নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুবই সাধারণ মানুষ! লিখতে ভালোবাসি তাই লেখার সাথে একটু সহবাস!

Arfin Sani

লেখার সাথে একটু পরিচয় আছে। আর সেই পরিচয় থেকেই লেখার প্রতি ভালোলাগা অতঃপর ভালোবাসা! তাই কলম হাতে নিয়ছি!

Arfin Sani › বিস্তারিত পোস্টঃ

"আবিরের প্রেম নিবেদন"-২

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২০


.
-হ্যালো আবির, তুমি কোথায়? এত দেরী করছো কেনো?
ফোন রিসিভ করেই নাদিয়ার প্রশ্ন শুনতে পেলাম।
- আমি বাস্ট্যান্ডে ঢুকছি, মাত্র দু'মিনিট লাগবে!
- আচ্ছা তাড়াতাড়ি আসো। সবাই বসে আছে।
ফোন রেখে দিলো নাদিয়া!
.
কাল থেকে কয়েকবার ফোন করেছে নাদিয়া। 'সব গুছানো হয়েছে, সময়মত স্টেশনে চলে আসবে,প্রয়োজনীয় জিনিশ মনে করে নিয়ে নিও ইত্যাদি ইত্যাদি!' তার বন্ধুদের সাথে কক্সবাজার যাচ্ছি। আজ আগেই বেড়িয়েছি, কিন্তু ঢাকার যানজট ঠেলে পৌঁছতে দেরী হয়ে গেলো।
.
এ-মা! সবাই তো উপস্থিত! আমি একাই দেরী করেছি! নিজেকে খুবই লজ্জিত মনে হলো! যদিও বাস ছাড়তে এখনো ৪৫ মিনিট বাকি। 'সরি সরি সরি, একটু দেরী হয়ে গেলো!' বললাম আমি!
-আরে এখনো অনেক দেরী, চিন্তা নেই। বললো নাদিয়া!
নাদিয়া সহ তার বন্ধুরা মোট ছ'জন। তুহিন,সা'দ,শাওন,রুহি,মেঘা আর নাদিয়া। ওদের সবার সাথে গত পরশু নাদিয়া আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো। তাই আজ পরিচয় পর্ব নিয়ে সময় নষ্ট হলো না!
-আচ্ছা রাহুল কি আসবে?! প্রশ্ন করলো মেঘা।
- ওর কথা বলিস না তো! সবখানে দেরী না করলে ওর পেটের ভাত হজম হয় না! বিরক্তি নিয়ে কথাগুলো বললো রুহি।
-আরে এসে পরবে। প্রতিবাদ করে বললো শাওন।
তারপরই দেখা গেলো রাহুল রিক্সা থেকে নামছে। ও একটু মোটা, অবশ্য ওর শরীর অনুযায়ী দেরী করাটা স্বাভাবিক।
.
.
কাল রাতে বাসে বসে একটুও ঘুম হয়নি। শেষ রাতে কক্সবাজার হোটেলে এসে উঠেছি। সকালে ঘুম থেকে উঠতে মোটেই ইচ্ছে করছে না! কিন্তু সবাই সমুদ্র দেখতে যাচ্ছে তাই আমিও দ্বিমত করলাম না!
.
কী অদ্ভুত! সমুদ্রের জল নোনা- বিস্বাদ হলেও তার প্রেমিকের অভাব নেই! কতদূর থেকে মানুষ এই সমুদ্র, নোনাজল আর তার পরিবেশের প্রেমে পড়ে ছুটে আসে! তবে, সমুদ্রের উপর বয়ে চলা হিমেল হাওয়া সত্যিই মুগ্ধকর! শরীরের প্রতিটি পশমকে জাগিয়ে তুলে! ভাবিয়ে তুলে নতুন অনেককিছু!
.
দু'দিন ধরেই ভাবছি, নাদিয়াকে ভালোগার কথা বলে ফেলবো! কিন্তু, সাহস সঞ্চয় করতে হিমশিম খাচ্ছি! কক্সবাজারে আমরা আর একদিন থাকবো তারপর দু'দিনের জন্য সেন্টমার্টিন, সেখান থেকে ঢাকা।
