নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সামনে দেশে নির্বাচন এবং খুব সম্ভবত এ-কারণেই এত এত টক শো/তর্ক-বিতর্ক সামনে আসছে। প্রশ্ন হচ্ছে, ন্যায়ের ফাঁকি (Logical Fallacy) এসব ক্ষেত্রে কীভাবে কাজ করে? কীভাবে যুক্তির পেছনের যুক্তি না দিয়েও তার্কিক জিতে গেছেন বলে মনে হচ্ছে। এছাড়াও আজকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ আমরা ব্যক্তি জীবনেও এর ব্যবহার করছি। জেনে হোক, অথবা না জেনে হোক আমরা এটি ব্যবহার করছি, এর অস্তিত্ব বিদ্যমান এখন প্রায় সর্বত্রই।
ন্যায়ের ফাঁকি (Logical Fallacy) কি?
এটি এক ধরণের তর্ক (Argument) যা বিষয়ভিত্তিক আলোচনা থেকে অনেক দূরে। এবং এই ধরণের তর্ক/যুক্তি (Argument) কারণ ছাড়াই প্রমাণ করা সম্ভব কিন্তু তা স্পষ্টত ত্রুটিপূর্ণ যোগাযোগ রাখে মূল উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যের সাথে। তার্কিক এই ধরণের যুক্তির আশ্রয় নিয়ে খুব দ্রুত বা সহজেই জিতে জেতে পারেন; যা মূল উদ্দেশ্য/বিষয়/প্রশ্ন এর সাথে সম্পর্ক রাখে না।
আমরা এজন্য দুটো উদাহরণ লক্ষ্য করতে পারি,
১. আপনি বাইরে বিনা কারণে যাবেন না। এতে হিট স্ট্রোক হতে পারে।
২. আপনি বাইরে যাবেন না। এই গরমে আপনার হিট স্ট্রোক হতে পারে। এর ফলে আপনি কাজ করতে অক্ষম হয়ে পড়বেন এবং অফিসে নিয়মিত যেতে পারবেন না। ফলে মাস শেষে কম আয় আসবে। আপনার ছেলে/মেয়ের স্কুল ফি দিতে সমস্যা হবে। এতে করে তারও পড়াশোনা বন্ধ হতে পারে। সর্বোপরি আয় রোজগার কম হওয়ায় আপনার সংসার ভেঙ্গে পড়বে।
এখানে দুটো উদাহরণ মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। প্রথম উদাহরণ যা বলছে তা বাস্তবে নাও ঘটতে পারে। হয়তো আপনি বাইরে বের হলেন আর মিষ্টি বাতাসের সন্ধান পেলেন। সেখানে হিট স্ট্রোক করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু দ্বিতীয় উদাহরণ আরো ঝামেলার। এখানে ক্রমাগত এক সমস্যার সাথে আরেক সমস্যার যোগাযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। এর কিন্তু শেষ নেই…
এটিকে বলা হয় ‘Slippery Slop Fallacy (প্রথাবহির্ভূত ভ্রান্তি)’। যুক্তি দিয়ে দেখলে দুটো উদাহরণ -ই প্রায় ভুল হিসেবে গণ্য হতে বাধ্য। একইভাবে এই উদাহরণ টি আপনি কারিনা ভাইরাস (বুঝে নেন) এর সাথে তুলনা করে দেখলে ভয়ানক উত্তর খুঁজে পাবেন।
ন্যায়ের ফাঁকি (Logical Fallacy) এর ইতিহাস
এই বিষয়টি ঠিক ততটাই পুরনো যতটা আমাদের ভাষা। তবে চিহ্নিত করতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে হিন্দু ধর্মের ‘Nyāya-Sūtras’ এবং ‘Nyāya School’ এর দর্শনে। এই পাঠ্যটি, খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দী এবং খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীর মধ্যে কোথাও লেখা হয়েছিল এবং অক্ষপদ গৌতমকে বিবেচনায় নিয়ে। তিনি পাঁচটি স্বতন্ত্র উপায় চিহ্নিত করেছিলেন যা যুক্তিযুক্তভাবে ত্রুটিযুক্ত হতে পারে।
