নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রবিন.হুড

রবিন.হুড › বিস্তারিত পোস্টঃ

অধিকাংশ মানুষের মতামত কেন ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়?

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:৫৩


আমাদের বর্তমান দুনিয়ায় আমরা দশজনের মতো চলতে ভালবাসি। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাপন থেকে শুরু করে ধর্মীয় জীবনও আমরা অধিকাংশ মানুষ যেদিকে যায় বা যা করে তা-ই করার চেষ্টা করি বা মেনে চলি। কেউ অধিকাংশের মতামতে না চললে তাকে আমরা তিরস্কারও করি। মোটকথা দশজনের মতো চলা বা অধিকাংশ মানুষের অনুসরণে চলা হচ্ছে যুগ যুগ ধরে করে আসা মানুষের রীতি।
কিন্তু আমরা যদি অধিকাংশের মতামতকে ইসলামের দৃষ্টিতে বিচার বিশ্লেষণ করি। তাহলে আমরা দেখতে পাই যে, অধিকাংশের মতামতকে ইসলাম গ্রহণযোগ্য বলে স্বীকৃতি দেয় না। আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে অসংখ্য আয়াতে অধিকাংশ মানুষকে এবং অধিকাংশ মানুষের কাজকে তিরস্কার করেছেন। এর কারণ কী? আল্লাহ্ কেন তাদের তিরস্কার করেছেন? আসুন আমরা কুরআনের আলোকে জানার চেষ্টা করি আল্লাহ্ কেন অধিকাংশ মানুষের মতামত গ্রহণ না।
অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাসী নয়ঃ
পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষই আল্লাহ্কে বিশ্বাস করে না। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অধিকাংশ মানুষ আল্লাহ্কে বিশ্বাস করেনি এবং করছে না। আল্লাহ্ বলেন,
কিন্তু তাদের অধিকাংশই (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাসী নয়। (সূরাঃ আশ-শো'আরা, আয়াতঃ ৮)
শুধু তাইনয় আজ বিশ্বে আস্তিকের চাইতে নাস্তিকের সংখ্যা বেশী। কিন্তু অতীতে এমন ছিলো না। যতই দিন যাচ্ছে ততই নাস্তিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং আল্লাহ্ যে ১৪০০ বছর আগেই ঘোষণা দিয়েছেন "অধিকাংশ বিশ্বাসী নয় " তা আজ সত্য প্রমাণিত।
এছাড়াও যারা নিজেদের মুসলিম দাবি করেন তাদের মধ্যেও অধিকাংশ পরিপূর্ণ বিশ্বাসী তথা ঈমানদার নয়। তাই আল্লাহ্ বলেন,
" (হে রাসুল) আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসকারী নয়।" (সূরাঃ ইউসূফ, আয়াতঃ ১০৩)
" যা কিছু আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, তা সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এতে বিশ্বাস করে না "। (সূরাঃ রা'দ, আয়াতঃ ১
" তাদের অধিকাংশের জন্যে শাস্তির বিষয় অবধারিত হয়েছে। সুতরাং তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না "। (সূরাঃ ইয়াসীন, আয়াতঃ ৭)
অতএব, পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষ কখনোই আল্লাহ্ বিশ্বাসী নয়। শুধু তাইনয় অধিকাংশ জন্মগত মুসলমানও কখনোই প্রকৃত ঈমানদার নয়। কেননা অধিকাংশ মানুষ ধর্ম সম্পর্কে গাফেল। সুতরাং অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ কখনোই সঠিক নয়। তাই আল্লাহ্ অধিকাংশ মানুষের মতামত ও বিশ্বাসকে সমর্থন করে না।
অধিকাংশের ঈমান শির্কযুক্তঃ
পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষই আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে আবার সাথে সাথে শির্কও করে। আল্লাহ্ বলেন,

