নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার গর্ব, বাংলাদেশ আমার অহংকার

মিঃ সালাউদদীন

আমি জন্ম সূত্রে বাংগালী, বাংলা আমার মায়ের ভাষা, যে ভাষাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিতে পাকিস্তানী বর্বর সেনাদের হাতে শাহাদাত বরণ করেছেন সালাম রফিক বরকত জব্বার সহ হাজার হাজার ভাষা প্রিয় বাংগালী । আমি বাংগালী, বাংলা আমার জন্মভূমি বাংলাদেশ, যে দেশকে স্বাধীন করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানী বর্বর সেনাদের হাতে শাহাদাত বরণ করেছেন আরো ত্রিশ লক্ষ স্বাধীনচেতা বাংগালী পুরুষ এবং নারী, বীরাঙ্গনা হয়েছেন আরো হাজার হাজার মা বোন । বাংলাদেশ আমার গর্ব, বাংলাদেশ আমার অহংকার ।

মিঃ সালাউদদীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজও মনে পড়ে সেই স্মৃতি

০৯ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:২৭




ছোট বেলায় আমার বেশ মাছ ধরার সখ ছিলো, সখটা হয়তো আমার বাবার কাছ থেকেই পেয়েছি, কেননা আমার বাবাও বেশ মাছ ধরতেন, মাছ ধরতেন আমার বড় দুই ভাই-ও, সুতরাং বলা যায়, মাছ ধরাটা ছিলো আমাদের পারিবারিক সখ । "মা, প্রায়-ই বলতেন - তোর বড় দুই ভাই গোসল করতে গিয়েছে-তো ফিরতো হাতে মাছ নিয়ে, ওদের পায়ের নিচে নাকি মাছ পড়েছে, মাঝেমধ্যে বিরক্ত হয়ে পড়তাম, গোসল করে সেরে উঠেছি, ওর মধ্যে মাছ কাটা, সেই সময় অসহ্য লাগতো মাছ কাটতে" । কাজের লোকদের দিয়ে মাছ কাটা মা কোনদিন পছন্দ করতেন-না । এখন আমার পালা, পাড়ার আর সবার সাথে ছুটির দিন গুলোতে এখন আমি একাই মাছ ধরতে বেড় হয় পড়ি, এক সময় পানিতে নামতে ভয় পেতাম, এখন আর তা পাই না, মেজ্ঞাইবার সিরিজ দেখে মনে বেশ সাহস জন্মেছে, যদিও মেজ্ঞাইবারের চাকু আমার সাথে থাকেনা বা নাই, কেননা এখন আমি নিজেই গেয়ো মেজ্ঞাইবার । আমাদের গ্রামটি সমুদ্র সৈকতের পাশে নয়, অথবা পদ্মা নদীর তীরে, তাতে কি হয়েছে, মাছের যে কোন অভাব ( ত্রিশ বছর আগের কথা ) নাই ।
উইকেন্ডের এক বিকালে বাবা এসে বললেন;- "কাল সকালে আমরা মাছ ধরতে যাবো", বাবার এক কলিগ, তাদের এক ডোবায় মাছ ধরার আহ্বান করেছে, তাই আমরা কাল সকালে মাছ ধরতে যাবো ।
খুব ভোরে রওনা দিতে হবে, বেশ দূরের রাস্তা ? ( আমি কোথাও লেখেছি - আমি শহড় তলির ছেলে, গ্রামের একদিকে শহড়, আর একদিকে গ্রাম ) বাবার কলিগের বাড়ি সেই গ্রামের দিকে, সে দিকে যানবাহন তো দূরের কথা রিক্সা বা গরুর গাড়ি-ও চলে-না ( কৃষিজাত দ্রব্য ও ফসল বহনের কাজে গরুর গাড়ির প্রচলন যথেষ্ট ব্যাপকতা থাকলেও, কখনও কখনও যাত্রীও বহন করে এই গরুর গাড়ি ) পায়ে হেটে প্রায় দুই ঘন্টার রাস্তা, হোক দুই ঘন্টার রাস্তা, মাছ ধরা দিয়ে কথা ।
