![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দিলারা বেগমের লাশটা চোখ উল্টিয়ে হা করে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে, চাতক পাখির মতো। মাথার কাছের অংশটা থেতলে কিছুটা মগজ কায়দা করে বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। দশতলার ছাদ থেকে পড়ে ষাটোর্ধ্ব দিলারা বেগমের হাত আর পায়ের ক্ষয়প্রাপ্ত হাড়গুলো একটা অস্বস্তিকর ভঙ্গিতে রাস্তার সাথে লেপ্টে থাকে। প্রবল আঘাতে শরীর থেকে বের হওয়া রক্তের ধারাটা ফুটপাতের ইঠগুলোর ফাঁকে ফাঁকে খালি জায়গায় নকশা করে ড্রেনের দিকে এগুতে থাকে।
দিলারা বেগমের অশরীরী আত্মাটা মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে রাস্তায়। এ কি করলেন তিনি! ছেলের বউয়ের সাথে রাগ করে ছাদে গিয়ে লাফ দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। নীলা এসেছিল পেছন পেছন। ছাদের কার্ণিশে দাঁড়িয়ে তাকে ভয় দেখিয়েছিলেন লাফ দেয়ার। দিলারা বেগমের লাফ দেয়ার কোন ইচ্ছাই ছিল না। কাঁচা আমের আচার শুকাতে দিয়েছিলেন ছাদে, নাতিরা খেতে চেয়েছে বলে। দুদিন পর বয়াম করবেন। অন্তত এখন তো নাইই। হুট করে কি যে মনে হলো! মাথার ভেতরে কে যেন বলল," দে! দে শিক্ষা ওরে একটা!" দিলেন লাফ।
দিলারা বেগমের লাশটা সবাই ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ কাছে আসার সাহস পাচ্ছে না। দিলারা বেগম সব দেখছেন। তার ভীষণ বিরক্ত লাগছে। নিজের লাশটা দেখতে খুব বিশ্রী লাগছে। বয়সকালে তিনি অনেক সুন্দরী ছিলেন। নিজের এমন বিদ্ঘুটে চেহারা দেখবেন কোনদিন কল্পনা করেন নি। কিছু করার নেই, খোকা অফিস থেকে না আসার আগে কেউ উঠাবে মনে হয় না। নীলা মেয়েটা হুটহাট ভুল করলেও খুব নরম। এতক্ষণে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে মনে হয় এসব দেখে। নাহ! ওর সাথে এতটা রাগ করা ঠিক হয় নি। কি আর করা! খোকা আসুক।
এক ঝাঁক মানুষের মাঝখানে লাশটা পাশে নিয়ে বসে রইলেন দিলারা বেগম। তার রাগটা পড়ে এসেছে।
©somewhere in net ltd.