![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মঙ্গল শোভাযাত্রা, যা একদা বাঙালির আনন্দ ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে উদযাপিত হতো, সময়ের সাথে সাথে রাজনৈতিক প্রভাব ও শোষণের একটি কলঙ্কিত মঞ্চে পরিণত হয়েছে। এই প্রবন্ধে আমরা এর ইতিহাস, মঙ্গল শোভাযাত্রার সংকট ও পুনরুত্থানের যুগ, শেখ হাসিনার শাসনকালে (২০০৯-২০২৪) এর রাজনৈতিক ব্যবহার, নেতা-নেত্রীদের পুতুল নির্মাণের কারণ, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা কঠোর সমালোচনা, মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন, বাঙালী সংস্কৃতির প্রতীকতত্ত্ব এবং একটি গভীর বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে শেষ করবো।
১. উৎপত্তি: আনন্দ ও প্রতিবাদের সূচনা (১৯৮৬-১৯৯০)
মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রথম সূচনা ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে হয়েছিল। স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সাহস যোগানো এবং শান্তির বার্তা দেওয়ার লক্ষ্যে এই আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথমে এর নাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’, যা ১৯৯৬ সালে পরিবর্তন করে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ রাখা হয়। যদিও ১৯৮৬ সালে যশোরে ‘চারুপীঠ’ নামক একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন একই উদ্দেশ্যে পাপেট, বাঘ ও হাতির প্রতিকৃতি এবং লোকজ শিল্পের উপাদান সম্বলিত একটি আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেছিল, যা সম্ভবত মঙ্গল শোভাযাত্রার ধারণাকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৯৮৯ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা তৎকালীন স্বৈরাচারী শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের একটি মাধ্যমে রূপান্তরিত করে। এই সময়ে এরশাদের কুশপুত্তলিকা, কালো পতাকা এবং জাতীয় পতাকার মতো প্রতীক যুক্ত হয়, যা গণতন্ত্রের জন্য জনগণের সংগ্রামের প্রতিফলন ছিল।
তবে, এরশাদের পতনের (১৯৯০) পর এর প্রতিবাদী চেতনা ক্রমশ ম্লান হতে থাকে। এটি একটি সাধারণ সাংস্কৃতিক উৎসবে রূপ নেয়, এবং ১৯৯০-এর দিকে ভাষা সৈনিক ইমদাদ হোসেন ও সংগীতজ্ঞ ওয়াহিদুল হকের পরামর্শে এর নাম ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ থেকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ —তে পরিবর্তিত হয়। এই পরিবর্তন একটি ইতিবাচক শুরুর প্রতিশ্রুতি দিলেও, পরবর্তীতে এটি রাজনৈতিক শক্তির হাতে পড়ে।
২. ১৯৯১–২০০৮: মঙ্গল শোভাযাত্রার সংকট ও পুনরুত্থানের যুগ
১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শুরু হওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। তবে ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই শোভাযাত্রা রাজনৈতিক অস্থিরতা, সাম্প্রদায়িক হুমকি এবং সাংস্কৃতিক বাধার মুখোমুখি হয়, যা এর অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিল। এই সময়কালে শিল্পী ও সংগঠকদের অদম্য প্রচেষ্টা এই উৎসবকে টিকিয়ে রাখে এবং পরবর্তীতে এর বিশ্বজনীন স্বীকৃতির ভিত রচনা করে।
১৯৯০-এর দশকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলেও রাজনৈতিক সংঘাত ও ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো পহেলা বৈশাখের উদযাপনকে ‘ধর্মবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে বিরোধিতা শুরু করে। পরিস্থিতি ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আরও জটিল হয়। এই সময়ে ধর্মনিরপেক্ষ অনুষ্ঠানগুলোর ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপের চেষ্টা চলে।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বোমা হামলা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় রচনা করে। এই হামলায় ১০ জন নিহত এবং প্রায় ৫০ জন আহত হন। তদন্তে হরকাতুল জিহাদ আল-ইসলামি (হুজি) নামক জঙ্গি সংগঠনকে দায়ী করা হয়, এবং ২০১৪ সালে আদালত ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয়।
