নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুবই সাধারণ মানুষ! লিখতে ভালোবাসি তাই লেখার সাথে একটু সহবাস!

Arfin Sani

লেখার সাথে একটু পরিচয় আছে। আর সেই পরিচয় থেকেই লেখার প্রতি ভালোলাগা অতঃপর ভালোবাসা! তাই কলম হাতে নিয়ছি!

Arfin Sani › বিস্তারিত পোস্টঃ

"শোনালি মাছ ও আবির"

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫১


.
আবির! এই আবির শোন! পেছন থেকে ডাকছে ফারাবি।
আবির পেছন ফিরে দেখলো, ফারাবি দৌড়ে আসছে ওর দিকে। "কী রে,,,,,,,, কী হয়েছে, এমন হাপাচ্ছিস কেনো" ?! দ্রুত জিজ্ঞেস করলো আবির।
-আমি একটা অদ্ভুত জিনিস দেখে এলাম! বললো ফারাবি।
-কী দেখেছিস? আবিরের কন্ঠে ব্যস্ততা!
-বড় দিঘির পাশ দিয়ে আসছিলাম, হঠাৎ আমার সামনে একটা মাছ এসে পড়লো! মাছটা দেখতে লাল, চোখদুটো খুব বড় বড়! আমি চিৎকার করতে লাগলাম কিন্তু আশেপাশে কাউকে দেখতে না পেয়ে দৌড়ে আসলাম! একসাথে কথাগুলো বলে থামলো ফারাবি। 
-বলিস কী! চল দেখে আসি। আগ্রহী কন্ঠে বললো আবির।
-না! না!  সেখানে যাওয়ার কোনো দরকার নেই! ভয় জড়ানো কন্ঠে বললো ফারাবি!
       আবিরের আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো! রূপকথায় এমন সোনালী মাছের কথা সে পড়েছে।  কিন্তু কখনো চোখে দেখেনি! তাই নাছোড়বান্দার মত ফারাবির হাত ধরে দিঘির দিকে চললো আবির।
আবির ফারাবিকে বললো, আমি শুধু ঝোপেড় আড়ালে দাঁড়িয়ে একবার দেখে চলে আসবো! তাই ফারাবি যেতে রাজি হয়েছে।
     আবির আর ফারাবি শিবচর থানার সেন্ট হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ে। দু'জন খুব ভালো বন্ধু।পড়াশুনায় খুব মনযোগী ওরা।

  প্রায় সন্ধা হয়ে গেছে। আবির ফারাবি দাঁড়িয়ে আছে দিঘির পাড়ে।
-কোথায় তোর সোনালী মাছ? নিরবতা ভেংগে বললো আবির।
-এখানেই ছিলো। সত্যি বলছি! আবিরের কাধে হাত রেখে বললো ফারাবি।
-ঐ তো! ঐ দেখ! গাছের নিচে লাফাচ্ছে মাছটি। আবিরের চোখ ছানাবড়া হয়ে উঠলো!
  ফারাবি বাঁধা দেয়ার আগেই আবির ছুটে গেলো মাছটির সামনে। ফারাবিও এসে দাঁড়ালো আবিরের পেছনে।
     আচমকা ওদের চমকে দিয়ে মাছটি মানুষের মতই বলে উঠলো, "আমাকে পানিতে নামিয়ে দাও, তোমরা যা চাও আমি তাই দিবো"! 
      দু'জনই আঁৎকে উঠলো! একে অন্যের হাত ধরে মূর্তির মত দাঁড়িয়ে রইলো!
    "আমাকে পানিতে নামিয়ে দাও না হয় আমি মরে যাবো " আবার বলল মাছটি।
       অনেক সাহস নিয়ে আবির মাছটিকে ধরে পানিতে নামিয়ে দিলো। ততক্ষণ ফারাবি চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইলো।
       পানি পেয়ে মাছটি আনন্দে নাচতে লাগলো! তারপর আবিরকে বলল, তুমি কী চাও বলো?
   -আমার কিছুই চাইনা। একবাক্যে উত্তর দিলো আবির।
-আচ্ছা! তাহলে এই নাও তোমাকে একটা বল দিলাম, এটা দিয়ে অনেক উপকার হবে আর তা দিয়ে খেলতেও পারবে। 
  মাছটি কথা শেষ করতেই আবিরের সামনে এসে পড়লো একটি সোনালী বল!
  ভয়ে ভয়ে বলটি হাতে তুলল আবির!
     বাহ্! এতো দেখছি খুব চমৎকার! চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো ফারাবি। 
     আবির দেখলো, সোনালী মাছটি নেই! কোথাও যেন হারিয়ে গেছে পলকেই!
     দিঘির উপর আটকে আছে দু'জোড়া চোখ। 
        মনে হয় মাছটি চলে গেছে! বলল ফারাবি।
         অমনি বলটি বলে উঠলো, "আরে আমি এখানে " তোমাদের যদি কিছু প্রয়োজন হয় আমাকে বলবে আমি এনে দিবো।
        আবির বলল,দেখ এটাও কথা বলে!!
             তারপর বলটি নিয়ে বাড়ি ফিরলো আবির ও ফারাবি।
পরদিন আবির বলটি ব্যাগে করে স্কুলে নিয়ে গেলো। টিফিনের সময় ফারাবি বলল, আমার খুব চকলেট খেতে ইচ্ছে করছে!  তখন আবির বলটিকে বলতেই ব্যাগভর্তি চকলেট হয়ে গেলো! দু'জনের খুশির সীমা রইলো না!
    এভাবে তাদের যা লাগে আবির সোনালী বলকে বলে আর সে এনে দেয়। এবং প্রতিদিন আবির তা স্কুলে নিয়ে যায় কিন্তু কাউকে কিছু বলে না। বলটা এখন তাদের নিত্যসঙ্গী।

       আবির! এই আবির! ক'টা বাজে এখনো ঘুমিয়ে আছো!
       আবির চোখ মেলে দেখলো, সে বিছানায় শোয়া আর আম্মু দরজায় দাঁড়িয়ে ডাকছেন।
    তাহলে কি এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিল আবির!!?  সোনালী বলের কথা ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেলো আবিরের! ইস্! সত্যিই যদি সোনালী বল পাওয়া যেতো!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.