গ্রীক দার্শনিক অ্যারিস্টটলও যৌক্তিক ভুলের কথা লিখেছেন। তিনি তার রচনা অত্যাধুনিক খণ্ডন-এ তেরোটি ভুলকে চিহ্নিত করেছেন, যেসব মৌখিক এবং বস্তুগত ভুলে বিভক্ত। অ্যারিস্টটলের সংজ্ঞা অনুসারে, একটি মৌখিক বিভ্রান্তি, যেখানে ব্যবহৃত ভাষাটি অস্পষ্ট বা ভুল, এবং একটি বস্তুগত ভুল হলো এমন একটি যুক্তি যা ত্রুটিপূর্ণ বা ত্রুটিপূর্ণ যুক্তি জড়িত। সেইসাথে পরবর্তী সময়ে রিচার্ড হোয়াটলি এবং ফ্রান্সিস বেকনের মতো পণ্ডিতদের অবদান দেখতে পাওয়া যায়।
মোট ১৫টি কমন ন্যায়ের ফাঁকি (Logical Fallacy) এর পথ খুঁজে পাওয়া যায় -
এই কমন সংখ্যা দেখেই বোধগম্য যে, বিষয়টির পরিধি কতটুকু বিস্তৃত। এবং কতভাবে একটি যুক্তিকে ঘুরিয়ে পেচিয়ে উপস্থাপন করা যেতে পারে। আপনার পরিচিত লেখক, তার্কিক এমনকি সাংবাদিক এই অস্ত্র নিয়মিত ব্যবহার করছেন। তাই সাবধান!
১. Ad Hominem
প্রতিপক্ষকে তার ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন চিহ্ন এবং আচরণ দিয়ে ঘায়েল করবার জন্য তার্কিক এই ধরণের যুক্তি স্থাপন করা হয়। যেমন: জনাব ‘ক’ এই শহরের মেয়র হতে পারেন না, কারণ তিনি এই শহরে বড় হোন নি। এখানে যে বিষয়টি লক্ষ্য করবার সেটা হলো, একজন মেয়র/জন প্রতিনিধি হতে হলে সে শহরেই জন্মগ্রহণ করতে হবে এমন কোন শর্ত থাকা উচিত নয়। তিনি তার জীবনের নানান অভিজ্ঞতা থেকেও সে শহরকে বিচার বিবেচনায় নিতে পারেন এবং একজন সফল জন প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে যেতে পারেন। এই ব্যক্তি চরিত্র ট্রেইল/ট্রেইট’স্ এর উপর আক্রমণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
২. Red Herring
যুক্তি/তর্ক/আলোচনার মূল বিষয়বস্তু কে ছেড়ে অন্য বিষয়ে হঠাৎ করে চলে যাওয়া। এখানে যিনি বক্তা তিনি দায়িত্বশীল বক্তার ভূমিকায় থাকেন তো নাই -ই বরঞ্চ তিনি ভণিতা করতে আরম্ভ করেন এবং মূল বিষয়বস্তু থেকে একলাফে হটে গিয়ে অন্য বিষয়বস্তুতে লাফ দেন। এই উদাহরণ সাধারণত আমার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের সময় একটু বেশি দেখা যায়।
উপস্থাপকের প্রশ্ন: আপনারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এর অপব্যবহার কেন করছেন? কার্টুনিস্ট, লেখক, অ্যাকটিভিস্ট, সাংবাদিক এতে সমস্যায় পড়ছেন।
একজন রাজনীতিবিদ: তাহলে কি আপনারা চাচ্ছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন না থাকুক? কানাডায় পর্যন্ত এই আইন আছে। তাছাড়া আমরা যে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি তাতে কত ব্যয় হয়েছে জানেন?