রমনা হামলার পর মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে সাময়িক আতঙ্ক ছড়ালেও চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা হাল ছাড়েননি। তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে এবং শোভাযাত্রায় পরিবেশ সুরক্ষা, নারীর অধিকারের মতো সামাজিক বার্তা যুক্ত করে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ান। ১৯৯০-এর দশকে লোকশিল্পের সমন্বয়ে ম্যুরাল ও মুখোশ তৈরি শুরু হয়, যা শোভাযাত্রাকে স্থানীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে জুড়ে দেয়।
২০০০-এর দশকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অভাব সত্ত্বেও স্থানীয় সম্প্রদায় ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সমর্থনে শোভাযাত্রার পরিধি বাড়তে থাকে। ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন এর আঞ্চলিক সম্প্রসারণের সূচনা করে। ঢাকার বাইরে যশোর, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায় শোভাযাত্রা ছড়িয়ে পড়ে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনের প্রতিশ্রুতি দেয়। এই সময়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পায় এবং জাতীয় পরিচয়ের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সালে ইউনেস্কো এটিকে ‘মানবতার অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যা ১৯৯১–২০০৮ সময়ের সংগ্রামের ফসল।
৩. শেখ হাসিনার শাসনকালে রাজনৈতিক ব্যবহার (২০০৯-২০২৪)
স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর মঙ্গল শোভাযাত্রা একটি রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চে রূপান্তরিত হয়। এই সময়ে শোভাযাত্রায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের প্রতিকৃতি বা পুতুল দেখা গেছে, যা সরকারের সমালোচকদের ক্রোধ ও সমর্থকদের গৌরবের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
নিচে এই সময়ে কিছু উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ও তাদের পুতুল নির্মাণের কারণ উল্লেখ করা হলো:
(ক) শেখ হাসিনা: শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি অথবা পুতুল প্রায় প্রতি বছর শোভাযাত্রায় দেখা যায়, বিশেষ করে ২০১৬ সালের পর থেকে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালের ১৪ই এপ্রিল প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার মুখোশ এবং পদ্মা সেতুর প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়েছিল, যা সম্ভবত সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর প্রচারণার অংশ ছিল। কোনো কোনো মহল মনে করেন, এর উদ্দেশ্য ছিল স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে ‘উন্নয়নের প্রতীক’ হিসেবে তুলে ধরা এবং তাঁর শাসনের প্রতি জনসমর্থন তৈরি করা।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ইউনেস্কোর যে স্বীকৃতি লাভ করেছিল, সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য ছিল এবং এর সাথে শেখ হাসিনার প্রতিকৃতির শোভাযাত্রার সরাসরি কোনো সম্পর্ক থাকবার কথা নয়।
(খ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: মঙ্গল শোভাযাত্রা স্বৈরশাসন ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক। কিন্তু এই উৎসবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ব্যবহার—যিনি বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে স্বৈরশাসন কায়েম করেছিলেন—একটি লজ্জাজনক দ্বিচারিতা। স্বৈরশাসন-বিরোধী শোভাযাত্রায় একজন স্বৈরশাসকের প্রতীক কীভাবে গ্রহণযোগ্য হয়?
