নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রবিন.হুড

রবিন.হুড › বিস্তারিত পোস্টঃ

গিফ্ট/উপহার,টিপস/বকশিশ বা সালামী কি সবসময় সবাই পেতে পারে?

০৫ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:৩২

উপহার/গিফট/হাদিয়া কি?
উপহার প্রদান ও গ্রহণ উভয়ই সুন্নত। কোনো প্রকার শর্ত ছাড়া এবং স্বার্থ বিবেচনা না করে, কারও প্রতি অনুরাগী হয়ে যে দান বা উপঢৌকন প্রদান করা হয়, তা-ই উপহার। এই হাদিয়া বা উপহার অত্যন্ত উচ্চপর্যায়ের সদাকাহ বা অনুদান। উপহার দাতা ও গ্রহীতা উভয়কে সম্মানিত করে। এটি কোনো দয়া বা দাক্ষিণ্য নয়। সাধারণত ছোটর পক্ষ থেকে বড়কে দিলে তা হাদিয়া বা উপহার। আর বড়র পক্ষ থেকে ছোটকে দিলে তা ‘আতিয়া’ বা উপঢৌকন তথা ভেট বা প্রীতি উপহার। উপহার পেতে সবারই ভালো লাগে, অবচেতন মন পুলকিত হয়। তবে ভোগের চেয়ে ত্যাগেই সুখ বেশি যা শুধু চিন্তাশীল ব্যক্তিরাই অনুধাবন করতে পারে।
উপহার দেওয়ার প্রেক্ষাপটঃ
যদি কারো নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত অর্থ ( উপহার কেনার মতো অর্থ) হাতে থাকে এবং কারও প্রতি স্নেহ/ভালোবাসা জাগ্রত হয় তখন উপহার প্রদানের প্রেক্ষাপট তৈরী হয়। আপনার হাতে টাকা নাই তো উপহার দেওয়ার চিন্তা করার সুযোগ নাই । ব্যতিক্রম হতে পারে অতিরিক্ত আবেগ প্রদর্শনের জন্য ঋণ করে উপহার দেওয়া।আপনি কারো প্রতি উপহার দেওয়ার মতো সন্তোষ্ট না তো আপনার উপহার দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে এ ক্ষেত্রে যদি কেউ আপনার নিকট উপহার দাবি করে, বিভিন্ন বিশেষ দিবস উপলক্ষ্যে উপহার প্রাপ্তির আশা করে, না পেয়ে অভিযোগ করে তবে তা কতটুকু গ্রহনযোগ্য? আমার মতে এখানে উপহার প্রদানকারীর নয় বরং উপহার গ্রহনকারীর মানসিক দৈন্যতা প্রকাশ পায়। এক্ষেত্রে উপহারগ্রহনকারীর প্রতি পরামর্শ যে আপনি ভাল কাজের মাধ্যমে নিজেকে এমনভাবে প্রস্তুত করুন যেন আপনার কাঙ্খিত কেউ ধার করে হলেও আপনাকে উপহার দিয়ে সন্তোষ্ট করে অথবা দোয়া করেন যে আল্লাহ তাওয়ালা তাকে এমন সমর্থ দেন যেন তিনি সবসময় সবাইকে উপহার দিতে পারেন।
টিপস/বকশিশঃ
আমরা যখন বাইরে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সেবাগ্রহণ করি তখন সেবা গ্রহনে সন্তোষ্ট হয়ে সেবা মূল্যের অতিরিক্ত যে অর্থ প্রদান করি তাকে টিপস বা বকশিশ বলে। সাধারণত সেবা প্রদানের সাথে জড়িত কর্মচারীরা বকশিশ গ্রহণ করে থাকে এবং হোটেল/রেস্ট্রুরেন্ট/রেস্তোরার কর্মচারীরা টিপস/বকশিশ পেতে আগ্রহী । আপনি হোটেলে গিয়ে খাবার গ্রহন শেষে ওয়েটারের সেবায় সন্তোষ্ট হয়ে তাকে বকশিশ দিতে পারেন। যখন ওয়েটারকে ডেকে ডেকে হয়রান হবেন প্রয়োজনীয় সেবা সময়মতো পাবেন না কিন্তু বিল দেওয়ার সময় বকশিশ দাবি করে তখন আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে? এ যেন সে সেবা দিবে কি দিবে না সেটা তার ইচ্ছাধীন কিন্তু বকশিশ তার আইনগত অধিকার।
সালামিঃ
আতিয়া বা উপঢৌকনের একটি অংশ হলো সালামি।সাধারণত ঈদের চান্দে ও বিশেষ অনুষ্ঠানে ছোটরা বড়দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে, সালাম বা কদমবুসি করে এবং বড়রা ছোটদের টাকা বা অন্য কোনো বস্তুসামগ্রী উপহার দেন, একে সালামি বলা হয়। আকিকা অনুষ্ঠানে, সুন্নতে খতনা বা মুসলমানি অনুষ্ঠানে যে শিশুর আকিকা বা খতনা, সে আগত অতিথিদের সালাম করে, এতে অতিথিরা তাকে টাকা বা কোনো বস্তু উপহার দেন, একেও সালামি বলা হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে বা বউভাত অনুষ্ঠানে বর বা কনে অভ্যাগত মেহমানদের সালাম করে থাকেন। এতে অতিথিরা টাকা বা অন্য কোনো সামগ্রী উপহার দিয়ে থাকেন, এটিও সালামি নামে পরিচিত।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সালামি দেওয়ার রীতি পরিবর্তন বা কিছুটা সংকীর্ণ হয়েছে। বড়দের প্রতি ছোটদের শ্রদ্ধা/ভালোবাসা যেমন হ্রাস পেয়েছে তেমনি বড়দের সালামি প্রদান ও কমে গেছে। অনেকে ক্ষেত্রে ছোটরা বড়দের সালাম করার প্রয়োজন মনে করে না কিন্তু সালামি দাবি করে বসে, সালামি না দিলে মন খারাপ করে আবার বড়দের প্রতি অনুরাগ প্রকাশ করে। বর্তমান প্রজন্ম আর এক ধাপ এগিয়ে গেছে সালামি আদায় করা বিষয়ে । ঈদ বা অন্য কোন উপলক্ষ্য তৈরী হলে ফোন করে সালামি দাবি করে এবং অনলাইনে পরিশোধের দাবী করে । এখানে নেই সেই দিনের সেই ঐতিহ্য আদব-কায়দা, স্নেহ-ভালোবাসা, শ্রদ্ধা-ভক্তি। আছে ‍শুধু চাওয়া-পাওয়া, না পাওয়ার বেদনা।যা আছে বা পেয়েছে তার জন্য নাই কোন শুকরিয়া।


