নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালোবাসি আমার দেশকে..আমার ভাষাকে

নাজমুল_হাসান_সোহাগ

আমি রুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারি(১০'সিরিজ) ডিপার্টমেণ্টে পড়ালেখা করছি। সুযোগ পেলেই লেখালেখিতে বসে যাই। আমার লেখালেখির সব থেকে পছন্দের বিষয় হল ছোটগল্প ।বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। আরও ভালো লাগে নতুন বন্ধু তৈরি করতে।

নাজমুল_হাসান_সোহাগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প হলেও পারতো

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৬



-নবনীতা,আমি তোমাকে ভালোবাসি।

রুদ্র কথাটা বলতে বলতে দৌড়ে এসে নবনীতার সামনে দাঁড়ালো। একটু অস্বস্তিতে পড়লো নবনীতা। রুদ্র নামের এই ছেলেটা তাকে অনেক দিন ধরে ডিস্টার্ব করছে। একই ক্যাম্পাসের তাই রাগ করে কিছু বলতে চাইলেও বলতে পারে না। তা না হলে কিছু একটা বলেই দিতো এতদিন। এভাবে প্রায় প্রত্যেকদিন একজন ডিস্টার্ব করলে কিভাবে তা সহ্য করা যায়। ছেলেটার প্রতি কোন আকর্ষণ অনুভব করে না সে। ক্যাম্পাসের আট দশটা ছেলে থেকে রুদ্র কে কখনোই আলাদা মনে হয় না তার।

নবনীতা হাঁটার গতি দ্রুত থামিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। রুদ্র তার চোখের দিকে তাকাতে পারছে না। সে একবার পীচঢালা রাস্তাটার দিকে তাকায় আবার পাশ দিয়ে দ্রুত চলে যাওয়া কোন রিকশার দিকে তাকায়। ব্যাপারটা দেখে নবনীতার আরও রাগ হচ্ছিলো। গলার স্বরটা একটু রাগান্বিত করে বললো,তুমি কি চাও আমার কাছে???

-কৈ। আমি তো কিছু চাই না। তোমাকে ভালোবাসি এটাই বলতে আসি মাঝে মাঝে।

-বলা হইছে তো,তাই না? এবার তাহলে আমাকে রক্ষা করো। দয়া করে বিদায় হও।

কথাটা রুদ্রের উপর কোন প্রভাব ফেলল না। প্রত্যেকবার আসলেই এই কথা তাকে শুনতে হয় তাকে।

-আমি কিন্তু সত্যি তোমাকে ভালোবাসি। কিছু একটা তো বলবা আমাকে। হ্যাঁ বা না। আর যদি আমার কোন খারাপ গুন থাকে সেটাও বলতে পারো আমাকে। তোমার জন্য এইটুকু ছাড় তো দিতেই পারি তাই না।

কথাটা বলে স্বভাব সুলভ একটা হাসি দিল রুদ্র।

অন্যদিন বিদায় হওয়ার কথা বললে ১৮০ ডিগ্রী তে ঘুরে হাঁটতে শুরু করে রুদ্র। আজ কথা বাড়াচ্ছে সে। ছেলেটাকে বুঝতেই পারে না। তবে আজ কিছু একটা বলবেই সে।

-ভালোবাসা কি জিনিস তুমি কি তা বুঝ।

-ভালোবাসা কোন জিনিস না। এটা এমন একটা অনুভূতি যা আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ভালোবাসা যদি কোন দ্রব্য হত তাহলে তা মুদি দোকানে কেজি দরে কিনতে পাওয়া যেত। অবশ্য আমি কিন্তু কোন মুদি দোকানের বিক্রেতা ও নই।

-যদি এতই বুঝো তাহলে একটা মেয়েকে এরকম ডিস্টার্ব করছ কেন।

-আমি তোমাকে ডিস্টার্ব করতে চাই না। ডিস্টার্বড হয়ে থাকলে দুঃখিত। কিন্তু কেন যেন তোমাকে দেখলে ইচ্ছা করে তোমার সাথে কথা বলি। পাশাপাশি হাঁটি কিছুক্ষণ।

-আমিতো তোমার সাথে হাঁটতে চাই না। আর সত্যি কথা বলতে কি তোমার প্রতি আমার ভালোবাসার কোন অনুভূতি এখন পর্যন্ত কাজ করে না।

-হুম হতে পারে। পাশাপাশি তো কিছুক্ষন হেঁটে দেখতে পারো। ভালো লেগেও যেতে পারে। হতে পারে একসময় ভালোবেসে ফেলেছ আমাকে।

-ভালোবাসা এত সস্তা না। কিছুদিন পিছে ঘুরলে আর বলে দিলাম তোমাকে ভালোবাসি!!

