![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ না বলেও অনেক কিছু বলে দেয়। ইশারায়, ইঙ্গিতে, আচরণে, উপহারে, পোশাকের ধরণে মিলে যেতে পারে অনেক গোপন অভিব্যক্তি। আমরা সবসময় নিজেকে প্রকাশ করে থাকি। কখনো কখনো সেই প্রকাশ ঘটে থাকে একদম নিঃশব্দে, আমাদের নিজেদেরও অজান্তে!
প্রথম পরিস্থিতি: আপনার পছন্দের মেয়ে কি আপনার সাথে একই রিক্সায় কখনো উঠেছে? যদি উঠে থাকে তবে নিশ্চয় সেটা প্রেমের লক্ষণ নয়। আমরা স্বাভাবিকভাবেই কখনো কখনো রিক্সা শেয়ার করে থাকি। ক্যাম্পাসে হোক, কাজের সূত্রে হোক। কিন্তু এমন ঘটনা যদি বারবার ঘটে তাহলে নিশ্চয় একটু সময় নিয়ে পুরো বিষয়টি চিন্তা করা উচিত।
সাধারণত মেয়েরা রিক্সার বামদিকে বসে। কারণ হলো, বামদিকে তূলনামূলক জায়গা বেশি থাকে। তূলনামূলক রিক্সা থামলে বামদিক থেকে নামতেও সুবিধা হয়। কিন্তু সে কি আপনাকে বারবার অনুরোধ করেই বামদিকে বসে? যদি তাই হয়, তাহলে ক্ষেত্র বিশেষে উত্তর আলাদা-আলাদা হবে।
আপনাদের কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিভাগ একই বা কর্মস্থল একই জায়গায়, এবং নির্দিষ্ট জায়গা থেকে রিক্সা না পাওয়ার কারণে রিক্সা শেয়ার করতে হয়। তাহলে বেশি চিন্তা করা যাবে না। কিন্তু যদি এই একই বিষয় মেয়েটির নির্বাচিত চয়েজ বলে মনে হয়, সম্মতি বলে মনে হয় তাহলে পুরো চিত্র-ই পাল্টে যায়।
কারণ হলো, বামদিকে বসা শুধুমাত্র কমফোর্ট বোধ করার জন্য নয়, বামদিকে বসলে আপনারা মুখোমুখি হয়ে কথা বলতে পারবেন। আপনার বামপাশে বসা মানে আপনাদের মধ্যে শারীরিক দুরত্ব কমে আসে এবং রোমান্টিক বা বন্ধুত্বের সম্পর্কের সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আর যেহেতু সে অনুরোধ করেই বামদিকে বসার সম্মতি নিচ্ছে সেহেতু এটা এক ধরণের কনশাস চয়েজ, শুধুমাত্র কমফোর্ট নয়।
দ্বিতীয় পরিস্থিতি: শহরের রাস্তা। ঘড়ির কাঁটায় সন্ধ্যা ৬টা। রিমঝিম বৃষ্টিতে আপনার হাতে একটি ছাতা। যেহেতু এই বৃষ্টিতে ভিজলে আপনার পছন্দের মেয়েটির গায়ে জ্বরও আসতে পারে সেহেতু ছাতা মেলে ধরলেন। বৃষ্টির কারণে চারপাশে বিদ্যুৎ নাই। শহরের ব্যস্ততা অনেকখানি কম। কিন্তু আপনারা গল্প করছেন। একসময় আপনি খেয়াল করলেন, ছাতা থাকা সত্ত্বেও আপনি তাকে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে পারছেন না। কিন্তু এটা নিয়ে মেয়েটি মোটেই সচেতন নয়। সে বরং বেশি সচেতন আপনার গল্প শোনার জন্য বা আপনার সাথে কথা বলার জন্য। এছাড়াও ছাতার মধ্যে থাকার কারণে আপনাদের মধ্যে দুরত্ব কমে এসেছে। সর্বোচ্চ ২-৩ ইঞ্চি। মেয়েটি বৃষ্টিতে ভিজে চুল আঁচড়াচ্ছে এবং আপনার দিকে সময় সময় তাকিয়ে হাসছে।
