![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“Ask yourself often, why do I have to think like other people think?”
এই কথাগুলো বাইরে আলোচনা করতে চাই নি, কিন্তু নিতান্তই বাধ্য হচ্ছি লিখতে। কারণ কারো না কারো লিখতেই হবে। এবং এটা জরুরি বিষয়।
একবার এক নাস্তিক আমাকে তার একটা লেখা পাঠালেন, সত্যি কথা বলতে লেখাটা আমার ভাল লাগলো না। লেখাটিতে হযরত আয়শাকে অহেতুক অশালীনভাবে আক্রমণ করা হয়েছিল, প্রায় পর্ন গল্প আকারে কিছু একটা লেখা হয়েছিল। আমি তাকে জানালাম, আপনার লেখাটা আমার ভাল লাগে নি, আয়শাকে এভাবে আক্রমণের উদ্দেশ্য কী সেটাও আমি বুঝলাম না। হযরত মুহাম্মদের সাথে বিয়ের সময় তার বয়স ছিল ছয় বছর, এই বয়সের একটা বাচ্চা নিষ্পাপ মেয়েকে নিয়ে এই ধরণের লেখা খুবই আপত্তিকর। শিশুদের নিয়ে এই ধরণের যৌন উত্তেজনাকর লেখা মাথা থেকে বের হওয়াও এক ধরণের পারভার্শন। মুহাম্মদ ছয় বছর বয়সী একটা মেয়েকে বিয়ে করেছে, ব্যাপারটা খুবই ঘিনঘিনে। প্রয়োজনে মুহাম্মদকে আক্রমণ করে লিখুন, আয়শাকে কেন আক্রমণ করা হবে? সেখানে তার কী দোষ ছিল? আমি ব্যক্তিগতভাবে আয়শাকে খুবই পছন্দ করি, এরকম বুদ্ধিমতী এবং মেরুদণ্ডসম্পন্ন নারী আমার সম্মানের যোগ্য।
সেই নাস্তিক আমাকে কিছুক্ষণ সুশীল বলে গালাগালি দিয়ে চলে গেলেন। বলে রাখা জরুরি, তার লেখা আমার পছন্দ না হলেও তার লেখার অধিকারের পক্ষে আমি সব সময়ই ছিলাম, আছি। আমার ভাল না লাগলে আমি পড়বো না, আমার না পড়ার স্বাধীনতাও আছে। সেই সাথে, আমি সমালোচনাও করতে পারি। সেটাও আমার অধিকার। কিন্তু তাকে লেখা থেকে বিরত রাখা বা চাপাতি দিয়ে কোপানো আমার পক্ষে সম্ভব না। সে যাই লিখুক না কেন। কারণ লেখার স্বাধীনতা লেখার মান বা বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল নয়। বা আমার পছন্দ অপছন্দের ওপর নির্ভরশীল নয়। কে কী লিখবে, কীভাবে লিখবে, সেটা ব্যক্তির রুচি, জ্ঞান, শিক্ষা, সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করে। আমি বা কেউই কাউকে নির্দেশনা দিতে পারি না, সে কীভাবে লিখবে। ভাল লিখলে প্রশংসা করতে পারি, খারাপ মনে হলে সমালোচনা করতে পারি। কিন্তু তার লেখার স্বাধীনতা সবার আগে আলোচ্য বিষয়।
২০১৩ সালে, রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের পরে সেই একই লেখক, একদিন আমাকে উগ্র নাস্তিকতা পরিহার করে সহি নাস্তিকতার দিকে আহবান করতে শুরু করেন। আমাকে একদিন বলেন, কী হবে ভাই এত উগ্রতা দেখিয়ে? উগ্রতা ছেড়ে দিন। কারো ধর্মকে কেন আঘাত করতে হবে? সহি নাস্তিকতা হচ্ছে, ধর্মকে সম্মান করে কথা বলা! আমি তার এই আচরণে অবাক হই নি।
বুঝেছিলাম, রাজীব হত্যার ফলাফল! কলম চলবে লেখা চলবে, এই সবই এদের কাছে ফালতু কথা। চাপাতিতে একেবারেই কাজ হয় না, তা তো নয়। কিছু কাজ হয়। এদের এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। মুক্তচিন্তার আন্দোলনের জন্য এরা খুবই ক্ষতিকর। আমরা তো চাপাতি হাতে নিতে পারবো না, আমাদের কলমই চালিয়ে যেতে হবে। তাই এই অসম যুদ্ধে আমাদের এই কলমকেই শানিত করতে হবে আরও বেশি। আর এদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
সেই সকল নাস্তিকদের বলছি। আপনাদের কেউ মাথার দিব্যি দিয়ে মুক্তচিন্তার কথা লিখতে বলে নি। নাস্তিকতা নিয়ে লিখতে বলে নি। আপনি ভয় পেলে, আতঙ্কিত হলে, মেরুদণ্ড নুয়ে গেলে, লেখা ছেড়ে দিন। আমাদের মাফ করুন। আপনি আমাদের মিছিলে দাঁড়িয়ে ওদের সামনে মাথা নত করলে, সেটা আমার পরাজয়, রাজীবের পরাজয়, অভিজিতের পরাজয়, বাবুর পরাজয়, অনন্তের পরাজয়, নীলের পরাজয়। তাদের পরাজিত করবেন না। তারা অনেক রক্ত দিয়েছে। জীবন দিয়েছে।
আপনি মৌলবাদের পায়ের কাছে আপনার কলম রেখে প্রাণ ভিক্ষা চাইতেই পারেন, কিন্তু আমাদের এতগুলো প্রাণকে আপনি অসম্মান করতে পারেন না।
©somewhere in net ltd.