খেয়াল করুন, প্রশ্ন ছিলো ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ নিয়ে কিন্তু রাজনীতিবিদ পুরোপুরি ভিন্ন কথা বলছেন যার সাথে মূল প্রশ্নের/বিষয়বস্তুর কোনো সম্পর্ক নাই।
৩. Straw Man
এই ধরণের ‘Fallacy’ ব্যবহৃত হয় কোনো ‘Hyperbolic (অতিরঞ্জিত)’ স্টেটমেন্ট দেবার জন্য। যে কোনো সমস্যার সাময়িক সমাধান থেকে শুরু করে হাজার রকমের উপায় আছে সেটাকে সমাধান করবার। কিন্তু এই ধরণের ‘Fallacy’ সমস্যা কে শুনেই তার অতিরঞ্জিত সমাধানের রাস্তা দেখায় যা প্রায় অসম্ভব। মানে হলো, প্রধান প্রশ্ন কে ছোট করা এবং সেটিকে অনেক বড় কোনো বিষয়বস্তুর সাথে যুক্ত করতে পারেন।
১ম ব্যক্তি: আমাদের দেশে কর্মসংস্থান কম। এজন্য বেকার ভাতা খোলার প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে যারা চাকুরী খুঁজছেন।
২য় ব্যক্তি: বেকার ভাতা দিলে সাধারণ মানুষদের কষ্টের ট্যাক্সের টাকা নষ্ট হবে। এরা বাঙালি। ফ্রি-তে সুযোগ সুবিধা দিলে বরং অলস হয়ে পড়বে। ফলে এরা আর কাজ করতে চাইবে না। এতে রাষ্ট্র আর্থনৈতিক সমস্যায় পড়বে।
৪. Equivocation
এই ধরণের Fallacy ব্যবহৃত হয় মূল বিষয়বস্তুকে ভুল ভাবে ব্যখ্যা করবার জন্য, ভুল দিকে প্রবাহিত করবার জন্য। এক্ষেত্রে মূল কথা/শব্দ কে হাজারো ভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে দর্শক অথবা শ্রোতার মধ্যে একধরণের ধোয়াশা/কুয়াশার তৈরি করতে সক্ষম হোন। বর্তমান আমেরিকান ভিসা নীতি এটাই চলছে।
উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশে বুয়েটের একজন ছাত্রের আত্মহত্যা বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। তিনি যতদূর জানি ‘Nihilistic (নৈরাশ্যবাদী)’ ছিলেন। এখন তিনি নদীতে স্ব-ইচ্ছায় ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বললে তো চলে না, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এই বিষয়টি আমাদের কাছে স্পষ্ট; অন্তত আমি সেই আশাটুকু করতে চাই।
৫. Slippery Slop
এটি হলো এক ঘটনার সাথে আরেক ঘটনার অহেতুক যোগাযোগ স্থাপন করা এবং তার ‘Consequences’ সম্পর্কে অবগত করা। আপনি প্রায় শুনে থাকবেন, যদি আপনি এভাবেই সাধারণ একজন মানুষ কে সাহায্য করেন তাহলে এরকম আরো একাধিক মানুষ আপনার কাছে সাহায্য চেয়ে বসবেন। তাদের সাহায্য করবার পর দেখবেন দেশের সবাই আপনার কাছে সাহায্যের জন্য এসে দাঁড়িয়েছে। এতে আপনি দাতা হাতেম তাঈ তো হতে পারেন না, পারবেন না। উল্টো আপনি পথে বসবেন।
যুক্তি তো ঠিকই আছে কিন্তু ভুল কেন মনে হচ্ছে? মানে ‘প্রেমাইজ’ এবং ‘এন্ডিং’ দূর্বিষহ লাগছে কেন? কারণ একজন মানুষ কে সাহায্য করার সাথে আপনার পথে বসে যাবার কোনো সম্পর্ক নেই।
৬. Hasty Generalization