যদি হুবহু আপনাদের গল্প এরকম হয় তাহলে মেয়েটির ঐ আচরণ কে তীব্র রোমান্টিক সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু সেটিংস সবসময় শহর বা শহরের ফুটপাত হয় না। একই দৃশ্য একইরকম ভাবে সবসময় ঘটেও না। সুতরাং এর কাছাকাছি হলেও সেটাকে রোমান্টিক বা বন্ধুত্বের সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন।
কিন্তু যদি মনে হয়, মেয়েটি আন-কমফোর্টেবল বোধ করছে তাহলেও একটা সিগন্যাল পাওয়া যায়; তবে সেটা ‘রেড সিগন্যাল’। ভালো হয়, শেষের দিকে হলেও আপনি একবার তাকে বলুন, “ইশ্! আমরা তো ভিজে গেলাম। ছাতাটা কোনো কাজেই আসলো না!” মুচকি হাসি হাসলে উত্তর পেয়েই গেলেন।
বিশেষ কনফার্মেশন পয়েন্ট টেবিল: ১০ নম্বর
১. ছাতা থাকা সত্ত্বেও সচেতন না হওয়া = রিস্ক-টেকিং ক্লোজনেস = ২ নম্বর
২. ২–৩ ইঞ্চি দূরত্ব বজায় রাখা = ইনটিমেট জোনে ঢুকে পড়া = ২ নম্বর
৩. বারবার চোখে চোখ + হাসি = স্ট্রং ইন্টারেস্ট কিউ = ২ নম্বর
৪. চুল আঁচড়ানো (গ্রুমিং) = সাবটল সেল্ফ-প্রেজেন্টেশন = ২ নম্বর
৫. বৃষ্টি-ভিজা ভালনারেবিলিটি = ট্রাস্ট-বিল্ডিং ডিসপ্লে = ১ নম্বর
৬. আপনার কথা শুনে মুচকি হাসি = পজিটিভ রিসিপ্রোসিটি = ১ নম্বর
মাইনাস মার্ক পেলে মন খারাপ করবেন না। তবে ১০ এ ১০ পেলে তীব্র রোমান্টিক সিগন্যাল হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।
তৃতীয় পরিস্থিতি: উপহার দেওয়া-নেওয়া। দেখুন, উপহার দেবার বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করে কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের উপর। সুতরাং এখানে সিগন্যাল দেবার বিষয়টি কনটেক্সট ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
ধরে নিচ্ছি, আপনার পছন্দের মেয়ে আপনাকে একটি রিং দিলো। যেখানে আপনি আপনার বাইক থেকে ঘরের চাবি আটকিয়ে রাখতে পারবেন। এখন ঐ রিং-এ নির্দিষ্ট টোকেন থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ: ‘Love’ লেখা বা হার্টের ছবি বা প্রতীক যা রোমান্টিক ধারণা দেয়।
এখানে দুটো বিষয় স্পষ্ট হয়,
১. ঘরের চাবি কে প্রতীকী অর্থে ঐ রিংয়ের মধ্যে আটকানো মানে হচ্ছে ঘরের দায়িত্ব নেওয়ার মত। এখানে নিরপত্তা ও বিশ্বাস বুঝায়। ঠিক যেমন করে চাবি আপনার ঘর কে সুরক্ষিত রাখে। ঠিক যেমন করে চাবি ছাড়া আপনার বাইক অচল। এভাবে টানলে প্রতীকী অর্থ অনেক দূর অবধি যায়।
২. হার্টের ছবি বা প্রতীক মানে হলো, ভালোবাসার সাথে বিশ্বাস ও নিরাপত্তা।
মুশকিল হলো, এত ভেবে কেউ অদৌ উপহার দেয় কিনা সেটা একান্তই নির্ভর করে আপনার পছন্দের মেয়েটার ব্যক্তিত্বের উপর। ওর মনে হইলো, ভালোই হবে। তাই কোনো দোকান থেকে তুলে এনে দিলো আপনাকে। আপনি দয়া করে তখন প্রতীকী অর্থ খুঁজবেন না। জীবন তামা তামা হয়ে যাবে।
আর যদি চিন্তাশীল মেয়ে হয়! এবং ইতিমধ্যেই আপনাকে জানে ও বুঝে তাহলে কিন্তু অনেক বড় একটি রোমান্টিক সিগন্যাল!