-আমিও জানি,ভালোবাসা অনেক দামী। তাইতো তোমার পিছে পিছে এত ঘুরি। তোমার ভালোবাসার দাম বাড়ানোর জন্য। টাকা দিয়ে কিনতে পারলে কবে কিনে নিতাম।

-তোমার কি গুন আছে যে আমি তোমাকে ভালবাসবো। শুধু পিছে পিছে ঘুরলেই ভালোবাসা পাওয়া যায় না।

-প্রত্যেক মানুষেরই কোন কোন না কোন ভালো গুন আছে। কখনো সে নিজে আবার কখনো অন্য কেউ সেই ভালো গুনটা খুঁজে পাই না। তবে একটা বড় গুন আছে আমার। আমি ভালবাসতে পারি। এইযে তোমাকে কত ভালোবাসি। জানি শুধু পিছে পিছে ঘুরলেই ভালোবাসা হয় না। আপাতত অন্য কিছু করার ও তো দেখি না।

-অন্য কিছু করা লাগবে না। এরপর থেকে আমার পিছে ঘুরবা না। আমি তোমাকে ভালোবাসি না। আর কোনদিন আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করবা না। এর পরিনাম ভালো হবে না কিন্তু। আর তুমিতো অবশ্যই চাও যে এই ব্যাপারটা তোমার ক্লাসমেটরা না জানুক।

কথাটা শুনে রুদ্র থমকে থাকলো কিছুক্ষণ। এরকম একটা উত্তর কখনোই আশা করেনি সে। নবনীতা রাগে ফোঁস ফোঁস করছে।

মনে মনে যে মানুষটাকে এতটা কাছে ভেবেছিল এতদিন। সে আজ অনেক দূরের কেউ মনে হচ্ছে। কয়েক পা পিছিয়ে দাঁড়ালো রুদ্র। নবনীতাকে যে সে কতটা ভালোবাসে তা সে যদি একবার বোঝাতে পারতো। এই মুহূর্তে তার মনে হচ্ছে সে আসলেই এতদিন নবনীতা নামের একজনকে ডিস্টার্ব করেছে। নিজের উপর রাগ হচ্ছিলো তার। এই ছোট্ট জীবনে রুদ্র এখন পর্যন্ত একটা শক্ত কথা বলতে পারেনি কাউকে। আর এতদিন ধরে নিজের অজান্তেই একজনকে বিরক্ত করছে সে। কি একটা অভিমান ভর করলো রুদ্রর উপর। নবনীতার দিকে তাকাতে পারলো না সে। অপরাধবোধ যেন তাকে নিচের দিকে কোন এক গহ্বরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। যে পথ ধরে সে একটু আগে নবনীতার সাথে দেখা করতে এসেছিলো সেই পথ ধরে হাঁটতে শুরু করলো। নবনীতা এখন তার কাছে অচেনা মনে হচ্ছে কিন্তু পথটা ঠিকই পরিচিত। আগের মতই। চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা পানি পীচঢালা উত্তপ্ত রাস্তায় পড়ে হারিয়ে গেল। যেন ওর কান্না আজ কেউ সহ্য করছে না। কান্নার কোন মূল্যই নেই কারও কাছে।



সময়ের সাথে অনেক পাল্টে গেছে রুদ্র। আগের মত সেই হাসিমাখা মুখটা যেন কোন একটা বিষাদের ছায়ায় ঢেকে থাকে সবসময়। বন্ধুদের সাথেও আগের মত কথা বলে না সে। ক্লাসের সবাই রুদ্র নবনীতার ঘটনাটা জানে। ক্লাসের কেউ কটু কথা বলে,কেউ সান্ত্বনা দিতে চাই। রুদ্র নিজেকে লুকিয়ে রেখে চলে সাবার থেকে। যেন কোন এক বিভীষিকা তাকে তাড়া করে ফিরছে সবসময়।

