নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুবই সাধারণ মানুষ! লিখতে ভালোবাসি তাই লেখার সাথে একটু সহবাস!

Arfin Sani

লেখার সাথে একটু পরিচয় আছে। আর সেই পরিচয় থেকেই লেখার প্রতি ভালোলাগা অতঃপর ভালোবাসা! তাই কলম হাতে নিয়ছি!

Arfin Sani › বিস্তারিত পোস্টঃ

"আবিরের প্রেম নিবেদন"-৩

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:২৬


.
নিয়তি বলতে একটা বিষয় আছে! যা আমরা মাঝেমাঝে ভুলে যাই! যখন দুর্ঘটনা বা অপ্রস্তুত কোনো জিনিশে আক্রান্ত হই তখন মনে হয় যে,"ভাগ্য বা কপাল নামে কিছু আছে!" হাসপাতালের করিডোরে দাঁড়িয়ে কথাগুলো নিজের মনেই আওড়াতে লাগলাম! কেনো যেন কথাগুলো খুব মনে পড়ছে!
.
কাল রাতে সেন্টমার্টিন আসার পর নাদিয়া হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়! অতঃপর তাকে এখানকার এক হাসপালে ভর্তি করা হয়! কী হয়েছে আমরা কেউ জানিনা! তবে এখনো তার জ্ঞান ফিরে নি! ডাক্তারের কথাবার্তায় তেমন কিছুই জানা যায়নি।
.
বুকে হাত বেধে অনেক্ষন দাঁড়িয়ে আছি! মনে মনে নানান কথা উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে! তখন পেছন থেকে রুহী এসে ডাকলো, 'আবির ভাইয়া'!
- হ্যাঁ বলুন! আমি পেছন ফিরে তাকালাম!
-নাদিয়ার জ্ঞাল ফিরেছে! সহজ কণ্ঠে বললো রুহী!
-আচ্ছা আপনি যান আমি আসছি! আবার জানালা দিয়ে বাহিরে চোখ রাখলাম!
.
হাসপাতালে থাকলে বাহিরের জগতটা ভিন্ন কিছু মনে হয়! ভেতরে বাহিরের মত প্রাকৃতিক হাওয়া নেই; সব যান্ত্রিক! চারিদিকে কেমন ঔষধি গন্ধ! অবশ্য এখানকার ছোটখাটো হাসপাতালে ঢাকা মেডিকেল বা পিজি হসপিটালের মত মানুষের গাদাগাদি, হুড়োহুড়ি নেই! বাকি সবই প্রায় এক!
.
বালিশে হেলান দিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে নাদিয়া! আমি রুমে ঢুকতেই রুহী, মেঘা এবং শাওন আমাকে দেখে উঠে দাঁড়ালো! আমি বিছানার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
-'কেমন আছো নাদিয়া?'
-' ভালো আছি! তুমি?' একগাল হেসে উত্তর দিলো নাদিয়া!
-আচ্ছা ভাইয়া! আপনি বসুন আমরা হোটেল থেকে ঘুরে আসি। বললো শাওন! তারপর ওরা রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো! রুমে আমি নাদিয়ার বেডের পাশে একটি চেয়ারে বসে আছি!
-কী হয়েছে আবির! তোমার চেহারা এমন লাল হয়ে আছে কেনো?! প্রশ্ন করলো নাদিয়া!
-না কিছু হয়নি তো! তড়িঘড়ি করে উত্তর দিলাম আমি!
-সকালে কিছু খেয়েছো?!
-হ্যাঁ! আচ্ছা, তোমার কী হয়েছিলো?
- 'তেমন কিছুই না! কাল রাতে খুব মাথাব্যথা করছিলো! তাই বেশি পাকামো করে দু'টো ঔষধ একসাথে খেয়ে ফেলেছিলাম! তারপর আমি এখানে!' হাসলো নাদিয়া!
- ঔষধ আর ছিলো না?!
- হ্যাঁ ছিলো তো!
- তাহলে সেগুলো খেলেনা কেনো!?
আমার কথায় কিছুটা অভিমানের সুর ছিলো! নাদিয়া উত্তর না দিয়ে কিছুক্ষণ হাসলো! তারপর বললো,
- আচ্ছা পরে আবার মাথাব্যথা হলে সব খেয়ে নেবো!
আমি কী বলবো খুঁজে পেলাম না! তাই নিশ্চুপ তাকিয়ে রইলাম নাদিয়ার দিকে! বুঝতে পারলাম না, নাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে কেনো! কিছু না বুঝে আমিও ফিকফিক করে হেসে ফেললাম!
.
বিকেলের লাল রোদে হাঁটতে ভালোই লাগছে! রোদের তাপ নেই! হালকা বাতাস বয়ে যাচ্ছে, আর আমার পাশাপাশি হাঁটছে নাদিয়া! সাগরের তীর ধরে কিছুক্ষণ হেঁটে নাদিয়া থামলো! আমিও কিছু না বলেই দাঁড়ালাম!
-আবির, তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?! বললো নাদিয়া!
- হ্যাঁ বলো!
- না থাক! মুখে না বলে বরং লিখে দেই!..
ব্যাগ থেকে একটি কাগজ বের করে আমার হাতে দিলো নাদিয়া!
.
আমি অবাক হয়ে তা খুললাম,
" আবির, তুমি কি আমায় তোমার, মুখোমুখি বসিবার, বনলতা সেন করে নেবে?! কবিতা শোনাবো, ছন্দময় কিছু বাক্যখেলা খেলবো তোমার সাথে!"
কাগজটা খোলার সময় যতটা মুগ্ধবোধ করেছিলাম, পুরোটা পড়ে তারচে' বেশি মুগ্ধ হয়ে গেলাম! কিছু বলার ভাষা খুঁজে পেলাম না! নাদিয়া আমার থেকে একটু দূরে গিয়ে সাগরের পানিতে পা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! আমি কাছে গেলাম, নাদিয়া হাসছে! আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আওড়াতে লাগলাম,
"তুমি মোর বনলতা সেন মুখোমুখি বসিবার,
তোমাকে তো করেই নিয়েছি,
সুযোগ চাইছো কেনো আবার "!
.
নাদিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আবারো হেসে উঠলো! সত্যিই, নাদিয়ার এই হাসিহাসি চেহারা দেখার মত! যেন, গোলাকার একটি চাঁদ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে!
.
.
#বিঃদ্রঃ ভালোবাসার এই পদ্মফুল এখনো আমার মনে ফোঁটে নি! তাই হয়তো সমাপ্তিটা একটু অধরাই রয়ে গেছে!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.