অধিকাংশ আল্লাহকে বিশ্বাস করে কিন্তু সাথে শিরিকও করে "। (সূরা ইউসুফ- ১০৬)
আজ বিশ্বের সকল মুসলিম সম্প্রদায়ের দিকে তাকালে এ কথা স্পষ্ট হবে যে, অধিকাংশ মুসলমান মুখে ঈমানদার হলেও কাজে কর্মে বিশ্বাসে প্রতিনিয়তই আল্লাহর সাথে শির্ক করে। এখন কেউ যদি এইসব অধিকাংশ মানুষের মতামতকে মানদন্ড ধরে ইসলাম পালন করে। তাহলে সে মুশরিকে পরিনত হবে। আর যদি কেউ শির্ক করে তাহলে তার আর কাফেরের কোনো পার্থক্য থাকে না। কেননা আল্লাহ্ কাফেরদের কোনো ক্ষমা করবেন না। যতই তারা ভালো আমল করুক না কেন।
ঠিক তেমনি যারা ঈমান আনার পরও শির্ক করবে, তাদেরও আল্লাহ্ দুনিয়ায় তওবা করে ক্ষমা না চাইলে কিয়ামতে কখনোই ক্ষমা করবেন না। যদিও কিয়ামতে আল্লাহ্ তাঁর যেকোনো ঈমানদারের যেকোনো গুনাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন। আল্লাহ্ বলেন,
"নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল। (সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৪৮)
উপরোক্ত আয়াত থেকে প্রমাণিত যারা শির্কে লিপ্ত হবে, তাদের আখিরাতের কোনো ক্ষমা নেই। আর আল্লাহ্ নিজেই বলছেন যে, অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনলেও তারা শির্ক করে। অতএব অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ করতে গিয়ে কখনোই মুসলমান মুশরিকদের অনুসরণ করা যাবে না। কেননা ইসলামের আজ মুসলমান মুশরিকদের ছড়াছড়ি। সুফি সুন্নি মতবাদ এমনই একটি আকিদা যা সরাসরি কুরআন সুন্নাহর বিরোধী।
যাদের আধিপত্য ও আধিক্য দেখে তাদের সঠিক মনে করে তাদের অনুসরণ করলে কখনোই সঠিক ইসলাম পালন করা হবে না। যেকারণে আল্লাহ্ কুরআন সুন্নাহর বিপরীতে অধিকাংশের অনুসরণকে নিষিদ্ধ করেছেন।
অধিকাংশ মানুষই অকৃতজ্ঞঃ
পৃথিবীতে অধিকাংশ মানুষ হচ্ছে অকৃতজ্ঞ। তারা না সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ হয় না তারা মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ হয়। মানুষ জীনগত ভাবেই অকৃতজ্ঞ। খুব কম সংখ্যক মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আল্লাহ্ বলেন,
"তারা আল্লাহর অনুগ্রহ চিনে, এরপর অস্বীকার করে এবং তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ"। (সূরাঃ নাহল, আয়াতঃ ৮৩)
"কিন্ত অধিকাংশ লোক অনুগ্রহ স্বীকার করে না।" (সূরাঃ ইউসূফ, আয়াতঃ ৩৮)
"আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না"। (সূরা আল আ’রাফ, ১৭)
"কিন্তু অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই করে না।" (সূরাঃ আল-ফুরকান, আয়াতঃ ৫০)
যেহেতু মানুষের সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অকৃতজ্ঞতা। সেহেতু অধিকাংশ অকৃতজ্ঞ মানুষের অনুসরণ করা যাবে না। তাই আল্লাহ্ সত্য যাচাই ব্যতিরেকে অধিকাংশ মানুষের অনুসরণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছেন।

অধিকাংশ মানুষ আন্দাজ অনুমানে চলেঃ
মানুষের জন্মগত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা আন্দাজ অনুমান করে যেকোনো বিষয়ে কথা বলে। অধিকাংশ মানুষই কোনো বিষয়ে মতামত দেওয়ার সময় চিন্তাভাবনা বা গবেষণা বা সত্য যাচাই করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে না। আল্লাহ্ বলেন,
"বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই শুধু আন্দাজ-অনুমানের উপর চলে, অথচ আন্দাজ-অনুমান সত্যের বেলায় কোন কাজেই আসে না। আল্লাহ ভাল করেই জানেন, তারা যা কিছু করে"। (সূরাঃ ইউনুস, আয়াতঃ ৩৬)
মহান আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্ট মানুষ সম্পর্কে খুব ভালোভাবেই অবগত। তারা যে সত্য যাচাই করা ছাড়াই কথা বলে তা আল্লাহ্ ভালো জানেন। তাই যারা প্রকৃত আল্লাহ্ওলা বা ঈমানদার তাদের তিনি অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। কেননা অধিকাংশ মানুষ যেহেতু আন্দাজে চলে, সেহেতু তাদের অনুসরণ কখনোই সঠিক হতে পারে না।

