নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সামনের সারি( বাম থেকে ডানে): খয়রাত হোসেন, শেখ মুজিবর রহমান, শের-এ-বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, আতাইর রহমান, বসন্ত দাস এবং মোহাম্মদ আলী পিছনের সারি(বাম থেকে ডানে) আবদুর রহমান খান, মনোরঞ্জন ধর, মশিউর রহমান, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলী
বাংলাদেশ স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ একজন রাজনৈতিক সহোচর ভাষা সৈনিক ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ খয়রাত হোসেন। জন্ম-১৯০৯ সালের ১৪ ই নভেম্বর, মৃত্যু-১০ ই মার্চ ১৯৭২। তাঁর নীলফামারী জেলার খয়রাত হোসেন সড়কে অবস্থিত বাসস্থানটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদধূলির স্মৃতিবিজরিত ঐতিহাসিক একটি বাড়ি হিসেবে সুপরিচিত। বর্তমানে এখানে খয়রাত হোসেনের পুত্র হাসনাত বিন খয়রাত(স্ত্রীসহ), দুই নাতি-নাতনীর ছোট্ট একটি পরিবার। একসময় এই বাড়িতে অসংখ্যবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেরে বাংলা এ,কে ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সহ বিভিন্ন রাজনীতিবিদরা আসতেন, থাকতেন এবং রাজনৈতিক মিটিং করতেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে খয়রাত হোসেনের অবদানের কথা বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত ২১ শে ফ্রেব্রুয়ারী ২০১৯ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত ৫.২৮ মিনিটে তাঁর বক্তব্যর মাঝে ভাষা সৈনিক খয়রাত হোসেনের কথা তুলে ধরেন।
তাঁর জীবনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বর্ণনা: খয়রাত হোসেন ১৯২৯ সালে কারমাইকেল কলেজে ছাত্র সংসদের মুসলমান ছাত্রদের মধ্যে প্রথম মুসলমান ভি.পি নির্বাচিত হন। ১৯৪৪ সালে তিনি নীলফামারী থেকে এম.এল.এ নির্বাচিত হন। আসামের “লাইনপোতা আন্দোলনে” মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সাথে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। মুসলীমলীগ থেকে আওয়ামীলীগ গঠিত হলে আওয়ামীলীগে যোগ দেন এবং পরপর ০৩ বার এম.এল.এ নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এসময় মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী আসামে মুসলিম উচ্ছেদ বিরোধী আন্দোলন শুরু করলে তিনি উক্ত আন্দোলনে যোগ দেন। মুসলিম উচ্ছেদ আন্দোলন ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করলে তিনি গ্রেফতার হন এবং আসামের কারাভোগের পর ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে মুক্তিলাভ করেন। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের জনক কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও পরবর্তীকালে খাজা নজিমুদ্দিন ও পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন ‘উর্দূকে’ একমাত্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে চাইলে দেশপ্রেমী খয়রাত হোসেন এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। ১৯৫০ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় নেতা খয়রাত হোসেনের উদ্যেগে নীলফামারী মহকুমায় দবির উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মহকুমা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করা হয়। ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে খয়রাত হোসেনের ভূমিকা ছিলো গৌরবোজ্ঝল। তিনি ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ছাত্র জনতার উপর পুলিশের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে মওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ,আবুল কালাম শামসুদ্দিনের সাথে খয়রাত হোসেন পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের অধিবেশন বর্জন করেন এবং ভাষা আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। তিনি ২১শে ফেব্রুয়ারী ভাষার দাবীতে ধর্মঘট পালনের নির্দেশ দেন এবং এম,এল,এ পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর পাকিস্তানী শাসক চক্রের হীন চক্রান্তে তিনি কারাবদ্ধ হন এবং দীর্ঘ ১৮ মাস কারাভোগের পর মুক্তিলাভ করেন।