চতুর্থ পরিস্থিতি: আপনার সাথে দেখা হবার সময় নির্দিষ্ট ধরণের পোশাক পরিধান অন্যতম একটি লক্ষণ হতে পারে। প্রথমত, আপনি আপনার পছন্দের মেয়েকে দুপুরে এক রেস্টুরেন্টে একসাথে খাবার অনুরোধ করলেন। এখন যদি সে উপস্থিত হয় তারমানে এই নয় যে, সে রোমান্টিক ধারণা নিয়ে আপনার সাথে দুপুরের খাবার খেতে বসেছে। প্রেক্ষাপট এখানেও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
সে যদি নিয়মিত যে পোশাক পরে এবং আপনার সাথে দেখা হবার পরও আপনি ঐ একই ধরণের পোশাক লক্ষ্য করেন তাহলে হতে পারে বন্ধুসুলভ কোনো বিষয় বা আপনার নিমন্ত্রণ কে ছোট করতে চায় নাই। তবুও, সাধারণত এই ধরণের ব্যাপার-স্যাপার কে মোটামুটি একটি ‘ডেট’ হিসেবেই ধরা হয়। মেয়েরা সচরাচর একেবারে সাজগোছ ছাড়া কারো সাথে দেখা করে না বলেই আমার ধারণা।
ধরে নিচ্ছি, সে সাধারণত ঢিলেঢালা পোশাক পরে কিন্তু আপনার সাথে দেখা করার সময় টাইট-ফিটেড পোশাক পরে এসেছে। সাথে অতিরিক্ত এক্সেসরিজ যেমন, হার, চেন, ব্রেসলেট ইত্যাদি পরে এসেছে। কড়া পারফিউম পর্যন্ত গায়ে মাখা। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সে যদি আপনাকে প্রশ্ন করে কমপ্লিমেন্ট নিতে চায়। যেমন: “আচ্ছা, আমাকে কেমন লাগছে?” এই ধরণের প্রশ্ন সরাসরি একটি ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেয়।
তাছাড়া শাড়ি-চুড়ি পরে একেবারে পার্লার হয়ে এসেছে মনে হলে কিচ্ছা খতম। দুর্দান্ত এবং সরাসরি একটি রোমান্টিক সিগন্যাল। কিন্তু ব্যস্ততার মধ্যেও একটু গুছিয়ে আসা, মিষ্টি আলাপ চালিয়ে যাওয়া, একটু ব্যক্তিগত আলাপও প্রেক্ষাপট অনুযায়ী একটি রোমান্টিক সিগন্যাল দিতে পারে।
উপরোক্ত ৪টি পরিস্থিতি পুরোপুরি কাল্পনিক। এবং এসব সিগন্যাল ধরে সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়া বা কাউকে বিরুক্ত করা উচিত হবে না। কিন্তু আপনাদের গল্পটা এগুতে পারে। হয়তো আপনারা দুজনেই অনেক লজ্জা পাচ্ছেন বা একে অন্যকে নিজের কথা বলতে পারছেন না তখন এসব কাজে দেয়। ভালো হয় সরাসরি আপনি আপনার পছন্দের মানুষ কে নিজের মনের কথা বলুন। আজ এই পর্যন্ত-ই।
ছবি: VidIQ
১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১:১৮
মি. বিকেল বলেছেন: আপনার কথাটা যুক্তির ধার ধরে সত্য—প্রেম অনেক সময় “কাকতালীয়” বলেই মনে হয়। তবে এই যে কাকতাল, তাকে কি আমরা কখনো “সৌভাগ্য” বলি না? আর সৌভাগ্যও শুধু স্রষ্টার হাতে নয়, আমাদের প্রস্তুতির ওপরও অনেকখানি নির্ভর করে।
আপনি যদি একই রাস্তায় হাঁটতে থাকেন, একই বাসে উঠতে থাকেন, একই রেস্তোরাঁয় বসে কফি খেতে থাকেন তাহলে সেই কাকতালটা যে আরও একবার ঘটার সম্ভাবনা বাড়ে, সেটা কি অস্বীকার করা যায়? ব্লগে যে ইঙ্গিতগুলো বলা হয়েছে, সেগুলো কিন্তু “প্রেম নিশ্চিত” করার কৌশল নয়; বরং সেই সৌভাগ্যের দরজাটা একটু ফাঁক করে দেওয়ার চেষ্টা মাত্র।
