![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ফ্যাশন ডিজাইন স্টুডেন্ট। পাশাপাশি টুকটাক লেখালেখির চেষ্টা করি। রাজধানী ঢাকাতে আমার আপাতত বসবাস।
আমার ব্উয়ের মন খারাপ । কেন মন খারাপ আমি জানিনা । যতবার ওর চোখে চোখ পড়েছে ততবার ই মনে হয়েছে ওর চোখ ছল ছল করছে । যেকোন সময় আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বৃষ্টি নামবে । আমি অনেক বার জিজ্ঞাসা করেছি কিন্তু ও উত্তর দেয় না । আমার ব্উটার মন খারাপ থাকলে আমার ওমন খারাপ হয়ে যায় । ও একটা ঝাড়ু হাতে নিয়ে পুরো ঘরময় পায়চারি করছে । একবার খাটের নিচে ঝাড়ু দেয় , আবার কখনো সোফার নিচে । একবার আলমারি সরায়ে নিচে দেখে আবার কখনো ওরবাক্স পেটরার মাঝে কি যেন খুঁজে । বুঝলাম কিছু হারাইছে । বললাম,
- কি হারাইছো ব্উ ?
ব্উ কথা কয় না । আমি আরো কয়েকবার জিগাইলাম কিন্তু কথা কয় না । একটা জরুরী কাজ ছিল তাই বাইরে চলে গেলাম ।
ফিরলাম আমার পাশের বাসার ভাবীর ফোন পেয়ে । ভাবী জানালেন আমার বাসায় নাকি কিছুক্ষণ পর পর বিকট শব্দ হচ্ছে । মাঝে মাঝে কান্নার শব্দ হচ্ছে । আমি বুঝতে পারলাম না কি হয়েছে ।
বাসায় ফিরে দরজা নক করতেই দরজা খুলে গেল । বটি হাতে ব্উ দাঁড়ায়ে আছে । চুল অগোছালো । চোখ টকটকে লাল । পরনের শাড়িতে ঝুল, কালি লেগে ওটার বারোটা বেজে গেছে । ও আমাকে দেখে বটি নামিয়ে রাখল । আমাকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠল । বলল,
- আমি হারাইয়া ফেলছি বাবু , আমি ওটা হারাইয়া ফেলছি ।
- কি হারাইছো ব্উ ?
কান্নার চোটে ব্উ কথা বলতে পারছে না । আমি হঠাত্ খেয়াল করলাম
ওর কান্না বন্ধ হয়েছে । ওর মুখটা কাছে টানতেই বুঝতে পারলাম ও অজ্ঞান হয়ে গেছে । তাড়াতাড়ি করে ওর চোখে মুখে পানির ঝাপটা দিলাম । ও আস্তে আস্তে চোখ খুলল । আমি ফ্যান ছেড়ে দিলাম। ও স্বাভাবিক হতে লাগল । আমাকে বলল,
- আমার ঘড়িটা হারাইয়া ফেলছি।
- থাক ব্উ । আমি তোমাকে নতুন একটা গিফট করব ।
- নাহ । ওটাই আমার লাগবে । প্লিজ আমার ঘড়িটা খুঁজে দাও!
ও আস্তে আস্তে দাঁড়াল । তারপর চলে গেল বেডরুমে । ঘরের দিকে তাকানোর সময় পেলাম এতোক্ষণে ।
একটা সোফা ফ্লোরে উলটে পড়ে আছে , আলমারি টা শোয়ানো , শোকেইসের সব লক খোলা । কিচেনে হাড়ি পাতিলের ছড়াছড়ি, ব্যাগ আর সুটকেসের সব কাপড় বাইরে । পুরা ঘরটার উপর দিয়ে ঝড় গেছে ।
আমি সব গোছানো শুরু করলাম । মনে পড়ল দুপুরে রান্নাও হয় নাই ।
আমি বেডরুমে গেলাম ।ওকে বললাম,
- আমি বাহির থেকে খাবার নিয়া আসি ?
