নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনেক বছর হলো ; তবুও নিঃসঙ্গ বৃক্ষের মতো নির্জন নিস্তব্ধ মৌন পাহাড়ের মতোই একা পড়ে আছি আজও। একাই আছি এই দীর্ঘশ্বাসের মতো! তোমারও কি শুধু দীর্ঘশ্বাস,গ্রীলে বিষন্ন গোধূলী?

অবনি মণি

যদিও আমি কখনো দুঃস্বপ্নে বিভোর ছিলামনা এবং আজও না ।তবে একটা জাগ্রত স্বপ্ন দেখতাম ; একদিন ভালোবাসব ,ঐ আকাশের বিশালতার মতো নয় কেবল আমার মনের গভীরতা থেকে ।

অবনি মণি › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'\'আবেগ বনাম বাস্তবতা\'\'

২০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩৮

♥ আবেগ : কেবল অনার্স প্রথম বর্ষ শুরু করেছিলাম। প্রথম দিকে পড়াশুনা বুঝতে সময় লাগছিল, তাই একাডেমিক পড়া শুরু করিনি তখনো। তখন হয় গল্প,উপন্যাস নিয়ে বসে থাকতাম না হয় কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স,নতুবা ক্লাস সেভেন এইটের অংক বই। মোটামুটি কয়েকদিন এইগুলিই আমার নিত্যসঙ্গী ছিল। এক আপু প্রায়ই জিজ্ঞেস করতো "তুই এতো পড়িস কিভাবে?" হায়! আমরা তখন এই সেই করে দিন কাটিয়ে দিয়েছি,পরে বুঝতাম সময় পাচ্ছিনা পড়ার ; কিন্তু তুই মা-সা-আল্লাহ সারাদিন বই নিয়ে বসে থাকিস ।বললাম "আপু এগুলি একাডেমিক পড়াশুনা না"। বাড়তি পড়া, সময় পার করছি আর কি! একদিন তিনি নিজ চোখে দেখলেন আমি ক্লাস সেভেনের অংক বই নিয়ে অংক করছি।অনেকটা চমকে গেলেন ; যদিও চমকানোর কথা ছিলনা কারণ তিনি তখন অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ছিলেন । জিজ্ঞেস করলেন " ওমা, তুই সেভেনের অংক করছিস কেন?" আমি হাসলাম! বললাম এইগুলি ভূলে গিয়েছি তো, তাই করছি। অবাক হলেন, তা এখন কেনো করছিস? পরে বললাম " ইচ্ছা ছিল জীবনে একবার বি,সি,এস এর প্রিলিমিনারী পরীক্ষায় বসবো,তাই বসে বসে মাছি না মারার চিন্তায় এই প্রস্তুতি,যদি লেগে যায়।" প্রবল ইচ্ছাও ছিল আমার। যাই হোক ; আপু খুব নিরাশ হয়ে বললেন "ও", তাই বল। আপু খুব অবাক হয়ে শুনলেন আমার প্রবল আকাঙ্খার কথা। পরে উনি উনার মনের কথাগুলো প্রকাশ করলেন।

"আমার অবশ্য বি,সি,এস দেয়ার কোনো ইচ্ছে নেই ; শুনেছি তাদের নাকি বেতন কম। ঢাকা শহরে সরকারি চাকুরীর ১০/২০ হাজার টাকা দিয়ে আসলে জীবনযাপন করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য।তাই আমি অবশ্য সরকারী জব করার চিন্তা কখনো করিনা। ভালো বেতন না পেলে চাকুরীতে ঢুকবোইনা ; আমার দ্বারা হবেওনারে, তুই তো জানিসই আমার যখন যা ইচ্ছে করে তা চাই-ই চাই। আর এই ১০/২০ হাজার টাকা দিয়ে এই অপূর্ণতাগুলো পূরণ করা সম্ভব ই না।"

আমি শুধু তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম আর বিড়বিড়িয়ে আমার মনের কথাগুলো নিজেকেই বললাম যে,আহা বেচারী সরকারী চাকুরীর কোনো প্রিলি পরীক্ষায় বসার কোনো অভ্যাস এখনো হয়ে উঠেনি তাঁর; তাই বলে ফেলছেন ।ব্যপার না,অবুঝের বুঝ যখন হবে তখন এমনিতেই বুঝবেন ।