১৯৮৯ সালে চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রা স্বাধীনতার চেতনা ও নিপীড়নের বিরোধিতা নিয়ে গড়ে উঠেছিল। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর মুখোশ ও প্রতিকৃতি যুক্ত হওয়ায় এর মূল উদ্দেশ্য বিকৃত হয়েছে। বাকশাল (১৯৭৫) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বিরোধী দল নিষিদ্ধ করেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেন এবং গণতন্ত্র ধ্বংস করেন। এই ইতিহাস শোভাযাত্রার স্বৈরশাসন-বিরোধী চেতনার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। তবু তার প্রতীক ব্যবহার একটি ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা।
সমর্থকরা দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার প্রতীক, তাই তাঁর প্রতিকৃতি শোভাযাত্রায় স্বাভাবিক। কিন্তু এই যুক্তি বাকশালের স্বৈরশাসনের কালো অধ্যায়কে ঢাকতে চায়। আওয়ামী লীগ এই উৎসবকে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডায় রূপান্তরিত করেছে, যা শোভাযাত্রার সার্বজনীন মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ণ করে।
বিএনপি ও ইসলামপন্থী গোষ্ঠী ঠিকই বলে, বাকশালের প্রতিষ্ঠাতার প্রতীক শোভাযাত্রার প্রতিবাদী চেতনাকে প্রহসনে পরিণত করে। স্বৈরশাসন-বিরোধী উৎসবে একজন স্বৈরশাসকের প্রতীক ব্যবহার শুধু ইতিহাসের অপলাপ নয়, শোভাযাত্রার মূল আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। এই বিকৃতি বন্ধ না হলে শোভাযাত্রার বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
(গ) বিরোধী নেতা-নেত্রীদের পুতুল: স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার শাসনকালে বিরোধী দলের নেতাদের (যেমন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান) ব্যঙ্গাত্মক বা নিন্দামূলক পুতুলও দেখা গেছে। বিবিসি বাংলার ২০১৭ সালের ১৪ই এপ্রিল তারিখের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ঐ বছর খালেদা জিয়ার একটি ব্যঙ্গাত্মক পুতুল শোভাযাত্রায় দেখা যায়, যা বিরোধীদের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ হিসেবে চিত্রিত করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল। এটিকে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হেয় করার একটি কৌশল হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।
(ঘ) পুতুল নির্মাণের কারণ: এই পুতুলগুলো কেবল নিছক শিল্পকর্ম নয়, বরং এগুলো রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে, এই প্রতিকৃতিগুলো প্রায়শই তার ক্ষমতার ইতিবাচক দিক এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলো তুলে ধরে। অন্যদিকে, বিরোধী নেতাদের ক্ষেত্রে নির্মিত পুতুলগুলো প্রায়শই ব্যঙ্গাত্মক বা সমালোচনামূলকভাবে উপস্থাপন করা হয়, যার প্রধান উদ্দেশ্য থাকে তাদেরকে হেয় করা।
ডেইলি স্টার পত্রিকার ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ তারিখের এক মন্তব্যে বলা হয়েছে, “শোভাযাত্রা বর্তমানে সরকারের প্রচারণার একটি মাধ্যমে পরিণত হয়েছে, যেখানে জনগণের ইচ্ছার চেয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যগুলোই বেশি প্রাধান্য পায়।”
৪. বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সমালোচনা
শেখ হাসিনার শাসনকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা উঠে এসেছে। নিচে কালানুক্রমিকভাবে এবং উল্লিখিত সূত্রের ভিত্তিতে এগুলো উপস্থাপন করা হলো:
(ক) ২০১৭: ধর্মীয় বিরোধিতা ও ফতোয়া
২০১৭ সালে হেফাজত-ই-ইসলাম মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরোধিতা করে এটিকে ‘ধর্মবিরোধী’ আখ্যা দেয় এবং শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত মুখোশ ও প্রতিকৃতিকে ‘শিরক’ বলে সমালোচনা করে। তারা দাবি করে যে এটি একটি ‘কৃত্রিম ঐতিহ্য’ যা মুসলিম সংস্কৃতির পরিপন্থী। বিবিসি বাংলার ২০১৭ সালের ১৪ এপ্রিল তারিখের এক প্রতিবেদনে এই বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়। প্রথম আলো পত্রিকার একই তারিখের প্রতিবেদনে ধর্মীয় আপত্তি সত্ত্বেও মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকার এই বিরোধিতার প্রেক্ষাপটে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতি অনুসরণ করে, যার ফলে শোভাযাত্রার মূল উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু মহলে প্রশ্ন উঠতে দেখা যায়।
