নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বীরত্বের সাথে বাঁচতে হবে।

নিশাচর ।

নিশাচর । › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ যাবৎকালের সবচেয়ে অন্ধকার একটা বছর ছিলো ২০১৫

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১০

২০১৫ সাল বাংলাদেশের জন্য এ যাবৎকালের সবচেয়ে অন্ধকার একটা বছর ছিলো। শেখ মুজিব হত্যা যেমন মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত অর্জনকে অস্বীকার করে পাকিস্তানী নিয়ন্ত্রনে নিয়ে গিয়েছিলো প্রিয় স্বদেশকে, ১৫ বছর ধরে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ স্বত্তা মুছে যাচ্ছিলো, তেমনি ২০১৫ সাল বাঙালী মনে রাখবে মুক্তবুদ্ধি হত্যার বছর হিসেবে। শেখ মুজিবের কন্যার নজরদারিতে, সরকারের ভেতরের সউদি পাকিস্তানী ঘাপটি মেরে থাকা চরদের প্রত্যক্ষ অসহযোগিতায় খুন হয় একে একে চারজন ব্লগার, একজন প্রকাশক, আহত হয় ব্লগার, কবি, প্রকাশক, জেলে যায় অগনিত ব্লগার, পরিবেশকর্মী পালিয়ে যায় আরো অনেক ব্লগার, লেখক।

এই এক বছরেরই বিশ্বের চোখে বাংলাদেশ হয়ে ওঠে ব্লগার হত্যার স্বর্গরাজ্য, বাংলাদেশ ভুখন্ডটি এখন বাক-স্বাধীনতার শ্মশানে পরিণত হয়েছে, যেখানে নাস্তিক পরিচয় দেয়া মানে সামাজিক একঘরে হওয়া, ইসলাম ধর্মের সমালোচনা করা মানে নিজের মৃত্যু নিশ্চিত করে ফেলা। কখন কোথায় আক্রমন হবে, কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারে না। পুলিস বলে দিয়েছে দেশ ছেড়ে চলে যেতে, কারন হাসিনা পুত্র জয়ের বরাতে আমরা জানতে পাই ইসলামী জঙ্গী খুনীদের বিচার করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ তার ভোট ব্যাংক, মানে দশ কোটি মুসলামনের ক্রোধের শিকার হতে চায় না। কিন্তু আমরা জানি সউদি রাজার পদলেহী বাংলাদেশের রাজনীতি, সরকার। তাই সউদি কৃপা হারানোই ভয়ের উৎস।

বছরের শেষ দিনে এসে আমরা দুবছর আগের হত্যার এক উদ্ভট রায় হাতে পেয়েছি। যে আনসারুল্লা বাংলা টীম নামের আল কায়েদা জঙ্গী ক্রমাগত হুমকি দিয়ে গেছে, তাদের মৃদু শাস্তি সহকারে এই রায়ে সরকারী হাস্যকর প্রচেষ্টাই আবার নজরে আসে। যুদ্ধাপরাধী বিচারেও যেই তামাশা আমাদের নজরে এসেছে। ছ্যাঁকা চোদ্রীর রায় হবার দুই বছর পরে রায় কার্যকর বিচারিক দীর্ঘসূত্রিতারই নজির। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এক কাগুজে বাঘ বৈ কিছু নয়।

বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থাগুলি এক বাক্যে বাংলাদেশকে কালো তালিকাভুক্ত করে ফেলেছে এই বছরটিতে। সউদি গর্বে দেমাগে মাটিতে পা পড়ে না 'শেখ' হাসিনার। নামের শুরুতে 'শেখ' থাকায় উনি নিজেকে হয়তো সউদি কাতারী শেখদের মতোই নাস্তিক নিধনকারী মনে করেন, কিন্তু এ জাতি কোনদিন ভুলবে না অভিজিৎ রায়ের হত্যার পরে অজয় রায়কে শোক জানাতে তিনি গনভবন ছেড়ে বার হন নাই। লুকিয়ে ফোন করেছেন শোনা যায়, এতে আমাদের বিশ্বাস আরো পোক্ত হয়। দেশটা প্রধানমন্ত্রী চালাচ্ছেন না, প্রধানমন্ত্রীর ওপরেও আছে সউদি শেখের বাপেরা।

সেই বাপদের অদৃশ্য ক্ষমতাবলে নতুন নতুন আইন আসছে, আমাদের আরো বেশি করে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলতে। ৫৭ ধারা তো রয়েছেই, এবার আসছে ছাইবার সিকুরিটি আইন, সবই ইসলামী শাসনের পথ বিস্তৃত করতে।

যে দেশে সমালোচনা, হৃদয় ও মননের চর্চা আইনের হাতে নিয়ন্ত্রিত, যে দেশের প্রধানমন্ত্রীর ব্যা্ক্তিগত ধর্ম বিশ্বাসের দ্বারা বাকি ১৭ কোটি মানুষের কণ্ঠ ও মগজ নিয়ন্ত্রিত হয়, সে দেশ আর যাই হোক স্বাধীন নয়।

ডিজিএফআই নামক পাকিস্তানী আই এস আই (পিতা আমেরিকান সি আই এ'র) স্থানীয় অনুচর এর নির্দেশে নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থাগুলি যখন পেটের দায়ে বুঝে শুনে সংবাদ চর্চা করছে, সেখানে একমাত্র মুক্ত সামাজিক গনমাধ্যম ক্রমাগত সরকারী নিয়ন্ত্রনে পড়েছে বার বার।

মানবিকতা মানব সভ্যতার ভবিষ্যৎ। নাস্তিকতা আমাদের ধর্ম থেকে মুক্তি দিয়ে সেই মানববাদের দিকেই নিয়ে যাবার কথা। কিন্তু পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতার ছাল পড়া বৃহৎ ব্যাবসায়ীরা। বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অদৃশ্য ক্ষমতাধর বেনিয়া সংঘ। বাধা হয়ে আছে রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক খেলোয়ার সংঘ। বাধা হয়ে আছে ধর্মবাদ। এরা খেলা করে মেঘের ওপরে, আর মর্ত্যের কোটি কোটি মানুষ শিকার হয় প্রাচীন কুপমন্ডুক যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার।

জীবিত ব্লগারেরা জীবন হাতে নিয়ে এখনো লিখে যাচ্ছেন, আশা নিয়ে, একদিন হয়তো নির্ভয়ে আমাদের সন্তানেরা মানবিকতার চর্চা করতে পারবে। ধর্মনিরপেক্ষতা, গনতন্ত্র (প্রকৃত) ও সমাজতন্ত্রের ওপর দাঁড়ানো যে সংবিধান ৭২ সালে রচিত হয়েছিলো, তার পরিপূর্ণ বিকাশের আশায় নতুন বছর শুরু করতে যাচ্ছি আমরা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.