নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.facebook.com/glasnikmira13

মো. মোস্তাফিজুর রহমান শিহাব

www.facebook.com/glasnikmira13

মো. মোস্তাফিজুর রহমান শিহাব › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেখানে শান্তি নেই, সেখানে ইসলাম নেই

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০৩

বর্তমানে আমাদের সামনে যে ইসলামটি রয়েছে, যে ইসলামকে ধর্মপ্রাণ মানুষ অতি যত্ন সহকারে পালন করার চেষ্টা করছে, যে ইসলামকে বিদ্যালয়ে, কলেজে, মাদ্রাসায় শিখানো হচ্ছে সেটা প্রকৃত ইসলাম নয়।
বর্তমানে আমরা যে ইসলামকে দেখি সেই ইসলাম ও আল্লাহর রসুলের প্রকৃত ইসলামের মধ্যে অনেক ব্যবধান রয়েছে। উদাহারণ হিসেবে আমরা একটি জীবিত মানুষ ও একটি লাশের কথা চিন্তা করতে পারি। একজন জীবিত মানুষ ও একটি লাশের মধ্যকার বাহ্যিক কোন তফাত দেখতে পাওয়া যায় না। কিন্তু দুটোর মধ্যে বিশাল ফারাক রয়েছে। প্রাণ না থাকায় একটি জীবিত ও অন্যটি যত সুন্দর, আকর্ষণীয় ও সুগঠিত হোক না কেন মৃত লাশ ছাড়া আর কিছুই না। তেমনি শেষ নবী কর্তৃক আনীত ইসলাম ও বর্তমান ইসলামের মধ্যে বাহ্যিক অনেক মিল পাওয়া গেলেও তাদের উভয়ের মধ্যেই জীবিত দেহ ও মৃত দেহের মতই বিস্তর ফারাক বিদ্যমান।
আল্লাহ যে উদ্দেশ্যে এ দীন অর্থাৎ ইসলাম প্রেরণ করেছেন সেই উদ্দেশ্যই এখন বদলে গিয়েছে। আমরা পবিত্র কোর’আন থেকে ইসলাম প্রেরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে পারি। আল্লাহ যখন পৃথিবীতে তাঁর খলিফা অর্থাৎ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি সম্পন্ন নতুন সৃষ্টি প্রেরণ করতে চাইলেন তখন মালয়েকরা যুক্তি উপস্থাপন করেছিল যে, আল্লাহর প্রশংসা করার জন্য তারাই যথেষ্ট নয় কী! এই নতুন সৃষ্টি পৃথিবীতে গিয়ে ফাসাদ (অন্যায়, অশান্তি) ও সাফাকুদ্দিমা (রক্তপাত, যুদ্ধ বিগ্রহ) করবে (সুরা বাকারা ৩০)। মহান আল্লাহ তাদের এই মৃদু আপত্তি সত্ত্বেও আদম (আ.) কে সৃষ্টি করলেন ও নিজের রূহ আদমের (আ.) মধ্যে ফুঁকে দিলেন (সুরা হিজর ২৯)। এরপর তিনি সকল মালায়েকদের বললেন আদমকে সিজদাহ করার জন্য। প্রত্যেকে আল্লাহর হুকুমের আনুগত্য করলেও ইবলিস আল্লাহর এ হকুমকে প্রত্যাখ্যান করল ও সিজদাহ করা থেকে বিরত থাকলো।
ফলশ্রুতিতে আল্লাহ তাকে সম্মানজনক অবস্থান থেকে বহিষ্কৃত করলেন। ইবলিস তখন আল্লাহর কাছে অবকাশ চেয়ে নিল ও আল্লাহকে চ্যালেঞ্জ করল যে সে যেভাবেই হোক আল্লাহর তৈরি এ নতুন সৃষ্টি অর্থাৎ আদমকে দিয়ে ফাসাদ ও সাফাকুদ্দিমা (অন্যায়, অশান্তি, রক্তপাত, যুদ্ধ বিগ্রহ) করাবে, আদম ও তাঁর বংশধরদের সরল পথ থেকে বিচ্যুত করে দিবে ও প্রমাণ করে দিবে যে মানুষ তারচেয়ে নিকৃষ্ট সৃষ্টি। আল্লাহ তাকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন যে তিনি যুগে যুগে মানবজাতির জন্য পথপ্রদর্শকের মাধ্যমে হেদায়াত ও দীন প্রেরণ করবেন। আমরা যদি সে দীনকে অনুসরণ করতে পারি তবে শান্তিময় ও প্রগতিশীল একটি সমাজ গঠন করতে পারব। সেখানে কোন ফাসাদ ও সাফাকুদ্দিমা অর্থাৎ অন্যায়, অত্যাচার, যুদ্ধ, রক্তপাত, জুলুম ইত্যাদি কিছু থাকবে না। না থাকার ফলে ইবলিসের করা চ্যালেঞ্জেওে আল্লাহ জয়ী হবেন। এ জন্যই ইসলাম শব্দের আক্ষরিক অর্থ শান্তি। এ নামকরণের কারণই হচ্ছে এ দীন যেখানে প্রতিষ্ঠিত হবে সেখানে অনবিল শান্তি নেমে আসবে।
কিন্তু আজকে এ সুবিশাল পৃথিবীর দিকে যদি আমরা তাকাই তবে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাবো যে, ১৬০ কোটির মুসলিম জাতিটি শান্তিতে নাই। পৃথিবীতে যতগুলি জাতি রয়েছে তাদের মধ্যে আমরাই সবচেয়ে নিগৃহীত, নিপীড়িত, নির্যাতিত, নিস্পেষিত। অন্যান্য সকল জাতি মিলে আমাদের অপমানিত, অপদস্থ করছে। আমাদের জীবনে আজ কোনো শান্তি নেই। আমাদের জীবন আজ বিপদগ্রস্থ। অভ্যন্তরীণভাবেও আমরা নিজেরা রাজনৈতিকভাবে, ফেরকাগতভাবে, ধর্মীয় মতপার্থক্যের জন্য ঐক্যহীন হয়ে একজন আরেকজনের সাথে যুদ্ধ, রক্তপাত ইত্যাদিতে লিপ্ত হয়ে রয়েছি।
অতএব বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকেই আমাদের মধ্যে শান্তি নেই। আমরা ইসলাম পালন করছি কিন্তু আমাদের মধ্যে শান্তি নেই কারণ এ ইসলাম আল্লাহর প্রদত্ত ইসলামই নয় যেমনটি পূর্বে বলে এসেছি। আল্লাহর রসুলের ইসলাম অর্ধ-দুনিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল। যদি বর্তমান ইসলাম ও আল্লাহর রসুলের ইসলামই একই হত তবে পূর্বে যেমন শান্তি ও প্রগতি এসেছিল তেমন বর্তমানেও শান্তি আসত। কিন্তু বর্তমানে যে শান্তি নেই তা বারবার বলে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। অতএব বর্তমানে আমরা যে আল্লাহর রসুলের প্রকৃত ইসলামে নেই এ কথা একদম সত্য কারণ প্রকৃত ইসলাম থাকলে শান্তি থাকত, প্রকৃত ইসলাম নেই তাই শান্তিও নেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.