(খ) ২০২৩: আইনি নোটিশ ও সামাজিক বিভেদ
ডেইলি স্টার পত্রিকার ১৩ এপ্রিল, ২০২৩ তারিখের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি আইনি নোটিশের মাধ্যমে শোভাযাত্রা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছিল, যেখানে যুক্তি দেওয়া হয় যে এটি ‘মুসলিম সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে’ এবং একটি ‘কৃত্রিম সংস্কৃতি’। অন্যদিকে, নিউ এজ পত্রিকার ১৫ এপ্রিল, ২০২৩ তারিখের মন্তব্যে বলা হয়েছে যে, “শোভাযাত্রা বর্তমানে সামাজিক ঐক্যের পরিবর্তে বিভেদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।”
(গ) ২০২৪: শেখ হাসিনার পতন
শেখ হাসিনার পতনের পর, কালের কণ্ঠ লেখে, “শোভাযাত্রা আওয়ামী লীগের হাতে একটি পুতুল খেলায় পরিণত হয়েছিল, যেখানে জনগণের আনন্দের চেয়ে সরকারি প্রচার বেশি প্রাধান্য পেয়েছে।” জনকণ্ঠ যোগ করে, “পদ্মা সেতু ও শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি শোভাযাত্রাকে একটি ফাঁকা তামাশায় রূপান্তরিত করেছে।”
৫. ২০২৫: মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে আয়োজিত বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্যবাহী ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তন করে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ করার সিদ্ধান্ত সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। আয়োজকরা দাবি করছেন যে, এটি ১৯৮৯ সালে শোভাযাত্রার সূচনালগ্নের মূল নাম ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ -এর পুনরুদ্ধার, যা ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাংলাদেশের ২৮টি আদিবাসী ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৯০-এর দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ‘মঙ্গল’ শব্দটি যুক্ত করা হয়েছিল, যা বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে তেমন প্রাসঙ্গিক নয়। তবে সমালোচকরা এই যুক্তিকে ঐতিহাসিক সত্যের বিকৃতি হিসেবে গণ্য করছেন। তাদের মতে, ‘মঙ্গল’ শব্দটি কেবল অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীকই নয়, বরং ২০১৬ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা নাম পরিবর্তনের ফলে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
নতুন আয়োজনে ফিলিস্তিনের সাথে সংহতি জানিয়ে তরমুজের মোটিফ, কৃষকদের অধিকার রক্ষার প্রতীকী শিল্পকর্ম এবং বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন (বাম্বা)-এর অংশগ্রহণ-এর মতো নতুন উপাদান সংযোজিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও, ড্রোন শো ও বহু সংস্কৃতির সমন্বয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের একাংশ অভিযোগ করেছেন যে নাম পরিবর্তনসহ নকশা ও প্রতীক নির্ধারণে তাদের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ইসলামী রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো ‘মঙ্গল’ শব্দের ধর্মীয় সংবেদনশীলতা দূর করায় এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও, প্রগতিশীল মহল এটিকে সাম্প্রদায়িক চাপের কাছে নতি স্বীকার বলে মনে করছেন।
এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে দুটি বিপরীতমুখী ধারণা—একদিকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণ এবং অন্যদিকে সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা। আয়োজকরা মনে করেন যে, নতুন নামকরণ শোভাযাত্রাকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে সকলের অংশগ্রহণের জন্য আরও উন্মুক্ত করবে। তবে এর সমাধানের সূত্র হতে পারে একটি সম্মিলিত আলোচনা, যেখানে শিল্পী, ইতিহাসবিদ, ভাষাবিদ এবং সাধারণ মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
একমাত্র এই পথেই এই পরিবর্তন কেবল একটি নামের পরিবর্তন না হয়ে, বরং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সাংস্কৃতিক অগ্রযাত্রার সূচনা করতে সক্ষম হবে।
৬. বাঙালী সংস্কৃতির প্রতীকতত্ত্ব: সবই কি কাকতালীয়!