বাস্তব জীবনে আমরা যদি ভালকরে লক্ষ্য করি তাহলে দেখতে পাবো যে, অধিকাংশ মানুষ ধর্ম সম্পর্কে অবগত নয়। তারা আন্দাজ অনুমান করেই ধর্মকর্ম পালন করে। এখন কেউ যদি সত্য যাচাই না করে অধিকাংশ মানুষের অনুসরণকে ইসলাম বলে মনে করে। তাহলে সে ভুল করবে। এই ভুল না করার জন্যই আল্লাহ্ সত্য যাচাই করতে বলেছেন এবং অধিকাংশের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন।
অধিকাংশ মানুষ জানে নাঃ
এই পৃথিবীতে মানুষের ব্যস্ততা দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে। তারা দুনিয়াদারী করার জন্য ধর্মকর্মে সময় দিতে পারে না। তাই অধিকাংশ মানুষ ইসলাম সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে অবগত নয়। আল্লাহ্ তাই বলেন,
"কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।" (সূরা আল আনআম, ৩৭ / সূরা আল কাসাস, ৫৭ / সূরা নমল, ৬১ / সূরাঃ ইউসূফ, আয়াতঃ ২১)
উপরোক্ত আয়াত ছাড়াও আরও আয়াতে আল্লাহ্ বারংবার ঘোষণা দিচ্ছেন যে, অধিকাংশ মানুষই সত্য জানে না। আর সত্য কী? সত্য হচ্ছে একমাত্র মহান আল্লাহ্। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কেন আল্লাহ্ সম্পর্কে জানে না তার কারণ আল্লাহ্ নিজেই কুরআনে বলে দিয়েছেন। আল্লাহ্ বলেন,
"কিন্তু তাদের অধিকাংশই মূর্খ"। (সূরা আল আনআম, ১১১)
অর্থাৎ অধিকাংশ মানুষ হচ্ছে মূর্খ। তারমানে এইনয় অধিকাংশ মানুষ পড়াশোনা জানে না। সত্যকথা হচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ দুনিয়ার জ্ঞানে জ্ঞানী। কিন্তু তারা আল্লাহর জ্ঞানে, ধর্মের জ্ঞানে, ইসলামের জ্ঞানে কেউ জ্ঞানী নয়। তাই তারা সত্য সম্পর্কে জানে না। আল্লাহ্ আরও বলেন,
" বরং তাদের অধিকাংশই সত্য জানে না; অতএব তারা টালবাহানা করে"। (সূরা আম্বিয়া, ২৪)
সুতরাং তারা যেহেতু সত্য জানে না তাই তারা সত্য মানতে চায় না। আজকে যদি আমরা অধিকাংশ মুসলমানদের দিকে দৃষ্টি দেই। তাহলে দেখতে পাবো যে, অধিকাংশ মানুষ দুনিয়াবী জ্ঞানে প্রচুর জ্ঞানী। কিন্তু ইসলামের জ্ঞান মোটেই নেই। তারা ইসলাম পালন করে শুধুমাত্র অধিকাংশ পূর্বপুরুষদের অনুসরণে।
অতএব, সত্য জ্ঞান ছাড়া অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ কখনোই সঠিক হতে পারে না। তাই আল্লাহ্ সত্যের বিপরীতে অধিকাংশের অনুসরণকে তিরস্কার করেছেন। কেননা আল্লাহ্ জানেন,
অধিকাংশ মানুষ প্রকৃত ব্যাপার সম্পর্কে অবগত নয়। (১২/সূরা ইউসুফ, ৬৮)
সুতরাং যারা বুঝে না জানে না, তাদের কখনোই অনুসরণ করা যাবে না। তারা যতই সংখ্যাগরিষ্ঠ হোক না কেন। আমাদের উপমহাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা সুফিবাদী সুন্নি। তাদের ঈমান আকিদা সম্পূর্ণ কুরআন সুন্নাহর বিরোধী। এখন কেউ যদি তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখে তাদেরকে সত্য মনে করে তাদের অনুসরণ করে। তাহলে আল্লাহ্ কখনোই তাকে মেনে নিবেন না। কেননা সত্যের বিপরতী কখনোই অধিকাংশের অনুসরণ আল্লাহ্ পছন্দ করেন না।

অধিকাংশ মানুষ জ্ঞানহীনঃ
পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে তাদের যেকোনো বিষয়ে কোনো প্রকার জ্ঞান নেই। অর্থাৎ তারা কোনো কিছু নিয়ে জ্ঞান চর্চা করে না। তাদের চিন্তা চেতনায় আছে শুধু দুনিয়াদারী। তারা সৃষ্টি, সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টিজগত সম্পর্কে জানার বা চর্চার করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে না। তাই আল্লাহ্ বলেন,

