![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘটনা ১
বেজবাবা সুমন, সাকিব এবং জিবরান ভাই ২০১২ সালের দিকে বন্ধুর বিয়েতে এটেন্ড করার জন্য নিজস্ব গাড়ি নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন সুমন ভাই। ওনার পাশে বসেছিল সাকিব ভাই। আর পিছনে ছিল জিবরান ভাই।
হাইওয়েতে সুমন ভাই ১০০ কিমি গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সবাই ছিল খুব ফূর্তির মুডে। সারারাত সবাই বিভিন্ন বিষয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন।
গাড়ি চালাতে চালাতে আর আড্ডা দিতে দিতে প্রায় ভোর হয়ে আসলো। চারিদিকের কুয়াশা তখন ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছিল। সাকিব ভাই আর জিবরান সবকিছু ঠিকঠাক দেখে নিশ্চিন্তমনে ঘুমায়ে পড়েন।
আর তার কিছুক্ষণ পরেই ঘটে যায় ভয়ানক এক ঘটনা।
হঠাৎ করেই সুমন ভাই গাড়ির স্টিয়ারিংটা নাড়াতে সমস্যাবোধ করতে থাকেন।
স্টিয়ারিং প্রায় একদম হার্ড হয়ে যাওয়ার মত অবস্থায়। গাড়ির নিয়ন্ত্ৰণ রাখতে ওনার বেশ কষ্ট করতে হচ্ছিল। ব্রেকও সেই সময়ে কাজ না করাতে, গাড়িটাও থামাতে পারছিলেন না।
হঠাৎ মরার উপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে বিপরীত দিক থেকে একটা সিএনজি উনাদের গাড়ির মুখোমুখি আসতে থাকে । সিএনজি যখন ওনাদের কাছাকাছি, তখনই ঘুম ভেঙে যায় সাকিব ভায়ের। উনি দ্রুততার সাথে গাড়ির স্টিয়ারিং বামে ঘুরায়ে দেন। সুমন ভাইও বামে ঘুরানোর চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু স্টিয়ারিং খুবই শক্ত হয়েছিল। সাকিব ভাইও হাত দেওয়াতে স্টিয়ারিং সহজেই বামের দিকে চলে আসে।
গাড়ি হঠাৎ করে ঘুরে যাওয়াতে সিএনজির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ না হলেও , এক বিরাট গাছের সাথে গাড়ির ধাক্কা লেগে যায়।
একদমই ভয়াবহ অবস্থা।
গাড়ির অনেক ক্ষতি হলেও আল্লাহর রহমতে সুমন, সাকিব এবং জিবরান ভাই বড় আঘাত পাওয়া থেকে বেঁচে যান।
দূর্ঘটনার পর সুমনভাই গাড়ির এজেন্টকে ফোন দিয়ে ওখানে আসতে বলেন। ঢাকা থেকে বন্ধু ইরেশ ওনাদেরকে উদ্ধারের জন্য দুর্ঘটনাস্থলে অন্য নতুন একটা গাড়ি পাঠিয়ে দেন।
গাড়ি আসার পর, ঢাকাতে ফেরার বদলে বন্ধুর বিয়েতে যাওয়ার সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন বেজবাবার গ্ৰুপ।
নতুন গাড়ি নিয়ে রওনা হওয়ার পরও বেজবাবা সুমনের গ্ৰুপ পদে পদে বাঁধা পেয়েছিলেন।
কক্সবাজারে যাওয়ার পথে ওই গাড়ির চাকা দুইবার পাংচার হয়েছিল। প্রথমবার ফেনীতে, আর দ্বিতীয়বার কক্সবাজারের কাছাকাছি কোন জায়গায়।
ঘটনা ২
২০১১ সাল। সুমন ভাইয়ের সাথে যে দূর্ঘটনা হয়েছিল, তার ঠিক এক বছর আগের কথা।
সাকিব ভাই, ওনার এক বন্ধুকে নিয়ে কক্সবাজারের দিকে গাড়ি ড্রাইভ করে যাচ্ছিলেন।
কক্সবাজারের কাছাকাছি কোন এক জায়গাতে সাকিব ভাইয়ের গাড়ির ব্রেক ফেল করে এবং ভয়াবহভাবে বিরাট এক গাছের সাথে গাড়ির ধাক্কা লেগে যায়।
দূর্ঘটনায় গাড়ির যা তা একটা অবস্থা হয়। সাকিকে ভাই সামান্য আহত হন। ওনার বন্ধু পিঠে প্রচন্ড ব্যথা পান।
ওই বন্ধুকে প্রায় তিন মাস হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।
কাকতালীয় মিল
উপরের দুই ঘটনাটাতে কাকতালীয়ভাবে বেশ কিছু মিল পাওয়া যায়।
সাকিব ভাইয়ের দূর্ঘটনা কক্সবাজারের যে জায়গাতে হয়েছিল, ঠিক সেই জায়গাতেই এক বছর পরে বন্ধুর বিয়েতে বেজবাবার সাথে যাওয়ার সময় গাড়ির চাকা পাংচার হয়ে যায় (যে গাড়ি বন্ধু ইরেশ ওনাদেরকে উদ্ধারের জন্য পাঠিয়েছিল)।
আর ২০১২ সালে যে বন্ধুর বিয়েতে সবাই মিলে যাচ্ছিলেন, সেই বন্ধুটা ছিল সাকিব ভাইয়ের সেই ফ্রেন্ড যিনি ২০১১ সালে সাকিব ভাইয়ের সাথে কক্সবাজার যাওয়ার পথে এক্সিডেন্ট করে পিঠে ব্যথা পেয়েছিলেন।
বেজবাবা সুমন এখনও মিলাতে পারেন না - সাকিবের দুর্ঘনাস্থলেই কেন চাকা পাংচার হবে ? কেনই বা নতুন গাড়ির স্টিয়ারিং, ব্রেক হঠাৎ করে ফেল করবে? যে ফ্রেন্ড সাকিবের সাথে ওই স্থানে আহত হয়েছিল, সেই একই ফ্রেন্ডের বিয়ের প্রোগ্রামে যাওয়ার পথে কেন এত বাঁধা আসবে ?
এগুলো কি কাকতালীয় ব্যপার নাকি এর পেছনে অতিপ্রাকৃত কোন কিছুর হাত রয়েছে ?
এসবের উত্তর বেজবাবা সুমনেরও জানা নেই।
(রেডিও ফুর্তির ভূত এফএম প্রোগ্রামে প্রচারিত একটি গল্প দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই লিখা)
©somewhere in net ltd.