বাঙালি সংস্কৃতির শোভাযাত্রা, উৎসব ও শিল্পকলায় ব্যবহৃত প্রতীকগুলোর মৌলিক সন্ধান করলে একটি স্পষ্ট প্যাটার্ন উদ্ভাসিত হয়: এগুলোর প্রায় সবকটিই হিন্দু পুরাণ, ভারতীয় জাতীয় প্রতীক, বা ধর্মীয় আচারের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। পদ্মফুল থেকে ত্রিশূল, ময়ূর থেকে শাঁখ—প্রতিটিরই একটি ‘ভারতীয়’ ও ‘হিন্দুত্ববাদী’ রূপ বিদ্যমান, যা বাঙালি সংস্কৃতির স্বতন্ত্র পরিচয়কে প্রশ্নের মুখে ফেলে।
পদ্মফুলের কথাই ধরা যাক। বাংলার জলাশয়ের এই ফুলকে স্থানীয় সংস্কৃতি প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতীক মনে করলেও, এর প্রতীকী মাত্রা হিন্দু ধর্মের বাইরে যেতে পারে না। পদ্মফুল ভারতের জাতীয় ফুল, যা সরাসরি লক্ষ্মী ও বিষ্ণুর সঙ্গে যুক্ত। শোভাযাত্রায় পদ্মের ব্যবহারকে ‘বিশুদ্ধতা’ বা ‘শান্তি’র প্রতীক বলা হলেও, হিন্দু মন্দিরে এর ব্যবহার প্রমাণ করে এটি মূলত ধর্মীয় অর্থেই প্রোথিত।
একইভাবে, শাঁখ হিন্দুদের পূজার অপরিহার্য অঙ্গ; বিষ্ণুর পাঞ্চজন্য শাঁখ ধর্মীয় আচারে ব্যবহৃত হয়। বাঙালি উৎসবে শাঁখ বাজানোর রীতি প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মেরই সম্প্রসারণ। ময়ূর (ভারতীয় জাতীয় পাখি) ও বাঘ (ভারতীয় ও বাংলাদেশী জাতীয় পশু) এর ক্ষেত্রে এই দ্বৈততা আরও স্পষ্ট। ময়ূরের সৌন্দর্য বাঙালি সংস্কৃতিতে আনন্দের প্রতীক হলেও, এর রাজকীয়তা ও ধর্মীয় তাৎপর্য (কৃষ্ণের মুকুট, কার্তিকেয়ের বাহন) হিন্দু পুরাণ থেকে আসে।
অন্যদিকে, রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলার স্থানীয় প্রতীক হিসেবে পরিচিতি পেলেও, জাতীয় পশু হিসেবে এর মর্যাদা এবং দুর্গার বাহন হিসেবে এর ধর্মীয় ভূমিকাই প্রধান। এখানে স্থানীয়তা জাতীয়তার কাছে পরাজিত।
মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো আয়োজনে হিন্দু প্রতীকগুলোর ব্যবহারকে প্রায়ই ‘সাংস্কৃতিক’ বা ‘সার্বজনীন’ বলে ব্যাখ্যা করা হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো: একটি ধর্মীয় প্রতীককে ধর্মনিরপেক্ষ প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা কি আদৌ সম্ভব? উদাহরণস্বরূপ, ত্রিশূল শিবের অস্ত্র হিসেবে হিন্দু ধর্মে সৃষ্টি-স্থিতি-ধ্বংসের প্রতীক। একে ‘সুরক্ষার প্রতীক’ বলে চালিয়ে দেওয়া হলো—কিন্তু এর পৌরাণিক ও ধর্মীয় ইতিহাস কি মুছে ফেলা যায়?
