নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রবিন.হুড

রবিন.হুড › বিস্তারিত পোস্টঃ

অব্যক্ত ভালোবাসা-পর্ব-৮

০১ লা জুন, ২০২৩ দুপুর ২:৫৪

ঢাকায় আসা আকাশের জন্য প্রথম না। এর আগেও সে এসেছে বড় মামার বাসায় বেড়াতে এবং নানাবিধ কাজে মায়ের সাথে। তবে এই বার ঢাকায় এসেছে একাকী নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে আর তা হচ্ছে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। মনের আশা পুরণ হওয়ার আগে বাংলা সিনেমার সেই গানটির কথা মনে করে সামান্য তৃপ্তি পায়।“ ঢাকার শহর আইসা আমার আশা পুরাইছে, লাল লাল নীল নীল বাতি দেইখা পরান জুড়াইছে”। বাস্তবে আকাশের পরান জুড়াইলো না কারন যে আশায় বড় মামার বাসায় গিয়ে উঠেছিল তা পুরণ হলো না। মামার বাসায় থাকতে না পেরে মহানগর ছেড়ে ঢাকার অদূরে বোনের ছোট্ট সংসারে কিছু দিন থাকার সুযোগ পায়। নানা রকম লজিস্টিক সাপোর্টের অভাবে পছন্দসই নাম করা কলেজে ভর্তি হতে না পেরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পাশে একটা কলেজে আকাশ উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তি হয়। নতুন প্রতিষ্ঠানের নতুন সহপাঠিদের মাঝে থেকেও আকাশের মন পড়ে থাকে স্কুলের আঙ্গিনায়। সপ্তাহ শেষে সাধারণ জ্ঞান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সেই গান, “একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গায়”। সবচেয়ে মনে পড়ে কোকিল কণ্ঠী ইশরাত কে। ঢাকার শহরের এই নাগরিক ব্যস্ততা, উচ্চ মাধ্যমিকের পড়ালেখার ভিড়ে আকাশের হ্রদয় থেকে একবারও মুছে যায় নি ইশরাতের নাম। বারবার জানতে মন চয় ইশরাত নুশরাত সিলেটে কেমন আছে, কোথায় তারা ভর্তি হলো। তাদের পরিবারের সবাই কেমন আছে। তারা কি আমার কথা মনে রেখেছে। তাদের ভাবনায় আকাশের হ্রদয় সর্বদা ব্যকুল থাকে। বিরহ ও হ্রদয়ের রক্ত ক্ষরণ নিয়ে আকাশ জীবনের তাগিদে টিউশনী ও পার্ট টাইম জব করে পড়া লেখা চালিয়ে যায়। এরই মাঝে তার মনে আর একটা গান এর কথা ভেসে ওঠে, “ ও সকিনা গেছস কিনা ভুইলা আমারে, আমি এখন রিক্সা চালাই ঢাকার শহরে”।
আকাশ ঢাকার শহরে রিক্সা না চালালেও বেবি ট্যাক্সি চালাবে বলে মনে মনে স্থির করেছিল। অভাগা যে দিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায়। আকাশের জীবনে এই প্রবাদ অনেকবার প্রমাণিত হয়েছে। সে যার নিকট বেবি ট্যাক্সি চালানো শিখবে বলে মন স্থির করেছে সে নিজেই বেবী ট্যাক্সি চালানো ছেড়ে দিয়েছে। আর হলো না তার বেবি ট্যাক্সি চালানো তবে বেবি বয়সের বা শিশুকালের স্মৃতি ধরে রেখেছে এখোনো। গানের কথায় বলতে হয়, “ ছোট্ট বেলার প্রীতি সে কি ভোলা যায়, কত ব্যাথা কত স্মৃতি আমাকে কাঁদায়”। প্রীতি না করেও আকাশ বিরহ যন্ত্রণায় কাতর হয়ে জীবনের কঠিন চ্যালেনঞ্জ মোকাবেলা করে জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে পড়ালেখা চালিয়ে যায়। নানা বিধ কারণে প্রতিকূল পরিবেশে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা না করতে পারলেও আকাশ প্রথম বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মায়ের নিকট খবর পৌছাতে রাত বারটার গাড়িতে আকাশ পৌছায় বাড়িতে। আসলে যোগাযোগ ব্যবস্থা এতো টা উন্নত নয়। পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে রাত তিনটায় গাড়ি পৌছায় উপজেলা শহরে । গভীর রাতে কোন যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেটে একাকী আকাশ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বাঁশবাগান ও মন্দিরের গা গেষে সকল ভয়কে জয় করে অবশেষে পৌছায় মায়ের কাছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০২৩ বিকাল ৪:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: এই সমাজে অনেক ভালোবাসা অব্যক্ত থেকে যায়।

০৪ ঠা জুন, ২০২৩ সকাল ১০:০৩

রবিন.হুড বলেছেন: ঠিক বলেছেন। এ রকম মনে হয়, ভালোবেসে গেলাম শুধু ভালোবাসা পেলাম না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.