১৯৫৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর আতাউর রহমান খানের মুখ্যমন্ত্রীতে গঠিত কোয়ালিশন সরকারের অন্যতম মন্ত্রী হন খয়রাত হোসেন। তিনি কৃষি,খাদ্য,মৎস্য ও পশুপালন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং একজন সফল মন্ত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা অর্জন করেন। ১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে স্বাধীনতা সংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে খয়রাত হোসেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। খযরাত হোসেন,দবির উদ্দিন আহমেদ,আফসার আলী আহমেদ,রহমান চৌধুরী সহ অন্যান্য সিনিয়র নেতৃবৃন্দ “সংগ্রাম পরিষদ” গঠনের প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের একত্রিত করতে থাকেন। কিন্তু খয়রাত হোসেনকে ভাষা সৈনিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও তাঁর নীলফামারীর পরিবারটি প্রথম থেকেই অতি কষ্টে মানবেতরভাবে জীবন যাপন করে যাচ্ছে। এই পরিবারটি শুরু থেকেই চরমভাবে অবহেলিত। পরিবারটি রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি। পরিবারের সদস্যরা সরকারী চাকুরি থেকেও বঞ্চিত। গত কয়েক বছর যাবত প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হলেও তাঁর টেবিলে চিঠি পৌঁছানো সম্ভব হয় না।
তাঁর নাতি-নাতনীরা বলেন নীলফামারীর ০৫ জন ভাষা সৈনিককে প্রতিবছর একদিনের জন্য শ্রদ্ধা নিবেদন জানালেও তাঁদের ব্যপারে কোন উদ্যেগ নিলে সফল হতে পারি না। দাদার নামে স্মৃতিসংসদ রয়েছে কিন্তু সেখানে কোন ফান্ড নেই। দাদা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম একজন সংগঠক হলেও অনেকবার অসংখ্য প্রমাণাদীসহ মুক্তিযোদ্ধা সনদের আবেদন করা হলে তা প্রতিবারই বাতিল করে দেয়া হয়। তিনি আজীবন দেশ ও দশের সেবা করে গেছেন কিন্তুু তাঁর বেলায় কেন এতো অবহেলা? কয়েক বছর আগের কথা, খয়রাত হোসেনের পুত্র প্রয়াত সাংবাদিক মোজাহিদ বিন খয়রাত এবং তার মা আরেফা খয়রাত নিজ বাসভবনে ০২টি টিভি চ্যানেলে ১.৫০ মিনিটের একটি সাক্ষাতকার দিয়ে বলেছিলেন“ আমাদের কোন রাজনৈতিক নেতাই কখনোও কোন উপকারে আসলো না। আমরা বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করতে চাই। বাবা আমাদের বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করে বারবার রাজনীতি মাঠে নামতে বলে গেছেন”এই সাক্ষাতকারটিও চ্যানেলে প্রচারিত হয়নি। এদিকে ২০০৯ সালে এই প্রবীণ নেতার জীবনীগ্রন্থের কাজ শুরু হলেও আর্থিক সংকটের কারণে থমকে যায় গ্রন্থটির প্রকাশনা। খয়রাত হেসেনের নীলফামারীর পরিবারের নাতি-নাতনীরা প্রিয় নেত্রী,জননেত্রী শেখ হাসিনা,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পবিত্র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ভাষা সৈনিকের নীলফামারীর এই পরিবারটির উপর একটু সদয় দৃষ্টি দিলেই পরিবারটি অবহেলা আর মানবেতর জীবন যাপন থেকে চীরতরে রক্ষা পেতে পারে।
সূত্রঃ http://onenews24bd.com/
২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই শেখ হাসিনা এগিয়ে আসবেন। শুধু শেখ হাসিনা কেন দলের যে কারো দায়িত্ব এগিয়ে আসার।
৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩১
সাসুম বলেছেন: ১৯৭৫ সালে শেখ সাহেব কে সপরিবারে খুন করার পর খুনীরা সবাইকে চুপ করিয়ে দিয়েছিল।
শুধু এক বেকুব মুক্তিযোদ্ধা- তার দলবল নিয়ে বের হয়ে গিয়েছিল খুনের বদলা নিতে। লক্ষ্য ছিল, ইন্ডিয়া তে গিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে আবার ফিরে এসে নতুন করে মুক্তিযুদ্ধ করবে। তারা ছিল একদল সশস্ত্র যোদ্ধার দল। ১৯৭৫ পরবর্তীতে সেনাবাহিনী আর বিডি আর এর তাদের কে দমন করতে উঠে পড়ে লেগেছিল। এক যুদ্ধে সেই অশিক্ষিত বঙ্গবন্ধু প্রেমিক দলের ১০ জন শহিদ হোন। এর পর দল টা আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যায়।
আজকের রগ ফুলানো আম্লিগ নেতা থেকে শুরু করে, হাইব্রিড কাউয়া কেউ আসে নাই , অই এক দল অশিক্ষিত দেশ প্রেমিক হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে শেখ মুজিব এর খুনের বদলা দিতে প্রাণ দিয়েছিল।
জানেন তাদের নাম? কিংবা মনে আছে?
এদের চেয়ে বড় শেখ মুজিব প্রেমিক আছে দেশে ? এদের নাম যখন আমাদের প্রজন্ম জানেনা তখন , আরো কত জন হারিয়ে যাবে। এ আর নতুন কি
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৪৮
মাসুদুর রহমান (শাওন) বলেছেন: দলে কিছু চাটুকারিতার জন্যই আজকে ত্যাগী ও প্রকৃত নেতাদের কদর নাই...