একইভাবে, স্বস্তিকা হিন্দু ধর্মে সৌভাগ্যের চিহ্ন, কিন্তু বৌদ্ধ বা জৈন সংস্কৃতিতে এর ভিন্ন অর্থ রয়েছে। অথচ বাঙালি সংস্কৃতিতে এটি প্রায় একচেটিয়াভাবে হিন্দু ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বাঙালি সংস্কৃতির প্রতীকগুলোতে হিন্দু পুরাণের আধিপত্য ভারতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি যে ‘সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতি’ এর ন্যারেটিভ তৈরি করে, বাঙালি শিল্প-সংস্কৃতিও তারই পুনরুৎপাদন করে চলেছে। উদাহরণস্বরূপ, কলস বা মাটির প্রদীপের ব্যবহারকে বাংলার লোকাচার বলা হলেও, এগুলো হিন্দু পূজার অনুষঙ্গ ছাড়া অর্থহীন।
প্রতীকগুলোর বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাঙালি সংস্কৃতির স্বতন্ত্রতা বলতে যা দাবি করা হয়, তা প্রকৃতপক্ষে হিন্দু-ভারতীয় সংস্কৃতির অধীনস্থতা। বাংলার লোককথা, নদী, বা প্রকৃতিকে উপস্থাপন করতে গিয়েও হিন্দু দেবদেবী ও পুরাণের ছায়া অতিক্রম করা যায় না। শিল্পীরা হয়ত শিল্পের স্বাধীনতা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন, কিন্তু প্রতীকতত্ত্বের গভীরে যে ধর্মীয় ও জাতীয়তাবাদী ফ্রেমওয়ার্ক কাজ করে, তা অপরিবর্তিত থাকে।
বাঙালি সংস্কৃতির প্রতীকজগতে ইসলাম, বৌদ্ধ, বা আদিবাসী প্রভাব প্রায় অনুপস্থিত। উদাহরণস্বরূপ, বাংলার সুফি সংস্কৃতি বা বাউল দর্শনের প্রতীক (যেমন একতারা, খাকি পোশাক) শোভাযাত্রায় উপেক্ষিত। অথচ হিন্দু প্রতীকগুলোর আধিক্য সংস্কৃতিকে একমাত্রিক করে তোলে। এই অসাম্য প্রমাণ করে, বাঙালি সংস্কৃতির বহুত্ববাদী দাবি প্রকৃতপক্ষে হিন্দু আধিপত্যের মুখোশ।
বাঙালি সংস্কৃতির প্রতীকতত্ত্ব হিন্দু পুরাণ ও ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সঙ্গে এমনভাবে জড়িয়ে আছে যে, স্থানীয় বা ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাখ্যা প্রায় অসম্ভব। শোভাযাত্রার শিল্পমাধ্যম হয়ত এই প্রতীকগুলোর ধর্মীয় তাৎপর্য লুকানোর চেষ্টা করে, কিন্তু সাংস্কৃতিক ইতিহাসের ওজন তা মানতে চায় না। এই অবস্থার মূলে রয়েছে ঔপনিবেশিক ও উত্তর-ঔপনিবেশিক যুগের সাংস্কৃতিক হেজেমনির প্রভাব, যেখানে বাংলাকে ‘ভারতীয় সংস্কৃতি’র অংশ করতে গিয়ে হিন্দু প্রতীকের মোহর লাগানো হয়েছে।
যদি বাঙালি সংস্কৃতিকে সত্যিকার বহুত্ববাদী ও স্বাধীন পরিচয় দাবি করতে হয়, তবে ধর্মীয় প্রতীকের একচেটিয়া আধিপত্য ভেঙে স্থানীয়, অসাম্প্রদায়িক ও বহুধর্মীয় প্রতীকের সমন্বয় জরুরি। নতুবা, এটি হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির সাংস্কৃতিক হাতিয়ার হিসেবেই থেকে যাবে।
৭. একটি হারানো স্বপ্নের ধ্বংসাবশেষ ও পুনর্জাগরণ
এখন প্রশ্ন আসে, যদি এটি মূলত এরশাদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল, তাহলে কেন এটি পলাতক স্বৈরশাসক হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে? এর উত্তর এই শোভাযাত্রার প্রতীকী তাৎপর্য এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিহিত। মঙ্গল শোভাযাত্রা শুধু একটি সাংস্কৃতিক আয়োজন নয়, এটি ঐতিহাসিক একটি প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবেও কাজ করেছে। এরশাদের সময় এটি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যের প্রতীক ছিল।