আপনার মন্তব্যের ভেতরও একটা সূক্ষ্ম প্রেম আছে—যেটা বলছে, “আসল প্রেম যখন আসবে, সে নিজেই জানিয়ে দেবে।” কিন্তু তত দিন পর্যন্ত আমরা যেন নিজেদের চোখ-মন খোলা রাখি, যাতে সেই কাকতালীয় ঘটনা যখন ঘটে, তখন আমরা তাকে “অনাকাঙ্ক্ষিত” না ভেবে বসি।
ধন্যবাদ আপনার নিঃসঙ্গ সত্যের জন্য।
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৪২
কিরকুট বলেছেন: পছন্দের মেয়ে অতি দ্রুত টের পেয়ে যায় অপর পক্ষের দুর্বলতা আর সেই কারনে সে আর তার প্রতি অতটা আগ্রহ পায় না ।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১:২০
মি. বিকেল বলেছেন: আপনার কথাটা হাস্যকর সত্য—অনেক সময় আমরা নিজের দুর্বলতা এত তাড়াতাড়ি উন্মুক্ত করে ফেলি যে, উল্টো পক্ষের কৌতূহলটাই মরে যায়। মনোবিজ্ঞানে একে বলে “scarcity effect”: যেটা সহজে পাওয়া যায়, সেটার মূল্য চোখের পলকে কমে যায়।
কিন্তু এর সমাধানও আছে। দুর্বলতা লুকোনো নয়, বরং তাকে ধীরে ধীরে, ধাপে ধাপে প্রকাশ করা। একই সঙ্গে নিজের জীবনে অন্য আগ্রহ, অন্য স্বপ্ন—এমন কিছু রাখুন যাতে আপনার “পুরো ক্যানভাস” কেউ একবারে দেখতে না পায়। মানুষকে কৌতূহলী রাখতে হলে একটু “খোলা দরজা, কিন্তু আলো নিভানো ঘর” রাখতে হয়।
শেষ কথা: পছন্দের মানুষের সামনে একেবারে “অন্ধকার” বা “পুরো আলো” দুটোই বিপজ্জনক। একটু আধো আলো, একটু রহস্য—এটাই দীর্ঘমেয়াদি টান তৈরি করে।
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: আমি চাইলে পছন্দের মেয়েটি অবশ্যই প্রেমে পড়বে।
১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১:২২
মি. বিকেল বলেছেন: আপনার এই আত্মবিশ্বাসটাই হচ্ছে প্রথম পূর্বশর্ত। তবে “চাইলেই হবে” কথাটা যখন বলেন, তখন দু’টি জিনিসের দিকে একবার চোখ রাখা ভালো:
১) আপনার ‘চাওয়া’ যেন একতরফা প্রজেক্ট না হয়ে যায়।
২) মেয়েটির নিজস্ব ইচ্ছা-অনিচ্ছা, সময়, প্রেক্ষাপট—এগুলোকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে।
অর্থাৎ, আপনি আপনার সেরাটা দেবেন—কথা, আচরণ, ধৈর্য, সহমর্মিতা—কিন্তু শেষ সিদ্ধান্তটি যে তাঁর হাতে, সেটা মেনে নেওয়াও আত্মবিশ্বাসেরই অংশ। তখন “অবশ্যই” শব্দটি হার মানবে না; বরং তার অর্থ হবে, “আমি এতটাই উন্নত সংস্করণে নিজেকে তুলে ধরতে পারব, যে সে যদি প্রেমেই পড়তে চায়, সেটা আমার দিকে হবে।”
সুতরাং, হ্যাঁ—আপনি চাইলে সম্ভাবনাটা অনেক বাড়িয়ে দিতে পারেন; কিন্তু শেষ কুঁড়িটি নিশ্চয়ই দু’জনের সম্মিলিত সুরেই বাজবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৩৪
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: পছন্দের মেয়ে কদাচিৎ আপনার প্রেমে পড়বে; যেটা প্রেমে পড়বে সেটা কাকতালীয়