উপহার কোনো ঋণ বা পাওনা নয়
হাদিয়া বা উপহার একটি সুন্নত বিষয়। এর জন্য কোনো উপলক্ষের প্রয়োজন যেমন নেই, তেমনি নেই কোনো অনুষ্ঠান বা উপলক্ষে এর বাধ্যবাধকতাও। হাদিয়া বা উপহারের পরিমাণ বা মূল্যমান বড় বিষয় নয়। কারণ, প্রকৃত উপহার লৌকিকতানির্ভর নয়; বরং হাদিয়া বা উপহার হলো আন্তরিকতার বিষয়। আন্তরিকতা ছাড়া লৌকিক উপহার নিষ্প্রাণ দেহসম। লৌকিকতা ছাড়া আন্তরিক উপস্থিতি, শুভেচ্ছাবিনিময় ও শুভকামনা শ্রেয়তর। তাই হাদিয়া বা উপহারসামগ্রীর কারণে আমাদের বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে সানন্দ উপস্থিতি যেন বিঘ্নিত না হয়। আল্লাহ তাআলা আল-কোরআনুল করিমে বলেন, ‘উত্তম বাক্য ও ক্ষমাপ্রার্থনা ওই দান অপেক্ষা শ্রেয়তর, যে দানের পর কষ্ট অনুগামী হয়। আল্লাহ মহা ধনবান ও চিরপ্রশংসিত।’ (সুরা: ২ বাকারা, আয়াত: ২৬৩)।

উপহার কোনো বিনিয়োগ বা ঋণদান নয়। যিনি কাউকে কোনো উপলক্ষে উপহার বা হাদিয়া দিলেন, তাঁর কখনো এমন আশা পোষণ করা সমীচীন হবে না যে ওই ব্যক্তি আমার বা আমাদের কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে অনুরূপ হাদিয়া বা উপহার দেবেন। উপহার বা হাদিয়া কোনো পাওনা বিষয় নয় যে কেউ না দিলে মন খারাপ করতে হবে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:৫৩

জটিল ভাই বলেছেন: প্রয়োজনীয় তথ্য। ভালো লাগলো......

২| ০৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: সামর্থ থাকলে সব সময় দরিদ্রদের দিয়ে যাওয়া উচিত। বছরে একবার দিলে হয়?!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.