একইভাবে, ২০২৫ সালে এসে, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার শাসনামলের সমালোচকরা তাকে স্বৈরশাসক হিসেবে দেখছেন, বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলন দমনের ঘটনা এবং তার পরবর্তী সময়ে দেশ ত্যাগের পর।
স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই শোভাযাত্রার ব্যবহারকে জরুরি মনে করার পেছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, তার শাসনকালে বিরোধীদের দমন, নির্বাচনী অনিয়ম এবং সাম্প্রতিক গণআন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে শত শত মানুষের মৃত্যু। দ্বিতীয়ত, তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরও তার দলটি বাংলাদেশে সক্রিয় এবং বিচারের দাবি জোরালো হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে, মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো একটি জনপ্রিয় ও প্রতীকী আয়োজনকে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে ফ্যাসিবাদ ও অগণতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে।
উদাহরণস্বরূপ, ২০২৫ সালের পহেলা বৈশাখে তার মুখাবয়বকে ফ্যাসিবাদের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করার পরিকল্পনা এই ধারণাকে আরও জোরদার করে।
এসব জরুরী বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল চেতনা—স্বৈরাচারের বিরোধিতা এবং জনগণের ঐক্য—শেখ হাসিনার শাসনের সমালোচকদের বর্তমান আখ্যানের সাথে মিলে যায়। এটি কেবল ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা নয়, বরং একটি নতুন প্রজন্মের জন্য সাম্প্রতিক ইতিহাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে পুনর্ব্যবহৃত হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর, সমকাল, প্রথম আলো, দৈনিক ইত্তেফাক, মানবজমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন, বিবিসি বাংলা, কালের কণ্ঠ, জনকণ্ঠ, Daily Star, New Age, Jamuna TV, NTV
১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:৪০
মি. বিকেল বলেছেন: আপনার মন্তব্যের সাথে একমত হয়ে বলতে হয়, মঙ্গল শোভাযাত্রার অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আজ রাজনীতিবিদদের সংকীর্ণ স্বার্থে কলুষিত। শাসকগোষ্ঠী একে "উন্নয়ন" বা "জাতীয়তাবাদ"-এর প্রোপাগান্ডায় পরিণত করেছে, অন্যদিকে বিরোধীরা ধর্মীয় সংবেদনশীলতা তুলে এর বহুত্ববাদী চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এই অবস্থায় শোভাযাত্রাকে পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব শিল্পী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবমুক্ত করে এর মূল উদ্দেশ্য—স্বৈরাচারবিরোধী প্রতিবাদ ও সামাজিক ঐক্য—জাগ্রত করতে হবে। শুধু ঐতিহ্যের নামে রাজনীতির বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেললেই মঙ্গল শোভাযাত্রা আবারও বাঙালির "আনন্দ" ও "মঙ্গল"-এর প্রতীক হয়ে উঠবে।
২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৭:৫০
মুনতাসির বলেছেন: কি দারুন লেখা। রেখে দেবার মতন।
১৮ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:৪১
মি. বিকেল বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৩:৪২
কামাল১৮ বলেছেন: রাজনীতিবিদরা এর মৌলিক চরিত্র নষ্ট করে ফেলেছে।এই শয়তানদের হাত থেকে একে রক্ষা করা দরকার।