"তাদের অধিকাংশই জ্ঞান রাখে না।" (আর রূম-৬,সূরা লোকমান- ২৫)
সুতরাং অধিকাংশ মানুষ জ্ঞান দিয়ে কথা বলে না। কারণ আল্লাহ্ বলেন,
তাদের অধিকাংশেরই বিবেক বুদ্ধি নেই"। (৫/সূরা মায়েদাহ, ১০৩)
অতএব যাদের বিবেক বুদ্ধি নেই সেইসব সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অনুসরণ করা যাবে না।
অধিকাংশ হুকুম অমান্যকারীঃ
মানুষের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা অপরাধপ্রবণ। মানুষের কষ্ট হলে তারা কোনো কিছু মানতে চায় না। আর আল্লাহ্ মানুষ সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষা করার জন্য। যেহেতু মানুষকে তিনি পরীক্ষা করবেন সেহেতু তাদের বিভিন্ন হুকুম আহকাম মানতে হবে। অথচ মানুষ তা মানতে নারাজ। তাই আল্লাহ্ বলেন,
" আর তাদের অধিকাংশ লোককেই আমি প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নকারীরূপে পাইনি; বরং তাদের অধিকাংশকে পেয়েছি হুকুম অমান্যকারী"। (সূরা আল আ’রাফ, ১০২)
সুতরাং অধিকাংশ মানুষ যেহেতু হুকুম মান্য করে না, সেহেতু অধিকাংশ মানুষের মতামত কখনোই গ্রহণ করা যাবে না।
অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারীঃ
অধিকাংশ মানুষ যেহেতু সুবিধাভোগী সেহেতু তারা শৃঙ্খলিত জীবনযাপন পছন্দনীয় নয়। তাই তারা কখনোই আল্লাহর আইনকানুনে বিশ্বাসী হয় না। যদি কোনো কারণে আল্লাহর কাছে তারা প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা তা রক্ষা করে না। তাই আল্লাহ্ বলেন,
"তাদের অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী"। (সূরা আত তাওবাহ, ৮)
অর্থাৎ অতীতের অসংখ্য জাতি গোষ্ঠী রয়েছে, যারা আল্লাহর আযাবের সামনে তাঁর আইনকে মানার ওয়াদা করলেও তা তারা বাস্তবায়ন করেনি। বরং তারা ছিলো হুকুম অমান্যকারী। আল্লাহ্ বলেন,
" আর তাদের অধিকাংশ লোককেই আমি প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নকারীরূপে পাইনি; বরং তাদের অধিকাংশকে পেয়েছি হুকুম অমান্যকারী।" (সূরাঃ আল আ'রাফ, আয়াতঃ ১০২)
শুধু তাইনয়, বর্তমানে যারা নিজেদের মুসলমান দাবি করে, তাদের অধিকাংশই আল্লাহর হুকুম আহকাম মোটেই মেনে চলে না। তারা তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণে ইসলাম পালন করে। সুতরাং সত্যের বিপরীতে অধিকাংশ মুসলমানদের অনুসরণে চললে কখনোই তা আল্লাহর পছন্দনীয় হবেনা।
অধিকাংশ অস্বীকারকারীঃ
আল্লাহ্ যুগে যুগে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর কাছে তাঁর সত্যের পয়গাম পাঠিয়েছেন। কিন্তু অল্পসংখ্যক ছাড়া অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর সত্যকে মেনে নেয়নি। তাই আল্লাহ্ বলেন,
"কিন্তু অধিকাংশ লোক অস্বীকার না করে থাকেনি"। (সূরাঃ বনী ইসরাঈল, আয়াতঃ ৮৯)
উপরোক্ত আয়াতের সত্যতা হচ্ছে, এখনো যারা নিজেদের মুসলিম দাবি করে ; তাদের অধিকাংশই আল্লাহর আইনকানুন মেনে চলে না। সুতরাং যারা আল্লাহর আইনকানুন অস্বীকার করে, তাদের কীভাবে অনুসরণ করা যাবে?