আমরা পৌছার পর বাবার কলিগ এসে আমাদের ডোবা দেখিয়ে দিয়ে গেলেন, সেখানে আর কেউ নাই, শুধু আমরা দুজন, বাপ-বেটা । ভাবলাম, আমরা হয়তো একটু আগেই চলে এসেছি, তাই আমরা দুজন ছাড়া আর কেউ নাই, বেশ সময় পাড় হয়ে গেলো, কিন্তু আর কারোর কোনো চিহ্নই দেখতে পেলাম না । নিদৃষ্ট একটা সময় পাড় হওয়ার পর বুঝতে পারলাম, আর কেউ আসবে-না, আমরা দুজন-ই আজকের জেলে । ডোবা ভরা কস্তুরী, তা পরিস্কার করতে করতেই দুপুর হয়ে গেল, এবার খাবারের ডাকাকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম, কারন কস্তুরী পরিস্কার করতে করতে বেশ খুদা লেগেছে, লেগেছে পানির পিপাশা এবং দুপুরের সময়-ও হয়ে এসেছে । কস্তুরী পরিস্কার করে বুঝতে পারলাম যেহেতু ডোবা তাই রুই কাতলা কিছু পাবোনা, তবে, শোল, শোল টাকি আর কৈ শিং তো পাবোই- পাবো ।
বাবা প্রথম জাল ফেললেন, যেহেতু আমরা-ই একমাত্র জেলে তাই আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম শোল, শোল টাকি আর কৈ শিং মাছে জাল ভরে উঠবে ? পানি থেকে বাবা জাল তুলছেন, আর আমি যে সব মাছের জন্য জালের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার কোনটি-ই জালে দেখা গেলনা, উঠে আসলো আবর্জনা ভর্তি কতগুলো পচা কাদামাটি, তা ঘেটে পাওয়া গেলো ছোট্ট একটা পুটি মাছ, তা দেখে খুদার যন্ত্রনা আরো বেড়ে গেলো । বার বার জাল ফেলছি মাছের সন্ধান নাই, ধর্যের সীমা অতিক্রম হয়েছে সেই অনেক খন আগে, মাছ না পেয়ে মেজাজ খারাপ হচ্ছে আমার, মেজাজ খারাপ হচ্ছে বাবার, কিন্তু কেউই কারোর কাছে প্রকাশ করছি না । আমাদের কাছে মৃগনাভি নাই, যার তার গন্ধে মাছেরা ছুটে আসবে, যেমন করে বারবার ছুটে আসতো রাজ-রাজারা অন্দরমহলে খাস রানির কাছে । বাবার কলিগ যে এসে আমাদের একবার ডোবা দেখিয়ে দিয়ে গেলেন, গেলেন তো গেলেন-ই, এ পর্যন্ত আর কোন খোজ খবর নাই, একটা বাচ্চা পর্যন্ত পাওয়া গেলোনা যে এক গ্লাস পানি চেয়ে পাঠাবো ।
বিকাল চারটা গড়িয়ে গেল, না আসলো খাবারের আহ্বান ? খুদার চেয়ে বেশী যন্ত্রনা ভোগ করলাম পানির পিপাশায় । বাবা আমাকে কিছু টাকা দিয়ে পাঠালেন পানি বা জাতীয় কিছু খাবার কিনে আনার জন্য, আমি রওনা দিলাম ঠিক, কিন্তু রাস্তায় হাঠতে বেশ লজ্জা বোধ করছিলাম কারন, সারা শরীরে কাদা লেগে আছে, অপর দিকে অপরিচিত জায়গা । এমন গেয়োগ্রামে এসেছি যে কেনার মত ধারে কাছে কোন কিছুই পেলাম না । খাবার জাতীয় কিছু না পাওয়ার ব্যার্থতা বেশি কৌতহল বাবা না-জানি কতো-কতো মাছ পেয়েছেন ?
আমার কৌতহল ব্যার্থতায় পরিণত হলো, ফিরে এসে দেখলাম মাছের কোন-ই লক্ষন না থাকায় বাবা জাল গুটিয়ে বসে আছেন আমার ফিরে আসার অপেক্ষা, আমি ফিরলে বাড়িতে রওনা দিবেন ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.