কতিপয় ঘটনার উদাহরণ বিবেচনায় একটি বিষয়কে দ্রুত ভুল বা সঠিক দাবী করা। হয়তো সেখানে আরো প্রমাণের প্রয়োজন ছিলো। আরো বেশি উদাহরণ এবং ব্যাখ্যার প্রয়োজন ছিলো প্রথম ব্যাখ্যাকে ব্যাক-আপ দেবার জন্য।
ধরুন, একটি কফিশপে আপনি দুইবার গেলেন। দুইবার-ই কোনো কারণে সেখানে কফি পান করায় আপনার এলার্জি হলো। এখন এলার্জি কেন হলো? কফি খেয়ে নাকি বিভিন্ন খাবার নিয়মিত যা গ্রহণ করছেন সেসবের ফলে? কিন্তু আপনি দ্রুত সিদ্ধান্তে আসলেন যে, ‘ঐ কফিশপে কফি খেলে আমার এলার্জি হয়’।
৭. Appeal to Authority
এই ধরণের বক্তা প্রথমত একটি ভুল স্টেটমেন্ট দেবে এবং সেটাকে জনমনে গ্রথিত করবার জন্য এক্সপার্ট দের রেফারেন্স টেনে আনবে। ধরুন, একজন তার্কিক বলছেন, ‘কফি পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, কারণ আমি একটি ব্লগে তা পড়েছি।’
ব্যক্তি মতামত ‘কফি পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ কিন্তু তার এক্সপার্ট রেফারেন্স হচ্ছে মাত্র একটি ব্লগ; যা যথেষ্ট নয় এই যুক্তি স্থাপন করার ক্ষেত্রে। কারণ বর্তমান পৃথিবীতে এখন প্রায় দুই বিলিয়নেরও বেশি ওয়েবসাইট আছে।
৮. False Dilemma
এই ধরণের তার্কিক ‘False Dichotomy (মিথ্যা দ্বিধাবিভক্তি)’ এর ব্যবহার করেন এবং দুটো অপশন বেছে নেবার জন্য বাইনারিস্টদের মতন আচরণ করেন। এমন অনেক বিষয় আছে যা শুধু ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দিয়ে ‘সঠিক/ভুল’ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। ধরুন, আপনার বন্ধু বলছে, ‘তুই যদি আমার সিদ্ধান্ত কে সমর্থন না করিস তাহলে তুই আমার বন্ধু না।’ কিন্তু আপনার জীবন দর্শন আপনার বন্ধুর থেকে ভিন্ন হতে পারে তো! না কি?
৯. Bandwagon Fallacy
শুধুমাত্র কোন বিষয় জনপ্রিয় বলে তার্কিক সেটিকে ভালো বিবেচনায় নিতে পারেন। ধরুন, শাকিব খানের সিনেমা ব্যবসা সফল হয়। এখন জরুরী নয় শিল্প হিসেবে তাঁর সিনেমা উঁচু মানের হতেই হবে!
১০. Appeal to Ignorance Fallacy/Burden of Proof Fallacy
কোন কিছু কখনই ভুল বা সঠিক বলে প্রমাণিত হয় নি তারমানে এই নয় যে, তা ভুল অথবা সঠিক। এটি ‘অনির্ধারিত (Undefined)’। কিন্তু তার্কিক এখানে এই সুবিধা গ্রহণ করে বলতে পারেন, ‘যেহেতু কেউ প্রমাণ করতে পারেন নি যে UFO পৃথিবীতে আসে নাই, সেহেতু এটির অস্তিত্ব অবশ্যই আছে।
১১. Circular Argument
তার্কিক যখন কোনো বিষয়বস্তুর শুরু এবং শেষ একই সূত্র দিয়ে শেষ করেন। মানে নতুন কোনো অর্থ সেখানে থাকে না। যেমন ধরুণ, মরিচের বীজ লাগান দ্রুত মরিচ পাবেন এবং মরিচের গাছ দ্রুত বড় হয়।
১২. Sunk Cost Fallacy
তার্কিক কোনো বিষয়ে টাকা ঢেলেছেন এবং সেটা ফেরত পাবার সম্ভাবনা না থাকায় তিনি সেটাকে উপভোগ করাকে বিবেচ্য মনে করতে পারেন। যেমন ধরুন, আমি যেহেতু এই বইটি কিনেছি, তাই ভালো না লাগলেও পুরোটা পড়ে দেখবো।
১৩. Appeal to Pity