অধিকাংশ লোক পথভ্রষ্টঃ

পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ যেহেতু আল্লাহর কথা শোনে না বা বোঝার চেষ্টা করে না সেহেতু তারা জ্ঞানহীন। আর যারা জ্ঞানহীন তারা সঠিক কোনো কিছুই বুঝতে পারে না। আর যাদের ভালো মন্দ বোঝার জ্ঞান নেই তারা পশুপাখির সমান। আল্লাহ্ বলেন,
" (হে রাসুল) আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে ? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত"। (সূরাঃ আল-ফুরকান, আয়াতঃ ৪৪)
অর্থাৎ, তাদের যেহেতু সত্য বোঝার হিতাহিত জ্ঞান নেই তাই তারা পশুদের মতো পথভ্রষ্ট। আর যারা পথভ্রষ্ট তারা কখনোই সঠিক পথপ্রাপ্ত হতে পারে না। আল্লাহ্ আরো বলেন,
"তাদের পূর্বেও অগ্রবর্তীদের অধিকাংশ বিপথগামী হয়েছিল।"(সূরাঃ আস-সাফফাত, আয়াতঃ ৭১)
সুতরাং পূর্ববর্তীতের অধিকাংশই ছিলো পথভ্রষ্ট। শুধু তাইনয় যারা নিজেদের মুসলমান দাবি করে কুরআন সুন্নাহর বাইরে গিয়ে নিজস্ব মতামত, প্রবৃত্তির অনুসরণ কিংবা পূর্বপুরুষদের অনুসরণ করে। তারাও আল্লাহর বিচারে পথভ্রষ্ট।
অতএব, পথভ্রষ্ট অধিকাংশের অনুসরণ কখনোই আল্লাহর সঠিক পথ নয়। যদিও তারা দাবি করে তারা আল্লাহর পথে আছে। সুফিবাদী মতবাদ হচ্ছে এমনই একটি পথভ্রষ্ট আকিদা। যদিও তারা সংখ্যায় অধিক।

অধিকাংশ মুশরিকঃ
সৃষ্টির শুরু থেকেই আল্লাহ্ তাঁর তাওহীদের বানী প্রচার করেছিলেন নবী রাসুলদের দ্বারা। তাঁরা হাজারো চেষ্টা করলেও অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস স্থাপন করেনি। বরং তারা করেছিল শির্ক। এতে তারা মুশরিকে পরিনত হয়। রাসুলুল্লাহ সাঃ এর আগমনের পূর্বে পুরো বিশ্বে সকলেই ছিলো মুশরিক কাফের । তাই আল্লাহ্ বলেন,
(হে রাসুল) বলুন, তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং দেখ তোমাদের পুর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছে। তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক" (সূরাঃ আর-রূম, আয়াতঃ ৪২)
অর্থাৎ পূর্বে অধিকাংশ জাতি গোষ্ঠী আল্লাহ্কে বিশ্বাস করার পাশাপাশি দেবদেবীর উপাসনা করে মুশরিকে পরিনত হয়েছিল। আজও যারা নিজেদের মুসলিম দাবি করে তাদের মধ্যেও অধিকাংশ মুসলমান বিভিন্ন ভাবে শির্কে লিপ্ত। শির্কের তিনটি প্রকার রয়েছে। শির্কে রুবুবিয়্যা, শির্কে উলুহিয়্যা ও শির্কে আসমা ও সিফাত।
পূর্ববর্তীদের মতো আজও অধিকাংশ মুসলমান এইসব শির্কে লিপ্ত আছে। বিশেষকরে সুফিবাদ একটি শির্কি মতবাদ। সুতরাং সংখ্যাগরিষ্ঠ সুফিবাদীদের কখনোই অনুসরণ করা যাবে না।

শয়তানে বিশ্বাসীঃ
সৃষ্টির শুরু থেকেই আল্লাহর পাশাপাশি শয়তানের পদচারণাও পৃথিবীতে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে। শয়তান মানুষকে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে তার আরাধনা করতে উৎসাহিত করে। ফলে যুগে যুগে অধিকাংশ মানুষ আল্লাহ্কে ভুলে গিয়ে তাঁর পরিবর্তে শয়তানকে বিভিন্ন রূপে পূজা করতে শুরু করে। আল্লাহ্ বলেন,

