নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নকুল কুমারের একটা গানে আছে,
“ চৌধুরী আর খন্দকার
চোখ বুজিলে অন্ধকার”
সত্যিই তাই বংশ গৌরব করে লাভ নাই। মৃত্যুর পর মানুষের আমল বা কাজই মানুষকে অমর করে রাখে তিনি কোন বংশে জন্মেছিল সেটা মুখ্য কথা নয়।
আবার একটা কথা প্রচলিত আছে যে,“ দাদার নামে গাধা, বাবার নামে আধা এবং নিজের নামে শাহাজাদা”। তাই নিজের কর্মগুনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাই জীবনের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। নাম মানুষকে বড় করে না মানুষই কাজের মাধ্যমে নামকে বড় করে তোলে।
“মুন্সী” এমনই একটা বংশীয় পদবী যা কাজের দক্ষতা স্বরুপ প্রদান করা হয় বা অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য এই পদবী গ্রহন করা হয়। মুন্সী মানে এক্সপার্ট ইন ওয়ার্ক অর্থাৎ কাজে দক্ষ। কেই কাজে দক্ষতা প্রদর্শন করলে বলা হয় তাঁর কাজে মুন্সীয়ানা আছে।
মুন্সি ( উর্দু: مُنشی ; হিন্দি: मुंशी; বাংলা: মুন্সি) মূলত একটি ঠিকাদার, লেখক, বা সচিবের জন্য ব্যবহৃত ফার্সি শব্দ, এবং পরবর্তীতে মুগল সাম্রাজ্য ও ব্রিটিশ ভারতে নেটিভ ভাষা শিক্ষক, বিভিন্ন বিষয় বিশেষত প্রশাসনিক নীতি, ধর্মীয় গ্রন্থ, বিজ্ঞান এবং দর্শনশাস্ত্রের শিক্ষকদের জন্য ব্যবহৃত হয়। এবং ইউরোপীয়দের দ্বারা নিযুক্ত সচিব এবং অনুবাদক ছিল।
মুন্সি ( ফার্সি: منشی ) একটি ফার্সি শব্দ যা বিশেষ করে ব্রিটিশ ভারতে ভাষার উপর কর্তৃত্ব অর্জনের জন্য সম্মানিত শিরোনাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়। তাদের পূর্বপুরুষদের থেকে উপাধিটি পেয়েছিল এবং যাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন রাজ্যে মন্ত্রী ও প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং এটি তাদের খ্যাতি হিসাবে গণ্য করা হয়। আধুনিক ফারসি ভাষায়, এই শব্দ প্রশাসকদের, বিভাগের প্রধানদের বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
প্রশাসক, বিভাগীয় প্রধান, হিসাবরক্ষক, এবং ব্রিটিশ ভারতে সরকারের দ্বারা নিযুক্ত সচিব, মুন্সি নামে পরিচিত ছিল। পারিবারিক নাম মুন্সি পরিবার দ্বারা গ্রহণ হতো যারা পূর্বপুরুষদের এই উপাধি দ্বারা সম্মানিত করা হতো এবং বিভিন্ন অফিসের প্রশাসনের জন্য দায়ী ছিল। এবং এই পরিবারগুলি (নির্বাচনী) ছিল এবং তাদেরকে খ্যাতি হিসাবে গণ্য করা হয়। "মুন্সি” উপাধী প্রাপ্ত আবদুল করিম ছিলেন একজন মূল্যবান ও সম্মানিত ভারত বিষয়ক উপদেষ্টা অথবা রানী ভিক্টোরিয়ার সহযোগী-শিবির।
সবশেষে বলা যায়, আগের দিনের মুন্সী ই বর্তমান কালের সচিব বা দক্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা। যদিও অনেকে ভুল করে মোল্লা ( ধর্মীয় নেতা বা মসজিদের ইমাম) এর সাথে মুন্সীদের মিলিয়ে ফেলেন।
বর্তমানে বংশীয় গৌরব কাজের সমন্বয় সাধন করে সচিব হিসেবে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন মুন্সী মোঃ শাহবুদ্দীন আহমেদ, টিপু মুন্সী বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন সফলতার সাথে। ব্রিটিশ আমলে গোবিন্দপুর ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জনাব মোঃ খয়রাত আলী মুন্সী।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব অর্জন করেন মুন্সি আব্দুর রউফ।
গদ্য সাহিত্যে দক্ষতার জন্য রাম রাম বসু কেরি সাহেবের মুন্সি নামে খ্যাতি অর্জন করেন। আবার প্রমথনাথ বিশী “কেরি সাহেবের মুন্সি” নামে উপন্যাস লিখে অমর হয়ে আছেন।
এছাড়াও মুন্সী হাকিমউদ্দীন, মুন্সি প্রেমচাঁদ,কানহাইয়েলাল মানিকলাল মুন্সী,আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল কাদির নিজ নিজ কর্মগুনে স্মরনীয় হয়ে আছেন আমাদের মাঝে।
০৭ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১২
রবিন.হুড বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য। আমিও নিজে জানার চেষ্টা করছি ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:২৮
শায়মা বলেছেন: এত রকম মুন্সী সমাচার। অনেক কিছু জানা হলো ভাইয়া।