টানা ক্লাসের মাঝে বিশ মিনিটের একটা ব্রেক থাকে। এই ব্রেক টাইমে রুদ্র আগে ক্যান্টিনে খেতে পছন্দ করতো অবশ্য এখনো পছন্দ করে। কিন্তু কেন যেন এখন যাওয়ার আগ্রহ পায়না সে। আজ হুট করেই ইচ্ছা হল ক্যান্টিনে যেতে। ক্যান্টিনের একেবার শেষে একটা টেবিল। টেবিলে রুদ্র একা বসে। ওয়েটারকে অর্ডার দিয়ে খাবারের অপেক্ষায় সে। ক্যান্টিনের দরজার দিকে দৃষ্টি প্রসারিত করে কি কথা যেন ভেবে চলেছে আনমনে। দরজা দিয়ে কেউ একজন প্রবেশ করলো একটা ছায়ার মত দেখলো রুদ্র। রুদ্রের টেবিল থেকে কয়েক হাত দূরে আরেকটা টেবিল। সেই ছায়াটার অবস্থান এখন পাশের টেবিলে;বুঝতে পারলো সে। এলোমেলো দৃষ্টি একসময় পাশের টেবিলটাতে গিয়ে আটকে গেলো। রুদ্রর ঠিক কয়েক হাত দূরে নবনীতা বসে আছে। সে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে। মেয়েটার চেহারায় এক অদ্ভুত পরিবর্তন দেখল রুদ্র। শেষ যেবার রুদ্র নবনীতাকে দেখেছিলো তার সাথে কোন মিল নাই এখনকার। একটু লজ্জা,ইতস্তত বোধ আর পাশে বসা ছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে নবনীতা একটি দীর্ঘ শ্বাস টেনে টেবিলের দিকে তাকিয়ে রইলো। মাঝে মাঝে তাকানোর চেষ্টা করছে রুদ্রের দিকে কিন্তু প্রত্যেকবারই ব্যর্থ। রুদ্রের চেহারায় কোন পরিবর্তন নেই। নবনীতা সামনে থাকলেই কি আর না থাকলেই কি সবসময় তার না পাওয়া একই রকম। সময় পরিবর্তন হয় একই সেই কষ্ট। সাদা-কালো তার স্মৃতি।

রুদ্রের অর্ডার করা খাবার এখন তার সামনে। দুইটা শিঙাড়া,একটা ডিমের চপ। এখন কেন যেন খেতে ইচ্ছা করছে না। পাশের টেবিলে বসে থাকা নবনীতা নামের মেয়েটা তার কাছে এখন অনুভূতিহীন একটা মূর্তি মনে হচ্ছে। যে অনবরত তাকে বাঁধা দিচ্ছে,যদিও বাস্তবে না। শেষ যেবার নবনীতার সাথে রুদ্রর কথা হয় সেদিনের কথা মনে পড়তেই রুদ্র নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে পারলো না। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো রুদ্র। নবনীতা রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে একটা ভয়,জানার আগ্রহ সব মিলিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় দেখাচ্ছে তাকে। রুদ্রর দৃষ্টি ঝাপসা,সামনে শুধু আলো ছায়ার খেলা দেখতে পাচ্ছে। নবনীতার দিকে না তাকিয়ে ক্যান্টিন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁটতে লাগলো রুদ্র। ওয়েটারকে বিল বুঝিয়ে দিয়ে মিলিয়ে গেল দরজার ওপাশে। দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া মানুষটার দিকে তাকিয়ে থাকলো নবনীতা। কেন যেন কষ্ট লাগছিলো রুদ্র নামের ছেলেটার জন্য। করুণা না ভালোবাসা তার হিসাব মিলাতে গিয়ে আনমনে হয়ে পড়লো সে। হঠাৎ চোখ পড়লো হাত ঘড়িটার দিকে। ব্রেকের টাইম শেষ,পরের ক্লাসের সময় শুরু হয়ে গেছে। নবনীতা বেরিয়ে গেলো ক্লাসের উদ্দেশ্যে। পাশাপাশি দুইটা ফাঁকা টেবিল। দুই প্লেটে খাবার গুলো তখনো রয়েছে। যেন কারও অপেক্ষায়।