ফেরেশতারা বলবে, আপনি পবিত্র, আমরা আপনার পক্ষে, তাদের পক্ষে নই, বরং তারা জিনদের পূজা করত। তাদের অধিকাংশই শয়তানে বিশ্বাসী। (সূরাঃ সাবা, আয়াতঃ ৪১)
উপরোক্ত আয়াত ভবিষ্যতের সাক্ষী। যারা এখনও ইসলামের নামে শয়তানের বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে শয়তানের অনুসারী হচ্ছে তাদের জন্য। অধিকাংশ মানুষ প্রবৃত্তির অনুসরণ ও পূর্বপুরুষদের অনুসরণ করে শির্ক বিদআতে লিপ্ত হচ্ছে। এইসব কর্মকান্ড প্রকান্তরে শয়তানের কর্মকান্ড। যা অধিকাংশ মানুষকে শয়তানের অনুসারীতে রূপান্তরিত করছে। সুতরাং সত্যের বিপরীতে অধিকাংশ শয়তানের বিশ্বাসীদের অনুসরণ করা যাবে না।
অধিকাংশ শোনে নাঃ
মিথ্যার বিপরীতে আল্লাহর সত্যকে যুগে যুগে অধিকাংশ মানুষ গ্রহণ করেনি। তারা আল্লাহর প্রেরিত নবী রাসুলদের কথা শোনেনি। তাদের অধিকাংশই আল্লাহর সত্য ধর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। তাই আল্লাহ্ বলেন,
অতঃপর তাদের অধিকাংশই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা শুনে না। (সূরা হামীম সেজদাহ, ৪)
সুতরাং অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর কথা তথা আল্লাহর আইনকানুন বিধিবিধান মেনে চলার পক্ষপাতী নয়। এটাই মানুষের রীতি। তাই অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর কথা শোনে না।
শুধু তাইনয়, আজ নিজেদের মুসলিম দাবি করা অসংখ্য মুসলমান আছে, যারা নামে মুসলিম হলেও ইসলামের বিধি বিধান আইনকানুনের ধার ধারে না। তারা ইসলামের সঠিক আইনের অনুসারী নয়। অতএব এইসব অধিকাংশ মানুষের মতবাদ কখনোই গ্রহণ করা যাবে না।

অধিকাংশের সত্যধর্মে নিস্পৃহাঃ
সৃষ্টির অনাদিকাল থেকে আল্লাহর সত্যধর্ম ছাড়াও অসংখ্য ধর্ম মানুষ নিজেরাই তৈরী করেছে। কেননা তাদের সত্যধর্মের প্রতি অনীহা। আল্লাহর ধর্মে প্রবৃত্তির অনুসরণ প্রবলভাবে নিষিদ্ধ। প্রতিটি বিষয়ে আল্লাহর রয়েছে নিজস্ব বিধি বিধান। যা অধিকাংশ মানুষ তার সৃষ্টিগত কারণে গ্রহণ করেনি। এই কারণে আল্লাহ্ বলেন,
" আমি তোমাদের কাছে সত্যধর্ম পৌঁছিয়েছি; কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই সত্যধর্মে নিস্পৃহ! (সূরাঃ যুখরুফ, আয়াতঃ ৭৮)
অতএব, অধিকাংশ মানুষ সত্যধর্ম ইসলামকে গ্রহণ করবে না এটাই স্বাভাবিক। শুধু তাইনয়, বর্তমানেও যারা মুসলমান দাবিদার রয়েছে, তারাও ইসলামের সকল হুকুম আহকাম বিধি বিধানে সন্তুষ্ট নয়। যারফলে অধিকাংশ মুসলিম ইসলামের রীতিনীতি পালনে অনীহা প্রকাশ করে।
সুতরাং এইসব নামধারী অধিকাংশ মুসলমানদের যদি সত্যের মাপকাঠি ধরা হয়, তাহলে তা হবে চরম ভুল। আজ ইসলামের নামে অধিকাংশ মানুষই সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে প্রাধান্য দিয়ে ধর্ম পালন করছে। যা কুরআন সুন্নাহর সম্পূর্ণ বিপরীত। অতএব, সত্য বিমুখ অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ করা যাবে না।

অধিকাংশ পাপাচারীঃ
মানুষের আচরণগত বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে, সে কোনো বাঁধা নিষেধ মানবে না। সেই অনাদিকাল থেকেই মানুষের মধ্যে এই আচরণ বিদ্যমান। যারফলে অধিকাংশ মানুষ হয়ে উঠে পাপাচারী। কেননা তারা আল্লাহর আদেশ নিষেধ মানতে রাজি নয়। তাই আল্লাহ্ বলেন,


" যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী"।(সূরাঃ আল হাদীদ, আয়াতঃ ১৬)
সুতরাং পাপাচারী হওয়া মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্য। এখনো অধিকাংশ মুসলমান সঠিক ইসলাম পালনে রাজি নয়। তারা আল্লাহর বিধি বিধানের তোয়াক্কা না করে নানাবিধ পাপে লিপ্ত। তাই এইসব পাপাচারী অধিকাংশ মুসলমানের অনুসরণ করা যাবে না। সত্যের বিপরীতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা কখনোই ইসলামের মানদন্ড নয়।
অধিকাংশ সত্যকে অপছন্দ করেঃ
পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই সত্যকে অপছন্দ করে। কেননা সত্যকে মানতে হলে কষ্ট স্বীকার করতে হবে। তাই আল্লাহ্ বলেন,
" তাদের অধিকাংশ সত্যকে অপছন্দ করে"। (সূরা আল মুমিনূন, ৭০)
আল্লাহ যেহেতু মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য দুনিয়া পাঠিয়েছেন সেহেতু তাদের জন্য বিভিন্ন বিধি বিধান তিনি নাযিল করেছেন। এইসব বিধি বিধান মেনে নেওয়া সকলের জন্য সম্ভব নয়। যেহেতু মানুষ প্রবৃত্তির অনুসারী।

তাই অধিকাংশ মানুষ এইসব সত্য নিদর্শন আল্লাহর বিধি বিধান মানতে রাজি নয়। তাই তারা সত্যকে অপছন্দ করে। শুধু তাইনয় বর্তমান বিশ্বে অধিকাংশ মুসলমানই মানুষই ইসলামের বিধি বিধানকে মানে না। অতএব অধিকাংশ মানুষ যারা সত্যকে পছন্দ করে না তাদের কখনোই অনুসরণ করা যাবে না।

অধিকাংশ মিথ্যাবাদীঃ

পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই হচ্ছে মিথ্যাবাদী। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মিথ্যাবাদী মানুষের অনুসরণ করা যাবে না। আল্লাহ্ বলেন,

"তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী"। (সূরা আশ শো’আরা, ২২৩)
অধিকাংশ শুকরিয়া জ্ঞাপন করে নাঃ
পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই সহজে আল্লাহর কিংবা মানুষের কারোরই শুকরিয়া জ্ঞাপন করে না। আল্লাহ্ বলেন,
" নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের উপর অনুগ্রহকারী। কিন্তু অধিকাংশ লোক শুকরিয়া প্রকাশ করে না"। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ২৪৩)
শুধু তাইনয় শয়তান আল্লাহর সাথে চ্যালেঞ্জ করেছিল যে, অধিকাংশ মানুষকে সে এমনভাবে পথভ্রষ্ট করবে যেন তারা আল্লাহর শোকর আদায়কারী না হয়।
" (হে আল্লাহ্) আপনি তাদের অধিকাংশকে শোকর আদায়কারী পাবেন না।" (সূরাঃ আল আ'রাফ, আয়াতঃ ১৭)
সুতরাং যারা সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করে না তাদের কীভাবে অনুসরণ করা যাবে? অতএব অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ করা যাবে না।

অধিকাংশ মানুষ বোঝে নাঃ

মানুষের চিরাচরিত চরিত্রই হচ্ছে তারা কোনো কিছু বোঝার চেষ্টা করে না। তাই আল্লাহ্ বলেন,
কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বোঝে না। (৪৫/সূরা আল জাসিয়া, ২৬)
অধিকাংশই অবুঝ। (৪৯/সূরা আল হুজরাত, ৪)
কিন্তু তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করে না।(সূরাঃ আল আ'রাফ, আয়াতঃ ১৮৭)
উপরোক্ত আয়াত থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, অধিকাংশ মানুষ সত্যকে উপলব্ধি করার বা বুঝার চেষ্টা করে না। তারা নিজে যা বুঝে কিংবা পূর্বপুরুষদের অনুসরণে যা পেয়েছে তা-ই অনুসরণ করে কিংবা মেনে চলে। যা বর্তমান যুগের অধিকাংশ মুসমানই করে যাচ্ছে।
এই মুসলমানদের যতই সত্য বুঝানো হোক না কেন, তারা তা মানতে নারাজ। তারা তাদেরটা ছাড়া আর কোনো কিছুই বুঝতে চায় না। তাই আজ অধিকাংশ মুসলমানই কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে জ্ঞানহীন। সুতরাং অধিকাংশ মানুষ যারা সঠিক সত্য বুঝে না তাদের কখনোই অনুসরণ করা যাবে না।

