নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুবই সাধারণ মানুষ! লিখতে ভালোবাসি তাই লেখার সাথে একটু সহবাস!

Arfin Sani

লেখার সাথে একটু পরিচয় আছে। আর সেই পরিচয় থেকেই লেখার প্রতি ভালোলাগা অতঃপর ভালোবাসা! তাই কলম হাতে নিয়ছি!

Arfin Sani › বিস্তারিত পোস্টঃ

"একটি ডিভোর্সের গল্প"-১

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:০৬

-তুমি ভালো থেকো! শান্ত কন্ঠে বললো জসিম!
-আমাকে নিয়ে এতো ভেবো না! আমি ভালো থাকবো। বললো রূপা!
-আচ্ছা, তাহলে আমি চলে যাচ্ছি! আল্লাহ হাফিজ! বলেই চেয়ার ছেড়ে উঠে গেলো জসিম!
.
চার বছর প্রেম করার পর বিয়ে করেছিলো জসিম! কিন্তু, বিবাহিত জীবনের ১টি বছর অতিবাহিত না হতেই রূপা তাকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠিয়ে দিলো!ডিভোর্সের কিছু কাগজপত্র বাকি ছিলো। আর সেগুলো দিতেই আজ তিনি স্ত্রীর কাছে এসেছিলেন!
.
একবছর আগে জসিমের বাবা-মা একটি সড়ক দুর্ঘটায় মারা যান! জসিম বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। দঃখের ভারে একটু বেশিই ঝুকে পরেছিলো সে!
বাবার রেখে যাওয়া দু'টি গার্মেন্টস আর একটি জুট মিল, ঢাকার কলাবাগানে নিজস্ব দু'টো এবং পান্থপথে একটি বাড়ি তার জীবন চলার জন্য যথেষ্ট!
রূপাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে রূপার বাবা মা মেনে নেয় নি! তবুও একদিন জসিম অফিস শেষে বাসায় ফিরে দেখে রূপা এসে উপস্থিত! কাউকে কিছু না জানিয়ে একেবারে চলে এসেছে! জসিম চুপচাপ! রাতে খাবার টেবিলে জসিম বলেছিলো, 'বাবা মাকে না জানিয়ে এভাবে আসা কি ঠিক হবে? '
তখন রূপা বলেছিলো, ' আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি আর তোমাকেই বিয়ে করতে চাই! অন্য কাউকে আমি আমার স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবো না!' তারপর জসিম আর কিছুই বললো না! এবং এভাবেই চুপচাপ রাত কেটে গেলো!
পরদিন সকালে রূপা বললো, 'চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি'!
- সত্যি বলছো?!
- হ্যাঁ! আমি আর বাসায় ফিরে যাবো না!
-তাহলে, কবে আমরা বিয়ে করবো!?
-ওমা! আজই, এক্ষুনি! তুমি তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও আমি অপেক্ষা করছি!
-আচ্ছা ঠিক আছে!
.
রূপার কথামত সেদিনিই কলাবাগান কাজী অফিসে তাদের বিয়ে হয়েছিলো! এবং সংসার চলছিলো ঠিকঠাক মতই!
জসিম খুব শান্ত মেজাজের! কখনো উচ্চস্বরে কথা বলে না, রূপা যখন খুব চেঁচামেচি করে তখন চুপ করে থাকে!
কিন্তু, শেষ কিছুদিন রূপা পরিবর্তন হতে থাকে! তার ব্যাবহার আচরণ দিনদিন কেমন অসহনীয় হয়ে ওঠে! আস্তে আস্তে তার মেজাজ অভাবনীয় হয়ে যায়! জসিমের উপর সবসময় সে চড়া মেজাজে থাকে! এর সব কিছুই জসিম মুখ বুজে সহ্য করে নেয়! কখনোই তাকে একটিও কথা বলে না!
একদিন রাতে জসিমের ফোন এলো, তাদের জুটমিলে আগুন লেগেছে! সে তখনই বাসা থেকে বেড়িয়ে যায় সেখানের উদ্দেশ্যে!
জসিমের হাতে একটি বার্থডে-কেক! আজ রূপার জন্মদিন! কাল জুটমিলে আগুন লাগার কারনে সবকিছু গুছিয়ে বাসায় আসতে তার সন্ধ্যা হয়ে গেলো!
অনেকক্ষণ ধরে কলিংবেল বাজিয়েই যাচ্ছে জসিম! কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়া নেই! তখন মনে পরলো তার মানিব্যাগে থাকা বাড়তি চাবির কথা! সে চাবিটি বের করে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো!
কিন্তু, বাসার জিনিসপত্র সব এলোমেলো! টিভি ভেঙে পরে আছে ফ্লোরে, এবং বিভিন্ন কাচের জিনিস ভেঙ্গে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে! রূপাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না! অতঃপর রূপাকে ফোন করলো জসিম!
ফোন রিসিভ হতেই ওপাশ থেকে রূপার কন্ঠ ভেসে এলো!
-কাল সকালে কোর্টে চলে আসবে! তোমাকে আমি ডিভোর্স দিবো!
জসিম কিছুই বুঝতে পারলো না! নির্বাক মূর্তির মত দাঁড়িয়ে রইলো! তখন রূপা আবার বললো, 'বুঝতে পেরেছো?'
-কিন্তু কেনো!?
-এতো কারন জেনে কি হবে!? আমি তোমার সাথে আর থাকতে পারবো না! ব্যস!
রিসিভার নামিয়ে রাখলো জসিম!
তারপর অনেকবার রূপাদের বাড়িতে গিয়েছিলো জসিম! অনেকভাবেই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে! কিন্তু, প্রত্যেকবার সেখান থেকে অপমানিত হয়েই ফিরতে হয়েছে তাকে!
অবশেষে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত হলো!
.
.
জসিম আর রূপার মাঝে এই ঘটনাটি হয়েছে তিন মাস হয়ে গেলো! কিন্তু, জসিম আজও জানতে পারলো না যে, কেনো তাদের সুখের সংসারে অযাচিত ফাটল ধরলো এবং অশান্তি নেমে এলো!!
.
চার বছর আগে তিনি স্ত্রী রূপাকে যেমন ভালোবাসতেন এখনো ঠিক একই রকম ভালোবাসেন! কিন্তু, পরিবর্তনটা আজও অস্পষ্ট!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.