নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.facebook.com/glasnikmira13

মো. মোস্তাফিজুর রহমান শিহাব

www.facebook.com/glasnikmira13

মো. মোস্তাফিজুর রহমান শিহাব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মব্যবসার অবসান অত্যাবশ্যক

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৪

পবিত্র কোর’আনে আল্লাহ বলেন, “যারা কিতাবের অংশ গোপন করে ও কিতাবের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে তারা পেটে আগুন ছাড়া আর কিছুই ঢুকায় না (সুরা বাকারা ১৭৪)।” বর্তমানে মুসলিম হিসেবে পরিচিত জনগোষ্ঠীর বিরাট একটি অংশ আল্লাহর এই নিষেধকে অমান্য করছে। কেউ ধর্মব্যবসা করে খাচ্ছে, কেউ ধর্মব্যবসায়ীদের দিচ্ছেন, কেউ বা মৌন থেকে একে সম্মতি দিচ্ছেন। কিন্তু আল্লাহ কোর’আনে স্পষ্ট যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছেন তা মেনে নেয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য। এখন কথা হচ্ছে তাহলে এই ধর্মব্যবসা নামক রোগ থেকে জাতিকে উদ্ধারের উপায় কী?
বহু বছরের চর্চার ফলে একটি সিস্টেম বা ব্যবস্থা যখন সমাজে প্রচলিত হয়ে পড়ে তখন হুট করে তাকে বদলে দেয়া যায় না। এর সাথে সমাজের বহু প্রতিষ্ঠানের, বহু মানুষের জীবন ও কর্মসংস্থান জড়িয়ে থাকে। কিন্তু বিষয়টি যখন জাতি বিনাশী পর্যায়ে চলে যায় তখন তাকে আর ফেলে রাখা যায় না। যত মানুষই জড়িত থাকুক না কেন সে বিষয়ে একটি নিষ্পত্তি অত্যাবশ্যক। এই নিষ্পত্তির জন্য আমাদের সকলকে সমন্বিত উদ্যেগ নিতে হবে। সমাজ থেকে ধর্মব্যবসার বিষবৃক্ষকে সমূলে উপড়ে ফেলতে হবে। নয়তো এই বিষবৃক্ষের শিকর সমগ্র সমাজকে গ্রাস করে সমাজকে ধ্বংস করে ফেলবে।
এর থেকে পরিত্রাণের জন্য সর্বপ্রথম আমাদের করণীয় হল ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা সমাজের প্রতিটি অঙ্গনে পৌঁছে দেয়া। ধর্মের অপব্যবহার বন্ধ করা। ধর্মব্যবসা যেহেতু ধর্মকে কেন্দ্র করে করা হয় সেহেতু ধর্মের থেকে উপযুক্ত যুক্তি প্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে ধর্মব্যবসাকে দূরীভূত করতে হবে। জনসচেতনা সৃষ্টি করতে হবে। ধর্মব্যবসা টিকে থাকার সবচেয়ে বড় কারণই হচ্ছে যুগে যুগে ধর্মব্যবসায়ীরা আল্লাহর ও তাঁর রসুলের এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞাগুলোকে গোপন করে গেছে। প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা যখন জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে তখন জনগণ এ বিষয়ে সচেতন হবে। এর ফলে তারা যদি ধর্মব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়েও তখন তারা নিজেরাই তাদের শুধরে দিতে পারবে ও নিজেদেরকেও এই ন্যাক্কারজনক কাজ থেকে দুরে রাখতে সক্ষম হবে।
মানুষ সৃষ্টিগতভাবেই যুক্তিকে অধিক প্রাধান্য দেয়। তাই উপযুক্ত যুক্তি প্রমাণ ও দলিলের মাধ্যমে যদি জনসচেতনা সৃষ্টি সম্ভব হয় তবে এর থেকে পরিত্রাণ পেতে আমাদের অধিক বেগ পেতে হবে না। এই একটি ধর্মব্যবসাকে যদি রুখে দেয়া যায় তবে জঙ্গিবাদ, ধর্মের নামে অপরাজনীতি, ধর্মান্ধতা ইত্যাদি সকল সমস্যা থেকেও আমরা সহজেই পরিত্রাণ পাবো কারণ সকল সমস্যার মূলই হল এই ধর্মব্যবসা। শরীরের ফোঁড়া সারাবার জন্য উপযুক্ত শল্য চিকিৎসার আবশ্যকতা সবচেয়ে আগে। সেখানে আপোষের কোন প্রশ্নই উঠে না।
পরবর্তিতে আমাদের যে কাজটি হবে সেটি হল ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করা। ব্রিটিশরা দুই ধরণের শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলনের মাধ্যমে একদিকে মাদ্রসাগামী জনগোষ্ঠীর সৃষ্টি হয় ও অপরদিকে সৃষ্টি হয় সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত শ্রেণী। মাদ্রাসা পড়ুয়া জনগোষ্ঠীর হাতে ধর্মব্যবসা করা ছাড়া আর কোন পথ থাকে না কারণ মাদ্রাসা থেকে তাদের তদ্রুপ শিক্ষাই দেয়া হয়। এর ফলে মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত জনগণ এক প্রকার বাধ্য হয়েই এ কাজ করে।
অন্যদিকে আমাদের সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত যে জনগোষ্ঠী রয়েছে তারা মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের অবজ্ঞা করে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার ফলে তারা হয়ে উঠে স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক। তারা বেশিরভাগই নিজের স্বার্থকে সবার আগে প্রাধান্য দেয় যার ফলে সমাজে চলে অন্যায়, অবিচার ও অশান্তি। ব্রিটিশ প্রবর্তিত এই দ্বৈত শিক্ষা নীতির ফলে আমাদের মাঝে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে কিন্তু তারা প্রত্যেকেই দেশ, সমাজ ও জাতির বদলে নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। এর ফলে সমাজে দূর্নীতি হয়, অন্যায় হয়, ঘুষ নেয়া হয় কারণ এই শিক্ষা নীতি তাদের এরূপভাবেই আত্মকেন্দ্রিক ও স্বার্থপর করে গড়ে তুলে।তাই এখন আমাদের এই শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারকে এ বিষয়ে অধিক তৎপর হতে হবে।
আমাদের প্রত্যেকের সমন্বিত প্রচেষ্টা এই বিষবৃক্ষ থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হবে। সরকার কে ভোটের চিন্তা বাদ দিয়ে সমাজকে রক্ষার চিন্তা করতে হবে। ধর্মব্যবসা আমাদের সমাজের জন্য হানিকারক হলেও ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা ঠিক তার বিপরীত কাজ করবে। ইতিহাস ভুললে চলবে না প্রকৃত ইসলামের সংস্পর্শে এসেই আরবের কূপমন্ডুক মানুষগুলো শিক্ষকে পরিণত হয়েছিল, সমগ্র দুনিয়ার জন্য আদর্শ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। তাই এখন আমাদের ধর্মব্যবসা থেকে পরিত্রাণ লাভ করে ধর্মের প্রকৃত শিক্ষাকে আকড়ে ধরতে হবে। প্রকৃত ধর্মের শিক্ষার ফলে একদিকে যেমন সমাজ হবে শান্তিময় অপরদিকে আমরা পূর্বের ন্যায় শ্রেষ্ঠত্বের আসনে আসীন হতে পারব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.