অধিকাংশ মতে চলা যাবে নাঃ
আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে অসংখ্য আয়াতে অধিকাংশ মানুষের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করেছেন। এইসব কাজ বা স্বভাব কোনটাই আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় নয়। সুতরাং এইসব কাজে আল্লাহ্ কখনোই সন্তুষ্ট নয়। তাই আল্লাহ্ বলেন,
"আর যদি (হে রাসুল) আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে। "(সূরাঃ আল আনআম, আয়াতঃ ১১৬)
উক্ত আয়াতের শিক্ষা হচ্ছে, আল্লাহ্ তাঁর রাসুল সাঃকে দিয়েই পৃথিবীর মানুষকে শিক্ষা দিচ্ছেন যে, রাসুল সাঃ ও যদি অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ করেন, তবে তারা রাসুলকেও বিপদগামী করেন দিবেন। সুতরাং ইসলামে সত্যের বিপরীতে অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ কখনোই করা যাবে না।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, অধিকাংশ মানুষের আচার আচরণ, রীতিনীতি, চলা চরিত্র কখনোই সুশীল নয়। কেননা যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, সেই মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ নিজেই অধিকাংশ মানুষের কাজকর্ম বিশ্বাস ইত্যাদিকে অপছন্দ এবং তিরস্কার করেছেন। কেননা অধিকাংশ মানুষের বিশ্বাস ও কর্মকান্ড কখনোই সত্য নয়। এবং তা সবসময়ই কুরআন সুন্নাহর বিপরীত।
সুতরাং সঠিক ইসলামের বিপরীতে কখনোই অধিকাংশ মানুষের দোহাই দিয়ে সত্যকে পিছনে দেওয়া যাবে না। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষেরা যা করে তা কখনোই ইসলামের মানদন্ড নয়। ইসলামের মানদন্ড হলো কুরআন এবং সুন্নাহ। অতএব সংখ্যাগরিষ্ঠতার ধোঁয়া তুলে সুফিবাদসহ যেকোনো ইসলাম বিরোধী মতবাদ কখনোই ইসলামের নামে গ্রহণযোগ্য হবেনা।

সূত্রঃ সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী এর ব্লগ

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:১০

রাসেল বলেছেন: আপনার লেখায় কিছু উদাহরণ থাকলে আমরা নিজেরাই বিচার করতে পারতাম। আমরা ভুল বা সঠিক। ধন্যবাদ ।

২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৫

নতুন বলেছেন: অন্ধবিশ্বাস পাক্কা অনুসারী তৌরি করে, আলোচনার সুযোগ দিলেই ঘাপলা ধরা পরে এবং অনুসারী কমে যায়।

যেমন তা বিভিন্ন পীরের অনুসারীর মাঝে দেখতে পাবেন, একটা সময় পরে এমুক পীরের অনুসারী কমতে থাকে...

বর্তমানে পীরের দরগাতে/পানিপড়ে নিতে মানতে মানুষ কম ভীর করে। সামনে আরো কমে যাবে...

তাই র্ধমে আলোচনার সুযোগ দিলে অন্ধবিশ্বাস কমে যাবে, অনুসালী কমে যাবে...

৩| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:০২

রাজীব নুর বলেছেন: জ্ঞানহীন কারা? ধার্মিকেরা?

৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:৪৭

অধীতি বলেছেন: আপনি প্রথমে বল্লেন সৃষ্টির শুরু থেকেই অধিকাংশ মানুষ আল্লাহকে বিশ্বাস করেনি। আবার একটু পরে বল্লেন এখন নাস্তিকদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৪০০ বছর আগের কথা প্রমাণিত হলো। বিষয়টা বুঝলাম না। আপনি যেসব আয়াত দিয়ে লিখেছেন সেগুলোর তাফসীর কি এগুলোই বলে? নাকি ওই সময়কার ঘটনাবলীও জড়িত?

৫| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৮

বিটপি বলেছেন: অধিকাংশ মানুষ ভোট দিতে জেসাসের পরিবর্তে একজন ভয়ংকর সিরিয়াল কিলারকে মুক্ত করে দিয়েছিল।
অধিকাংশ লোক ভোট দিয়ে মমতাজ বেগম নামের এক নর্তকীকে সংসদে পাঠিয়েছে।

৬| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:২০

কিরকুট বলেছেন: ১৪০০ বছর আগের কোন কথা খানা প্রমান হলো?

১৪০০ বছরের অনক আগের অনেক কথাই প্রমানীত হবে বা হচ্ছে তাদের ব্যাপারর আপনার কি মতামত??

৭| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১১:৫৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: একটা গণতান্ত্রিক দেশেও দেখা যায় যে দেশের অধিকাংশ মানুষ সরকারী দলের বিপক্ষে কিন্তু তারা সরকার চালাচ্ছে। একটা দল ৩৫% ভোট পেয়েও সরকার গঠন করতে পারে। সেই ক্ষেত্রে ৬৫% সরকারের বিপক্ষে থাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.