দিন যেতে থাকে,রুদ্র নামের ছেলেটার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে নবনীতা। কোন কিছুতেই মন বসে না তার। ব্যাপারটা নিয়ে যতই চিন্তা করে রুদ্রকে পাওয়ার আগ্রহ আরও জাঁকিয়ে ওঠে। কতই না সে রুদ্রকে খুঁজেছে। কখনো ক্যান্টিনের,কখনো ডিপার্টমেণ্টের সামনে। কোনদিনই দেখা পায় না তার।

রুদ্রের সাথে যে করেই হোক দেখা করবে নবনীতা। বান্ধবীকে ফোন দিয়ে রুদ্রর ফোন নাম্বার সংগ্রহ করলো সে। সে ফোনে রুদ্রকে তার মনের কথা বলবে না। কোন এক জায়গায় দেখা করতে হবে রুদ্রের সাথে। বিকালে রুদ্রের নাম্বারে কল দিলো নবনীতা। প্রথমবার কল দিলো কিন্তু কেউ রিসিভ করলো না। একটা দুশ্চিন্তা মাথায় ভর করলো তার। যদি ইচ্ছা করে রুদ্র আমার কল রিসিভ না করে?? ও যদি আমার ব্যাপারে আগের মত করে চিন্তা না করে...।

দ্বিতীয়বার কল দেয়ার সাথে সাথে ওপাশ থেকে একটা ভারী কণ্ঠস্বর ভেসে এলো।

- হ্যালো।

নবনীতা চুপ করে আছে। যেন এই কণ্ঠস্বরটা শোনার জন্যই এতদিন সে অপেক্ষা করে ছিল।

- হ্যালো। কে বলছেন??

- নবনীতা। আমি নবনীতা।

নবনীতা কল দিবে এই কথা রুদ্র ভাবতেই পারছিলো না। রুদ্র কিছুক্ষণ থমকে রইলো। সব স্মৃতি যেন চোখের সামনে এসে ভর করলো আবার নিমিষেই তা হারিয়ে গেল।

- হঠাৎ আমাকে স্মরণ করলে যে?

- যাকে কখনো ভোলা যায় না তাকে স্মরণ করার প্রস্নই ওঠে না।

- সে সৌভাগ্য আমার নেই। হয়তো সহ্যও করতে পারবো না।

- আর একা সইতে হবে না। আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই।

- আমি যদি না চাই।

নবনীতা চুপ করে আছে। মুহূর্তেই নিজের উপর ক্ষোভ অভিমান ভর করলো। ইতস্তত বোধ তাকে কথাই বলতে দিচ্ছে না। শুধু কয়েকটা ভারী শ্বাস-প্রশ্বাস শুনতে পেলো রুদ্র। কথা না বাড়িয়ে রুদ্র বললো,আগামীকাল তো নববর্ষ। তো কালই দেখা করি। আমি ক্যাম্পাসেই থাকবো। কথাটা বলেই ফোনটা রেখে দিলো রুদ্র।



পরের দিন সকাল। সময় কোনভাবেই কাটতে চাই না। কি সব উল্টা-পাল্টা চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে রুদ্রের মাথায়। কখন দেখা হবে নবনীতা সাথে,তাকে আজ কেমন দেখাবে। নিশ্চয় নবনীতা আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে। তাহলে কিভাবে জানাবে আমাকে। সাথে যদি গিফট নিয়ে আসে?? গিফটের কথা মাথায় আসতেই রুদ্র ভাবল কি নিয়ে যাওয়া যায় নবনীতার জন্য। হুম,বেলী ফুলের মালা। সব থেকে পারফেক্ট হবে এটাই। নিজের হাতে সে নবনীতার খোপায় পরিয়ে দিবে এক গোছা বেলী ফুলের মালা।