এখানে ‘Pity’ শব্দের ব্যবহারে বিষয়টি সহজেই বুঝতে পারছেন। যখন তার্কিক আর কিছু না পায় তখন আবেগ টেনে নিয়ে আসে যুক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। ধরুন, অফিসে কোনোকাজ সঠিক সময়ে জমা দিতে না পারায় বলতে পারেন,
‘দেখুন, একে তো সকালে উঠতে আমার দেরি হয়েছে। এরপর থেকে যা হচ্ছে… মানে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম, শরীর ঝিমুচ্ছিলো তাই ড্রাইভিং করে অফিসে আসতেও দেরি… সব দেরির মধ্যে পড়ে গেল। এজন্য নিজের মধ্যেও একরকম খারাপ লাগা তৈরি হলো। ফলে কাজটায় মনোযোগ দিতে পারিনি।’
অথবা,
‘কীভাবে ক্লাস করবো স্যার? এরমধ্যে আমার দাদী-নানী সবাই মারা গেছেন। আমি এসবের সাথে কোনভাবেই মানিয়ে চলতে পারছিলাম না। এখন যদি রেজাল্টও খারাপ হয় তাহলে আমি সহ্য করতে পারবো না। তাই অনুগ্রহ করে আমায় ফেল করে দেবেন না!’
১৪. Casual Fallacy
তার্কিক দুটো ঘটনার লিংক করেন কোন বিশেষ প্রমাণ ছাড়াই। যেমন ধরুন তার্কিক বলছেন, ‘দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে কিন্তু মানুষের আয়ও বেড়েছে।’ তাই যখনই মানুষের আয় বাড়ে তখনই দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ে। যুক্তি প্রায় ঠিকই লাগছে, কিন্তু ভুল কোথায়? ভুল হচ্ছে, আপনার পকেট অনুযায়ী সরাসরি দ্রব্যমূল্যের সম্পর্ক থাকে না। তার চাহিদা ও উপযোগ সহ নানান বিষয় থাকে। তাই মানুষের আয় বাড়লে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো একটি ভুল যুক্তি।
১৫. Appeal to Hypocrisy
তার্কিক যখন সমালোচনার মধ্যে দিয়ে সামনের ব্যক্তি কে ছোট করে দিয়ে কোন যুক্তি টেনে নিয়ে যান। যেমন ধরুন, ম্যাকডোনাল্ডের দাবি যে, তারা কোটি কোটি হ্যামবার্গার মানুষের কাছে বিক্রি করছে, তবুও বিলিয়ন বিলিয়ন হ্যামবার্গার বিক্রি করার মানে এই নয় যে ম্যাকডোনাল্ডস সেরা হ্যামবার্গার তৈরি করে।
এখন এই মাপকাঠি তাকে কি দিয়ে দেবেন? নিশ্চয় এটি পরিষ্কার করা সম্ভব নয় যে, ম্যাকডোনাল্ড সবচেয়ে ভালো হ্যামবার্গার তৈরি করে। এই ভুল যুক্তি দিয়েও তার্কিক এগিয়ে থাকতে পারেন। অবশ্য এটিও আটকে দিতে পারবেন এর আরো একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে, ‘তাহলে কে সবচেয়ে ভালো হ্যামবার্গার বানায়?’ কিন্তু উনি আবার স্লিপ করে ব্যক্তি অভিজ্ঞতা দিয়ে আপনাকে উড়িয়ে দিতে পারেন; যা বস্তুত উচিত বা ঠিক নয়।
এই ছিলো ‘ন্যায়ের ফাঁকি (Logical Fallacy)’ নিয়ে কমন ১৫টি বিষয় নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। দ্বিতীয় পর্বে আরো অনেক বিষয় আছে যা তুলে আনবার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ
০৯ ই জুন, ২০২৩ সকাল ৮:২০
মি. বিকেল বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৪:০৩
হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।