কিন্তু আপুর সম্পর্কে চরম সত্য কথাগুলো বলে রাখি। আপু দেশের টপার একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছিলেন । সেমিস্টার এ ৫০/৬০ হাজার টাকা ফী দেবার পরও হয়তো বাবার অঢেল সম্পত্তির ১ ভাগও নষ্ট হচ্ছেনা। এটা আমার আন্দাজ,তিনি কখনো গল্প করেননি। যখন যা চাইছেন মুহুর্তেই তার সামনে হাজির। এগুলো আমার দেখা,আমার সামনেই ঘটছে।ঢাকা শহর থেকে তাঁর বাড়ি প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে। বাড়িতে যাবার ইচ্ছে পোষন করলেই গাড়ি এসে তাঁর সামনে হাজির সেই ১৫০ কিলোমিটার দূর থেকে। আবার দিয়েও যাচ্ছে সময়মতো। অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ুয়া এই আপুটা যখন শপিং (হয়তো এক জোড়া জুতাই) করতে যাবে বলে চিন্তা করে তখন বাবা আর গাড়ি সদা দন্ডায়মান থাকে তাঁর সামনে। একা একা কোথাও যাওয়া কিংবা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এ উঠার চিন্তা তাঁর মাথার ৫০০ মাইল উপর দিয়ে যেতো সবসময়।ও হ্যাঁ,ক্লাস না থাকলে ঘুম থেকে বেলা ১ টার সময় উঠা ছিলো তাঁর নিত্যনৈমিত্তিক কাজ।

♥ বাস্তবতা : এই আপু অনার্স পাস করে বের হতে না হতেই মাত্র ১০ হাজার টাকা বেতনের সামান্য একটা চাকরিতে ঢুকে গেলেন। বাবার টাকার খেলায় তিনি প্রায় হার মানতে বসেছিলেন।কিন্তু না ; এখন তিনি এই চাকরির পাশাপাশি মাস্টার্স করছেন। রোজ সকালে (সকাল মানে সকাল ৬.৩০ মিনিটে) ঢাকা শহরের এই পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এ ঝুলতে ঝুলতে কর্মস্থলের দিকে ছুটেন (বাসা থেকে ১.৫০ ঘন্টার রাস্তা) ,আবার একইভাবে বিকালে ছুটেন ইউনিভার্সিটিতে, একই পন্থায় আবার বাসায় ফিরেন রোজ রাত ১০ টায়। এখন তিনি বাসস্টপেজ এ গিয়ে টিকেট কাটার লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটে নিজ গ্রামের দিকে ছুটেন। এই বাস গুলো রাস্তা থেকে মানুষ উঠাতে উঠাতে ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়। এসিও নেই বাসের ভেতর।

হায় আবেগ, হায় বাস্তবতা! তবে হ্যাঁ, তিনি তার এ কাজের সুবাদে অনেকটা সাবলম্বী হতে শিখেছেন। এটা তারঁ জন্যে অত্যন্ত জরুরী ছিল।তাঁর বাবা একজন অত্যাধুনিক বাবা,কিন্তু আপু নিজে একজন ধর্মপরায়ণ মানুষ। বাবা তার ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে অনেকটা বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাই হয়তো তিনি তাঁর প্রচেষ্টায় জিতে গিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ!!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:০৮

শিশিরসিক্ত বলেছেন: আবেগ ঝেড়ে বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবনকে উপলুব্দি করছে এটাই ভালো।

২১ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:৪৮

অবনি মণি বলেছেন: হুম

২| ২১ শে জুন, ২০১৬ রাত ২:৩০

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: আবেগে জীবন চলেনা। ভালো অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।

২১ শে জুন, ২০১৬ রাত ২:৪২

অবনি মণি বলেছেন: ধন্যবাদ !

৩| ২১ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৩০

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনার লেখায় কেমন যেন একটা সরকারী সরকারী ভাব আছে।

২১ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:১৪

অবনি মণি বলেছেন: হা হা হা!!

৪| ২১ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৪

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: ফিরে আসার গল্পটা ভালোই।

২১ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:২৯

অবনি মণি বলেছেন: ধন্যবাদ অশেষ !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.