimer
৩. Herbert Marcuse
৪. Walter Benjamin

ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল নিয়ে জানলে এই ব্যক্তিদের সম্পর্কে আরো স্পষ্ট ধারণা পাবেন। আপাতত এই চার ব্যক্তির নাম মনে রাখুন। এদের মধ্যে ‘Theodor W. Adorno’ ও ‘Max Hochheimer’ এর অবদান ছিলো সবচেয়ে বেশি এবং তাঁরা এ বিষয়ে বইও লিখেছেন। উল্লেখ্য, মার্কসবাদ দর্শন অনুযায়ী সমাজের উচু-নিচু স্তরের মানুষের যে বিভাজন করে দেখানো হয়েছে সেটাই কিন্তু একজন মানুষের ক্যালচার অন্য মানুষের ক্যালচার থেকে ভিন্নতা প্রকাশ করতে বাধ্য।


Cultural Studies - Interdisciplinary Studies

‘Cultural Studies’ কিন্তু কোনো নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ নয়। তাই এই থিয়োরিকে ‘Undisciplined’ বলায় শঙ্কা নেই। এই থিয়োরি হচ্ছে ‘Interdisciplinary’। এ সম্পর্কে ‘Toby Miller’ বলেন, “Cultural studies is a tendency across disciplines, rather than a discipline itself.”

‘British cultural studies by Graeme Turner (১৯৯০)’ এই বইতে ‘Graeme Turner’ একটি প্রস্তাব পেশ করেন যে, ‘Cultural Studies’ নির্দিষ্ট একটি বিষয় এবং নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলে। আর এজন্যই পরবর্তীতে এই বইটি সমালোচনার মুখে পড়ে। কারণ, ‘Cultural Studies’ নির্দিষ্ট কোনো ‘Discipline’ মেনে চলে না।

১৯৬৪ সালে স্টুয়ার্ট হল (Stuart Hall) ‘University of Birmingham’ ব্রিটেনে ‘Cultural Studies’ নিয়ে একটি রিসার্চ সেন্টার শুরু করেন। নাম দেন, ‘The Centre for Contemporary Cultural Studies (CCCS)’। এরপর ‘Stuart Hall’, ‘Richard Hoggart’, ‘Raymond Williams’, ‘David Morley’, ‘E. P. Thompson’ ওনারা ‘Cultural Studies’ সহ বেশ কিছু বিষয় সামনে আনেন। সেসব হলো, ‘TV Studies’, ‘Gender Studies’, এবং ‘Media’।

‘Richard Hoggart’ এবং ‘Raymond Williams’ পরবর্তীতে ‘Leavisism’ অনুসরণ করেন যেটার প্রবক্তা হলেন ‘F. R. Leavis’। ব্রিটেনে ‘Cultural Studies’ শুরুর দিকে যে দু’টি বই বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে সে দু’টি বই হলো,

১. The Popular Arts By Stuart Hall and Paddy Whannel's (১৯৬৪)
২. The Uses of Literacy By Richard Hoggart (১৯৫৭)


পরিশেষ

ভূমিকা ৭০০ শব্দের বেশি হলেও আশা করি খারাপ হয় না। একই সাথে, এই যে বাঙালি জাতি এবং আমাদের ‘ক্যালচার (Culture)’ নিয়ে যা চলছে তা আমার দৃষ্টিতে অত্যন্ত হাস্যকর। কোথাও না কোথাও আমরা বাইনারিস্ট হয়ে যাচ্ছি। এবং একই সাথে ‘Existing Culture’ কে ধরে রাখতেই হবে এমন মনোভাব গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ খোদ ‘Cultural Studies’ থিয়োরি এটাকে নাকোচ করে দিচ্ছে।

সুতরাং দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা সংস্কৃতির পাঠ পাল্টাবে না। আমার শরীরে শার্ট থেকে টি-শার্ট জড়াবে না এমন চিন্তায় নিশ্চিন্তে জল ঢালা যায়। কারণ কোনো সংস্কৃতি রাতারাতি তৈরি হয় না বা রাতারাতি শেষও হয়ে যায় না। একই সাথে সংস্কৃতির মালিকানা জাহির করাও বাঞ্ছনীয় নহে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৪৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেকক্ষণ পরে ব্লগে এলাম, শুরুতেই আপনার পোস্ট। আপনার পোস্টের মান অনন্যসাধারণ। এখনো পড়ি নাই, ক্ষুদ্র একটা অবজারভেশন দিয়ে যাই। এটা ক্যালচার হবে না, হবে কালচার - ˈkʌltʃə

শুভেচ্ছা।

২৮ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৪৯

মি. বিকেল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ভুলটার জন্য আমি লজ্জিত। এতগুলো জায়গায় ভুলটা হয়ে গেছে তাই ঠিক করাও সময়সাপেক্ষ। পাঠকের অনুরোধ, 'ক্যালচার' কে পড়ুন 'কালচার'। ধন্যবাদ

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ১১:৫৪

ককচক বলেছেন: ইন্টারনেটের যুগ, মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জাতির কালচার সম্পর্কে জানছে; উন্নত দেশ ও জাতির মানুষের চালচলন কপি করার চেষ্টা করছে। ফলে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই পরিবর্তন সহজভাবে বা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখাই ভালো।
সময়ের সাথে পরিবর্তন হবে, পরিবর্ধন হবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম। ধরে বেধে জঞ্জাল করে এই পরিবর্তনের ঢেউ আটকে রাখা যাবেনা।

২৮ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৫০

মি. বিকেল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত প্রকাশ করছি। ধন্যবাদ

৩| ২৮ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৮:৩২

কামাল৮০ বলেছেন: ধর্ম কালচারের অংশ না।আমি বাঙ্গালী। আমি হিন্দু হতে পারি মুসলিম হতে পারি।হতে পরি আমি বাঙ্গালী মুসলমান বা বাঙ্গালী হিন্দু।

২৮ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৫২

মি. বিকেল বলেছেন: "ধর্ম কালচারের অংশ না"... এ ব্যাপারে আমি পুরোপুরি সহমত নই। ধর্ম কালচারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশ।

৪| ২৮ শে আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৪

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: কারণ যখন আপনি ‘Cultural Studies’ নিয়ে কথা বলবেন তখন মার্কসবাদ ছাড়া এগিয়ে যাওয়া যায় না।
কেন এগিয়ে যাওয়া যায় না? মার্কসবাদ ছাড়া কি Cultural Studies সম্ভব নয়?
ধন্যবাদ।

২৯ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৫:৫৭

মি. বিকেল বলেছেন: নিশ্চয়, এগিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু কীভাবে?

যাদের হাত ধরে সংস্কৃতি কি? কেন? কীভাবে? ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানলেন তাঁদেরকে বাদ দিয়ে নিজের মত করেও বোধহয় চলা যায়। কিন্তু আমি তো পারছি না।

ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.