.
সন্ধের একটু আগে বিচে গেলাম। নাদিয়াকে বললাম,
-নাদিয়া, তোমার সাথে একটু কথা আছে!
-এখানে বলবে নাকি দূরে যেতে হবে!?
-একটু এদিকে এসো।
নাদিয়াকে নিয়ে সরে আসলাম! সূর্যটা লাল থালার মত তাকিয়ে আছে, সমুদ্রের পানি থেকে ভেসে আসছে মাতালকরা সুবাস, তাজা মাটির সুঘ্রাণ, মন মাতানো বাতাস বইছে, হয়তো প্রেম নিবেদনের এটাই উপযুক্ত সময়! যেন প্রকৃতি সময়টাকে এগিয়ে দিয়ে বলছে, "বলে ফেলো!"
-আবির, কিছু বলবে?! কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ থাকার পর প্রশ্ন করলো নাদিয়া!
আমি নাদিয়ার চোখের দিকে তাকাতেই সব ভুলে গেলাম! শব্দগুলো এলোমেলো হয়ে গেলো! মুখ থেকে কিছুই বের করতে পারছি না! যেন কেউ গলা চেপে ধরে আছে! নিজের প্রতি খুবই রাগ জন্মালো! সেই রাগেই হয়তো বলে ফেললাম, 'আমি কাল ঢাকায় ফিরে যেতে চাই!'
নাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে ফেললো! তারপর বললো, 'দেখো আবির, আমি তোমাকে সাহসী এবং বিচক্ষণ মনে করতাম! কিন্তু এমন বোকামি তোমার মাঝে জন্ম নেবে এটা কখনো ভাবিনি! সাধারণ একটা কথা বলতে তোমার যদি এ-অবস্থা হয় তাহলে তুমি যুদ্ধক্ষেত্রে গেলে তো সেখান থেকে পলায়ন করতে বাধ্য হবে!'
আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি! কিন্তু কিছুই বলতে পারছি না! ভাবছি, নাদিয়া কি তাহলে ওর পছন্দের কথা জেনে ফেলেছে!
নাদিয়া আবার আমার দিকে তাকালো, 'আবির, তুমি বড্ড বোকা! তোমার সাথে আমার অল্প কিছুদিনের পরিচয়, তোমাকে আমি দেখেছি, জেনেছি,আপন মানুষ হিসেবে কক্সবাজার নিয়ে এসেছি! ভেবেছিলাম,এখানে এসে তোমার একটু সাহস হবে! কিন্তু,তুমি এখনো ভিতুই রয়ে গেলে!'
কথাগুলো বুঝতে আমার কিছুটা সময় লাগলো! তারপর নিজের কাছে আনন্দ অনুভব করলাম।সেই সাথে বোকামির জন্য কিছুটা লজ্জা বোধও কাজ করলো! অতঃপর আর এক মুহূর্তও দেরী না করে বললাম,
-নাদিয়া! আমি তোমাকে অনেক পছন্দ করি! কাব্যিক অনুভূতি হয়তো এটাকে ভালোবাসা বলবে!
কথাগুলো বলে নাদিয়ার চোখের দিকেই চেয়ে রইলাম!
একটু হেসে নাদিয়া বললো,
-আচ্ছা! তুমি না হয় কক্সবাজার এসে বলে দিয়েছো! তাহলে আমি উত্তরটা সেন্টমার্টিন গিয়েই দিবো!সবাই তো একই রকম প্রেম নিবেদন করে! আমরা না হয় কিছুটা নতুনত্ব দিয়েই শুরু করলাম!
কথাটা বলেই নাদিয়া চলে গেলো! আমি তাকিয়ে রইলাম তার চলার পথে! তার বুদ্ধি,জ্ঞান,সরলতা ও সহজতা আমাকে সত্যিই প্রতিনিয়ত বিমুগ্ধ করে তুলে!
.
এখন অপেক্ষা আরো একটি দিনের........!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.