ও কিছু বলল না । আমার ছোটখাটো সাইজের বাবু বাবু ব্উটা চোখের পানিতে বালিশ ভিজাইয়া ফেলেছে । আমি কান্দিরপাড় এলাম খাবার নিতে ।
বাসায় ফিরতে ফিরতে তিনটা বেজে গেল । বাসায় ঢুকে আবার ও টাশকি খেলাম ।
আমার বাবা , আন্টি , ছোট ভাই , আপু , দুলাভাই , শাকিব , শায়িকা , মাহি ,রাহি, সোনিয়া , আমার শ্যালক , শ্যালিকা ,
শাশুড়ি এবং শ্বশুর মশাই সবাই আমার বাসায় !!! সবাই গম্ভীর মুখে ঘড়ি খুঁজছে ।
আমি খুব বিরক্ত হলাম । সামান্য একটা ঘড়ির জন্য এতো কিছু । মশা মারতে কামান দাগানো । এই প্রথম আমি সত্যিকার অর্থে রেগে গেলাম । পাইছেটা কি ও ? আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম,
- এই সব কি শুরু করছ ?
ও কিছু বলার আগেই আমার বাপজান বলে ওঠলেন,
- ব্উমা , দেখছ দামড়াডার কাম ? আমরা সবাই মিল্লাঘড়ি খুঁজি আর সে মোরগ পোলাও এর সুবাস লয়। ব্যাক্কলডার কমনসেন্স ও নাই ।
আমি আর কিছু না বলে আবার আমার স্টাডিরুমে ঢুকলাম । একটু পর আমার ভাগ্নী শায়িকা এলো । বলল,
- মামা , আন্টুম তো খুব কাঁদতেছে ।
- তো আমি কি করব ? যা তোর আন্টুমের কাছে যাইয়া ব্ইসা থাক ।
- তুমি আবার আন্টুমকে বকতে গেছো ক্যান ? ওইটা নাকি তোমার দেয়া প্রথম গিফট ?
আমি এতোক্ষণে বুঝতে পারলাম ও এতো কাঁদতেছে কেন ?
আমার ছোট শ্যালিকা রুমে ঢুকেই চিত্কার শুরু করল,
- ইউরেকা ইউরেকা!!!
সবাই দৌড়ে আমার রুমে চলে এলো । আমি অবাক হয়ে সবার দিকে তাকাইয়া আছি । মুচকি হাসি দিয়ে আমারশ্বশুর শাশুড়ি আর আন্টি আর আব্বু ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসল । আব্বুর গলা শুনলাম,
- দেখছেন দামড়াডার কাম ? নিজের হাতে ঘড়ি রাইখা আমার ব্উমারে কেমনে কান্দাইলো ?
আমি আমার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি ওর ঘড়ি আমার হাতে ।
মনে পড়ল গতকাল সন্ধ্যায় চেম্বারে যাওয়ার আগে আমার ঘড়ি না পেয়ে ওরটা নিয়ে গেছিলাম ।
ঘন্টাখানেক পর................
সবাই চলে গেছে । আবার আমরা দুই টোনাটুনি । ডাইনিং এ বসে মোরগ পোলাও খাচ্ছি । ব্উয়ের হাতে আমার দেয়া প্রথম গিফট ঘড়ি । ওর চোখ মুখে খুশির ছটা ।
কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ান্টস টু নো আমার ব্উ এতো পাগলা ক্যান??
এত্ত ভালবাসা ক্ই পায় ??
Source :- Click This Link
২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৩
মাহদী সাব্বির বলেছেন: ইমতিয়াজ : ছোটখাট জিনিস গুলোই আসলে ভালবাসাকে অনেক মজবুদ আর গভীর করে। প্রথম গিফট্ টা হারালেও আশা রাখছি ভালবাসা কখনও হারাবেনা। যাই হোক ধন্যবাদ ভাইয়্যু।
৩| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৪
টকদঐ পার্ট ২ বলেছেন: হাহাহা,,,আনেক মজা পেলাম
৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮
রাখালছেলে বলেছেন: ছেলের যে মেয়েদের ঘড়ি পরে যে আগে জানতাম না ...
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৬
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: ভাল গল্প। প্রতিটি ভালবাসা হোক এমনি।
আমাদের দেয়া প্রথম গিফট তো সে কবেই হারিয়ে ফেলেছে।