নবনীতাকে আজ অন্যরকম দেখাচ্ছে। অনেক হালকা মনে করছে নিজেকে। বিশেষ করে গত কয়েকদিন ধরে যেন সে নিজের উপর অত্যাচার করছিলো। আজ সাজগোজে তেমন আগ্রহ পাচ্ছেনা নবনীতা। লাল শাড়ি সব থেকে পছন্দ তার। আর আজকে তো নববর্ষ। সেহেতু শাড়ি মানাবে সব থেকে ভালো। বড় সড় একটা টিপ পড়ে যখন সে আয়নার সামনে দাঁড়ালো তখন নিজেকেই চিনতে পারছিলো না সে। আজ সত্যিই তাকে অন্যরকম দেখাচ্ছে। বাবা মায়ের সেই ছোট্ট নবনীতা আর নয় সে।

নবনীতার ফোনে রুদ্র বেরিয়ে পড়লো রাস্তায়। বাইরে উৎসব উৎসব আমেজ। কিন্তু কোনদিকে খেয়াল নেই তার। রাস্তার পাশের ফুলের দোকান থেকে এক গোছা বেলী ফুলের মালা কিনল সে। গত বছর মায়ের পছন্দে কেনা রঙিন পাঞ্জাবী গায়ে আর হাতে আর হাতে বেলী ফুলের মালা নিয়ে রুদ্র ছুটে চলল ক্যাম্পাসের মেইন গেটের দিকে। ওখানেই তাকে থাকতে বলেছে নবনীতা।

রুদ্র কিছুক্ষণ হল দাঁড়িয়ে আছে। যদিও সময়টা অনেক বেশি হচ্ছে তার কাছে। এখন রাস্তার এপাশে রুদ্র ওপাশে নবনীতা। নবনীতার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রুদ্র। আজ প্রাণ ভোরে দেখবে সে নবনীতাকে। রাস্তায় এখন অনেক জ্যাম। নবনীতাকে দেখছে আবার হারিয়ে ফেলছে সে। রুদ্র রাস্তার ওপারে যাইতে চাইলো। নবনীতা হাতের ইশারায় জানিয়ে দিলো তুমি ওখানেই থাকো,আমি আসছি। নবনীতা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু গাড়িগুলোর দ্রুত ছুটে চলার কারণে পাড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না সে। রাস্তাটা হালকা দেখে একসময় পাড় হওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সে।

রুদ্র খেয়াল করলো একটা মোটর সাইকেল দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছে নবনীতার দিকে। তখন পর্যন্ত নবনীতা জানে না কি ঘটতে চলেছে। রুদ্র নবনীতাকে চিৎকার করে ডাক দিলো। নবনীতা মাথার এলো চুলগুলো হাত দিয়ে সরিয়ে রুদ্রের দিকে তাকালো। ঠিক তখনই ভারী একটা আঘাতে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়লো নবনীতা।

মুহূর্তেই নীরবতা। যেন কোথাও কেউ নেই। থমকে আছে চারপাশ। রুদ্র জায়গা থেকে নড়তে পারছে না। যেন কয়েকগুণ ভার তাকে আরোপ করা হয়েছে। রুদ্র নিজেকে ভীরের দিকে ঠেলে নিয়ে চলল। ভীর ঠেলে সে নবনীতার কাছে পৌঁছালো। মাথার নিচে হাত দিয়ে নবনীতাকে তুলতে চেষ্টা করলো সে। মুহূর্তেই রুদ্রের হাতের বেলীফুল লাল রং ধারণ করলো। নবনীতার হাতে মুঠিতে একটা ব্রেসলেট। তার চোখের পাতা টিপ টিপ করছে। রুদ্র তাকিয়ে আছে নবনীতার চোখের দিকে। এখনই হয়তো চোখ খুলবে নবনীতা।



-সমাপ্ত-

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৪

সকাল রয় বলেছেন:
হুম
সুন্দর হয়ে উঠছে
কথা থেকে বাক্য সেই সাথে গল্প

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৯

নাজমুল_হাসান_সোহাগ বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনাকে।

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩০

শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: সত্যিই,এটা গল্প হলেও পারতো! :(

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪১

নাজমুল_হাসান_সোহাগ বলেছেন: তাই????? আমিও কিন্তু একই কথা ভাবছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.