![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পার্কের ঠিক যে জায়গাটায় পত্রঝরা বৃক্ষের পাতাগুলো চরকির মতো ঘুরতে ঘুরতে একজোট হয়ে পড়ত, ঠিক সেখানেই একটা বিশাল পাথর ছিল। বিশাল সেই পাথরটার কোনও নাম ছিল না।
আমরা ছোট থেকেই পাথরটা দেখতাম স্কুলে যাওয়ার পথে। অদ্ভুত গড়ন সেই পাথরের, দূর থেকে দেখে মনে হয় একটা মানুষ বসে আছে গম্ভীর হয়ে। আমরা সেটা নিয়ে দারুণ গল্প ফাঁদতাম। আমাদের দলে ইন্ডিয়ান ছিল গোটাকয়। তারা বলত ওটা শিবের মূর্তি। পাথরটার মাথায় একটা টিউমারের মতো এক্সটেনশন ছিল, ওরা বলত ওটা তার জটা। ওরা মাঝেমধ্যে ওটা ধুইয়ে দিত। আমাদের সাথে দুজন ভাই ছিল হিস্পানিক। ওরা 'মি মাদ্রে মি মাদ্রে' বলে ঝাপিয়ে পড়ত পাথরটার পায়ে। তারপর বড়ভাইটা স্প্যানিশ বাইবেলের একই ভার্স বারবার আওড়াতো। ছোট ভাইটার নাম ছিল হুগো। হুগো ওসব কিছু বুঝতো না। সে ভাইকে দেখে দেখে শুধু অনুসরণ করতো।
আমাদের সাথে ককেশীয় ছেলে ছিলো দুটো, তারা পাথরটা নিয়ে তেমন একটা ভাবত না। শুধুমাত্র মাঝে মাঝে হাত উঁচু করে নাজি স্যালুটের মতো বাড়িয়ে বলত, 'বাস্টার্ডস'।
যদিও স্কুলে যাওয়ার পথে আমরা এসব বলতাম। আসার পথে এসব কারও মনে থাকতো না। আমরা সেই পাথরটাকে আড়াল করে লুকোচুরি খেলতাম। কারও পাথরটার কথা মনে থাকতো না।
কিন্তু একদিন সব পাল্টে গেল। হুগো আর ককেশীয় একটা ছেলে দারূণ ঝগড়া লাগিয়ে দিল, কে ঠিক তা নিয়ে। যদিও তারা দুজনই ঠিক ছিল, তবুও কথা কাটাকাটি মারামারিতে রূপ নিল। হঠাৎ আমরা দেখলাম পাথরটা একটা বিশাল মানুষে রূপ নিচ্ছে। আমরা চিৎকার করতে লাগলাম। পাথরটা তার বিশাল হাত দিয়ে হুগোর মাথায় একটা আঘাত করল। ওর মাথাটা ফেটে দুইভাগ হয়ে গেল। পাথরের মানুষটা আবার আগের অবস্থায় চলে গেল। আমরা ভয়ে দৌড়াতে লাগলাম।
একটু পরে পুলিশকাকু এসে যখন জিজ্ঞেস করতে লাগল, 'খুনির নাম কি'। আমরা কিছু বলতে পারলাম না।
কারণ, পাথরটার কোনও নাম ছিল না।
©somewhere in net ltd.